অস্টিও আর্থ্রাইটিস জনিত হিপ জয়েন্টের ব্যথা সাধারণত জয়েন্টের কার্টিলেজ ক্ষয় এবং হাড়ের গঠনগত পরিবর্তনের কারণে ঘটে। কার্টিলেজ ক্ষয়ের ফলে হাড়ের সাথে হাড়ের ঘর্ষণ বেড়ে যায়, যা ব্যথা, ফোলাভাব এবং চলাচলে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে যা হাঁটা, দাঁড়ানো এবং সোজা হয়ে বসার সময় আরও বেড়ে যায়।
অস্টিও আর্থ্রাইটিস কি
অস্টিওআর্থ্রাইটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী এবং প্রগতিশীল জয়েন্টের রোগ, যা মূলত কার্টিলেজ বা হাড়ের সংযোগকারী স্থানে ক্ষয়ের সৃষ্টি করে। কার্টিলেজ হাড়ের শেষ প্রান্তগুলোকে আবৃত রাখে এবং মসৃণভাবে চলাচল নিশ্চিত করে। তবে, অস্টিওআর্থ্রাইটিসে এই কার্টিলেজ ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে হাড়ের সাথে হাড়ের ঘর্ষণ বৃদ্ধি পায় এবং জয়েন্টে ব্যথা, ফোলাভাব এবং শক্ত হয়ে যাওয়া অনুভূত হয়। অস্টিওআর্থ্রাইটিস রোগ সাধারণত বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বেশি হতে দেখা যায় এবং প্রাথমিকভাবে হাঁটু, হিপ, এবং আঙুলের মতো বড় জয়েন্টগুলোকে আক্রান্ত করে। বিভিন্ন কারণ, যেমন বয়স, অতিরিক্ত ওজন, পূর্বের ইনজুরি এবং জেনেটিক কারণ এই রোগের প্রবণতা বাড়াতে পারে (1)।
অস্টিও আর্থ্রাইটিস কেন হয়
অস্টিওআর্থ্রাইটিস সাধারণত বিভিন্ন কারণের হয়ে থাকে, যা প্রধানত বয়স বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত এবং এর মূল কারণ হলো জয়েন্টের কার্টিলেজের ক্ষয়, যা হাড়ের প্রান্তে মসৃণ চলাচল নিশ্চিত করে এবং ঘর্ষণ থেকে রক্ষা করে। নিচে অস্টিওআর্থ্রাইটিসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ উল্লেখ করা হলো:
বয়স বৃদ্ধি: বয়স বৃদ্ধির সাথে শরীরের কার্টিলেজগুলো দুর্বল হয়ে যেতে শুরু করে, যা হাড়ের শেষ প্রান্তগুলোকে সুরক্ষা দেয় এবং মসৃণ চলাচল নিশ্চিত করে। সময়ের সাথে সাথে এই কার্টিলেজ ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে যার ফলে হাড়ের সাথে হাড়ের ঘর্ষণ বৃদ্ধি পায়, যা ব্যথা, ফোলাভাব এবং জয়েন্টের শক্ত হয়ে যাওয়ার অনুভূতি সৃষ্টি করে। বয়স বৃদ্ধির ফলে শরীরের নিরাময় ক্ষমতাও দুর্বল হয়ে যায়, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কার্টিলেজ সহজে আর আগের অবস্থায় ফিরে যায় না। এ কারণে বয়স্ক মানুষদের মধ্যে হাঁটু, হিপ এবং হাতের আঙুলের মতো বড় জয়েন্টগুলোতে অস্টিওআর্থ্রাইটিসের প্রকোপ বেশি দেখা যায় (2)।
অতিরিক্ত ওজন: শরীরের ওজন যত বেশি হয়, জয়েন্টে তত বেশি চাপ পড়ে, যা কার্টিলেজের ওপর অতিরিক্ত ঘর্ষণ সৃষ্টি করে এবং দ্রুত ক্ষয় করে। অতিরিক্ত ওজনের কারণে জয়েন্টের মুভমেন্ট বাধাগ্রস্ত হয় এবং ব্যথা ও ফোলাভাব অনুভূত হয়। এ ছাড়া, মেদ কোষগুলোতে উৎপন্ন প্রদাহজনিত উপাদান জয়েন্টে প্রদাহ এবং ক্ষতি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
অস্টিও আর্থ্রাইটিস জনিত হিপ জয়েন্টের ব্যথা
জেনেটিক কারণ: অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা জন্মগতভাবে দুর্বল প্রকৃতির কার্টিলেজ নিয়ে জন্মান, যা পরবর্তীতে অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। পারিবারিক ইতিহাস থাকলে অস্টিওআর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, কারণ জেনেটিক ফ্যাক্টরের কারণে তাদের জয়েন্টের গঠন এবং কার্যক্ষমতা স্বাভাবিকের তুলনায় ভিন্ন হতে পারে। কিছু নির্দিষ্ট জিন অস্টিওআর্থ্রাইটিসের সাথে সম্পর্কিত বলে প্রমাণিত হয়েছে, যা কার্টিলেজের পুনর্গঠন ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। ফলে, পরিবারে যদি অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ইতিহাস থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তির জন্য এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় বেশি থাকে (3)।
পূর্বের ইনজুরি:কোনো জয়েন্টে যদি পূর্বের আঘাত বা ইনজুরির কারণে কার্টিলেজ ও আশেপাশের গঠন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অনেক সময় জয়েন্টে অস্ত্রোপচার বা ফ্র্যাকচারের ফলে কার্টিলেজ এবং জয়েন্টের স্থিতিশীলতা কমে যায়, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির সৃষ্টি করে। বিশেষত যারা নিয়মিত ভাড়ী কাজকর্ম করেন বা খেলাধূলা করেন, তাদের ক্ষেত্রে পুরনো ইনজুরি তাৎক্ষণাত চিকিৎসা না নিয়ে অবহেলা করলে পরবর্তীতে অস্টিওআর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।
দৈনন্দিন অভ্যাস: বিশেষ করে এমন কাজ বা কার্যক্রম, যা নির্দিষ্ট জয়েন্টে বারবার চাপ দেয়, তা কার্টিলেজ ক্ষয় এবং জয়েন্টের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে। ভারি ওজন বহন করা, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করা, অথবা একটানা হাঁটু বা হিপের ওপর চাপ ফেলে এমন কাজ করার ফলে জয়েন্টগুলো ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের অভ্যাসের ফলে কার্টিলেজ দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিসের লক্ষণ, যেমন ব্যথা ও ফোলাভাব, দেখা দেয়।
বায়োমেকানিকাল কারণ: শরীরের অস্বাভাবিক গঠন বা অপ্রাকৃত জয়েন্ট নড়াচড়া অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। যেমন, যদি হাঁটুর হাড় বা পায়ের গঠন স্বাভাবিকের তুলনায় ভিন্ন হয়, তাহলে জয়েন্টে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং কার্টিলেজ দ্রুত ক্ষয় হতে শুরু করে। এছাড়া, জয়েন্টে সঠিকভাবে ভারসাম্য রক্ষা না হলে চলাচলের সময় হাড়ের ওপর অতিরিক্ত ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়, যা ধীরে ধীরে কার্টিলেজ ক্ষয় এবং জয়েন্টে ব্যথা ও ফোলাভাবের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে, বায়োমেকানিকাল সমস্যাগুলি অস্টিওআর্থ্রাইটিসের প্রবণতা বাড়াতে সহায়ক (4)।
অস্টিও আর্থ্রাইটিস এর লক্ষণ/ অস্টিও আর্থ্রাইটিস জনিত কুচকি ব্যথা (অস্টিও আর্থ্রাইটিস জনিত হিপ জয়েন্টে ব্যথা)
অস্টিওআর্থ্রাইটিসজনিত হিপ জয়েন্টে ব্যথার লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় এবং সময়ের সাথে সাথে তীব্র হতে থাকে। এই রোগের কিছু সাধারণ লক্ষণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
জয়েন্টে ব্যথা: সাধারণত জয়েন্টের কার্টিলেজ ক্ষয়ের কারণে ঘটে, যা হাড়ের প্রান্তগুলোকে ঘর্ষণ থেকে রক্ষা করে এবং মসৃণ চলাচল নিশ্চিত করে। কার্টিলেজ ক্ষয়প্রাপ্ত হলে হাড়ের মধ্যে সরাসরি ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়, যা ব্যথা ও অস্বস্তির কারণ হয়। এই ব্যথা প্রাথমিকভাবে নিতম্ব এবং উরুতে অনুভূত হয়, তবে সময়ের সাথে সাথে এটি হাঁটু এবং পায়ের নিচের অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। হিপ জয়েন্টে ব্যথা সাধারণত হাঁটা, দাঁড়ানো বা বসার সময় তীব্র হয়ে ওঠে এবং দীর্ঘক্ষণ বিশ্রামের পর পুনরায় চলাচল শুরু করলে ব্যথা আরও বাড়তে পারে।
জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া: হিপ জয়েন্টের কার্টিলেজ ক্ষয়ের কারণে জয়েন্টের স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় এবং জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায়। ফলে, আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য চলাফেরা করা বা স্বাভাবিক গতিতে হাঁটা কঠিন হয়ে পড়ে। এই শক্তভাব কিছু সময় চলাফেরা বা হালকা ব্যায়ামের পর কিছুটা কমে আসতে পারে, তবে দীর্ঘ সময় বিশ্রাম নিলে বা বসে থাকার পর আবারও তীব্রভাবে ফিরে আসে। জয়েন্টের এই শক্ত হয়ে যাওয়া দৈনন্দিন কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে এবং হাঁটা, বসা বা সিঁড়ি বেয়ে ওঠার মতো কাজগুলো করা আরও কষ্টকর হয়ে ওঠে।
চলাচলের সীমাবদ্ধতা: অস্টিওআর্থ্রাইটিসজনিত হিপ জয়েন্টে ব্যথা চলাচলের সীমাবদ্ধতা তৈরি করে, যা ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনে বেশ প্রভাব ফেলে। কার্টিলেজের ক্ষয় ও জয়েন্টের ঘর্ষণের কারণে হিপ জয়েন্টের স্বাভাবিক গতিশীলতা কমে আসে, ফলে সঠিকভাবে চলাফেরা করা কঠিন হয়ে পড়ে। সিঁড়ি বেয়ে ওঠা, নিচু হয়ে বসা, বা মাটি থেকে কোনো বস্তু তোলার মতো কাজগুলো করতে প্রচুর কষ্ট হয়। এমনকি দীর্ঘ সময় হাঁটতে গেলে ব্যথা ও অস্বস্তি আরও বেড়ে যায়, ফলে চলাচল ধীর হয়ে পড়ে এবং অনেক সময় খুঁড়িয়ে হাঁটার প্রবণতাও দেখা দেয়। হিপ জয়েন্টের এই সীমাবদ্ধতা ব্যথার তীব্রতা আরও বাড়িয়ে তোলে এবং ব্যালেন্স রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে, যা ব্যক্তির স্বাধীন চলাচলের ক্ষমতাকে ব্যাপকভাবে সীমিত করে।
ফোলাভাব এবং প্রদাহ: কার্টিলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হলে হাড়ের মধ্যে ঘর্ষণ বেড়ে যায়, যা হিপ জয়েন্টে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এই প্রদাহের ফলে জয়েন্টের চারপাশে ফোলাভাব দেখা দেয়, যা ব্যথা ও অস্বস্তি বাড়িয়ে তোলে। হিপ জয়েন্টে এই ফোলাভাবের কারণে জয়েন্টটি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে, ফলে অল্প চাপ বা নড়াচড়ায়ও তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়।
রাতে বা বিশ্রামের সময় ব্যথা বেড়ে যাওয়া: অস্টিওআর্থ্রাইটিসজনিত হিপ জয়েন্টে ব্যথা রাতে বা বিশ্রামের সময় আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে। দিনের বেলা চলাচল বা কাজের সময় এই ব্যথা সামান্য হলেও কম অনুভূত হয়, কারণ রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং জয়েন্টগুলো সচল থাকে। তবে, রাতে শুয়ে থাকার সময় বা দীর্ঘ সময় বিশ্রামের পর জয়েন্টে রক্ত সঞ্চালন কমে যায় এবং জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায়, ফলে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায়। এই কারণে, রাতে ঘুমাতে গেলে হিপ জয়েন্টে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। (5)
হিপজয়েন্টে অস্টিও আর্থ্রাইটিস এর চিকিৎসা
হিপ জয়েন্টে অস্টিওআর্থ্রাইটিসের চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যথা নিয়ন্ত্রণ, জয়েন্টের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন। নিচে হিপ জয়েন্টে অস্টিওআর্থ্রাইটিসের জন্য কিছু সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো:
ওষুধ: হিপ জয়েন্টে অস্টিওআর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ওষুধ প্রধানত ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে ব্যবহৃত হয়। মৃদু থেকে মাঝারি ব্যথার জন্য অ্যাসিটামিনোফেন সাধারণত ব্যবহৃত হয়, যা ব্যথা উপশমে সহায়ক। এছাড়া, প্রদাহ কমাতে আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেনের মতো অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ ব্যবহৃত হয়, যা জয়েন্টের ফোলাভাব ও ব্যথা হ্রাসে কার্যকর। কিছু ক্ষেত্রে তীব্র ব্যথার উপশমের জন্য কর্টিকোস্টেরয়েড ইনজেকশন সরাসরি হিপ জয়েন্টে প্রয়োগ করা হয়, যা প্রদাহ কমিয়ে সাময়িকভাবে ব্যথা উপশম করে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কেন হয়
ফিজিওথেরাপি: হিপ জয়েন্টে অস্টিওআর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি অত্যন্ত কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা মূলত হিপজয়েন্টের ব্যথা কমানো সহ নমনীয়তা বাড়ানো এবং চলাচলের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ম্যানুয়াল এক্সারসাইজ প্রোগ্রামের মাধ্যমে হিপ জয়েন্টের পেশি ও লিগামেন্টগুলোর স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানো সম্ভব যা জয়েন্টে চাপ কমায় যার ফলে হাঁটা এবং শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে।
বাংলাদেশে বর্তমানে হিপ জয়েন্টে অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকগন বিভিন্ন ম্যানুয়াল টেকনিক ব্যাবহার করে থাকেন যার মধ্যে SDM( Structural Diagnosis & Management) অন্যতম। বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন ফিজিওথেরাপি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একমাত্র ASPC ম্যানু্পুলেশন থেরাপি সেন্টার (House #U64, Noorjahan Road Mohammadpur, Dhaka-1207) SDM( Structural Diagnosis & Management) টেকনিক ব্যাবহার করে হিপ জয়েন্টের মুভমেন্ট বাড়ানো সহ সংশ্লিষ্ঠ মাংশপেশীর (গ্লুটিয়াল, আইলিওপসোয়াস, হ্যামস্ট্রিং, অ্যাডাক্টর,টেনসার ফ্যাসিয়া ল্যাটে) শক্তি বৃদ্ধি করা হয় যার ফলে হিপ জয়েন্ট আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে।
জয়েন্ট সাপোর্ট: হিপ জয়েন্টে জয়েন্ট সাপোর্টের জন্য প্রায়ই লাঠি বা ক্রাচ ব্যবহার করা হয়, যা শরীরের ওজনের কিছুটা ভারসাম্য বজায় রেখে হিপ জয়েন্টের ওপর চাপ কমায়। লাঠি সাধারণত ভাল পা যেদিকে সেই হাতে ব্যবহার করা হয়, যাতে হাঁটার সময় ভারসাম্য রক্ষা করা সহজ হয়। এছাড়া, বিশেষ ধরনের কোমরের সাপোর্ট বেল্টও কিছু ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে, যা হিপ এবং কোমরের জয়েন্টগুলোতে সঠিকভাবে স্থিতিশীলতা প্রদান করে। এই ধরনের সাপোর্ট ব্যবহারে চলাচলের সময় হিপ জয়েন্টে ঘর্ষণ ও ব্যথা কম অনুভূত হয়, যা রোগীর দৈনন্দিন কার্যক্রমে সহায়ক।
জীবনধারায় পরিবর্তন: দৈনন্দিন কাজের ধরণে পরিবর্তন এনে জয়েন্টের ওপর চাপ কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে জয়েন্টের ওপর চাপ কমানো যায় এবং ব্যথা ও অস্বস্তি নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। প্রথমত, অতিরিক্ত ওজন হিপ জয়েন্টে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
পাশাপাশি ভারি কাজ এড়ানো, দীর্ঘ সময় বসে বা দাঁড়িয়ে না থাকা এবং নিয়মিত বিরতিতে হালকা হাঁটা বা স্ট্রেচিং করা হিপ জয়েন্টের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক। জুতার ক্ষেত্রে আরামদায়ক এবং হালকা জুতা ব্যবহার করা উচিৎ, যা হাঁটার সময় শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং জয়েন্টে চাপ কমায়। নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে জয়েন্টের নমনীয়তা বাড়ানোও উপকারী। এই জীবনধারাগত পরিবর্তনগুলো অস্টিওআর্থ্রাইটিসের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং দৈনন্দিন কার্যক্রমে স্বাচ্ছন্দ্য আনতে সহায়ক।
সার্জারি: সার্জারির মধ্যে প্রধানত হিপ রিপ্লেসমেন্ট (হিপ প্রতিস্থাপন) প্রক্রিয়াটি ব্যবহৃত হয়, যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হিপ জয়েন্টের অংশ বা সম্পূর্ণ জয়েন্টটি কৃত্রিম জয়েন্ট দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়। এই কৃত্রিম জয়েন্ট মসৃণভাবে চলাচল নিশ্চিত করে এবং ব্যথা কমাতে সহায়ক হয়। হিপ রিপ্লেসমেন্টের পর রোগীর ব্যথা অনেকাংশে উপশম পায় এবং স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে সক্ষম হয়। তবে, এই সার্জারির পর ফিজিওথেরাপি এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলোর মাধ্যমে নতুন জয়েন্টের কার্যক্ষমতা ও স্থিতিশীলতা উন্নত করা হয়।
তথ্যসূত্র
- Wieland, H.A., Michaelis, M., Kirschbaum, B.J. and Rudolphi, K.A., 2005. Osteoarthritis—an untreatable disease?. Nature reviews Drug discovery, 4(4), pp.331-344. https://www.nature.com/articles/nrd1693
- Chen, D.I., Shen, J., Zhao, W., Wang, T., Han, L., Hamilton, J.L. and Im, H.J., 2017. Osteoarthritis: toward a comprehensive understanding of pathological mechanism. Bone research, 5(1), pp.1-13. https://www.nature.com/articles/boneres201644
- Spector, T.D. and MacGregor, A.J., 2004. Risk factors for osteoarthritis: genetics. Osteoarthritis and cartilage, 12, pp.39-44. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S106345840300253X
- Guilak, F., 2011. Biomechanical factors in osteoarthritis. Best practice & research Clinical rheumatology, 25(6), pp.815-823. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1521694211001690
- Woolhead, G., Gooberman‐Hill, R., Dieppe, P. and Hawker, G., 2010. Night pain in hip and knee osteoarthritis: a focus group study. Arthritis care & research, 62(7), pp.944-949. https://acrjournals.onlinelibrary.wiley.com/doi/abs/10.1002/acr.20164
- ডেঙ্গু জ্বরের ৭টি সতর্কীকরণ লক্ষণ ২০২৪ | ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার - November 28, 2024
- হাঁটু ব্যথার জন্য কার্যকারী ব্যায়াম গুলো জেনে নিন - November 28, 2024
- লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস কমানোর উপায়? ও স্পন্ডাইলোসিস কি? - November 5, 2024