কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি রোগ কি?

কিডনি, যা বাংলায় বৃক্ক নামে পরিচিত, মানব দেহের একটি অত্যন্ত জরুরি অঙ্গ। মানব দেহের কিডনির অবস্থান কোমরের দু পাশে এবং তারা রক্তে থাকা বিভিন্ন দূষিত পদার্থ, বর্জ্য, এবং অতিরিক্ত জল পরিশোধন করে। এ গুলি মূত্রের মাধ্যমে দেহ থেকে বের করে দেয় এবং এভাবে রক্তের পরিষ্কারণে এবং ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স রক্ষায় সাহায্য করে।

কোন কারণে যদি কিডনি সঠিক ভাবে এই কাজ গুলি করতে ব্যর্থ হয় তাহলে এ টিকে কিডনির রোগ হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে দেহে বর্জ্য পদার্থ ও দূষিত জল জমা হতে থাকে, যা বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় পরিণত হয়। কিডনি রোগ অনেক সময় কোনো প্রাথমিক উপসর্গ ছাড়াই ধীরে ধীরে অগ্রসর হয় এবং তার প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।

কিডনি কি কারণে অসুস্থ হয়?

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি রোগের কারণ বিভিন্ন হতে পারে এবং এগুলি বিভিন্ন জৈবিক এবং পরিবেশগত ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে। নিম্নে কিছু প্রধান কারণ উল্লেখ করা হল:

১. উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির রক্তনালী তে ক্ষতি সৃষ্টি করে, যা ক্রমশ কিডনি ফাংশন হ্রাস করে।

২. ডায়াবেটিস: টাইপ ১ এবং ২ ডায়াবেটিস কিডনির রক্তনালী গুলি তে উচ্চ গ্লুকোজ স্তরের কারণে ক্ষতি ঘটাতে পারে, যা কিডনির ক্ষতি এবং ফেইলর এ পরিণত হতে পারে।

৩. অটোইমিউন রোগ: লুপাস এবং ইগা নেফ্রোপ্যাথির মতো অটোইমিউন রোগ গুলি কিডনি তে প্রদাহ এবং ক্ষতি সৃষ্টি করে।

৪. জেনেটিক ফ্যাক্টর: কিছু জেনেটিক ডিজিজ, যেমন পলিসিস্টিক কিডনি রোগ, কিডনি তে বড় বড় সিস্ট তৈরি করে যা কিডনির কাজে বাধা দেয়।

৫. ইনফেকশন: প্রস্রাব পথের ইনফেকশন (UTI) এবং গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস এর মতো ইনফেকশন কিডনির প্রদাহ এবং ক্ষতি ঘটাতে পারে।

৬. বিষাক্ত পদার্থ: কিছু ওষুধ, ভারী ধাতু, এবং বিষাক্ত রাসায়নিক কিডনির কোষ গুলির ক্ষতি করতে পারে।

৭. মূত্রনালী বাধাগ্রস্ত হওয়া: মূত্রনালী বাধাগ্রস্ত হলে, যেমন পাথর বা টিউমার, কিডনি তে চাপ তৈরি করে এবং তার কাজে বাধা দেয়।

৮. দীর্ঘমেয়াদী ওষুধ সেবন: কিছু ওষুধের দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবহার, যেমন ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ড্রাগস (NSAIDs), কিডনির ক্ষতি ঘটাতে পারে।

এসব কারণের ফলে কিডনি ধীরে ধীরে কার্য ক্ষমতা হারাতে থাকে, যা দীর্ঘমেয়াদী কিডনি রোগের দিকে পরিচালিত করে। এই রোগের প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা, স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন, এবং নিয়মিত চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি।

কিডনি তে কি কি রোগ হয়?

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ হল একটি গভীর স্বাস্থ্য অবস্থা, যেখানে কিডনির ক্ষতি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এই অবস্থায়, কিডনির রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল ফিল্টার করার প্রাকৃতিক ক্ষমতা ক্রমে হ্রাস পায়। এর ফলে, বর্জ্য পদার্থ শরীরে জমা হতে থাকে, যা স্বাস্থ্যের উপর নেগেটিভ প্রভাব ফেলে।

এই ধরনের কিডনির ক্ষতি প্রায়ই অপরিবর্তনীয় হয় এবং সময়ের সাথে কিডনির কার্যকারিতা আরও খারাপ হয়ে ওঠে। যখন কিডনি তার কার্যক্ষমতা পুরোপুরি হারিয়ে ফেলে, তখন এই অবস্থাকে কিডনি ব্যর্থতা বা শেষ পর্যায়ের রেনাল ডিজিজ (End-stage Renal Disease, ESRD) বলা হয়। এই পর্যায়ে, কিডনি আর তার জৈবিক কাজ গুলি সম্পাদন করতে সক্ষম নয়, যা জীবন-রক্ষাকারী চিকিৎসা যেমন ডায়ালিসিস অথবা কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন করে।

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং নিয়মিত চিকিৎসা এর অগ্রগতি ধীর করে এবং জীবনের মান বজায় রাখতে সাহায্য করে।

কিডনি রোগের আরও ধরন রয়েছে। যেমনঃ

১. ফ্যাব্রি ডিজিজ(Fabry Disease): ফ্যাব্রি রোগ সচরাচর খুব কম মানুষের হয়ে থাকে। এটি বংশানুক্রমিক ভাবে বেশি হয়। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে, বিশেষ করে হৃদপিন্ড, মস্তিষ্ক এবং কিডনিতে প্রভাব ফেলে। এই রোগে শরীরে গ্লাইকোস্ফিংগোলিপিডস নামে পরিচিত এক ধরনের ফ্যাট জমা হয়, যা নিয়মিত রক্ত প্রবাহে বাধা দেয়। ফল স্বরূপ, এটি কিডনির দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি ও কিডনি ফেইলর এর কারণ হতে পারে।

২. সিস্টিনোসিস(Cystinosis): এটি একটি বিরল রোগ যেখানে শরীরে সিস্টাইন নামে একটি অ্যামিনো অ্যাসিড অত্যধিক পরিমাণে জমা হয়। এই জমাট বাঁধা সিস্টাইন কিডনির ক্ষতি সাধন করে এবং কিডনি ফেইলর এর দিকে নিয়ে যায়। এই অবস্থার চিকিৎসা হল সিস্টাইনের মাত্রা কমানো এবং প্রয়োজনে কিডনি প্রতিস্থাপন। সিস্টিনোসিস রোগে সাধারণত শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়।

৩. গ্লোমেরুলোনফ্রাইটিস(Glomerulonephritis): এই রোগে, কিডনির গ্লোমেরুলি নামক ছোট ছোট ফিল্টার গুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রক্ত থেকে দুষিত পদার্থ ও তরল পদার্থ বিচ্ছুরণের ক্ষমতা কমে যায়। এটি কিডনি  ফেইল হবার জন্য দায়ী হতে পারে এবং এর চিকিৎসা  সঠিক রোগ নির্ণয়ের উপর নির্ভর করে।

৪. আইজিএ নেফ্রোপ্যাথি(IgA Nephropathy): এই রোগ হলে, ইমিউন সিস্টেম থেকে তৈরি আইজিএ প্রোটিন কিডনির গ্লোমেরুলিতে জমা হয়, যা কিডনির ফিল্টার গুলি কে নষ্ট করতে থাকে। এই রোগের ক্ষতি বিকাশে বেশ কয়েক বছর লেগে যায়, এবং অনেকে জানতেই পারেন না যে তারা এই রোগে আক্রান্ত। এই রোগের পরিণতি হল দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ এবং সম্ভাব্য কিডনি ফেইলর।

৫. লুপাস নেফ্রাইটিস(Lupus Nephritis): লুপাস নেফ্রাইটিস একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের ইমিউন সিস্টেম নিজের টিস্যুতে আক্রমণ করে, বিশেষ করে কিডনি তে। এটি কিডনির প্রদাহ এবং ক্ষতি ঘটায়, যা পরবর্তীতে স্থায়ী ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়। লুপাস নেফ্রাইটিসের সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি, নিয়মিত চিকিৎসা দ্বারা এর লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

৬. এএইচইউএস(Atypical Hemolytic Uremic Syndrome): এটি একটি খুব বিরল প্রকৃতির জেনেটিক রোগ, যার ফলে ছোট ছোট রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গে রক্ত প্রবাহে বাধা দেয়। এর ফলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে। এএইচইউএসের লক্ষণ প্রায়শই প্রকাশ পায় না, তবে এর চিকিৎসা জরুরি।

৭. পলিসিস্টিক কিডনি রোগ(Polycystic kidney disease (PKD): পলিসিস্টিক কিডনি রোগ হলে কিডনিতে এবং মাঝে মাঝে অন্যান্য অঙ্গেও বহু সিস্ট তৈরি হয়। এই সিস্টগুলি তরল দিয়ে পূর্ণ থাকে এবং এর ফলে কিডনির ফিল্টার করার ক্ষমতা ক্রমশ কমতে থাকে। যত দিন যায় কিডনি তত খারাপ হতে থাকে, যা গুরুতর অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। পলিসিস্টিক কিডনি রোগের কোনো প্রতিকার নেই, তবে চিকিৎসা দ্বারা সিস্টের বেড়ে ওঠাকে ধীর করা এবং লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

আরও পড়ুনঃ কিডনি ভালো রাখার উপায়

কিডনি রোগের লক্ষণ

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

নিম্নে কিডনি রোগের লক্ষণ গুলি বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলোঃ

১. শরীরে ফোলাভাব:

   – মুখ মন্ডল, বিশেষ করে চোখের চারপাশে ফোলা দেখা দিতে পারে।

   – এই ফোলা পানি জমার ফলে হয়ে থাকে এবং কিডনি তার তরল নির্গমনের কাজ ঠিক মতো করতে না পারার ইঙ্গিত দেয়।

২. প্রস্রাবের পরিমাণ পরিবর্তন:

   – প্রস্রাবের পরিমাণ হঠাৎ কমে যাওয়া বা বৃদ্ধি পাওয়া।

   – এটি কিডনির ফিল্টারিং ক্ষমতার হ্রাসের লক্ষণ।

৩. রক্তযুক্ত প্রস্রাব:

   – প্রস্রাবে রক্ত যাওয়া বা প্রস্রাবের রঙ লাল হওয়া।

   – এটি কিডনির অভ্যন্তরে রক্ত ক্ষরণের ইঙ্গিত দেয়।

৪. কোমর ও তলপেটে ব্যথা:

   – কোমরের দুই পাশে বা তলপেটে ব্যথা হতে পারে।

   – এই ব্যথা কিডনির সমস্যা বা পাথরের ইঙ্গিত হতে পারে।

৫. উচ্চ রক্তচাপ:

   – কিডনি রোগের ফলে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।

   – কিডনি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, এবং কিডনির সমস্যা হলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।

অতিরিক্তভাবে,

কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে কিডনি রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। যেমন:

১। ডায়াবেটিস রোগীদের:

  – ডায়াবেটিস কিডনির ক্ষতির একটি প্রধান কারণ।

– উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের:

  – উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি ঘটাতে পারে।

২। পারিবারিক ইতিহাস:

  – পরিবারে যদি কারো কিডনি সমস্যার পূর্ব ইতিহাস থাকে তাহলে কিডনি রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থাকে।

৩। অতিরিক্ত ওজন:

  – শরীরের অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা কিডনিতে চাপ বাড়ায়।

৪। দীর্ঘমেয়াদী ব্যথার ওষুধ গ্রহণ:

  – কিছু ব্যথা নিবারক ওষুধ কিডনিতে ক্ষতি করতে পারে।

৫। কম পানি পান:

  – পর্যাপ্ত পানি না পান করলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।

এসব কারণে বছরে অন্তত দুইবার কিডনি পরীক্ষা করানো উচিত, বিশেষ করে যাদের উপরে উল্লিখিত লক্ষণ গুলো রয়েছে।

কিডনি রোগের পরীক্ষাসমূহ

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা ও পরীক্ষণ পদ্ধতি রয়েছে। এগুলি কিডনির কার্যক্ষমতা এবং ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে সাহায্য করে। কিডনি রোগের পরীক্ষাসমূহের মধ্যে রয়েছে:

১. ব্লাড টেস্টসমূহ:

   – সিরাম ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা: এটি রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা পরিমাপ করে, যা কিডনির ফাংশনের একটি ইন্ডিকেটর।

   – ব্লাড ইউরিয়া নাইট্রোজেন (BUN): এটি রক্তে ইউরিয়া নাইট্রোজেনের মাত্রা পরিমাপ করে।

   – eGFR (Estimated Glomerular Filtration Rate): এটি কিডনির ফিল্টারিং ক্ষমতার একটি অনুমান দেয়।

২. ইউরিন টেস্টসমূহ:

   – ইউরিন অ্যানালিসিস: এটি প্রস্রাবে প্রোটিন, রক্ত, এবং অন্যান্য উপাদানের উপস্থিতি পরীক্ষা করে।

   – মাইক্রোঅ্যালবুমিনুরিয়া: প্রস্রাবে মাইক্রোস্কোপিক প্রোটিন (অ্যালবুমিন) এর পরিমাণ পরীক্ষা।

৩. ইমেজিং টেস্টসমূহ:

   – আল্ট্রাসাউন্ড: কিডনির আকার, অবস্থান এবং স্ট্রাকচার পরীক্ষা করে।

   – CT স্ক্যান: কিডনি এবং প্রস্রাব পথের আরও বিস্তারিত চিত্র প্রদান করে।

৪. বায়োপসি:

   – কিডনির একটি ছোট টিস্যু স্যাম্পল নিয়ে তা পরীক্ষা করা হয় যাতে কিডনির ক্ষতির ধরণ এবং কারণ নির্ধারণ করা যায়।

৫. ডায়ালিসিস এফিসিয়েন্সি পরীক্ষা:

   – যদি রোগী ডায়ালিসিসে থাকে, তাহলে ডায়ালিসিসের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা হয়।

এই পরীক্ষাগুলি কিডনি রোগের ডায়াগনসিস, মনিটরিং এবং চিকিৎসা পরিকল্পনার জন্য অত্যন্ত জরুরি। নিয়মিত চিকিৎসার অংশ হিসেবে এগুলি সময়মতো সম্পন্ন করা উচিত।

কিডনি রোগের চিকিৎসা

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি রোগের চিকিৎসা সাধারণত রোগের পর্যায়, কারণ এবং রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যগত অবস্থা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলি কিডনি রোগের চিকিৎসায় প্রচলিত:

১. জীবনযাত্রার পরিবর্তন:

   – স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা।

   – নিয়মিত ব্যায়াম করা।

   – ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।

   – ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান এড়ানো।

২. ওষুধ প্রয়োগ:

ওষুধ অবশ্যই একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ চকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে

   – উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ওষুধ।

   – কিডনির চাপ হ্রাস করতে ডায়ুরেটিক্স (পানি নিষ্কাশন বৃদ্ধিকারী ওষুধ)।

   – এসিই ইনহিবিটরস বা এআরবি ওষুধ, যা কিডনির ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।

   – প্রোটিনুরিয়া কমানোর জন্য ওষুধ।

৩. ডায়ালিসিস:

   – কিডনি ফেইল হলে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল পরিষ্কার করার জন্য ডায়ালিসিস করা বাধ্যতামূলক।

   – ডায়ালিসিস প্রধানত দুই প্রকার। হেমোডায়ালিসিস এবং পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস।

৪. কিডনি প্রতিস্থাপন:

   – গুরুতর কিডনি ফেইলর এর ক্ষেত্রে কিডনি প্রতিস্থাপনের করা লাগতে পারে।

   – স্বাস্থ্যকর ডোনার থেকে কিডনি প্রাপ্তি এবং সার্জিক্যাল প্রতিস্থাপন।

৫. অন্যান্য থেরাপি:

   – কিডনি সম্পর্কিত অন্যান্য জটিলতার জন্য বিভিন্ন থেরাপি।

   – রক্তে মিনারেল এবং ইলেকট্রোলাইটের সামঞ্জস্য বজায় রাখা।

কিডনি রোগের চিকিৎসা অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী হওয়া উচিত। নিয়মিত চেক-আপ এবং উপযুক্ত প্রতিরোধ পদ্ধতি অনুসরণ করে কিডনি রোগের লক্ষণ ও মাত্রা কমানো সম্ভব।

কিডনি রোগের প্রতিকার

কিডনি রোগের প্রতিকার বা প্রতিরোধের জন্য নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:

১. স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ:

   – স্বাস্থ্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা।

   – নিয়মিত ব্যায়াম এবং সক্রিয় থাকা।

   – শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।

২. অতিরিক্ত লবণ ও চিনি এড়িয়ে চলা:

   – খাদ্যে লবণের পরিমাণ কমানো।

   – চিনি ও উচ্চ গ্লাইসেমিক খাদ্যাদি এড়ানো।

৩. পানি পানের পর্যাপ্ততা:

   – প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা।

   – ডিহাইড্রেশন এড়ানো।

৪. ধূমপান এবং অতিরিক্ত মদ্যপান পরিহার:

   – ধূমপান বন্ধ করা।

   – অতিরিক্ত মদ্যপান এড়িয়ে চলা।

৫. নিয়মিত পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা ও চিকিৎসা নেয়া:

   – উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা।

   – নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং কিডনি ফাংশন টেস্ট করানো।

৬. ওষুধের সঠিক ব্যবহার:

   – নির্ধারিত ওষুধ নিয়মিত ও সঠিক ডোজে গ্রহণ করা।

   – অতিরিক্ত ব্যথানাশক ও অন্যান্য ওষুধ ব্যবহারে সতর্ক থাকা।

কিডনি রোগের প্রতিরোধে এই পদক্ষেপগুলি অত্যন্ত কার্যকরী হতে পারে। যে কোনো স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা বা উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

তথ্যসূত্রঃ

  1. Chronic kidney disease https://www.nhs.uk/conditions/kidney-disease/symptoms/
  2. Chronic kidney disease https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/chronic-kidney-disease/symptoms-causes/syc-20354521
  3. Chronic kidney disease (CKD) https://www.kidney.org/atoz/content/about-chronic-kidney-disease
  4. Chronic kidney disease (CKD) https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/chronic-kidney-disease/symptoms-causes/syc-20354521
  5. Chronic kidney disease (CKD) https://www.kidney.org/atoz/content/about-chronic-kidney-disease
  6. Chronic kidney disease (CKD) https://www.nhs.uk/conditions/kidney-disease/
  7. Kidney Disease https://www.webmd.com/a-to-z-guides/understanding-kidney-disease-basic-information
  8. Kidney Failure https://my.clevelandclinic.org/health/diseases/17689-kidney-failure
  9. Kidney Failure https://www.medicalnewstoday.com/articles/172179
  10. Kidney failure (ESRD) – Symptoms, causes and treatment options https://www.kidneyfund.org/all-about-kidneys/kidney-failure-symptoms-and-causes
Dr. M Shahadat Hossain
Follow me

Physiotherapist, Pain, Paralysis & Manipulative Therapy Specialist, Assistant Professor Dhaka College of Physiotherapy, Secretary-General(BPA), Secretary(CARD), Chief Consultant(ASPC), Conceptual Inventor(SDM), Faculty Member(CRP), Member-Bangladesh Rehabilitation Council

পরামর্শ নিতে 01877733322