মেরুদন্ডের পেছনের দিকের শেষ অংশে ব্যথা হলে সাধারণত তাকে কোমর ব্যথা বলে। অনেক সময় আমরা একে কিডনির কারণে ব্যথা বলে ভুল করি। কোমর ব্যথার প্রতিরোধের ইউরোপীয় নির্দেশিকা অনুসারে, “কোমরের নিচের দিকে এবং নিম্নতর গ্লুটিয়াল ভাঁজের উপরে ব্যথা এবং অস্বস্তিই কোমর ব্যথা হিসেবে সংজ্ঞায়িত। এক্ষেত্রে পায়ে ব্যথা বা উপসর্গ থাকতে পারে, নাও পারে”। আরেক টি সংজ্ঞা, এসকিনকেড অনুযায়ী, “কোমর ব্যথা নিম্ন পাঁজর ভাজ থেকে শুরু হয়ে পশ্চাতদেশে এবং উরুর শুরুর দিক থেকে মধ্যবর্তী অঞ্চলে হয়”।
প্রাপ্ত বয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে ৮৪ শতাংশ মানুষ জীবন কালের কোনো না কোনো সময়ে কোমর ব্যথায় ভোগেন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে ১১.৮ শতাংশ থেকে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত মধ্য বয়সীদের মধ্যে কোমর ব্যথার হার বেশি দেখা যায়। এছাড়া বিশ্বের কোমর ব্যথা রোগীদের ১১ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ কোমর ব্যথার কারণে শারিরিক ভাবে অক্ষম হয়ে থাকেন।
কোমর ব্যথা কমানোর উপায়
কোমরের ব্যথা কমানোর জন্য কিছু কার্যকর উপায় হলো –
১. বিশ্রাম ও অবস্থানের পরিবর্তন
দীর্ঘক্ষণ একই অবস্থানে বসে বা দাঁড়িয়ে না থাকা এবং নিয়মিত অবস্থানের পরিবর্তন করা কোমরের ব্যথা কমাতে সহায়ক।
২. নিয়মিত ব্যায়াম
কোমরের পেশী ও স্নায়ু গুলোর শক্তি বাড়ানোর জন্য নিয়মিত হালকা ব্যায়াম যেমন হাঁটা, সাঁতার কাটা, বা সাইকেল চালানো ভালো। পাশাপাশি কোমরের ব্যায়াম (যেমন: পিঠের টান বা ব্রিজ ব্যায়াম) করাও গুরুত্বপূর্ণ।
৩. গরম বা ঠাণ্ডা থেরাপি
গরম পানির বোতল বা ঠাণ্ডা প্যাক (বরফ) ব্যবহার করে কোমরের ব্যথা কমানো যেতে পারে। গরম থেরাপি পেশী শিথিল করতে সহায়ক, আর ঠাণ্ডা থেরাপি ব্যথা ও ফোলা কমাতে সাহায্য করে।
৪. ম্যাসাজ থেরাপি
পেশীর টান বা জড়তা কমাতে নিয়মিত ম্যাসাজ করা যেতে পারে। এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং পেশীর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে।
৫. স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
অতিরিক্ত ওজন কমানো গেলে কোমরের ব্যথা কমতে পারে, কারণ অতিরিক্ত ওজন কোমরের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।
৬. সঠিক মাদুর বা বালিশ ব্যবহার
ঘুমের সময় সঠিক মাদুর বা বালিশ ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনার মেরুদণ্ড সঠিক অবস্থানে থাকে এবং পেশীর উপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে।
৭. পেশাগত সহায়তা
যদি ব্যথা খুবই বেশি হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে, তাহলে একজন ফিজিওথেরাপিস্ট বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তারা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, ব্যায়াম বা থেরাপি পরামর্শ দিতে পারবেন। এই পদক্ষেপ গুলি অনুসরণ করে কোমরের ব্যথা কমানো সম্ভব। তবে যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা আরও গুরুতর সমস্যা মনে হয়, তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কোমর ব্যথা কেন হয়
কোমর ব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে, এবং এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা বিভিন্ন পরিস্থিতি তে হতে পারে। কোমর ব্যথার প্রধান কারণ গুলো –
১. পেশী বা লিগামেন্টের স্ট্রেইন
ভারী কিছু তোলা, হঠাৎ মোচড়ানো বা সঠিক ভঙ্গিমা ছাড়া কাজ করা কোমরের পেশী বা লিগামেন্টে টান সৃষ্টি করতে পারে, যা কোমর ব্যথার একটি সাধারণ কারণ।
২. মেরুদণ্ডের ডিস্কের মধ্যে ফাটল বা ডিস্কের ক্ষয়
মেরুদণ্ডের ডিস্কের মধ্যে ফাটল (হার্নিয়েটেড ডিস্ক) বা ডিস্কের ক্ষয় (ডিজেনারেটিভ ডিস্ক ডিজিজ) হলে এটি কাছের স্নায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে তীব্র কোমর ব্যথা হতে পারে। আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কোমরে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে মেরুদণ্ডে আর্থ্রাইটিস হলে, তা স্পাইনাল স্টেনোসিস (মেরুদণ্ডের সংকোচন) তৈরি করতে পারে, যা কোমর ব্যথার কারণ।
৩. অস্টিওপরোসিস
এই অবস্থায় হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়, ফলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে এবং কোমরে ফ্র্যাকচার বা চিড় ধরতে পারে, যা কোমর ব্যথা তৈরি করে। মাংস পেশী বা স্নায়ুর সমস্যা পেশীর টান, স্নায়ুর সংক্রমণ বা প্রদাহ, এবং স্নায়ুতে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা কোমরে ব্যথার কারণ হতে পারে।
৪. আঘাত
কোনো দুর্ঘটনা বা আঘাতের ফলে কোমরের হাড়, পেশী, লিগামেন্ট, বা স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোমর ব্যথা হতে পারে। খারাপ বসার অভ্যাস, দীর্ঘ সময় ধরে খারাপ ভঙ্গিতে বসা বা দাঁড়ানো, যেমন বেঁকে বা হেলে বসা, মেরুদণ্ডে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে।
৫. অতিরিক্ত ওজন
অতিরিক্ত ওজন মেরুদণ্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে।
৬. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ পেশীর টান এবং পেশীর জড়তা বাড়িয়ে তুলতে পারে, যার ফলে কোমর ব্যথা হয়।
৭. অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা
কিছু রোগ যেমন কিডনি পাথর, কিডনি সংক্রমণ, বা গাইনোকোলজিক্যাল সমস্যা (নারীদের ক্ষেত্রে) কোমরের ব্যথার কারণ হতে পারে। উপরোক্ত কারণ গুলোর যে কোনো একটি বা একাধিক কারণে কোমর ব্যথা হতে পারে। তবে, যদি কোমর ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা খুব তীব্র হয়, তবে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কোমর ব্যথা প্রতিরোধের এক্সারসাইজ
আপনি সঠিক নিয়মে এক্সারসাইজ করে আপনার কোমর ব্যথা প্রতিরোধ করতে পারেন। এছাড়া কাজে কর্মে সঠিক নিয়মে দেহবস্থান ধরে রেখে আপনি সহজেই কোমর ব্যথা প্রতিরোধ করতে পারেন।
ব্রিজিং এক্সারসাইজ
ব্রিজিং এক্সারসাইজ একজন ব্যক্তির গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস বা পশ্চাতের বড় একটি পেশি গঠনে কাজ করে এবং কোমর ও নিতম্বের পেশির ও কাজ করে। এর ফলে পেছন থেকে আপনার মেরুদন্ডের শক্তি বৃদ্ধি পায়।
- বিছানায় সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন, দুই হাটু ভাজ করে বিছানা থেকে কোমর তুলুন যতক্ষণ না শরীর কাঁধ থেকে হাঁটু পর্যন্ত একটি সরল রেখা তৈরি করে।
- দুই হাত ও পায়ের উপর ভর দিয়ে পেট উপরের দিকে ধরে রাখুন।
- তারপর কোমর মাটিতে নামিয়ে কয়েক সেকেন্ড বিশ্রাম নিন।
- ১৫ বার পুনরাবৃত্তি করুন এবং তারপরে ১ মিনিটের জন্য বিশ্রাম নিন। ১৫টি পুনরাবৃত্তির ৩ সেট করুন।
সিঙ্গেল লেগ ফ্লেক্সন
- বিছানায় সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন, এক পা সোজা রাখুন আর অন্য পা কাঁধ বরাবর হাটু ভাজ করে নিয়ে আসুন।
- উঠানো পা দু হাত দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে রাখুন। আর অন্য পা সোজা করে রাখুন।
- পা নামিয়ে নিয়ে আসুন কয়েক সেকেন্ডের বিশ্রাম নিন।
- একই ভাবে আপনি অন্য পা কাঁধ বরাবর নিয়ে আসুন।
- ১০ বার পুনরাবৃত্তি করুন এবং ১মিনিটের বিশ্রাম নিন। ১০ টি পুনরাবৃত্তির ২ সেট করুন।
ডাবল লেগ ফ্লেক্সন
- প্রথমে আপনি বিছানায় শুয়ে পড়ুন। তারপরে আপনি দই হাটু ভাজ করে নাক বরাবর নিয়ে আসুন।
- দুই পা দুই হাত দিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখুন। অন্য দিকে আপনার কোমর যেন বিছানা থেকে একটু উঠানো থাকে।
- এই ভাবে ২ সেট করুন।আর তিন সেটে ১০ বার পুনরাবৃত্তি করুন। ১ মিনিটের বিশ্রাম করুন।
বিঃদ্রঃ যদি কারো ডিস্ক প্রোলাপ্স থাকে, মেরুদন্ডে ফ্র্যাকচার থাকে, বা এক্সারসাইজের পর কোমরে ব্যথা বেড়ে যায় বা পায়ের দিকে ব্যথা সহ সকল উপসর্গ চলে যায় তবে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ এক্সারসাইজ করা যাবে না
সিঙ্গেল লেগ ব্রিজিং
- প্রথমে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। এক পা ভাজ করুন এবং বিছামায় নামিয়ে সমতল করে রাখুন। অন্য পা সোজা করে উপরের দিক উঠিয়ে রাখুন।
- পিঠ হতে কোমর বরাবর সোজা উপরের উঠিয়ে রাখুন কয়েক সেকেন্ড।
- এই ভাবে অন্য পায়ের ক্ষেএে ও করুন।
- ৩ সেট করে করুন। ১৫ বার পুনরাবৃত্তি করুন এবং ১মিনিট করে বিশ্রাম করুন।
বিঃদ্রঃ খুব বেশি কোমর ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ এক্সারসাইজ করা যাবে না
শ্রোণী কাত
- প্রথমে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন । আপনার দুই হাঁটু বাঁকা করুন এবং পা সমতল করে মেঝেতে শুয়ে থাকুন দুই হাত পাশে নামিয়ে রাখুন।
- মেজে তে তোয়ালে গোল করে ভাজ করে আস্তে আস্তে কোমর উঠা-নামা করুন এবং পেটে হালকা করে ধাক্কা দিন।
- ৫ সেকেন্ড ধরে এভাবে করতে থাকুন তারপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম করুন।
- দৈনিক ১৫ বার করে ৩ সেট পুনরাবৃত্তির করুন এবং ১ মিনিটের বিশ্রাম করুন।
লাইং লেটারাল লেগ লিফটস্
- প্রথমে শুয়ে পড়ুন। তারপরে বাম দিক কাথ হয়ে শুয়ে বাম হাত মাথায় দিয়ে মাথা একটু উচু করে রাখুন।
- এক পা সোজা করে রাখুন। অন্য পা শূন্যে রেখে একপাশে শুয়ে থাকুন।
- সোজা এবং প্রসারিত রেখে উপরের পা টি প্রায় ১৮ ইঞ্চি উপরে তুলুন।
- ২ সেকেন্ড এই ভাবে অবস্থান ধরে রাখুন। ১৫বার পুনরাবৃত্তি করুন। ১মিনিটের বিশ্রাম করুন।
- আবার, অন্য দিকে ঘুরুন এই ভাবে অপর পাশেও পা উত্তোলন করুন।প্রতিটি পাশে ৩ সেকেন্ড করে করুন।
বিড়াল প্রসারিত ব্যায়াম
বিড়ালের প্রসারিত ব্যায়াম কোমরের পেশি দীর্ঘ করে এবং এটিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি পেশীগুলিতে স্পাজম কমাতে সহায়তা করতে পারে ও পাজরের অবস্থান ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
- বাচ্চাদের মত ঘোড়া হবেন, দুই হাত সামান রেখা বরাবর মাথা বের করে দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকুন।
- পিছনে দুই পা হাটু বরাবর সমান রুপখায় রাখুন। পেট ভাজ করে মেরুদণ্ডের দিকে টানুন।
- আস্তে আস্তে পেশী সহজ করুন এবং পেটটি মেঝের দিকে হালকা ঝুলে পড়াতে দিন আবার টানুন। দিনে দুবার করুন। ৩ থেকে ৫ বার পুনরাবৃত্তি করুন।
বিঃদ্রঃ যদি কারো ডিস্ক প্রোলাপ্স থাকে, মেরুদন্ডে ফ্র্যাকচার থাকে, বা এক্সারসাইজের পর কোমরে ব্যথা বেড়ে যায় বা পায়ের দিকে ব্যথা সহ সকল উপসর্গ চলে যায় তবে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ এক্সারসাইজ করা যাবে না।
সুপার ম্যান এক্সারসাইজ
একজন ব্যক্তির ভাল দেহবস্থান বজায় রাখার জন্য শক্তিশালী ব্যাক এক্সটেনসারের প্রয়োজন। এই ব্যায়ামের ফলে মেরুদণ্ডের উভয় পাশের পেশী গুলি শক্তিশালী ও কার্যকর হয়।
- মাটিতে বা বিছানায় কোমরে ভর করে শুয়ে থাকুন এবং উভয় হাত- পা প্রসারিত করুন।
- মেঝের মধ্যে প্রায় ৬ ইঞ্চির ব্যবধান তৈরি করুন এবং হাত-পা উভয়ই দিকে বাড়ান।
- পেট নাড়াচাড়া কারার চেষ্টা করুন।
- ঘাড়ের আঘাত এড়াতে মাথা সোজা রাখুন এবং মেঝের দিকে তাকান।হাত -পা যতদূর সম্ভব বাইরে প্রসারিত করুন।
- ২ সেকেন্ডের জন্য একই অবস্থান ধরে রাখুন। ১মিনিটের বিশ্রাম করুন। ১০ বার পুনরাবৃত্তি করুন। দৈনিক ৩ সেট করে করুন।
বিঃদ্রঃ খুব বেশি কোমর ব্যথা হলে এ এক্সারসাইজ করা যাবে না।
সেরেট লোয়ার ব্যাক রোটেশনাল স্ট্রেচেস
যারা ডেস্ক জব করেন তাদের জন্য এটি ভালো এক্সারসাইজ। বসে থাকা লোয়ার ব্যাক রোটেশনাল স্ট্রেচ কোমর ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। এটি মেরুদন্ডের মূল পেশীতে কাজ করে এবং পিঠের নিচের অংশ কে শক্তিশালী করে।
- ক) একটি চেয়ারে বসুন পা মেঝেতে সমতল রাখুন।
- খ) কোমর ডানদিকে মোচড়ান, পশ্চাৎ বাকা করে রাখুন এবং মেরুদণ্ড লম্বা রাখুন।
- গ) মাথার পিছনে হাত রাখুন বা বাম ও ডান হাত দুটি আটকে রাখুন যাতে প্রসারিত হয়।
- ঘ) ১০ সেকেন্ডের জন্য অবস্থান ধরে রাখুন।
- ঙ) আবার বিপরীত দিকে ব্যায়াম টি পুনরাবৃত্তি করুন। দিনে দুবার প্রতিটি দিকে ৩ থেকে ৫ বার পুনরাবৃত্তি করুন।
পার্শিয়াল কার্লস
পেটের শক্তিশালী পেশী মেরুদণ্ড কে সমর্থন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এব পশ্চাৎকে সঠিক অবস্থানে রেখে কোর মাসল শিক্তিশালী করতে সহায়তা করে।
- ক) মেঝেতে শুয়ে পড়ুন এবং হাঁটু বাঁকা করুন, পা সমতল রাখুন এবং পশ্চাৎ স্থির রেখে মাথার পিছনে দুই হাত একএে আটকে ধরে রাখুন।
- গ) বুকের উপর ভর দিয়ে কিছুক্ষণ ধরে থাকুন।
- ঘ) গভীরভাবে শ্বাস নিন। শ্বাস নেওয়ার সময়, পেটে টান দিয়ে পেটের পেশীগুলি কে সংযুক্ত করুন।
- ঙ) ঘাড় মেরুদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মাটি থেকে আস্তে আস্তে মাথা এবং কাঁধ ২ ইঞ্চি উপরে তুলুন।
- চ) ৫ সেকেন্ড ধরে থাকুন তারপর শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন। অনুশীলন টি ১০বার পুনরাবৃত্তি করুন। ৩ সেকেন্ড করে করুন।
বিদ্রঃ যদি কারো ডিস্ক প্রোলাপ্স থাকে, মেরুদন্ডে ফ্র্যাকচার থাকে, বা এক্সারসাইজের পর কোমরে ব্যথা বেড়ে যায় বা পায়ের দিকে ব্যথা সহ সকল উপসর্গ চলে যায় তবে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ এক্সারসাইজ করা যাবে না।
কোমর ব্যথায় কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
কোমরের ব্যথার সবসময় একটি সুস্পষ্ট কারণ থাকে না এবং কোমর ব্যথার কারণ নির্নয় জরুরি। সঠিক পরামর্শ ও চিকিৎসা গ্রহণ করলে এটি প্রায়শই নিজের থেকে ভাল হয়ে যায়। বিশ্রাম নেওয়া, গরম বা ঠান্ডা থেরাপির চেষ্টা করা, ওটিসি ব্যথা উপশমকারী গ্রহণ এবং আস্তে আস্তে কাজের পুনরুদ্ধারের গতি বাড়িয়ে তোলা উচিৎ।
কোমরের নিচের ব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের যদি নিচের কোন উপসর্গ থাকে তাহলে তাদের অবিলম্বে চিকিৎসা নিতে হবে।
- হাঁটতে বা পা নাড়াতে অসুবিধা
- অন্ত্র বা মূত্রাশয়ের কার্যকারিতা হ্রাস বা পস্রাব পায়খানা বুঝতে বা ধরে রাখতে না পারা
- পায়ে সংবেদন হ্রাস
- খুব তীব্র ব্যথা
- নন-সার্জিক্যাল চিকিৎসায় ভাল না হওয়া
তথ্যসূত্র
Airaksinen, O., Brox, J.I., Cedraschi, C., Hildebrandt, J., Klaber-Moffett, J., Kovacs, F., Mannion, A.F., Reis, S.H.M.U.E.L., Staal, J.B., Ursin, H. and Zanoli, G., 2006. European guidelines for the management of chronic nonspecific low back pain. European spine journal, 15(Suppl 2), p.s192. https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3454542/
Choi, S.A., Cynn, H.S., Yi, C.H., Kwon, O.Y., Yoon, T.L., Choi, W.J. and Lee, J.H., 2015. Isometric hip abduction using a Thera-Band alters gluteus maximus muscle activity and the anterior pelvic tilt angle during bridging exercise. Journal of Electromyography and kinesiology, 25(2), pp.310-315. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1050641114001928
Hayden, J.A., Van Tulder, M.W., Malmivaara, A.V. and Koes, B.W., 2005. Meta-analysis: exercise therapy for nonspecific low back pain. Annals of internal medicine, 142(9), pp.765-775. https://www.acpjournals.org/doi/abs/10.7326/0003-4819-142-9-200505030-00013
Hibbs, A.E., Thompson, K.G., French, D., Wrigley, A. and Spears, I., 2008. Optimizing performance by improving core stability and core strength. Sports medicine, 38, pp.995-1008. https://link.springer.com/article/10.2165/00007256-200838120-00004
Gordon, R. and Bloxham, S., 2016, April. A systematic review of the effects of exercise and physical activity on non-specific chronic low back pain. In Healthcare (Vol. 4, No. 2, p. 22). MDPI. https://www.mdpi.com/2227-9032/4/2/22
Downie, A., Williams, C.M., Henschke, N., Hancock, M.J., Ostelo, R.W., De Vet, H.C., Macaskill, P., Irwig, L., Van Tulder, M.W., Koes, B.W. and Maher, C.G., 2013. Red flags to screen for malignancy and fracture in patients with low back pain: systematic review. Bmj, 347. https://www.bmj.com/content/347/bmj.f7095.short
- ঘাড় ব্যথা কিসের লক্ষণ - February 9, 2025
- সায়াটিকা সারানোর উপায় - January 30, 2025
- ডেঙ্গু জ্বরের ৭টি সতর্কীকরণ লক্ষণ ২০২৪ | ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার - November 28, 2024