ডায়াবেটিস এর লক্ষণ ও প্রতিকার. ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয়. ডায়াবেটিস রোগী কতদিন বাঁচে. ডায়াবেটিস এর কারণ ও প্রতিকার. ডায়াবেটিস এর স্বাভাবিক মাত্রা কত. ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়. ডায়াবেটিস হল একটি দীর্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) রোগ, যা কিনা তখনই ঘটে যখন শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন বা ব্যবহারের প্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দেয়। ইনসুলিন এক ধরনের হরমোন যা অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত হয় এবং এটি শরীরের কোষগুলিকে গ্লুকোজ (শর্করা) শোষণ করতে সহায়তা করে এবং গ্লুকোজ শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যখন শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে না বা ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ করে না, তখন রক্তে গ্লুকোজের স্তর বৃদ্ধি পায়, যা ডায়াবেটিস সৃষ্টি করে।

ডায়াবেটিস প্রধানত তিনটি প্রধান প্রকারে বিভক্ত:

  • টাইপ ১ ডায়াবেটিস: এটি একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের ইমিউন সিস্টেম অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকারী বিটা কোষগুলিকে আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে। এটি সাধারণত শিশু বা কিশোর বয়সে শুরু হয়।
  • টাইপ ২ ডায়াবেটিস: এটি সবচেয়ে সাধারণ প্রকারের ডায়াবেটিস, যা সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়। এতে শরীর ইনসুলিন ঠিকমতো উৎপাদন করতে পারে না বা ব্যবহার করতে পারে না।
  • গর্ভকালীন ডায়াবেটিস: এটি গর্ভাবস্থায় সাধারনত গর্ভাবস্থায় দেখা দেয় এবং গর্ভাবস্থার পরে সেরে যায়, তবে এটি ভবিষ্যতে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

ডায়াবেটিস একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যা, যা লক্ষ লক্ষ মানুষকে আক্রান্ত করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিসের প্রকোপ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটি একটি গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যা হয়ে উঠেছে।

প্রাদুর্ভাব

  • বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪৬৩ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক (২০-৭৯ বছর বয়সী) ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এই সংখ্যা ২০৪৫ সালের মধ্যে ৭০০ মিলিয়নে পৌঁছাতে পারে।
  • উন্নত দেশগুলির পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলিতেও ডায়াবেটিস রোগীর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  • টাইপ ২ ডায়াবেটিসের প্রাদুর্ভাব তূলনামুলকভাবে বেশি, কারণ এটি জীবনযাত্রার ধরণ ও খাদ্যাভ্যাসের সাথে সম্পর্কিত।

ডায়াবেটিস শুধু রোগীর শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরই প্রভাব ফেলে না, এটি মানসিক ও আর্থসামাজিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে। ডায়াবেটিসের কারণে হৃদরোগ, কিডনি রোগ, স্নায়ুর সমস্যা, চোখের সমস্যা এবং পায়ের ক্ষত সহ বিভিন্ন গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে। এছাড়া, ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা একটু ব্যয়বহুল, যা অনেক রোগীর আর্থিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে।

ডায়াবেটিসের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এই রোগের প্রভাব কমানো এবং রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব। সচেতনতা বৃদ্ধি, সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের মোকাবিলা করা যেতে পারে।

 

Table of Contents hide

ডায়াবেটিস হলে কি কি লক্ষণ দেখা দেয়?

ডায়াবেটিস হলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যা রোগের প্রকারভেদ ও ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। এখানে ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণগুলির বিশদ আলোচনা করা হলো:

অতিরিক্ত তৃষ্ণা ও মূত্রত্যাগঃ ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো অতিরিক্ত তৃষ্ণা পাওয়া (পলিডিপসিয়া) এবং ঘন ঘন মূত্রত্যাগ (পলিইউরিয়া)। রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেলে কিডনির মাধ্যমে বাড়তি গ্লুকোজ বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, যার ফলে মূত্রের পরিমাণ বেড়ে যায়। এই প্রক্রিয়ায় শরীর প্রচুর পরিমাণ পানি হারায়, যা অতিরিক্ত তৃষ্ণার সৃষ্টি করে। রোগীরা রাতে প্রায়শই ঘন ঘন মূত্রত্যাগ করতে ঘুম থেকে উঠে যান।

অতিরিক্ত ক্ষুধাঃ ডায়াবেটিসের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হলো অতিরিক্ত ক্ষুধা (পলিফেজিয়া)। ইনসুলিনের অভাব বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের কারণে শরীরের কোষগুলি পর্যাপ্ত গ্লুকোজ গ্রহণ করতে পারে না, ফলে শরীর শক্তির অভাব অনুভব করে। এই অবস্থায় প্রচুর খিদে পায় এবং রোগীদের বেশি খাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।

টাইপ-১ ডায়াবেটিসের লক্ষণ

ক্লান্তিঃ রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে বা ইনসুলিনের কার্যকারিতা কম থাকলে শরীর পর্যাপ্ত শক্তি পায় না। ফলে রোগীরা প্রায়ই ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করেন। দৈনন্দিন কাজকর্মে আগ্রহ হারানো এবং সহজেই ক্লান্ত হয়ে যাওয়া ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণ।

ওজন হ্রাসঃ ডায়াবেটিসের শুরুতে রোগীদের অপ্রত্যাশিতভাবে ওজন হ্রাস পেতে পারে। টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে, ইনসুলিনের অভাবের কারণে শরীর গ্লুকোজ থেকে শক্তি পায় না, ফলে শরীর ফ্যাট এবং পেশী থেকে শক্তি সংগ্রহ করে, যা ওজন হ্রাসের কারণ। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের কারণে ওজন হ্রাস পেতে পারে।

বেশি বেশি চিনি খেলে কি ডায়াবেটিস হয়?

বেশি বেশি চিনি খাওয়া সরাসরি ডায়াবেটিসের কারণ নয়, তবে এটি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ এবং ঝুঁকি উপাদানগুলো সম্পর্কে বিশদভাবে জানার জন্য নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

টাইপ ১ ডায়াবেটিস

টাইপ ১ ডায়াবেটিস একটি অটোইমিউন রোগ, যা কেবল তখনই ঘটে যখন শরীরের ইমিউন সিস্টেম অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলিকে আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে। এর সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি, তবে জেনেটিক এবং পরিবেশগত ফ্যাক্টর এর জন্য দায়ী হতে পারে। টাইপ ১ ডায়াবেটিসের সাথে চিনি খাওয়ার সরাসরি সম্পর্ক নেই।

টাইপ ২ ডায়াবেটিস

টাইপ ২ ডায়াবেটিস সাধারণত ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স এবং অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনের ঘাটতির কারণে হয়। এর প্রধান কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • জেনেটিক ফ্যাক্টর
  • স্থূলতা
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
  • কায়িক পরিশ্রমের অভাব

বেশি বেশি চিনি খাওয়া সরাসরি টাইপ ২ ডায়াবেটিসের কারণ না হলেও, এটি ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতার কারণ হতে পারে, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান ঝুঁকি। প্রক্রিয়াজাত চিনি এবং মিষ্টি পানীয় উচ্চ ক্যালোরি প্রদান করে, যা শরীরের ওজন বাড়ায় এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের ঝুঁকি বাড়ায়।

ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়

ডায়াবেটিস হলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এখানে যেসকল প্রধান সমস্যার জন্য ডায়াবেটিস দায়ী সেগুলো বিশদভাবে আলোচনা করা হলো:

হৃদরোগ এবং স্ট্রোকঃ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে। রক্তে মাত্রাতিরিক্ত শর্করা ধমনী প্রাচীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা ধমনীতে প্লাক জমা করে এবং রক্তপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে। এর ফলে হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

(নেফ্রোপ্যাথি) কিডনি রোগঃ ডায়াবেটিস কিডনির ক্ষতির (ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি) অন্যতম প্রধান কারণ। ডায়াবেটিস কিডনির ফিল্টারিং সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যা কিডনি ফেইলিউরের ঝুঁকি বাড়ায়। এর ফলে ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হতে পারে।

(নিউরোপ্যাথি) স্নায়ুর সমস্যাঃ ডায়াবেটিসের কারণে স্নায়ু বা নার্ভের ক্ষতি (নিউরোপ্যাথি) হতে পারে, যার ফলে সাধারণত হাত ও পায়ে ঝিনঝিন, ভাড়ভাড়, ব্যথা এবং সংবেদনশীলতা হ্রাস প্রকাশ পায়। দীর্ঘস্থায়ী ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে স্নায়ুর সমস্যা গুরুতর হতে পারে এবং রোগীর দৈনন্দিন জীবনে অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। কিভাবে সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস স্থায়ীভাবে নিরাময় করা যায়

(রেটিনোপ্যাথি) চোখের সমস্যাঃ ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি, গ্লুকোমা এবং ছানি পড়ার ঝুঁকি বাড়ায়। রেটিনোপ্যাথি চোখের রেটিনার ক্ষতি করে, যা দৃষ্টিশক্তি হ্রাস বা অন্ধত্বের কারণ হতে পারে। রক্তে শর্করার উচ্চ মাত্রা চোখের লেন্সে পানি প্রবাহ বাড়িয়ে দেয় ফলে রোগী চোখে ঝাপসা দেখে।

পায়ের ক্ষত এবং সংক্রমণঃ ডায়াবেটিসের কারণে ক্ষত বা সংক্রমণ সেরে উঠতে বেশি সময় লাগে। রক্তে উচ্চ শর্করার মাত্রা রক্তপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে, ত্বক ও অন্যান্য স্থানের ক্ষত সেরে উঠতে বেশি সময় নেয় এবং রোগীরা সহজেই সংক্রমিত হয়। এটি প্রায়ই আলসার এবং গুরুতর সংক্রমণের কারণ হতে পারে, যার ফলে কখনও কখনও অঙ্গচ্ছেদের (Amputation) প্রয়োজন হতে পারে।

ত্বকের সমস্যাঃ ডায়াবেটিস রোগীদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে, যেমন শুষ্ক ত্বক, সংক্রমণ এবং ত্বকের ওপর ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা দেয়। রক্তে উচ্চ মাত্রার শর্করা ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

দাঁতের সমস্যাঃ অতিরিক্ত সুগার মুখের সংক্রমণ এবং মাড়ির রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ডায়াবেটিস রোগীদের দাঁত এবং মাড়ির সমস্যা বেশি দেখা যায়  ।

(DKA) ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিসঃ টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস (DKA) একটি গুরুতর জটিলতা। ইনসুলিনের অভাবের কারণে শরীর ফ্যাট ভেঙ্গে শক্তি সংগ্রহ করে, যার ফলে কিটোন নামক রাসায়নিক তৈরি হয়। এটি রক্তকে অ্যাসিডিক করে তোলে এবং জীবনহুমকির পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। DKA এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, বমি, পেট ব্যথা, গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস, এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

হাইপোগ্লাইসেমিয়াঃ হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যন্ত কমে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা ইনসুলিন বা ঔষধ গ্রহণের পর খাবার না খাওয়ার ফলে হতে পারে। এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে কম্পন, ঘাম, দ্রুত হৃদস্পন্দন, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, এবং জ্ঞান হারানো।

ডায়াবেটিস এর স্বাভাবিক মাত্রা কত

ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা (ফাস্টিং ব্লাড গ্লুকোজ) এবং অন্যান্য পরীক্ষা ব্যবহৃত হয়। এখানে ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রক্তে শর্করার মাত্রা এবং স্বাভাবিক মাত্রা সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হলো:

খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা (Fasting Blood Glucose Level)

খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করার জন্য রোগীকে সাধারণত কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হয়। এরপর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

  • স্বাভাবিক মাত্রা: ৭০-১০০ মিগ্রা/ডেসিলিটার (mg/dL) বা ৩.৯-৫.৬ মিলিমোল/লিটার (mmol/L)
  • প্রী-ডায়াবেটিস: ১০০-১২৫ মিগ্রা/ডেসিলিটার (mg/dL) বা ৫.৬-৬.৯ মিলিমোল/লিটার (mmol/L)
  • ডায়াবেটিস: ১২৬ মিগ্রা/ডেসিলিটার (mg/dL) বা তার বেশি (৭.০ মিলিমোল/লিটার বা তার বেশি)

খাওয়ার পর ২ ঘণ্টা রক্তে শর্করার মাত্রা (Postprandial Blood Glucose Level)

খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নির্ণয় করা হয়।

  • স্বাভাবিক মাত্রা: ১৪০ মিগ্রা/ডেসিলিটার (mg/dL) এর নিচে বা ৭.৮ মিলিমোল/লিটার (mmol/L) এর নিচে
  • প্রী-ডায়াবেটিস: ১৪০-১৯৯ মিগ্রা/ডেসিলিটার (mg/dL) বা ৭.৮-১১.০ মিলিমোল/লিটার (mmol/L)
  • ডায়াবেটিস: ২০০ মিগ্রা/ডেসিলিটার (mg/dL) বা তার বেশি (১১.১ মিলিমোল/লিটার বা তার বেশি)

HbA1c (Glycated Hemoglobin) পরীক্ষা

HbA1c পরীক্ষা রক্তের হিমোগ্লোবিনের সাথে শর্করার বন্ধনের পরিমাণ পরিমাপ করে এবং গত ২-৩ মাসের গ্লুকোজ স্তরের গড় ধারণা দেয়।

  • স্বাভাবিক মাত্রা: ৫.৭% এর নিচে
  • প্রী-ডায়াবেটিস: ৫.৭% – ৬.৪%
  • ডায়াবেটিস: ৬.৫% বা তার বেশি

ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা ১২৬ মিগ্রা/ডেসিলিটার (mg/dL) বা তার বেশি হলে ডায়াবেটিস হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়া, HbA1c ৬.৫% বা তার বেশি হলে এবং খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর রক্তে শর্করার মাত্রা ২০০ মিগ্রা/ডেসিলিটার (mg/dL) বা তার বেশি হলে ডায়াবেটিস হিসেবে নির্ণয় করা হয়।

ডায়াবেটিস এর কারণ ও প্রতিকার

ডায়াবেটিস মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে – টাইপ ১ এবং টাইপ ২। টাইপ ১ ডায়াবেটিস সাধারণত বংশগত এবং অটোইমিউন সমস্যার কারণে হয়, আর টাইপ ২ ডায়াবেটিস মূলত জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাসের সাথে সম্পর্কিত। এখানে ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

ডায়াবেটিসের কারণ

টাইপ ১ ডায়াবেটিস

  1. অটোইমিউন প্রতিক্রিয়া: টাইপ ১ ডায়াবেটিস একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের ইমিউন সিস্টেম অজ্ঞাত কারণে অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকারী বিটা কোষগুলিকে আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে।
  2. জেনেটিক ফ্যাক্টর: পরিবারের মধ্যে টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকলে এই রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  3. পরিবেশগত ফ্যাক্টর: কিছু ভাইরাস সংক্রমণ (যেমন, কক্সস্যাকি ভাইরাস) টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

টাইপ ২ ডায়াবেটিস

  1. ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স: টাইপ ২ ডায়াবেটিসে শরীরের কোষগুলি ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা হারায় এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়, যার ফলে শরীরের কোষগুলি ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারে না।
  2. অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদন কমে যাওয়া: টাইপ ২ ডায়াবেটিসে অগ্ন্যাশয় পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে না, যার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
  3. স্থূলতা: অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের প্রধান ঝুঁকির কারণ।
  4. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: চর্বিযুক্ত ও মিষ্টিজাতীয় খাদ্য গ্রহণ টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
  5. কায়িক শ্রমের অভাব: কায়িক শ্রমের অভাব এবং সেডেন্টারি জীবনযাপন টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
  6. বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  7. অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা: উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) এর মতো সমস্যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

ডায়াবেটিস এর লক্ষণ ও প্রতিকার

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু কার্যকর পদক্ষেপ এবং পদ্ধতি রয়েছে। সঠিক জীবনযাপন এবং চিকিৎসার মাধ্যমে ডায়াবেটিসের প্রভাব কমানো এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

  • কম কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাদ্য: কম কার্বোহাইড্রেট এবং উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।
  • ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য: শাকসবজি, ফলমূল, এবং পূর্ণ শস্যযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।
  • স্বল্প চর্বিযুক্ত প্রোটিন: মাংস, মাছ, ডিম, এবং ডাল থেকে প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।
  • মিষ্টি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পরিহার: মিষ্টি এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পরিহার করা উচিত।

নিয়মিত ব্যায়াম

  • প্রতিদিন ব্যায়াম: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা ইত্যাদি ব্যায়াম উপকারী।
  • শারীরিক কার্যকলাপ: দৈনন্দিন কাজকর্মে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করুন।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

  • স্বাস্থ্যকর ওজন: শরীরের আদর্শ ওজন বজায় রাখতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • বডি মাস ইনডেক্স (BMI): BMI ১৮.৫ থেকে ২৪.৯ এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন।

ঔষধ ও ইনসুলিন থেরাপি

  • টাইপ ১ ডায়াবেটিস: ইনসুলিন থেরাপি অপরিহার্য। ইনসুলিন ইনজেকশন বা ইনসুলিন পাম্প ব্যবহার করে ইনসুলিন নিতে হয়।
  • টাইপ ২ ডায়াবেটিস: বিভিন্ন ধরণের ঔষধ, যেমন মেটফর্মিন, সালফোনাইলইউরিয়া, ডিপিপি-৪ ইনহিবিটার এবং এসজিএলটি-২ ইনহিবিটার ব্যবহৃত হয়। প্রয়োজন হলে ইনসুলিন থেরাপিও ব্যবহার করা যেতে পারে।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা

  • রক্তে শর্করার পরীক্ষা: নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করুন। Fasting Blood Sugar এবং HbA1c পরীক্ষা করতে পারেন।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলি করুন এবং ফলাফল অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট

  • যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন: যোগব্যায়াম, মেডিটেশন এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম স্ট্রেস কমাতে কার্যকর।
  • পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুমানো শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: কম কার্বোহাইড্রেট এবং সুস্থ খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং সক্রিয় থাকুন।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন।
  • স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন।

উপরোক্ত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে এবং সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতি গ্রহণ করে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডায়াবেটিস রোগী কতদিন বাঁচে

ডায়াবেটিস রোগীর জীবনকাল অনেকগুলি ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে, যেমন রোগীর শারীরিক অবস্থা, সঠিকভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, জীবনযাত্রার ধরণ, সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত ফ্যাক্টর। সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীরা দীর্ঘদিন ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।

ডায়াবেটিস মাত্রা নিয়ন্ত্রণ

  • রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণে রাখা।
  • HbA1c লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখা (সাধারণত ৭% বা এর নিচে)।

জীবনযাত্রার ধরণ

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।
  • নিয়মিত ব্যায়াম।
  • সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণ।
  • ধূমপান এবং অতিরিক্ত মদ্যপান থেকে বিরত থাকা।

সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ

  • নিয়মিত ঔষধ গ্রহণ।
  • ইনসুলিন থেরাপি (যদি প্রয়োজন হয়)।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা।

অন্যান্য স্বাস্থ্যগত ফ্যাক্টর

  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ।
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ।
  • হৃদরোগ, কিডনি রোগ, এবং স্নায়ুর সমস্যার মতো অন্যান্য জটিলতা নিয়ন্ত্রণে রাখা।

ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয়

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এমনভাবে খাদ্য নির্বাচন করা উচিত, যা তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে এবং পুষ্টি সরবরাহ করতে সাহায্য করে। এখানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত কিছু খাদ্য এবং খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস শাকসবজি এবং ফলমূল শাকসবজি: শাকসবজি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, কারণ এগুলি কম ক্যালোরি এবং উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ। যেমন: পালং শাক, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, টমেটো, মিষ্টি আলু, গাজর, শসা। ফলমূল: অল্প শর্করা এবং উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ ফলমুল গ্রহণ করা উচিত। যেমন:  আপেল, নাশপাতি, বেরি (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি), কমলা, আঙ্গুর, পেঁপে। সম্পূর্ণ শস্য (Whole Grains) সম্পূর্ণ শস্য রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায় এবং দীর্ঘ সময় ধরে স্থিতিশীল রাখে। যেমন: ব্রাউন রাইস, ওটস, হোল গ্রেইন গমের রুটি, কুইনোয়া, বার্লি। চর্বিহীন প্রোটিন চর্বিহীন প্রোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। যেমন: মুরগির মাংস (চামড়া ছাড়া), মাছ (স্যালমন, ম্যাকেরেল), ডাল, মসুর, ছোলা, ডিম, টোফু। স্বাস্থ্যকর চর্বি স্বাস্থ্যকর চর্বি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। যেমন: অ্যাভোকাডো, বাদাম (আলমন্ড, আখরোট), বীজ (চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্সসিড), জলপাই তেল, নারকেল তেল। দই এবং দুগ্ধজাত পণ্য চিনিবিহীন দই এবং দুগ্ধজাত পণ্য ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। যেমন:  গ্রিক ইয়োগার্ট, স্কিম দুধ, লো-ফ্যাট চিজ। ডায়াবেটিস হলে কি কি খাওয়া যাবে না

ডায়াবেটিস হলে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এখানে যে খাবারগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের এড়িয়ে চলা উচিত এমন কিছু খাবারের তালিকা এবং তাদের কারণ আলোচনা করা হলো:

উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার

মিষ্টি পানীয়: সোডা, ফলের রস, এনার্জি ড্রিংক, এবং মিষ্টি চা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়।

মিষ্টি ও ডেজার্ট: ক্যান্ডি, কুকি, কেক, পেস্ট্রি, আইসক্রিম এবং অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায়।

উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার

সাদা রুটি, পাস্তা, এবং ভাত: এই খাবারগুলি উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) সমৃদ্ধ, যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

প্রক্রিয়াজাত শস্য: কর্নফ্লেক্স, প্রক্রিয়াজাত ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল এবং ইনস্ট্যান্ট ওটমিল।

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং চিপস: এই ধরনের খাবার উচ্চ কার্বোহাইড্রেট এবং চর্বিযুক্ত, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়।

তেল এবং চর্বিযুক্ত খাবার

প্রক্রিয়াজাত মাংস: সসেজ, হট ডগ, বেকন এবং অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত মাংস উচ্চ চর্বি এবং লবণ সমৃদ্ধ।

অধিক চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য: সম্পূর্ণ দুধ, পূর্ণ-চর্বিযুক্ত দই এবং চিজ।

ট্রান্স ফ্যাট: মার্জারিন, প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাকস, এবং ফাস্ট ফুডে ট্রান্স ফ্যাট থাকতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

প্রক্রিয়াজাত চর্বি: প্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন বেকড পণ্য, চিপস, এবং ফ্রোজেন খাবার।

অত্যধিক লবণযুক্ত খাবার

প্রক্রিয়াজাত খাবার: ক্যানড সুপ, প্রক্রিয়াজাত মাংস, এবং প্রি-মেড মিল অধিক লবণ সমৃদ্ধ, যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।

ফাস্ট ফুড: বার্গার, ফ্রাই, পিজা এবং অন্যান্য ফাস্ট ফুড অধিক লবণ এবং চর্বিযুক্ত।

অ্যালকোহল

অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে বা বাড়াতে পারে এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

প্রক্রিয়াজাত ও রেডিমেড খাবার

স্ন্যাকস: প্যাকেটজাত স্ন্যাকস, যেমন চিপস, ক্র্যাকার এবং প্রক্রিয়াজাত পপকর্ন।

মাইক্রোওয়েভ মিল: মাইক্রোওয়েভে রান্নার জন্য প্রি-মেড মিল, যা উচ্চ শর্করা, চর্বি এবং লবণ সমৃদ্ধ।

মিষ্টিজাতীয় ফল

কিছু ফল উচ্চ শর্করা সমৃদ্ধ হতে পারে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বেশ বাড়ায়।

ফল: আঙ্গুর, কলা, আম, এবং শুকনো ফল যেমন কিসমিস এবং খেজুর।

কনফেকশনারি এবং বেকড পণ্য

কুকিজ, কেক এবং পেস্ট্রি: এই খাবারগুলি উচ্চ শর্করা এবং চর্বিযুক্ত, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায়।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু খাবার এড়িয়ে চলা গুরুত্বপূর্ণ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করে। এসব খাবারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া উচিত, যেমন সম্পূর্ণ শস্য, কম শর্করাযুক্ত শাকসবজি, চর্বিহীন প্রোটিন, এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট।

তথ্যসূত্র

  1. World Health Organization. (2016). “Global report on diabetes”. World Health Organization. Available from: https://www.who.int/publications/i/item/9789241565257
  2. American Diabetes Association, 2018. 2. Classification and diagnosis of diabetes: standards of medical care in diabetes—2018. Diabetes care, 41(Supplement_1), pp.S13-S27. https://diabetesjournals.org/care/article-abstract/41/Supplement_1/S13/30088
  3. Forouhi, N.G. and Wareham, N.J., 2010. Epidemiology of diabetes. Medicine, 38(11), pp.602-606. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1357303910002082
  4. Ogurtsova, K., da Rocha Fernandes, J.D., Huang, Y., Linnenkamp, U., Guariguata, L., Cho, N.H., Cavan, D., Shaw, J.E. and Makaroff, L.E., 2017. IDF Diabetes Atlas: Global estimates for the prevalence of diabetes for 2015 and 2040. Diabetes research and clinical practice, 128, pp.40-50. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0168822717303753
  5. Zheng, Y., Ley, S.H. and Hu, F.B., 2018. Global aetiology and epidemiology of type 2 diabetes mellitus and its complications. Nature reviews endocrinology, 14(2), pp.88-98. https://www.nature.com/articles/nrendo.2017.151.
  6. DeFronzo, R.A., Ferrannini, E., Groop, L., Henry, R.R., Herman, W.H., Holst, J.J., Hu, F.B., Kahn, C.R., Raz, I., Shulman, G.I. and Simonson, D.C., 2015. Type 2 diabetes mellitus. Nature reviews Disease primers, 1(1), pp.1-22. https://www.nature.com/articles/nrdp201519/1000
  7. Katsarou, A., Gudbjörnsdottir, S., Rawshani, A., Dabelea, D., Bonifacio, E., Anderson, B.J., Jacobsen, L.M., Schatz, D.A. and Lernmark, Å., 2017. Type 1 diabetes mellitus. Nature reviews Disease primers, 3(1), pp.1-17. https://www.nature.com/articles/nrdp201716
  8. Polonsky, K.S., 2012. The past 200 years in diabetes. New England Journal of Medicine, 367(14), pp.1332-1340. https://www.nejm.org/doi/abs/10.1056/nejmra1110560

 

Dr. M Shahadat Hossain
Follow me

Physiotherapist, Pain, Paralysis & Manipulative Therapy Specialist, Assistant Professor Dhaka College of Physiotherapy, Secretary-General(BPA), Secretary(CARD), Chief Consultant(ASPC), Conceptual Inventor(SDM), Faculty Member(CRP), Member-Bangladesh Rehabilitation Council

পিঠে ব্যথার অন্যতম কারণ অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস রোগের ধরণ এবং প্রতিকার

ব্যথার অন্যতম কারণ অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস এক্সিয়াল স্পন্ডাইলোআর্থ্রাইটিস নামেও পরিচিত। এটি…
পরামর্শ নিতে 01877733322