দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজেকর্মে কোমড় ব্যথার স্বীকার হননি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই কোমড় ব্যথা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে, উদাহরণস্বরূপ কিডনির কারণে হতে পারে, মেরুদন্ডের নার্ভ রুটে চাপ লাগলে হতে পারে, আঘাত লেগে  আবার অনেক ক্ষেত্রেই সেটা কোমড়ের মাসল স্পাজম বা শক্ত হওয়ার কারণে হতে পারে । কিডনীর কারণে যে ব্যথাগুলো হয় সেগুলো সাধারণত কিডনির যেকোন ধরনের অসুখের জন্য হয়ে থাকে।

এটাকে ডাক্তারি ভাষায় রেনাল ব্যথা বলা হয়, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নেফ্রোলিথিয়াসিস (কিডনিতে পাথর), পাইলোনেফ্রাইটিস (কিডনি সংক্রমণ), বা গ্লোমেরুলোনফ্রাইটিস (কিডনির পরিস্রাবণ ব্যবস্থার প্রদাহ) এর মতো রোগের কারণে হয়। এগুলো হলে সাধারণত কোমড়ের এক বা উভয় পাশে এবং পাঁজরের নীচে একটি চাপা ব্যথা অনুভূত হয়, তবে ব্যথাটি কখনও কখনও কুঁচকির দিকে নেমে যেতে পারে। অপরদিকে, কোমড় ব্যথা পেশী বা লিগামেন্ট স্ট্রেন, ডিস্ক হার্নিয়েশন, স্পাইনাল স্টেনোসিস, বা স্পন্ডাইলোলিস্থেসিস এর মতো বিভিন্ন পেশীবহুল সমস্যার কারণে হতে পারে। এগুলো হলে সাধারণত মেরুদণ্ডের যে কোনও জায়গায় ব্যথা হতে পারে। ব্যথার পাশাপাশি জয়েন্ট জমে যাওয়া, মাসল স্পাজম বা রেঞ্জ অব মোশান কম থাকতে পারে।

ব্যথার উৎস কিডনি বা কোমড়ের যেটাই হোক না কেন সঠিক চিকিৎসার জন্য সঠিক রোগ নির্ণয় গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় না হলে ভুল চিকিৎসা হতে পারে, যার ফলে মূল সমস্যা সমাধানে বিলম্ব হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কিডনি সংক্রমণ, যদি দ্রুত চিকিৎসা না করা হয়, তবে কিডনি নষ্ট হওয়া বা সেপসিসের মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। একইভাবে, গুরুতর কোমড় ব্যথায় চিকিৎসা যদি বিলম্বিত হয় তাহলে স্থায়ীভাবে নার্ভের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

Contents hide

কিডনির গঠন এবং কার্যকারিতা

অবস্থান এবং গঠন: কিডনি হল শিম-আকৃতির অঙ্গ যা কোমড়ের মেরুদণ্ডের উভয় পাশে পাঁজরের খাঁচার নীচে, পেটের পিছনের গহ্বরে অবস্থিত। প্রতিটি কিডনি প্রায় এক মিলিয়ন ফিল্টারিং ইউনিট নিয়ে গঠিত যাকে নেফ্রন বলা হয়।

রক্ত পরিস্রাবণ: কিডনির প্রাথমিক কাজ হল রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ, টক্সিন এবং অতিরিক্ত পদার্থ যেমন পানি, লবণ এবং ইলেক্ট্রোলাইট ফিল্টার করা (2)। এই পরিস্রাবণ প্রক্রিয়াটি নেফ্রনগুলিতে ঘটে, যা একটি উপজাত হিসাবে প্রস্রাব তৈরি করে।

তরল এবং ইলেক্ট্রোলাইট নিয়ন্ত্রণ: কিডনি শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য (সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ইত্যাদি) এবং সামগ্রিক তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই প্রক্রিয়াগুলির কোনও ব্যাঘাত ঘটলে গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা কারণ দেখা দিতে পারে।

হরমোন নিঃসরণ: কিডনিও হরমোন নিঃসরণ করে যা শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে রয়েছে এরিথ্রোপয়েটিন (লাল রক্তকণিকা উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে), রেনিন (রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে), এবং ক্যালসিট্রিওল (ভিটামিন ডি-এর সক্রিয় রূপ, যা হাড়ের জন্য এবং শরীরের স্বাভাবিক রাসায়নিক ভারসাম্যের জন্য ক্যালসিয়াম এর মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে)।

ব্যথার সংবেদন: কিডনির নিজেস্ব নার্ভ সংযোগ নেই যেটা ব্যথার অনুভুতি বহন করবে, তবে পার্শ্ববর্তী টিস্যুগুলি করে থাকে। কিডনিতে  সাধারণত যে রোগগুলো হয়ে থাকে সেগুলো হচ্ছে, জীবাণু সংক্রমণ, কিডনিতে পাথর, বা অন্যান্য কিডনি রোগ। এ রোগগুলো হলে সাধারণত কিডনিতে ব্যথা হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ডিস্ক প্রল্যাপ্স কি নিজে নিজেই সেরে যায়?

কোমড়ের বেসিক গঠন (পেশী, মেরুদণ্ড, স্নায়ু)

কোমড় পেশী, লিগামেন্ট, টেন্ডন, ডিস্ক এবং হাড়ের একটি জটিল কাঠামোর সমন্বয়ে গঠিত, যা আমাদের চলাফেরায় সাহায্য করে। মেরুদন্ড হচ্ছে মস্তিষ্ক এবং শরীরের বাকি অংশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী জন্য স্পাইনাল কর্ডের জন্য বিশেষ একটি কেন্দ্রীয় পথ (4)।

কশেরুকা: মেরুদণ্ড 33টি পৃথক হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত যাদের কশেরুকা বলা হয়, একটি অন্যটির উপরে সারিবদ্ধভাবে বসানো। এই কশেরুকাগুলি বিভিন্ন অংশে বিভক্ত: 7টি সার্ভিকাল (ঘাড়), 12টি থোরাসিক (পিঠ), 5টি কোমড়ের (পিঠের নীচের অংশ), 5টি স্যাক্রাল, এবং 4টি কোকিজিইয়াল (কোকিক্স বা টেইলবোন)।

ইন্টারভার্টেব্রাল ডিস্ক: মেরুদণ্ডের প্রতি জোড়া কশেরুকার মধ্যে অবস্থিত, এই ডিস্কগুলি ঝাকুনি বা ধাক্কা শোষক হিসাবে কাজ করে এবং মেরুদণ্ডে নমনীয়তা প্রদান করে। প্রতিটি ডিস্ক একটি জেলীর মতো কেন্দ্র (নিউক্লিয়াস পালপোসাস) দিয়ে গঠিত যা একটি শক্ত, ফাইবারযুক্ত বাইরের স্তরে (অ্যানুলাস ফাইব্রোসাস) আবৃত থাকে।

পেশী এবং লিগামেন্ট: অসংখ্য পেশী কোমড়ের নড়াচড়া এবং স্থিতিশীলতা প্রদান করে, যখন কশেরুকার সংযোগকারী লিগামেন্ট শক্তি এবং নমনীয়তা প্রদান করে। এই পেশী এবং লিগামেন্টগুলিতে চাপ লাগতে পারে বা টান পড়তে পারে তখন কোমড় ব্যহতা হয়।

স্নায়ু: স্পাইনাল কলামের মধ্যে অবস্থিত স্পাইনাল কর্ড থেকে অসংখ্য নার্ভ শাখা প্রশাখা তৈরি করে যা কশেরুকার মধ্য থেকে বেরিয়ে যায়। এই স্নায়ুগুলি শরীরের বাকি অংশ এবং মস্তিষ্কের মধ্যে তথ্য সরবরাহ করে। যদি এই স্নায়ুগুলিতে চাপ লাগে বা আঘাতপ্রাপ্ত হয় কিনবা টান পড়ে (উদাহরণস্বরূপ, হার্নিয়েটেড ডিস্ক এর মাধ্যমে), তাহলে কোমড়ে ব্যথা কারণ হতে পারে এবং অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে যেতে পারে।

কিডনিজনিত কোমড় ব্যথার কারণ

কিডনিতে পাথর

কিডনির ভিতরে খনিজ এবং লবণ দিয়ে তৈরি শক্ত জমাট বেধে যাওয়াকে কিডিনির পাথর, বা রেনাল ক্যালকুলি বলা হয়। এগুলি উৎপন্ন হয় যখন প্রস্রাব ঘনীভূত হয়ে গিয়ে খনিজপদার্থগুলো স্ফটিক করে ফেলে এবং একত্রে জমা বাধতে থাকে। কিডনিতে পাথর হলে ঠিক তখনই ব্যথা হয় যখন এই পাথরগুলো মূত্রনালীতে চলে যায়। যার ফলে তীব্র, তীক্ষ্ণ এবং ক্র্যাম্পিং মত ব্যথা হয় যা সাধারণত কখনো বেশি থাকে এবং কখনো কমে যায় (11)। ব্যথা প্রায়শই পাঁজরের নীচে পিছনে বা পাশে থেকে শুরু হয় এবং তলপেট এবং কুঁচকিতে ছড়ীয়ে যেতে পারে।

কিডনি সংক্রমণ

পাইলোনেফ্রাইটিস হল কিডনির একটি সংক্রমণ যা সাধারণত ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয় এবং ব্যকটেরিয়াগুলো মূত্রাশয় থেকে উঠে আসে বা রক্তের মাধ্যমে কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমণের কারণে ব্যথা্র পাশাপাশি, অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয় যেমন জ্বর, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রশ্রাব ধরে রাখতে না পারা ইত্যাদি এবং কখনও কখনও গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল উপসর্গ যেমন বমি বমি ভাব এবং বমিও হতে পারে (6)।

কিডনির অন্যান্য রোগসমূহ

পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ, কিডনি টিউমার বা হাইড্রোনেফ্রোসিস (প্রস্রাব জমে থাকার কারণে কিডনি ফুলে যাওয়া) এর মতো আরো অন্যান্য কারণেও কিডনি ব্যথা হতে পারে (9)।

পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ (PKD): এটি একটি জেনেটিক ব্যাধি যেটি হলে কিডনিতে অসংখ্য পানি জাতীয় সিস্টের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এই সিস্টগুলি বিভাজন ঘটায় এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে পারে। যার ফলে কিডনি বড় হয়ে যায় এবং কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত হয়। আশেপাশের টিস্যুতে ক্রমবর্ধমান সিস্টের চাপের কারণে বা সিস্ট ফেটে যাওয়া কিংবা সংক্রমণের কারণে পেটে, পেটের পাশে বা কোমড়ে ব্যথা হতে পারে।

কিডনি টিউমার: কিডনিতে বেনাঈন বা ম্যালিগন্যান্ট টিউমারও ব্যথার কারণ হতে পারে। টিউমারের বৃদ্ধির কারণে সংলগ্ন অস্থি, তরুনাস্থির উপর চাপ সৃষ্টি্র মাধ্যমে, অথবা নার্ভ জড়িত থাকার কারণে তলপেটে, পেটের পাশে কিংবা কোমড়ে ব্যথা হতে পারে ।

অটোইমিউন ডিজিজ: কিছু অটোইমিউন ডিজিজ, যেমন লুপাস (সিস্টেমিক লুপাস এরিথেমাটোসাস), কিডনিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং কিডনির ক্ষতি সাধন করে, যেটি কিনা লুপাস নেফ্রাইটিস নামে পরিচিত।

গ্লোমেরুলোনফ্রাইটিস: এটি এমন একটি রোগ যেখানে কিডনির ক্ষুদ্র ফিল্টারিং ইউনিট গ্লোমেরুলিতে প্রদাহ হয়। গ্লোমেরুলোনফ্রাইটিস জীবাণুর সংক্রমণ, বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা অন্তর্নিহিত অন্যান্য স্বাস্থগত ত্রুটির কারণে হতে পারে এবং এই রোগ হলে কিছু ক্ষেত্রে কিডনিতে ব্যথা হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ স্ট্রোকের ঝুঁকিতে কারা আছেন?

কিডনিজনিত কোমড় ব্যথার লক্ষণসমূহ

কিডনির সমস্যা হলে সাধারণত তলপেট বা কোমড়ের এক বা উভয় পাশে একটি মৃদু ব্যথা অনুভূত হয়। ব্যথাটি সার্বক্ষণিক কিংবা থেমে থেমে হয়ে থাকে এবং তীব্রতাও কম-বেশি হতে পারে। লক্ষণগুলি হচ্ছে জ্বর, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া এবং প্রস্রাবের ফ্রিকোয়েন্সি বেড়ে যাওয়া, দ্রুত যাওয়া বা প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া (হেমাটুরিয়া) (10) ইত্যাদি।

ব্যথার অবস্থান এবং প্রকৃতি: কিডনিজনিত ব্যথা সাধারণত কোমড়ে, বিশেষ করে পাঁজরের নিচে হয়ে থাকে। এটি কখনও কখনও পেটের সামনের দিকে অনুভূত হতে পারে। পেশীজনিত কোমড়ের ব্যথার তূলনায়, কিডনির ব্যথা গভীর হয় এবং স্থায়ী হয়ে থাকে এবং সাধারণত শরীরের স্বাভাবিক নড়াচড়া বা অবস্থানের পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হয় না।

হেমাচুরিয়া: কিডনির সমস্যার লক্ষণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ একটি হল হেমাটুরিয়া বা প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া। এটি রক্তের পরিমাণের উপর নির্ভর করে গোলাপী, লাল বা কোলা রঙের প্রস্রাব হতে পারে। জেনে রাখা জরুরী যে হেমাটুরিয়া শুধুমাত্র কিডনি রোগ নয়, বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হতে পারে।

প্রস্রাবের ধরনের পরিবর্তন: কিডনির অবস্থার পাশাপাশি প্রস্রাবের রঙ ছাড়াও প্রস্রাবের ধরনের পরিবর্তন ঘটতে পারে যেমন ঘোলা প্রস্রাব এবং তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব। কিছু ক্ষেত্রে, রোগীদের ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে কিংবা স্বাভাবিকের চেয়ে কম ও হতে পারে।

সাধারণ লক্ষণসমূহ: কিডনিজনিত সমস্যায় শরীরের অন্যান্য অংশের ও সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা সমগ্র শরীরকে প্রভাবিত করে। এর মধ্যে ক্লান্তি ভাব, অস্বস্তি এবং অসুস্থতার সাধারণ লক্ষণসমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। সংক্রমণের ক্ষেত্রে জ্বর এবং ঠাণ্ডা হতে পারে।

অন্যান্য উপসর্গ: নির্দিষ্ট কিডনি রোগের ধরনের উপর নির্ভর করে, অন্যান্য উপসর্গও থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কিডনিতে পাথরের কারণে তীব্র, ক্র্যাম্পিং ব্যথা হতে পারে।

সাধারণ কোমড় ব্যথার কারণসমূহ

পেশীতে টান লাগা

কোমড় ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলির মধ্যে একটি হল কোমড়ের পেশী, লিগামেন্ট বা টেন্ডনে স্ট্রেন বা টান পড়া যা কিনা ভার উত্তোলন, হঠাৎ দ্রুত কোন মুভমেন্ট করা, অস্বাস্থ্যকর ভঙ্গিতে বসে থাকা বা কোমড়ে অতিরিক্ত চাপ পড়লে হতে পারে (12)। পেশীতে টান লাগার কারণে যে ব্যথা হয় সেটি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট স্থানে হয়, মৃদু চিনচিনে ব্যথা, এবং পেশী শক্ত হয়ে যেতে পারে।

হার্নিয়েটেড ডিস্ক

মেরুদণ্ড সারিবদ্ধ সাজানো কশেরুকা দিয়ে গঠিত, যার মাঝে ডিস্ক সাজানো থাকে যা ঝাকি শোষণকারী হিসাবে কাজ করে। ডিস্ক হার্নিয়েশন ঘটে যখন একটি মেরুদন্ডের ডিস্কের বাইরের শক্ত অংশ ফেটে গিয়ে নরম কেন্দ্রীয় অংশ বের হয়ে সংশ্লিষ্ট নার্ভকে চাপ দেয়, এতে করে ব্যথা হয় এবং পায়ে ঝিন-ঝিন, ভাড়-ভাড় ও অবশ লাগে (8)।

মেরুদণ্ডের অন্যান্য রোগসমূহ

স্পাইনাল স্টেনোসিস, স্পন্ডাইলো-লিসথেসিস এবং মেরুদণ্ডের অস্টিওআর্থ্রাইটিসের মতো রোগগুলিও কোমড় ব্যথার কারণ হতে পারে (7)।

স্পাইনাল স্টেনোসিস: এই রোগের ক্ষেত্রে স্পাইনাল ক্যানেল সংকোচন হয়ে যায় এতে করে মেরুদণ্ডের মধ্যে যে স্পাইনাল কর্ড থাকে সেটির উপর চাপ লাগে। উপসর্গগুলোর মধ্যে কোমড় ব্যথা, সেইসাথে অসাড়তা, দুর্বলতা বা পায়ে ক্র্যাম্পিং হতে পারে।

ডিজেনারেটিভ ডিস্ক ডিজিজ: এই রোগটি স্বাভাবিক বার্ধক্য প্রক্রিয়ার একটি অংশ কিন্তু কিছু লোকের জন্য এটি কোমড় ব্যথার কারণ হতে পারে। এতে ইন্টারভার্টেব্রাল ডিস্কের ভাঙ্গন ঘটে এবং ডিস্ক গুলোর অবনতি হতে থাকে। এই ডিস্কগুলি ক্ষয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আশেপাশের কাঠামোর উপর চাপ বৃদ্ধির কারণে ব্যথা হতে পারে।

স্পন্ডাইলোলিস্থেসিস: এই রোগটি হয় যখন মেরুদণ্ডের একটি কশেরুকা তার নীচের কশেরুকা থেকে সামনে বা পিছনে সরে যায়। এর ফলে স্পাইনাল ক্যানেল সংকুচিত হতে পারে এবং নার্ভের উপর চাপ পড়তে পারে, যার ফলে কোমড় ব্যথা এবং পায়ে ব্যথা হতে পারে।

স্পাইনাল আর্থ্রাইটিস: এটি মেরুদণ্ডের অস্টিওআর্থারাইটিস নামেও পরিচিত। এই রোগ হলে কোমড় ও ঘাড়ের মেরুদন্ডের মধ্যে জয়েন্টগুলো, জয়েন্টের তরুণাস্থি এবং ঘাড় ও কোমড়ের ডিস্কের ক্ষয় হয়ে থাকে। এটি মেরুদন্ড শক্ত হয়ে যায় এবং ব্যথার সৃষ্টি হয়।

অস্টিওপোরোসিস: এটি হলে হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস পায়, যার ফলে ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে, মেরুদণ্ডে কম্প্রেশন ফ্র্যাকচারও হতে পারে, যার ফলে কোমড় ব্যথা হয়। অস্টিওপোরোসিস-জনিত কোমড় ব্যথা হঠাৎ শুরু হতে পারে যদি এটি মেরুদণ্ডের ফ্র্যাকচারের কারণে হয়।

কোমড় ব্যথার সাধারণ লক্ষণসমূহ

লক্ষণগুলির মধ্যে চাপা ব্যথা, তীক্ষ্ণ এবং তীব্র ব্যথা বা জ্বালাপোড়াজনিত ব্যথা, বা পায়ের নিচে ব্যথা নেমে যাওয়া ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। বাঁকানো, উত্তোলন, দাঁড়ানো বা হাঁটার সময় ব্যথা আরও খারাপ হতে পারে এবং হেলান দিয়ে উন্নতি করতে পারে (5)।

ব্যথার ধরণ: কোমড় ব্যথা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এটি একটি মৃদু ব্যথা, অবিরাম ব্যথা বা হঠাৎ তীক্ষ্ণ ব্যথা হতে পারে যা অনেক সময় ঝাঁকুনি বা বৈদ্যুতিক শকের মতো অনুভূত হয়। কিছু লোকের জন্য, ব্যথা একটি কম্পন বা স্পন্দিত প্রকৃতির হতে পারে।

ব্যথার সময়কাল: কোমড় ব্যথার সময়কালকে তীব্র বা কাঁচা ব্যথা (কয়েক দিন থেকে সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী) বা দীর্ঘস্থায়ী বা পুরনো জমে থাকা ব্যথা (তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলতে থাকে) হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। তীব্র কাঁচা ব্যথা প্রায়শই বিশ্রাম এবং সাবধানতা অবলম্বনের মাধ্যমে সমাধান হয়, তবে দীর্ঘস্থায়ী কোমড় ব্যথার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেতরেই সঠিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

ব্যথার অবস্থান: কোমড় ব্যথা সাধারণত কোমড়ে অনুভূত হয়, এটি শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়াতে পারে। ব্যথার উতপত্তিস্থল এর উপর নির্ভর করে, ব্যথা ঘাড় থেকে হাতে এমনকি বুক পর্যন্ত ছড়ায়, কোমড় থেকে পায়ে ছড়িয়ে যেতে পারে পারে।

অন্যান্য উপসর্গ: কোমড় ব্যথার সাথে অন্যান্য বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে কোমড়ের শক্তবোধ করা বা জমে যাওয়া, কোমড়ের মুভমেন্ট কমে যাওয়া উল্লেখযোগ্য। এতে করে রোগীর স্বাভাবিক চলাচল ব্যহত হয়। যদি নার্ভে চাপ লাগে তাহলে হয় অসাড়তা, ঝিন-ঝিন বা ভাড়-ভাড় অনুভূত হতে পারে।

ব্যথা বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া: কোমড় ব্যথা বেশ কিছু নড়াচড়া, অবস্থান, বা কার্যকলাপ দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ভারী জিনিস তোলার সময়, দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা আরও খারাপ হতে পারে। বিপরীতভাবে, কিছু অবস্থান বা ক্রিয়াকলাপ ব্যথা উপশম করতে পারে।

কিডনিজনিত ব্যথা এবং কোমড় ব্যথার মধ্যে পার্থক্য

উপসর্গের তুলনামূলক বিশ্লেষণ

ব্যথার অবস্থান

  • কিডনীজনিত ব্যথা সাধারণত মেরুদণ্ডের উভয় পাশের পাঁজরের নীচে এবং নিতম্বের দিকে আসতে পারে। এটি কখনও কখনও পেটের উপরের দিকে অনুভূত হতে পারে বা কুঁচকির দিকেও নেমে যেতে পারে।
  • কোমড় ব্যথা কোমড়ের যে কোনও জায়গায় ঘটতে পারে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোমড়ের নিচের দিকেই দেখা যায়। এটি নিতম্ব, উরু বা পায়ে ছড়াতে পারে।

ব্যথার ধরণ

  • কিডনিজনিত ব্যথা প্রায়শই গভীর, তীব্র হয় এবং ব্যথাটি অনেক সময় শূলবেদনার মত অনুভূত হতে পারে, বিশেষ করে কিডনিতে পাথর হলে। কোমড় ব্যথা লাগাতার হতে থাকে এবং প্রায়ই নড়াচড়া বা অবস্থান পরিবর্তন দ্বারা প্রভাবিত হয় (14)। কিডনির পাথর যদি সরে গিয়ে বা মূত্রনালীতে যায় তাহলে ব্যথার তীব্রতা আরো বেড়ে যেতে পারে।
  • কোমড় ব্যথা চাপা বা তীক্ষ্ণও হতে পারে, তবে এটি প্রায়শই ব্যাথা, জ্বালাপোড়া বা যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে। অনেক সময় আঘাতের পরে তীব্র ব্যথা হয় এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে অনেকসময় তিন মাসেরও বেশি স্থায়ী হতে পারে।

অন্যান্য উপসর্গ

  • কিডনিজনিত ব্যথায় প্রায়ই অন্যান্য উপসর্গ জড়িত থাকে, যেমন প্রস্রাবের ধরনের পরিবর্তন (মাত্রা, রঙ, গন্ধ), বমি বমি ভাব, হওয়া, জ্বর বা ঠান্ডা লাগা, বিশেষ করে কিডিনী সংক্রমণ হলে এসব লক্ষণের উপস্থিতি দেখা যায়।
  • কোমড় ব্যথা, বিশেষ করে যদি কোন পেশীজনিত কারণে হয়, প্রায়শই পেশী টাইট বা দৃঢ় হয়ে যায়, মুভমেন্ট কমে যায় অথবা যদি নার্ভে চাপ লাগে তাহলে অসাড়তা, নিতম্ব বা পায়ে ঝিন-ঝিন হয়ে থাকে ।

রোগ নির্ণয় পদ্ধতি

ফিজিক্যাল এসেসমেন্ট

একজন চিকিৎসক কিডনির ব্যথার জন্য কোস্টোভা্রটিব্রাল অ্যাঙ্গেল (সিভিএ) টেন্ডারনেস পরীক্ষা বা  সায়াটিকাজনিত কোমড় ব্যথার ক্ষেত্রে এস এল আর টেস্ট করে থাকেন।

সাধারণ পর্যবেক্ষণ: রোগীর ভঙ্গি, মুভমেন্ট এবং অস্বস্তি বা কষ্টের কোনো দৃশ্যমান লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করা হয়। এটি ব্যথার সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে থাকে।

প্যালপেশন এবং পারকাশন: চিকিৎসক কোমড়ে, দুপাশে এবং পেটে কোন ফোলা বা টেন্ডার আছে কিনা সেটি দেখার জন্য প্যালপেশন (স্পর্শ) করে থাকেন। কিডনির কাছাকাছি পিছনে এবং পাশে আলতোভাবে ট্যাপ করা হয় যেটা পারকাশন নামে পরিচিত।

যদি এর ফলে ব্যথা হয়, তাহলে এটি কিডনিজনিত ব্যথার ধারণা দেয়, এটি একটি ক্লিনিকাল লক্ষণ যা কোস্টোভারটেব্রাল অ্যাঙ্গেল টেন্ডারনেস নামে পরিচিত।

মুভমেন্ট বিশ্লেষণ: ডাক্তার রোগীর মুভমেন্টগুলো চেক করেন ব্যথার যাতে যেসকল মুভমেন্টে ব্যথা হয় তা বের হয়ে আসে। মাংসপেশী, হাড় বা জয়েন্ট সম্বলিত কোমড় ব্যথা, প্রায়শই নির্দিষ্ট নড়াচড়া, সামনে ঝোকা বা হাঁটার সাথে বেড়ে যায়। অন্যদিকে, কিডনিজনিত ব্যথা সাধারণত স্বাভাবিক নড়াচড়ায় পরিবর্তিত হয় না।

স্না্য়ুবিক পরীক্ষা: যদি ডাক্তার ধারণা করেন যে কোমড় ব্যথা নার্ভের কোন সমস্যায় হচ্ছে তাহলে স্নায়বিক পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। এতে শরীরের বিভিন্ন পেশীর শক্তি, রিফ্লেক্স এবং আলতো স্পর্শ বা সূচ ফটানোর  প্রতিক্রিয়া চেক করা হয়ে থাকে।

ইমেজিং পরীক্ষা

আল্ট্রাসাউন্ড, সিটি, এবং এমআরআই-এর মতো ইমেজিং পরীক্ষাগুলি কিডনি বা মেরুদন্ডের ছবি ধারণ করতে এবং ব্যথার কারণ সনাক্ত করতে সাহায্য করে (13)।

আল্ট্রাসাউন্ড: এই পরীক্ষাটি শরীরের অভ্যন্তরে অঙ্গ এবং কাঠামোর চিত্র তৈরি করতে শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে। একটি আল্ট্রাসাউন্ড প্রায়শই কিডনিতে পাথর, সিস্ট বা কিডনিতে অন্যান্য অস্বাভাবিকতা সনাক্ত করতে পারে।

সিটি স্ক্যান: সিটি (কম্পিউটেড টমোগ্রাফি) স্ক্যান শরীরের বিস্তারিত ক্রস-বিভাগীয় ছবি তৈরি করতে এক্স-রে ব্যবহার করে। এই পরীক্ষাটি কিডনিতে পাথর, টিউমার এবং কিডনির অন্যান্য সমস্যাগুলির পাশাপাশি হার্নিয়েটেড ডিস্ক বা ফ্র্যাকচারের মতো কোমড়ের সমস্যাগুলি সনাক্ত করতে পারে।

এক্স-রে: কোমড়ের হাড় এবং জয়েন্টগুলির অবস্থান দেখতে এক্স-রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি অস্টিওআর্থারাইটিস বা মেরুদণ্ডের স্টেনোসিসের মতো রোগের সাথে সম্পর্কিত ফ্র্যাকচার, এলাইনমেন্ট জনিত সমস্যা এবং ক্ষয়জনিত পরিবর্তনগুলি সনাক্ত করতে পারে।

এমআরআই: ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) সফট টিস্যু, হাড় এবং অঙ্গগুলির বিশদ চিত্রধারণ করে। এটি কোমড়ের ডিস্কগুলির সমস্যা সনাক্ত করতে বা কিডনিকে আক্রান্ত করে এমন কারণ সনাক্ত করতে বেশ কার্যকর পরীক্ষা।

প্রস্রাব এবং রক্ত পরীক্ষা

ইউরিনালাইসিস কিডনির রোগের সাথে সম্পর্কিত অস্বাভাবিকতা সনাক্ত করতে পারে এবং রক্ত ​​পরীক্ষা প্রদাহ বা সংক্রমণ সনাক্ত করতে পারে (18)।

ইউরিনালাইসিস: এই পরীক্ষায় প্রস্রাবের নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়। এটি প্রস্রাবে ব্যাকটেরিয়া, রক্ত বা অন্যান্য পদার্থ সনাক্ত করতে পারে যা কিডনি সংক্রমণ, কিডনিতে পাথর বা অন্যান্য কিডনি সমস্যা সনাক্ত করতে পারে।

রক্ত পরীক্ষা: নির্দিষ্ট কিছু রক্ত পরীক্ষা কিডনির কার্যকারিতা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ক্রিয়েটিনিন মাত্রা নির্দেশ করতে পারে যে কিডনি রক্ত থেকে কতটা বর্জ্য নিষ্কাষণ করছে। ক্রিয়েটিনিনের উচ্চ মাত্রা কিডনি সমস্যা নির্দেশ করে।

ভুল রোগ নির্ণয়ের পরিনাম

ভুল রোগ নির্ণয়ের কারণে অনুপযুক্ত চিকিৎসা, জটিলতা এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কিডনির সঠিক রোগ নির্ণয় না হলে সংক্রমণ থেকে সেপসিস হতে পারে, এবং কোমড় ব্যথার রোগ সঠিক রোগ নির্ণিত না হলে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার হতে পারে (1)।

চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা

কিডনিজনিত ব্যথার জন্য সাধারণ চিকিৎসা সমূহ

সঠিক কারণের উপর নির্ভর করে, কিডনি সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথার পথ্য, বা গুরুতর কিডনি পাথরের জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে (19)।

কিডনিতে পাথর হলে চিকিৎসা:

ব্যথা উপশম: ওভার-দ্য-কাউন্টার ব্যথার ওষুধ (যেমন, আইবুপ্রোফেন) কিডনিতে পাথরের ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে।

হাইড্রেশন: প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা কিডনিতে ছোট পাথর দূর করতে সাহায্য করে।

অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি: এক্সট্রাকর্পোরিয়াল শক ওয়েভ লিথোট্রিপসি (ESWL) পদ্ধতিতে কিডনিতে পাথর ভেঙে ফেলার জন্য শক ওয়েভ ব্যবহার করে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে, ইউরেটেরোস্কোপি বা পারকিউটেনিয়াস নেফ্রোলিথোটমির মতো অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বড় পাথর অপসারণ করা হয়।

কিডনির সংক্রমণ:

অ্যান্টিবায়োটিক: সংক্রমণজনিত কিডনির চিকিৎসায় মধ্যে নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া সনাক্ত করে অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স এর পরামর্শ দেয়া হয়।

কিডনির অন্যান্য রোগ:

কিডনি টিউমার এর জন্য অস্ত্রোপচার করে টিউমার অপসারণ, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি এই চিকিৎসাপদ্ধতিগুলির সংমিশ্রণের প্রয়োজন হতে পারে।

কোমড় ব্যথার চিকিৎসাসমূহ

কোমড় ব্যথার চিকিৎসায় ব্যথা উপশমকারী ওষুধ, ফিজিওথেরাপি বা গুরুতর ক্ষেত্রে সার্জারি করা লাগতে পারে (17)।

কঞ্জারভেটিভ চিকিৎসা:

বিশ্রাম: ব্যথা বাড়ায় এমন কার্যকলাপ থেকে বিরতি থাকা রোগ নিরাময়ের গতিকে বাড়িয়ে দিতে পারে।

ফিজিওথেরাপি:

ফিজিওথেরাপী চিকিৎসায় নির্দিষ্ট ব্যায়াম এবং স্ট্রেচিং ব্যায়াম, ম্যানিপুলেশন, মোবিলাইজেশন ইত্যাদি টেকনিকের মাধ্যমে কোমড় ব্যথার উপশম হয়। পাশাপাশি পেশী নমনীয়তা, শক্তি বাড়ানো এবং বসে থাকা বা দাড়ানোর ভংগির উন্নত করাও জরুরী।

ওভার-দ্য-কাউন্টার ব্যথার ওষুধ: ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস (NSAIDs) ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

মেডিকেল চিকিৎসা:

প্রেসক্রিপশনকৃত ওষুধ: তীব্র ব্যথার ওষুধ, পেশী শিথিলকারী, বা কর্টিকোস্টেরয়েডগুলি গুরুতর বা দীর্ঘস্থায়ী কোমড় ব্যথার জন্য দেয়া হয়।

এপিডুরাল স্টেরয়েড ইনজেকশন: মেরুদণ্ডের স্নায়ুর চারপাশে প্রদাহবিরোধী ওষুধের ইনজেকশন দেয়া হয়। এপিডুরাল ইঞ্জেকশন কোমড় ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

সার্জারি: কিছু কিছু ধরনের কোমড় ব্যথার ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করা লাগতে পারে যেমন  হার্নিয়েটেড ডিস্ক, স্পাইনাল স্টেনোসিস, বা মেরুদণ্ডের বিকৃতি ইত্যাদি যাহা প্রসাব পায়খানা, ধরে রাখতে অসুবিধা, এবং পায়ের পাতায় ও পায়ের গোড়ালি  ভর দিয়া হাটার সমস্যা সৃষ্টি করে ।

উপসংহার

সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য কিডনিজনিত ব্যথা এবং কোমড় ব্যথার পার্থক্য জানা জরুরী। একই সাথে যেকোন রোগের ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা নেয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ধরুণ কিডনিজনিত কোমড় ব্যথার রোগী যদি চিকিৎসা না নিয়ে অবহেলা করে তাহলে এক সময় দেখা যাবে তার কিডনি অকেজো হয়ে গিয়েছে। অনেক সময় রোগের জটিলতা এতটাই বেড়ে যেতে পারে যে রোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে

তথ্যসূত্র

1. Hadjistavropoulos, T., Craig, K.D., Duck, S., Cano, A., Goubert, L., Jackson, P.L., Mogil, J.S., Rainville, P., Sullivan, M.J., Williams, A.C.D.C. and Vervoort, T., 2011. A biopsychosocial formulation of pain communication. Psychological bulletin, 137(6), p.910. https://psycnet.apa.org/record/2011-11179-001

2. McMahon, S. B., & Aronsen, K. F. (2014). Wall and Melzack’s Textbook of Pain (6th ed.). Elsevier Saunders. https://books.google.com.bd/books/about/Wall_Melzack_s_Textbook_of_Pain.html?id=ok0_jIJ0w_wC&redir_esc=y

3. Schoenen, J. (2014). Pain syndromes in neurology. Butterworth-Heinemann. https://www.elsevier.com/books/pain-syndromes-in-neurology/fields/978-0-407-01124-3

4. Willard, F.H., Vleeming, A., Schuenke, M.D., Danneels, L. and Schleip, R., 2012. The thoracolumbar fascia: anatomy, function and clinical considerations. Journal of anatomy, 221(6), pp.507-536. https://onlinelibrary.wiley.com/doi/abs/10.1111/j.1469-7580.2012.01511.x

5. Balagué, F., Mannion, A.F., Pellisé, F. and Cedraschi, C., 2012. Non-specific low back pain. The lancet, 379(9814), pp.482-491. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0140673611606107

6. Foxman, B., 2014. Urinary tract infection syndromes: occurrence, recurrence, bacteriology, risk factors, and disease burden. Infectious Disease Clinics, 28(1), pp.1-13. https://www.id.theclinics.com/article/S0891-5520(13)00074-3/abstract

7. Hoy, D., Brooks, P., Blyth, F. and Buchbinder, R., 2010. The epidemiology of low back pain. Best practice & research Clinical rheumatology, 24(6), pp.769-781. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1521694210000884

8. Katz, J.N., 2006. Lumbar disc disorders and low-back pain: socioeconomic factors and consequences. JBJS, 88(suppl_2), pp.21-24. https://journals.lww.com/jbjsjournal/fulltext/2006/04002/lumbar_disc_disorders_and_low_back_pain_.5.aspx

9. Pierorazio, P.M., Johnson, M.H., Patel, H.D., Sozio, S.M., Sharma, R., Iyoha, E., Bass, E.B. and Allaf, M.E., 2016. Management of renal masses and localized renal cancer: systematic review and meta-analysis. The Journal of urology, 196(4), pp.989-999. https://www.auajournals.org/doi/abs/10.1016/j.juro.2016.04.081

10.1159/000052446. PMID: 11275712. https://karger.com/eur/article-abstract/39/3/241/133405/Renal-Colic-Pathophysiology-Diagnosis-and?redirectedFrom=fulltext

11. Taylor EN, Curhan GC. Fructose consumption and the risk of kidney stones. Kidney Int. 2008 Jan;73(2):207-12. doi:

12. Van Tulder, M., Becker, A., Bekkering, T., Breen, A., del Real, M.T.G., Hutchinson, A., Koes, B., Laerum, E., Malmivaara, A. and COST B13 Working Group on Guidelines for the Management of Acute Low Back Pain in Primary Care, 2006. European guidelines for the management of acute nonspecific low back pain in primary care. European spine journal, 15(Suppl 2), p.s169. https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3454540/

13. Andersson, G.B., 1999. Epidemiological features of chronic low-back pain. The lancet, 354(9178), pp.581-585. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0140673699013124

14. Chou, R., Qaseem, A., Snow, V., Casey, D., Cross Jr, J.T., Shekelle, P., Owens, D.K. and Clinical Efficacy Assessment Subcommittee of the American College of Physicians and the American College of Physicians/American Pain Society Low Back Pain Guidelines Panel*, 2007. Diagnosis and treatment of low back pain: a joint clinical practice guideline from the American College of Physicians and the American Pain Society. Annals of internal medicine, 147(7), pp.478-491. https://www.acpjournals.org/doi/abs/10.7326/0003-4819-147-7-200710020-00006

15. Ferreira, Manuela L., Gustavo Machado, Jane Latimer, Christopher Maher, Paulo H. Ferreira, and Rob J. Smeets. “Factors defining care-seeking in low back pain–a meta-analysis of population based surveys.” European Journal of Pain 14, no. 7 (2010): 747-e1. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1090380109002407

16. Hadjistavropoulos, T., Craig, K.D., Duck, S., Cano, A., Goubert, L., Jackson, P.L., Mogil, J.S., Rainville, P., Sullivan, M.J., Williams, A.C.D.C. and Vervoort, T., 2011. A biopsychosocial formulation of pain communication. Psychological bulletin, 137(6), p.910. https://psycnet.apa.org/record/2011-11179-001

17. Koes, B.W., Van Tulder, M., Lin, C.W.C., Macedo, L.G., McAuley, J. and Maher, C., 2010. An updated overview of clinical guidelines for the management of non-specific low back pain in primary care. European Spine Journal, 19, pp.2075-2094. https://link.springer.com/article/10.1007/s00586-010-1502-y

18. Levey, A.S. and Coresh, J., 2012. Chronic kidney disease. The lancet, 379(9811), pp.165-180. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0140673611601785

19. Moe, O.W., 2006. Kidney stones: pathophysiology and medical management. The lancet, 367(9507), pp.333-344. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0140673606680719

Follow me

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This field is required.

This field is required.

পরামর্শ নিতে 01975451525