মাঙ্কিপক্স লক্ষণ ও কারণ, রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা
মাঙ্কিপক্স লক্ষণ “মাঙ্কিপক্স (Monkeypox)” একটি বিরল প্রকৃতির গুরুতর ভাইরাল জ়ুনোটিক রোগ, যা প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে এবং পরবর্তীতে মানুষের মাধ্যমে ছড়ায়। এটি “পক্সভাইরাস” পরিবারের সদস্য এবং স্মলপক্স ভাইরাসের সাথে অনেকটা সাদৃশ্যপূর্ণ। ১৯৫৮ সালে প্রথমবারের মতো মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছিল, যখন গবেষণাগারে সংরক্ষিত বানরের মধ্যে গুটিবসন্তের মতো রোগ লক্ষ করা গিয়েছিল। তবে, মানুষের মধ্যে মাঙ্কিপক্সের প্রথম সংক্রমণ ১৯৭০ সালে “ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো”-তে শনাক্ত হয়েছিল, যেখানে এই রোগটি মূলত কেন্দ্রীয় এবং পশ্চিম আফ্রিকার এন্ডেমিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল (১)।
মাঙ্কিপক্স সাধারণত সংক্রমিত প্রাণীর সংস্পর্শে আসা, যেমন কামড়, আঁচড় বা সংক্রমিত প্রাণীর রক্ত বা অন্যান্য শারীরিক তরল স্পর্শ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও, সংক্রমিত ব্যক্তির কাছাকাছি এসে, সংক্রমিত বস্ত্র বা বিছানা ব্যবহার করে, বা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এই রোগ ছড়াতে পারে (৪)। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, এই রোগটি আফ্রিকার বাইরেও বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, যা মাঙ্কিপক্সের বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
মাঙ্কিপক্স বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে, বিশেষ করে ২০২২ সালে যখন এর প্রাদুর্ভাব আফ্রিকার বাইরেও বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ২০২২ সালের প্রাদুর্ভাবের সময়, মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং অন্যান্য অঞ্চলে বিস্তৃত হয়েছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (WHO) এটি সম্পর্কে নতুন করে সতর্ক করতে বাধ্য করেছে (৩)। মাঙ্কিপক্স একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে, যা শুধুমাত্র একটি আঞ্চলিক সমস্যা হিসেবে সীমাবদ্ধ নয়।
মাঙ্কিপক্স, স্মলপক্সের তুলনায় কম মারাত্মক হলেও, রোগটির উপসর্গগুলি অত্যন্ত কষ্টদায়ক এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী হতে পারে, বিশেষত যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল। পাশাপাশি, এটি একটি জ়ুনোটিক রোগ হওয়ায়, পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি সবসময়ই থেকে যায়, যা নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশ কঠিন (২)। অতএব, মাঙ্কিপক্সকে গুরুত্ব দিয়ে নিয়মিত নজরদারি এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
মাঙ্কিপক্স কারণ এবং মাঙ্কিপক্স কীভাবে ছড়ায়
মাঙ্কিপক্স মূলত মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকার এন্ডেমিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল, যেখানে “ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (DRC)”, নাইজেরিয়া এবং আশেপাশের দেশগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এইসকল অঞ্চলে জঙ্গল এবং বনভূমি এলাকায় সংক্রমিত প্রাণীর সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে থাকার কারণে মানুষের মধ্যে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বিশেষ করে ২০২২ সালে, মাঙ্কিপক্স আফ্রিকার বাইরেও বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, যা ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং এশিয়ার কিছু অংশে সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে (৩)।
সংক্রমণের ধরন
মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ মূলত দুটি প্রধান পথের মাধ্যমে ঘটে: প্রাণী থেকে মানুষ এবং মানুষ থেকে মানুষ।
প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমণ: সংক্রমিত প্রাণীর সাথে সরাসরি সংস্পর্শে আসা, যেমন তাদের কামড় বা আঁচড় লাগা, বা সংক্রমিত প্রাণীর রক্ত বা অন্যান্য শারীরিক তরলের সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটে। যারা বন-জঙ্গলের আশেপাশের গ্রামীণ এলাকায় বাস করেন বা কাজ করেন, তারা সাধারণত সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। ব্লাড ক্যান্সার কেন হয় এবং নির্ণয়ের উপায় ও চিকিৎসা
মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ: সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরের তরলের সংস্পর্শে আসা, ক্ষত বা সংক্রমিত স্থান স্পর্শ করা, বা তাদের ব্যবহৃত বস্ত্র বা বিছানা স্পর্শ করার মাধ্যমে এই সংক্রমণ ছড়ায়। এছাড়াও, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তির মধ্যেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে (৪)।
মাঙ্কিপক্সের বিস্তারে অবদানকারী বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যার মধ্যে প্রধান হল সংক্রমিত প্রাণী বা মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে থাকা। গ্রামীণ এলাকায়, যেখানে মানুষ প্রায়শই বন্য প্রাণীর সংস্পর্শে আসে, সেখানে এই সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। অন্যদিকে, শহুরে এলাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি থাকার কারণে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে, বিশেষত যদি স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা যথাযথভাবে অনুসরণ না করা হয় (২)।
আক্রান্ত জনগোষ্ঠী
মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী হল এন্ডেমিক অঞ্চলের বাসিন্দা এবং সংক্রমিত প্রাণীর সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিরা।
বয়স ও লিঙ্গ: যদিও সব বয়সের মানুষ মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত হতে পারে, তবে শিশু এবং যুবকরা তুলনামূলকভাবে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। এছাড়াও, মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে সংক্রমণের হার কিছুটা বেশি বলে জানা গেছে, সম্ভবত জীবিকা নির্বাহের জন্য বনের কাছাকাছি কাজ করার কারণে।
পেশা: যারা বন্য প্রাণী ধরার কাজ করেন, শিকারি, বনকর্মী, এবং বনভূমির আশেপাশে বসবাসকারী ব্যক্তিরা এই সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন। এছাড়াও, স্বাস্থ্যকর্মীরা, যারা সংক্রমিত রোগীদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন, তারাও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত (১)।
মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সঠিকভাবে সনাক্ত করা এবং তাদের জন্য নির্দিষ্ট প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
মাঙ্কিপক্স লক্ষণ
মাঙ্কিপক্সের উপসর্গগুলি সাধারণত সংক্রমণের ৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যে প্রকাশ পায়, যা “ইনকিউবেশন পিরিয়ড” নামে পরিচিত। মাঙ্কিপক্সের সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
- জ্বর: উচ্চমাত্রার জ্বর হতে পারে।
- শরীরের ব্যথা: পেশী ও শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথা হতে পারে।
- শরীরের ফুসকুড়ি: জ্বর শুরু হওয়ার ১ থেকে ৩ দিনের মধ্যে ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়, যা প্রথমে মুখে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এই ফুসকুড়ি ধীরে ধীরে পুস্টুল এবং পরে স্ক্যাবে রূপান্তরিত হয়, যা অবশেষে ঝরে যায়। রোগটি সাধারণত ২ থেকে ৪ সপ্তাহ স্থায়ী হয়।
- সর্দি ও কাশি: সর্দি, গলা ব্যথা এবং কাশি হতে পারে।
- লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া: গলার লিম্ফ নোড ফুলে যেতে পারে।
- দুর্বলতা: সাধারণত দুর্বলতা ও অবসাদ অনুভূত হয়।
মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলি স্মলপক্সের সাথে অনেকটাই সাদৃশ্যপূর্ণ, তবে কিছু মূল পার্থক্যও রয়েছে। যেমন, মাঙ্কিপক্সে লিম্ফ নোডগুলির ফোলাভাব একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য, যা স্মলপক্সে দেখা যায় না। এছাড়া, মাঙ্কিপক্সের মৃত্যুহারও তুলনামূলকভাবে কম, বিশেষ করে স্মলপক্সের তুলনায় (১)।
জটিলতা এবং তীব্রতা
মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক উপসর্গগুলি সাধারণত হালকা থেকে মাঝারি তীব্রতার হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হল সেকেন্ডারি সংক্রমণ, যা ত্বকের ক্ষত বা পুস্টুলগুলির মাধ্যমে ঘটে থাকে। এছাড়া, শ্বাসকষ্ট, পুঁজে ভরা পকেট, এবং বিরল ক্ষেত্রে এনসেফালাইটিস (মস্তিষ্কের প্রদাহ) হতে পারে, যা রোগীর জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে। ওজন কমানোর উপায় ডায়েট ভিডিও সহ
বিভিন্ন রোগীর ক্ষেত্রে মাঙ্কিপক্সের তীব্রতা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত, শিশু এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম সেসকল ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছেন। রোগের তীব্রতা অনেকাংশে রোগীর স্বাস্থ্যগত অবস্থা এবং সময়মতো চিকিৎসার উপর নির্ভর করে (২)।
মাঙ্কিপক্স রোগ নির্ণয় / এমপক্স
মাঙ্কিপক্স নির্ণয়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। প্রধানত, ত্বকের ক্ষত থেকে সংগ্রহ করা নমুনা দিয়ে “পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (PCR)” পরীক্ষা করা হয়, যা মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের জিনগত উপাদান সনাক্ত করতে সহায়ক। এছাড়া, ভাইরাস কালচার এবং ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপির মাধ্যমেও নির্ণয় করা যায়। গ্যাস্ট্রিক থেকে পিঠে ব্যাথা করে? দ্রুত সমস্যার সমাধান?
রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হল মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলি অন্যান্য পক্স-জাতীয় অসুস্থতার সাথে সাদৃশ্য থাকা, যেমন স্মলপক্স, চিকেনপক্স, বা হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজ। এই কারণে, ডিফারেনশিয়াল ডায়াগনোসিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে রোগটির সঠিক শনাক্তকরণ এবং উপযুক্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়। যেখানে মেডিকেল রিসোর্স সীমিত, সেখানে রোগ নির্ণয় করা আরও কঠিন হতে পারে, যা রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে (৪)।
মাঙ্কিপক্স চিকিৎসা
“মাঙ্কিপক্স” এর চিকিৎসা এখন পর্যন্ত রোগের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়, কারণ মাঙ্কিপক্সের জন্য কোনও নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ এখনও ব্যাপকভাবে প্রমাণিত বা ব্যবহৃত হয়নি। তবে, কিছু ক্ষেত্রে, “টেকোভিরিমাট (Tecovirimat)” নামক একটি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ব্যবহার করা হয়, যা মূলত স্মলপক্সের চিকিৎসার জন্য অনুমোদিত, এবং পরীক্ষামূলকভাবে মাঙ্কিপক্সের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও, “ব্রিনসিডোফোভির (Brincidofovir)” এবং “সিডোফোভির (Cidofovir)” এর মতো ওষুধগুলিও কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে, যদিও এদের কার্যকারিতা এখনও পরিপূর্ণভাবে প্রমাণিত হয়নি (২)।
উপসর্গগত চিকিৎসার ক্ষেত্রে, রোগীর জন্য বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়, যার মধ্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পর্যাপ্ত তরল খাবার গ্রহণ, এবং যেকোনো সেকেন্ডারি সংক্রমণের চিকিৎসা অন্তর্ভুক্ত। গুরুতর ক্ষেত্রে, শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য জটিলতার চিকিৎসার জন্য রোগীর নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হতে পারে। যেহেতু মাঙ্কিপক্স সাধারণ ভাবে নিরাময় হয়, তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীকে উপসর্গের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হয় (১)।
নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির ক্ষেত্রে, বর্তমানে মাঙ্কিপক্সের জন্য বিভিন্ন ভ্যাকসিন এবং অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে। স্মলপক্সের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত কিছু ভ্যাকসিন, যেমন “জিনিওস (Jynneos)”, মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধেও কার্যকর হতে পারে, এবং এটি ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে, মাঙ্কিপক্সের জন্য নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসা উন্নয়নে আরও গবেষণা প্রয়োজন (৩)।
ব্যবস্থাপনা কৌশল
মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজন সঠিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি। এর মধ্যে রয়েছে:
- আইসোলেশন প্রোটোকল: সংক্রমিত রোগীকে অন্যদের থেকে আলাদা করে রাখা, যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়। বিশেষ করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- কন্টাক্ট ট্রেসিং এবং কোয়ারান্টাইন: সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের সনাক্তকরণ এবং প্রয়োজন হলে তাদের কোয়ারান্টাইনে রাখার মাধ্যমে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা।
- জনসচেতনতা প্রচারাভিযান: সাধারণ জনগণকে মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ, সংক্রমণের ধরন, এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতন করা। এই প্রচারাভিযানগুলির মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করা এবং এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব (WHO, 2022)।
উপসংহার
মাঙ্কিপক্স সম্পর্কে এই আলোচনায় আমরা এর মহামারী, লক্ষণ, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা, এবং প্রতিরোধের বিভিন্ন দিক আলোচনা করেছি। মাঙ্কিপক্স একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যগত সমস্যা, যা সাম্প্রতিক সময়ে শুধুমাত্র এন্ডেমিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ নয় বরং বৈশ্বিক স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। এর সংক্রমণ, উপসর্গ এবং প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যার জন্য নির্দিষ্ট চিকিৎসা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যসস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
মাঙ্কিপক্স নিয়ন্ত্রণ এবং সম্পুর্ণরূপে নির্মূল করতে সতর্কতা প্রয়োজন। এর মধ্যে সময়মতো সঠিক রোগ সনাক্তকরণ, কার্যকরী ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসার মান উন্নয়ন, এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য সঠিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা জরুরী। পাশাপাশি, মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রচেষ্টা জোরদার করা অপরিহার্য।
ভবিষ্যতে মাঙ্কিপক্সের মতো জ়ুনোটিক রোগগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গবেষণা এবং জনস্বাস্থ্য প্রচেষ্টার আরও উন্নতি দরকার। আন্তর্জাতিক সংস্থা, সরকারী প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সমন্বিত প্রচেষ্টা মাঙ্কিপক্স নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং এটি নির্মূল করার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সতর্কতা অবলম্বন এবং চলমান গবেষণার মাধ্যমে আমরা মাঙ্কিপক্স এবং অন্যান্য পক্স-জাতীয় রোগগুলির বিরুদ্ধে সফলভাবে লড়াই করতে সক্ষম।
তথ্যসূত্র
- World Health Organization (WHO). (2022). Monkeypox. https://www.who.int/news-room/fact-sheets/detail/monkeypox.
- Centers for Disease Control and Prevention (CDC). (2022). Monkeypox: Information for Healthcare Professionals. https://www.cdc.gov/poxvirus/monkeypox/clinicians/index.html.
- Bunge, E.M., Hoet, B., Chen, L., Lienert, F., Weidenthaler, H., Baer, L.R. and Steffen, R., 2022. The changing epidemiology of human monkeypox—A potential threat? A systematic review. PLoS neglected tropical diseases, 16(2), p.e0010141. https://journals.plos.org/plosntds/article?id=10.1371/journal.pntd.0010141&trk=public_post_comment-text.
- Reynolds, M.G. and Damon, I.K., 2012. Outbreaks of human monkeypox after cessation of smallpox vaccination.Trends in microbiology, 20(2), pp.80-87. https://www.cell.com/trends/microbiology/fulltext/S0966-842X(11)00212-5?large_figure=true&mobileUi=0
- পিঠে ব্যথার কারণ ও করণীয় - September 7, 2024
- ৮ই সেপ্টেম্বর বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস – ASPC আয়োজিত ফ্রি হেলথ ক্যাম্প - September 4, 2024
- মাথা ব্যাথার কারণ ও প্রতিকার | মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ - September 2, 2024