সায়াটিকা হলো কোমরের নিচ থেকে শুরু হয়ে নিতম্ব এবং পায়ের পেছনের দিক দিয়ে ছড়িয়ে যাওয়া ব্যথা। মূলত কোমরের মেরুদণ্ডের হাড়ের মাঝখানের নরম ডিস্কটি বাইরে বেরিয়ে (হার্নিয়েটেড ডিস্ক) বা মেরুদণ্ডের ভেতরের রাস্তা বা ক্যানেল সরু হয়ে গেলে (স্পাইনাল স্টেনোসিস) সায়াটিক নার্ভে চাপ পড়ে, এবং তখন এই ব্যথার সৃষ্টি হয় (Valat et al., 2010)। এই ব্যথাটি তীক্ষ্ণ, জ্বালাপোড়া ধরনের, অনেক সময় পায়ে ঝিঁঝিঁ লাগে বা অবশ লাগে। দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা আরও বাড়ে। ফলে হাঁটা-চলা, বসা, ভারী জিনিস তোলা এবং দৈনন্দিন কাজকর্ম খুব কষ্টকর হয়ে ওঠে, যা রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এবং কর্মক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করে (Konstantinou & Dunn, 2008)।

সাধারণ মানুষের ভুল ধারণা

সায়াটিকার সঙ্গে অতিরিক্ত ওজনের সম্পর্ক:অনেকেই মনে করেন, সায়াটিকা হওয়ার প্রধান কারণ হলো শরীরের অতিরিক্ত ওজন। আসলে ওজন বাড়লে কোমরের হাড় ও নার্ভের ওপর চাপ বাড়ে এবং ডিস্কের ক্ষয়ও দ্রুত হয়, তবে এটি সায়াটিকার একমাত্র কারণ নয়। ওজন ছাড়াও অন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো—হার্নিয়েটেড ডিস্ক (ডিস্ক সরে যাওয়া), নার্ভে প্রদাহ হওয়া, পাইরিফর্মিস সিন্ড্রোম (নিতম্বের পেশির অতিরিক্ত চাপ), এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় অসচেতনতা (Shiri et al., 2014)। তাই শুধু ওজনকে দায়ী করলে সঠিক চিকিৎসার সুযোগ সীমিত হয়ে যায়।

ওজন কমানো কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং কতটা কার্যকর?: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরের অতিরিক্ত ওজনের সঙ্গে সায়াটিকার ব্যথার সম্পর্ক আছে। Shiri এবং তার সহযোগীরা (২০১৪) পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ওজনসম্পন্ন ব্যক্তিদের সায়াটিকার ঝুঁকি স্বাভাবিক ওজনের মানুষের তুলনায় প্রায় ২৩% বেশি এবং স্থূল (খুব বেশি মোটা) মানুষের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি প্রায় ৪০% বেশি (Shiri et al., 2014)। এছাড়া ওজন কমানোর মাধ্যমে পিঠের মেরুদণ্ড এবং স্নায়ুর ওপর চাপ কমে যায়, যার ফলে ব্যথা কমে এবং চলাফেরার ক্ষমতাও বেড়ে যায় (Leboeuf-Yde, 2000)। এই তথ্যগুলো সাধারণ মানুষ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য খুবই জরুরি, যেন তারা সায়াটিকা নিয়ন্ত্রণে ওজন কমানোর গুরুত্ব ও এর সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পান।

সায়াটিক নার্ভ কোথায় থাকে এবং এর কাজ কী?
সায়াটিক নার্ভ আমাদের শরীরের সবচেয়ে লম্বা এবং মোটা একটি স্নায়ু। এটি কোমরের নিচ থেকে শুরু হয় (মেরুদণ্ডের L4-S3 অংশ থেকে) এবং নিতম্ব হয়ে পায়ের পেছনের দিক দিয়ে পায়ের পাতার নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত। এই নার্ভ মূলত দুটি বড় শাখায় বিভক্ত: টিবিয়াল নার্ভ ও কমন ফিবুলার নার্ভ (Ropper & Zafonte, 2015)। এর প্রধান কাজ হলো পায়ের পেশিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা, পায়ে অনুভূতি পৌঁছে দেওয়া এবং শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখা।

সায়াটিক নার্ভে কেন ব্যথা হয়?
সায়াটিক নার্ভে ব্যথা মূলত তখনই হয় যখন এই নার্ভে কোনো কারণে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় হার্নিয়েটেড ডিস্ক, অর্থাৎ মেরুদণ্ডের হাড়ের মাঝে থাকা ডিস্কের ভেতরের জেলির মতো অংশ বাইরে বেরিয়ে নার্ভের ওপর চাপ দেয়। এছাড়া মেরুদণ্ডের ভেতরের পথ সরু হয়ে গেলে (স্পাইনাল স্টেনোসিস) সরাসরি নার্ভের ওপর চাপ পড়ে এবং ব্যথার সৃষ্টি হয় (Konstantinou & Dunn, 2008)। আবার, নিতম্বের ভেতরে থাকা একটি বিশেষ পেশি (পাইরিফর্মিস পেশি) শক্ত বা সংকুচিত হলে সায়াটিক নার্ভ চাপা পড়ে ব্যথা হতে পারে (Hopayian et al., 2010)।

অতিরিক্ত ওজন কীভাবে সায়াটিকা ব্যথার কারণ হতে পারে?

অতিরিক্ত ওজন কীভাবে সায়াটিকা ব্যথার কারণ হতে পারে
অতিরিক্ত ওজন কীভাবে সায়াটিকা ব্যথার কারণ হতে পারে

অতিরিক্ত ওজনের কারণে কোমরের হাড়ে চাপ বেড়ে যাওয়া: শরীরের ওজন বেশি থাকলে, বিশেষত পেটে বাড়তি চর্বি জমলে, মেরুদণ্ডের নিচের অংশে বাড়তি চাপ পড়ে। এতে মেরুদণ্ডের ডিস্ক ও জয়েন্টগুলো দ্রুত ক্ষয় হতে শুরু করে এবং ডিস্ক হার্নিয়েশন হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

কোমরের অতিরিক্ত বাঁকের কারণে নার্ভে চাপ পড়া: বেশি ওজনের কারণে কোমরের স্বাভাবিক আকৃতিও বদলে যায়, ফলে কোমরের হাড়গুলো সামনের দিকে অস্বাভাবিকভাবে বাঁকা হয়ে যায়, যাকে হাইপারলর্ডোসিস বলে। এই অতিরিক্ত বাঁক নার্ভের ওপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করে এবং ব্যথা বাড়ায় (Been & Kalichman, 2014)।

পেশি ও জয়েন্ট দুর্বল হয়ে মেরুদণ্ডের স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়া: ওজন বেশি হলে পিঠ ও কোমরের পেশিগুলো অতিরিক্ত চাপ সহ্য করে দুর্বল হতে থাকে। দুর্বল পেশিগুলো ঠিকমতো মেরুদণ্ডের ভার ধরে রাখতে পারে না। এতে নার্ভ ও ডিস্কের ওপর চাপ পড়ে প্রদাহ তৈরি হয়, যার ফলে সায়াটিকার ব্যথা আরও বেড়ে যায় (Shiri et al., 2014)।

ওজন কমালে কীভাবে সায়াটিকা ব্যথা কমে?

ওজন কমালে কীভাবে সায়াটিকা ব্যথা কমে
ওজন কমালে কীভাবে সায়াটিকা ব্যথা কমে

মেরুদণ্ডের ডিস্কে চাপ কমে যায়: শরীরের অতিরিক্ত ওজন মেরুদণ্ডে সরাসরি চাপ সৃষ্টি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ওজন কমানোর ফলে কোমরের নিচের অংশের ডিস্ক ও নার্ভের ওপর চাপ কমে, ডিস্ক হার্নিয়েশনের ঝুঁকি কমে এবং ব্যথার তীব্রতা হ্রাস পায় (Shiri et al., 2014)।

নার্ভের প্রদাহ (ফোলা) কমে যায়: অতিরিক্ত ওজন থাকলে শরীরে প্রদাহ-সৃষ্টিকারী উপাদান (inflammatory cytokines) বেড়ে যায়। ওজন কমালে শরীরে প্রদাহ কমে এবং প্রদাহজনিত নার্ভের ব্যথা (neuropathic pain) ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে।

শরীরের ভারসাম্য ও বসাদাঁড়ানোর ভঙ্গি ভালো হয়: অতিরিক্ত ওজনের কারণে শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং কোমর অস্বাভাবিকভাবে সামনে দিকে বাঁকা হয় (হাইপারলর্ডোসিস)। ওজন কমলে শরীরের ভারসাম্য ও ভঙ্গি (posture) ভালো হয়, যার ফলে মেরুদণ্ডের স্থিতিশীলতা ফিরে আসে এবং নার্ভের ওপর চাপ কমে যায় (Been & Kalichman, 2014)।

ওজন কমানোই কি সায়াটিকার একমাত্র সমাধান?

কেন ওজন বেশি থাকলেও অনেকের সায়াটিকা হয় না?: অনেকেই মনে করেন অতিরিক্ত ওজন থাকলেই সায়াটিকা ব্যথা হবে। আসলে বিষয়টি পুরোপুরি সঠিক নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, স্থূলতা সায়াটিকার ঝুঁকি বাড়ালেও এটি একমাত্র কারণ নয়। জিনগত বৈশিষ্ট্য, শরীরের গঠন, পেশির শক্তি এবং দৈনন্দিন কাজের ধরন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেরই ওজন বেশি হলেও তাদের মেরুদণ্ডের গঠন, পেশির শক্তি এবং সক্রিয় জীবনযাত্রার কারণে সায়াটিকা ব্যথা হয় না (Shiri et al., 2014; Leboeuf-Yde, 2000)।

শারীরিক এক্সারসাইজ ও ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব: সায়াটিকা ব্যথা কমাতে ফিজিওথেরাপি, নিয়মিত স্ট্রেচিং এবং পেশি শক্তিশালী করার এক্সারসাইজ খুব কার্যকর। এসব ব্যায়াম মেরুদণ্ডকে স্থিতিশীল রাখে এবং স্নায়ুর ওপর চাপ কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শে নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে প্রায় ৬০-৭০% রোগীর ব্যথায় লক্ষণীয় উন্নতি হয় (Fernandez et al., 2015; Luijsterburg et al., 2007)।

শুধু ওজন কমানোই যথেষ্ট নয়: ওজন কমানো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটাকে একমাত্র সমাধান ভাবলে ভুল হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, সায়াটিকার সফল চিকিৎসার জন্য ওজন কমানোর সঙ্গে নিয়মিত এক্সারসাইজ, ফিজিওথেরাপি, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং প্রয়োজনে ওষুধ—এই সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থাই বেশি কার্যকর (Atlas & Deyo, 2001)।

ওজন কমানোর পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার গুরুত্ব

ওজন কমানোর পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার গুরুত্ব
ওজন কমানোর পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার গুরুত্ব

ওজন নিয়ন্ত্রণ ও এক্সারসাইজের সম্মিলিত গুরুত্ব: সায়াটিকা ব্যথা কমানোর জন্য শুধু ওজন কমানোর চেয়ে ওজন কমানোর সাথে নিয়মিত এক্সারসাইজের সমন্বয় বেশি উপকারী। এই সমন্বিত চিকিৎসা ব্যথা নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদে ভালো ফলাফল দেয়।

শুধু ওজন কমালে কী অসুবিধা হতে পারে?: শুধু ওজন কমালে কিন্তু শরীরের পেশিগুলো দুর্বল হতে পারে, শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, যা পরে আবার মেরুদণ্ড ও নার্ভের ওপর চাপ বাড়াতে পারে। ফলে ব্যথা ফিরে আসার ঝুঁকি থেকে যায় (Heneweer et al., 2011)।

দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য সম্মিলিত পদ্ধতির গুরুত্ব: সায়াটিকা ব্যথা থেকে দীর্ঘস্থায়ী মুক্তির জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে ফিজিওথেরাপি এবং নিয়মিত এক্সারসাইজের সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি। গবেষণা অনুসারে, এই সম্মিলিত পদ্ধতিতে প্রায় ৭০-৮০% রোগী দীর্ঘদিন ভালো থাকেন এবং ব্যথার পুনরাবৃত্তিও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে (Luijsterburg et al., 2007; Fernandez et al., 2015)।

যাদের ওজন বেশি নয়, তাদের সায়াটিকা ব্যথা কমানোর উপায়

নির্দিষ্ট এক্সারসাইজ ও স্ট্রেচিং: যাদের ওজন স্বাভাবিক, তাদেরও সায়াটিকা হতে পারে। এর প্রধান কারণ হতে পারে পেশির দুর্বলতা বা নিতম্বের গভীরে থাকা পাইরিফর্মিস পেশির অতিরিক্ত টান। এ ধরনের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট স্ট্রেচিং, যেমন পাইরিফর্মিস স্ট্রেচ, এবং কোমর ও কোরের পেশি শক্তিশালী করার এক্সারসাইজ করলে মেরুদণ্ডের স্থিতিশীলতা বাড়ে এবং ব্যথা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

দৈনন্দিন অভ্যাসগত পরিবর্তন: সাধারণ কিছু অভ্যাস বদলালে সায়াটিকার ব্যথায় অনেকটাই আরাম পাওয়া যায়। দীর্ঘক্ষণ একভাবে বসে না থেকে মাঝে মাঝে উঠে হাঁটা, সোজা হয়ে বসা ও দাঁড়ানো, এবং কাজে নিয়মিত বিরতি নেওয়ার মতো সহজ অভ্যাসগুলো দীর্ঘমেয়াদে ব্যথা কমাতে খুবই কার্যকর।

ফিজিওথেরাপির সঠিক পদ্ধতি: ফিজিওথেরাপিতে বিশেষ কিছু পদ্ধতি, যেমন ম্যানুয়ালম্যানিপুলেশন থেরাপি কৌশল সায়াটিকার জন্য বেশ কার্যকর। গবেষণায় দেখা গেছে, SDM (Structural Diagnosis & Management) পদ্ধতি মেরুদণ্ডের নমনীয়তা বাড়ায় ও ব্যথা কমায় (Hossain M.S et al., 2023)।

চূড়ান্ত পরামর্শ ও বিশ্লেষণ

ওজন কমানো জরুরি, কিন্তু বাধ্যতামূলক নয়: অতিরিক্ত ওজন সায়াটিকার ঝুঁকি বাড়ালেও এর মানে এই নয় যে, সব সায়াটিকা রোগীকেই ওজন কমাতে হবে। অনেকের ওজন কম থাকার পরও ডিস্ক হার্নিয়েশন বা পেশির ভারসাম্যহীনতার কারণে ব্যথা হয়। তাই রোগীর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে (Konstantinou & Dunn, 2008)।

শুধু ওজন কমানোই যথেষ্ট নয়: ওজন কমানো কখনোই সায়াটিকার একমাত্র সমাধান নয়। চিকিৎসক বা ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী নির্ধারণ করেন যে, ওজন কমানো জরুরি কিনা। অনেক সময় ওজন কমানোর চেয়ে ফিজিওথেরাপি, এক্সারসাইজ ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন বেশি উপকারী হতে পারে (Atlas & Deyo, 2001)।

দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা নিরসনে সমন্বিত ব্যবস্থা প্রয়োজন: সায়াটিকার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নিয়মিত ফিজিওথেরাপি, এক্সারসাইজ ও দৈনন্দিন অভ্যাসের পরিবর্তন—সবকিছু মিলিয়েই সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। গবেষণা অনুযায়ী, এই সমন্বিত পদ্ধতি প্রয়োগ করলে প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ রোগী দীর্ঘমেয়াদি উপকার পান (Fernandez et al., 2015; Luijsterburg et al., 2007)।

সায়াটিকা ব্যথা কমাতে শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত উপায়। গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে অতিরিক্ত ওজন থাকলে মেরুদণ্ডের ডিস্ক ও স্নায়ুর ওপর চাপ বেড়ে যায়, যা সায়াটিকা ব্যথার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয় (Shiri et al., 2014)। তবে এটা মনে রাখা দরকার, শুধু ওজন কমালেই সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয় না। একই ওজনের অনেকের মধ্যে কেউ কেউ ব্যথায় আক্রান্ত হন, আবার কেউ কেউ হন না। কারণ প্রতিটি মানুষের শরীরের গঠন, পেশির শক্তি এবং ভারসাম্য এক রকম নয় (Leboeuf-Yde, 2000)।

তাই দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য শুধু ওজন নিয়ন্ত্রণ করাই যথেষ্ট নয়। বরং ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নিয়মিত ফিজিওথেরাপি, স্ট্রেচিং, পেশি শক্তিশালী করার এক্সারসাইজ এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রার উন্নতি—এসব মিলিয়েই একটি সমন্বিত চিকিৎসা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গেছে, এই সমন্বিত পদ্ধতি গ্রহণ করলে প্রায় ৭০% থেকে ৮০% রোগীর দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা অনেক কমে যায় এবং পুনরায় ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে (Fernandez et al., 2015; Luijsterburg et al., 2007)।

পরামর্শ নিতে 01877733322