অপারেশনের আগে ও পরে অর্থাৎ সার্জিক্যাল কন্ডিশনে ফিজিওথেরাপির প্রয়োজনীয়তা. যে সমস্ত রোগ সাধারণত ঔষধে উপকার হয় না। সেসব ক্ষেত্রেই অপারেশনের পরে রোগীকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে পুনর্বাসন করতে এবং রোগীকে অপারেশন উপযোগী করতে একজন ফিজিওথেরাপিস্টের ভূমিকা অপরিসীম।

সার্জারির পূর্বে ফিজিওথেরাপির উদ্দেশ্য-

  • সার্জারি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়া
  • শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি করা
  • বিভিন্ন জয়েন্টের প্যাসিভ মুভমেন্ট দ্বারা জয়েন্ট ঠিক রাখা
  • মাংসপেশী যাতে শক্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা
  • সার্জারী পরবর্তী ফিজিওথেরাপি সম্পর্কে ধারণা দেয়
  • রোগীকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দেয়া
  • রোগীর যদি ফিজিওথেরাপি লাগে তা দিয়ে রোগীকে সার্জারি উপযোগী করে তোলা।

সার্জারির পরে ফিজিওথেরাপির উদ্দেশ্য:

  • ফুসফুস যাতে বন্ধ না হয়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট না হয় তা রোধে ব্যবস্থা নেয়া বুকে কফ বন্ধ বা জমা রোধ করা।
  • শীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করা বা ঠিক রাখা।
  • নির্দিষ্ট সময় পরপর শরীরের অবস্থান পরিবর্তন করা যাতে কোনো অংশ বেশি চাপ না পড়ে এবং ঘায়ের সৃষ্টি না হয়
  • মাংসপেশী যাতে শুকিয়ে না যায় তা খেয়াল রাখা
  • জয়েন্টের প্রোপ্রিওসেপসন ট্রেনিং দেয়া
  • বিভিন্ন পর্যায়ে পুনর্বাসনের সকল ধাপ পরিপূর্ণ করা।

চিকিৎসা পদ্ধতি :

রোগীর সার্জারি হবে কি হবে না এ বিষয়ে পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নিতে হবে মেডিক্যাল টিমকে। সার্জারি যদি না হয় তাহলে একজন ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীকে অ্যাসেসমেন্ট করে চিকিৎসা শুরু করবেন। ব্যথা কমানো সহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান কল্পে বিভিন্ন ধরনের থেরাপিউটিক পদ্ধতি চালু করেন। আর যদি সার্জারি হয় তাহলে উক্ত রোগীর জন্য দরকার এমডিটি বা মাল্টি ডিসিপ্লিনারী টিম। যেখানে একজন ফিজিওথেরাপিস্টের ভূমিকা অতীব জরুরী। কিভাবে সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস স্থায়ীভাবে নিরাময় করা যায়

আরও পড়ুন  ডায়াবেটিস কমানোর উপায়

অর্থোপেডিক্স কন্ডিসনে (সার্জারিতে) ফিজিওথেরাপি :

প্রয়োজন অনুযায়ী  রোগীকে বিশ্রামে রাখতে হবে। আর সে অবস্থায় ফিজিওথেরাপিস্ট নিজ অ্যাসেসমেন্ট অনুযায়ী থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ শুরু করবেন। যখন তার বসানো বা হাঁটানো দরকার সে অবস্থায় তাকে বসাতে বা হাঁটতে হবে এবং ব্যালেন্স প্রশিক্ষণ দিতে হবে। জয়েন্ট যাতে শক্ত হয়ে না যায় তা প্রতিরোধ করার জন্য অবশ্যই প্যাসিভ মুভমেন্ট দিয়ে জয়েন্ট রেন্স ঠিক রাখতে হবে এবং মাংসপেশী শক্তি ঠিক রাখার অবশ্যই আইসোমেট্রিক স্ট্রেথিনিং এক্সারসাইজ করাতে হবে। জয়েন্ট নির্ভরতার জন্য অবশ্যই বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ব্যায়ম অনুশীলন করতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন সাহায্যকারী ডিভাইসেসস (ক্রাস, ইনপ্লিন্ট Splint, Lumber curset লাম্বার কুরসেট, Knee cap, Cervical collr, টেইলর ব্রেস ইত্যাদি) ব্যবহার করতে হবে।

বিভিন্ন সার্জারীর পর চেস্ট সমস্যায় ফিজিওথেরাপি :

অপারেশনের পর সাধারণত ফুসফসের কোনো না কোনো অংশে বাতাস নাও ঢুকতে পারে। এই সমস্যায় রোগীকে ডিপ ব্রেদিং সহ বিভিন্ন পর্যায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে উক্ত সমস্যা সমাধান করা যায় এবং বুকে জমা কফ বের করার

জন্য অ্যাকটিভ ব্রেদিং সাইকেল পূরণ করা হয় অথবা পশ্চারাল ড্রেইনেজ বা সাকশনের মাধ্যমে ফুসফুসকে মিউকাস বা কফ মুক্ত করা হয়।

প্রতিটি অপারেশনের রোগীকে তার বিছানার অবস্থান নির্দিষ্ট সময় পরপর পরিবর্তন করা উচিত। এ অবস্থায় রোগীর ডিপ ভেনাস থ্রমবোসিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই রোগীকে প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যাকটিভ থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ দিতে হবে এবং নিয়মিত দুই ঘন্টা পর পর শারীরিক অবস্থান পরিবর্তন করার উদেশ দিতে হবে।

সকল ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা অবশ্যই নিতে হবে একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের মাধ্যমে এবং পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসনের সকল দিকে যাতে পরিপূর্ণ হয় তার পুরোপুরি দায়িত্ব একজন ফিজিওথেরাপিস্টের।

Follow me
Latest posts by Dr. M Shahadat Hossain (see all)
আরও পড়ুন  এসিএল ইনজুরি কি, এর চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
পরামর্শ নিতে 01877733322