মাথা ব্যাথা হলে করণীয়। মাথা ব্যথা হল অস্বস্তিকর সমস্যা যা প্রায় সবাই কখনও না কখনও অনুভব করে থাকেন। মাথা ব্যথা স্ট্রেস, টেনশন, ঘুমের অভাব, দৃষ্টি শক্তির সমস্যা, ডিহাইড্রেশন বা কখনও কখনও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের কারণে হতে পারে। মাথা ব্যথার বিভিন্ন প্রকার রয়েছে, যার মধ্যে মাইগ্রেন, ক্লাস্টার হেডেক, এবং টেনশন-টাইপ হেডেক অন্যতম। মাইগ্রেন সাধারণত মাথার এক পাশে তীব্র ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি করে, যা আলোর সংবেদনশীলতা, বমি ভাব, এবং শব্দ সহ্য করতে না পারার মতো উপসর্গের সাথে যুক্ত থাকে। ক্লাস্টার হেডেক কমন নয়, তবে অত্যন্ত তীব্র ও আকস্মিক ভাবে ঘটে। টেনশন-টাইপ হেডেক সাধারণত মাথার চারপাশে একটি ব্যান্ডের মতো চাপ অনুভূত হয়।

মাথার তালুতে ব্যথা কারণ

মাথার তালুতে ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ হলো

চর্মরোগ: স্ক্যাল্প সোরিয়াসিস বা একজিমা যেমন ত্বকের সমস্যা গুলির কারণে মাথার তালুতে শুষ্কতা, চুলকানি এবং ব্যথা হতে পারে। এই অবস্থায় ত্বকের কোষ গুলি অত্যধিক বৃদ্ধি পায়, যা ফল স্বরূপ মাথার তালুতে লাল ও পিচ্ছিল দাগ হয় এবং ব্যথা হয়।

সংক্রমণ: ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকজনিত সংক্রমণ যেমন ফোলিকুলাইটিস বা রিংওয়ার্ম (টিনিয়া ক্যাপিটিস) মাথার তালুতে ব্যথা ও প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে। এটি সাধারণত ত্বকের কোনো ক্ষত বা কাটার মাধ্যমে সংক্রমণ প্রবেশ করলে হয় এবং প্রায়ই ব্যথার সাথে চুল পড়া এবং ত্বকে বৃত্তাকার দাগ দেখা যায়​।

টানজনিত ব্যথা: শক্ত করে চুল বাঁধা, যেমন পনিটেইল বা ব্রেইড, মাথার তালুতে টান সৃষ্টি করে ব্যথার কারণ হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে এমন হেয়ারস্টাইল বজায় রাখলে এটি মাথার তালুর কোষ গুলিতে ক্ষতি করে ব্যথার উদ্রেক করতে পারে।

সূর্যপোড়া: সূর্যের তীব্র আলোয় মাথার তালুতে পোড়া অনুভূতি হতে পারে, বিশেষত যদি মাথার চুল পাতলা বা কম থাকে। এটি মাথার তালুতে প্রদাহ এবং ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।

গ্লোবাল সেল আয়টিস (Giant Cell Arteritis): এটি একটি গুরুতর পরিস্থিতি, যেখানে মাথার রক্তনালীগুলিতে প্রদাহ হয় এবং এটি মাথার তালু তে ব্যথা, মাথা ব্যথা, দৃষ্টি সমস্যা, এমনকি চোয়ালের ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এটি সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং দ্রুত চিকিৎসা করা প্রয়োজন​।

মাথার উপরে ব্যথার কারণ

মাথার উপরের অংশে ব্যথা হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, এবং এটি একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। এর কিছু প্রধান কারণ হলো

টেনশন হেডেক (Tension Headache): মাথার উপরের অংশে বা পুরো মাথায় চাপ বা টান অনুভূত হওয়া টেনশন হেডেকের সাধারণ লক্ষণ। এই ব্যথা সাধারণত মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বা ঘুমের অভাবে ঘটে এবং এটি মাথার চামড়ার টান বা মাংসপেশির খিঁচুনি থেকে শুরু হতে পারে।

মাইগ্রেন (Migraine): মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত মাথার একপাশে তীব্র আকারে শুরু হয়, তবে অনেক সময় এটি মাথার উপরের অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। মাইগ্রেনের সঙ্গে আলোর সংবেদনশীলতা, বমি বমি ভাব, এবং তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে​।

সাইনাসাইটিস (Sinusitis): সাইনাসের সংক্রমণ বা প্রদাহের কারণে মাথার সামনের ও উপরের অংশে ব্যথা হতে পারে। সাইনাসের ব্যথা সাধারণত মাথার উপরের অংশে চাপ বা ব্যথা অনুভব করায় এবং এটি মাথার নড়াচড়ায় বাড়তে পারে।

গ্লোবাল সেল আয়টিস (Giant Cell Arteritis): এটি একটি গুরুতর প্রদাহ জনিত রোগ, যা মাথার রক্তনালী গুলিকে প্রভাবিত করে। এতে মাথার উপরের অংশে তীব্র ব্যথা, মাথাব্যথা, এবং চোখে সমস্যা হতে পারে। এটি সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়​।

ট্রিজেমিনাল নিউরালজিয়া (Trigeminal Neuralgia): এই অবস্থায় মাথার উপরের অংশে তীব্র, আচমকা ব্যথা অনুভূত হয়, যা স্নায়ুর সমস্যা থেকে আসে। এটি সাধারণত মুখ এবং মাথার উপরের অংশে ঘটে এবং দ্রুত, তীব্র ব্যথার কারণ হয়​।

মাথার পিছনে ব্যথার কারণ

মাথার পিছনে ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যা সাধারণত স্নায়ু, পেশি বা রক্তনালী সম্পর্কিত সমস্যার কারণে হয়। এর কয়েকটি সাধারণ কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো

টেনশন হেডেক (Tension Headache): টেনশন হেডেক হলো সবচেয়ে সাধারণ কারণ, যা পেশির খিঁচুনি বা টান থেকে সৃষ্ট হয়। এটি মাথার পিছনের অংশে চাপের মতো অনুভূত হয়, যা ঘাড় এবং মাথার পিছনের পেশিগুলিতে চাপ সৃষ্টি করে।

অকসিপিটাল নিউরালজিয়া (Occipital Neuralgia): অকসিপিটাল স্নায়ুর প্রদাহ বা চাপে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়, যা মাথার পিছনের অংশে এবং ঘাড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এটি সাধারণত শুটিং বা তীক্ষ্ণ ব্যথার মতো অনুভূত হয় এবং ঘাড়ের মুভমেন্টের সাথে বাড়তে পারে। (1)

সাইনাসাইটিস (Sinusitis): সাইনাসের প্রদাহের কারণে অনেক সময় মাথার পিছনে ব্যথা হতে পারে, বিশেষত মাথার সামনের এবং পিছনের অংশে চাপ অনুভূত হয়। সাইনাসের কারণে হওয়া ব্যথা সাধারণত মাথার নড়াচড়ায় বাড়ে। (2)

ঘাড়ের অস্বস্তি বা স্ট্রেইন (Neck Strain): ঘাড়ের পেশির অতিরিক্ত চাপ বা খারাপ ভঙ্গি, যেমন দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটারের সামনে বসা বা অন্য কোনো কার্যকলাপের কারণে মাথার পিছনে ব্যথা হতে পারে।

মাইগ্রেন (Migraine): মাইগ্রেন সাধারণত মাথার একপাশে তীব্র ব্যথার কারণ হয়, তবে অনেক সময় এটি মাথার পিছনের অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। মাইগ্রেনের সাথে আলো বা শব্দের সংবেদনশীলতা, বমিভাব ইত্যাদি উপসর্গ থাকতে পারে।

ঘাড়ের রগ ব্যথার কারণ

ঘাড়ের রগ বা পেশির ব্যথার কারণ গুলো বিভিন্ন হতে পারে, যা সাধারণত স্নায়ু, পেশি, বা ঘাড়ের অস্থিসংক্রান্ত সমস্যার কারণে হয়। এখানে কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হলো

পেশির টান (Muscle Strain): ঘাড়ের রগ বা পেশির টান হওয়া সবচেয়ে সাধারণ কারণ। এটি সাধারণত খারাপ ভঙ্গি, দীর্ঘ সময় ধরে মাথা নিচু করে কাজ করা, বা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের কারণে হতে পারে। টান অনুভব করার সাথে সাথে ঘাড় শক্ত হয়ে যায় এবং ব্যথা বাড়ে​।

সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস (Cervical Spondylosis): সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস ঘাড়ের অস্থিসংক্রান্ত একটি সমস্যা, যা ঘাড়ের হাড় ও স্নায়ুর ক্ষয় জনিত কারণে ঘটে। এই অবস্থায় ঘাড়ের রগে ব্যথা এবং স্নায়ুর সংযোগে সমস্যা হতে পারে, যা ঘাড়ের নড়া চড়ায় ব্যথা বাড়িয়ে তোলে​ ।

অকসিপিটাল নিউরালজিয়া (Occipital Neuralgia): ঘাড়ের পিছনে অকসিপিটাল স্নায়ু তে প্রদাহ সৃষ্টি হয়, যা ঘাড় এবং মাথার পিছনের রগে তীব্র ব্যথার কারণ হয়। এই ব্যথা সাধারণত শুটিং ব্যথার মতো তীক্ষ্ণ এবং আচমকা ঘটে।

ঘাড়ের চোট বা আঘাত (Neck Injury): কোন প্রকার চোট, যেমন দুর্ঘটনা বা অতিরিক্ত শারীরিক চাপ, ঘাড়ের পেশি বা স্নায়ুতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে ঘাড়ের রগে ব্যথা এবং শক্তি অনুভূত হয়, যা ঘাড়ের নড়াচড়ায় আরো বাড়ে। (3)

ডিস্ক সমস্যা (Herniated Disc): ঘাড়ের কশেরুকার মধ্যে থাকা ডিস্ক সরে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে স্নায়ুতে চাপ পড়তে পারে এবং এর ফলে ঘাড়ের রগে তীব্র ব্যথা হতে পারে। এই অবস্থায় স্নায়ুতে প্রদাহের কারণে ঘাড় থেকে কাঁধ বা হাতেও ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে ।

মাথা ব্যাথা হলে করণীয়

মাথা ব্যথা হলে কিছু করণীয় পদক্ষেপ অনুসরণ করলে আরাম পাওয়া যায়। এগুলো বিভিন্ন ধরনের মাথা ব্যথার জন্য উপযোগী হতে পারে

বিশ্রাম নিন: মাথা ব্যথার সময় শরীর এবং মন উভয়ই ক্লান্ত হয়, তাই একটি শান্ত এবং অন্ধকার ঘরে শুয়ে থাকা খুবই উপকারী। বিশ্রাম নেওয়ার সময় মাথার পেশি শিথিল হয়, যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। মাইগ্রেন বা টেনশন হেডেক হলে এই বিশ্রাম বিশেষ ভাবে কার্যকর। মাথার ব্যথার কারণ যদি মানসিক চাপ হয়, তাহলে বিশ্রাম নেওয়ার মাধ্যমে সেই চাপও হ্রাস পেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০-৩০ মিনিটের জন্য একটি অন্ধকার ও শান্ত ঘরে বিশ্রাম নেওয়া অনেক সময় দ্রুত আরাম দিতে পারে এবং ব্যথার তীব্রতা কমিয়ে দেয়। সাইনাসের মাথা ব্যাথা এর কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

পর্যাপ্ত পানি পান করুন: শরীরের পানি স্বল্পতা বা ডিহাইড্রেশন অনেক সময় মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। পানি শরীরের প্রয়োজনীয় ফ্লুইড সরবরাহ করে এবং স্নায়ুগুলির কার্য ক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। যখন শরীর পর্যাপ্ত পানি পায় না, তখন রক্তনালী সংকুচিত হতে পারে, যা মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। ডিহাইড্রেশনের কারণে হওয়া মাথা ব্যথা কমানোর জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। মাথা ব্যথা শুরু হলে প্রথমে পানি পান করার চেষ্টা করা উচিত, কারণ প্রায়ই এটি দ্রুত আরাম দেয়। কিছু ক্ষেত্রে, ফলের রস বা ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয়ও সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে যদি শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণ ও মিনারেল বের হয়ে যায়।

ঠান্ডা বা গরম প্রয়োগ করুন: ঠান্ডা প্রয়োগের মাধ্যমে রক্তনালী গুলি সংকুচিত হয়, যা প্রদাহ এবং স্নায়ুর উত্তেজনা কমায়। এটি পেশির ব্যথা এবং টান কমাতে সাহায্য করে। ঠান্ডা প্রয়োগ করতে একটি ঠান্ডা প্যাক বা কাপড়ে মোড়ানো বরফ ব্যবহার করতে পারেন এবং এটি মাথার বা ঘাড়ের পিছনে ১৫-২০ মিনিট ধরে রাখতে পারেন। এটি তাড়াতাড়ি আরাম দেয়। গরম প্রয়োগ পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়, যা পেশির চাপ কমাতে সহায়ক। গরম জলপট্টি বা গরম সেক মাথার পেছনে বা ঘাড়ে প্রয়োগ করলে আরাম পাওয়া যায়। এটি পেশির খিঁচুনি কমিয়ে মাথা ব্যথা উপশমে সাহায্য করে​।

ফিজিওথেরাপি: মাথা ব্যথার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা অনেক ক্ষেত্রে কার্যকরী হতে পারে। একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক মাথা ব্যথার কারণ গুলো নির্ধারণ করে সেই অনুযায়ী এক্সারসাইজ থেরাপি পরামর্শ দেন। উদাহরণ স্বরূপ, টেনশন হেডেকের ক্ষেত্রে ঘাড় ও কাঁধের পেশি গুলির উপর চাপ কমানোর জন্য ম্যাসাজ বা স্ট্রেচিং ব্যায়াম প্রয়োগ করা হয়।

এছাড়াও, ঘাড়ের সঠিক কাঠামো বজায় রাখা এবং দৈনন্দিন কাজের সময় পেশির ওপর চাপ কমানোর কৌশল শেখানো হয়।  বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, প্রাইভেট চেম্বার এবং ক্লিনিকে ফিজিওথেরাপি ও ম্যানুয়াল থেরাপির সেবা প্রদান করা হয়। একজন স্নাতক ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে সঠিক রোগ নির্ণয় এবং উপযুক্ত থেরাপি গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত ASPC ম্যানিপুলেশন থেরাপি সেন্টার একটি উল্লেখ যোগ্য প্রতিষ্ঠান, যা বিশেষত ম্যানুয়াল থেরাপির মাধ্যমে রোগীদের সেবা প্রদান করে।

এখানে Structural Diagnosis & Management (SDM) পদ্ধতির মাধ্যমে রোগীর শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করে সংশোধন মূলক থেরাপি প্রদান করা হয়, যা দ্রুত আরাম এবং রোগ নিরাময়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ফিজিওথেরাপি ঘাড়ের মেরুদণ্ডের কাঠামোগত উন্নতি ও মাংসপেশির শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ জীবনে ফিরতে সহায়তা করে এবং রোগের পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি কমায়। তাই একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য, কারণ সঠিক চিকিৎসা রোগীর দীর্ঘ মেয়াদী সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।

চোখের বিশ্রাম: স্ক্রিনের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের পেশিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। চোখের পেশিকে বিশ্রাম দিতে এবং মাথা ব্যথা কমাতে ২০-২০-২০ নিয়ম মেনে চলা যেতে পারে—প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের কোনো কিছু দেখা। এছাড়াও স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণ করা, চোখের ব্যায়াম করা, এবং চোখের শুষ্কতা কমানোর জন্য মাঝে মাঝে চোখ ধোয়া সহায়ক হতে পারে। চোখের পেশির চাপ কমলে মাথা ব্যথা অনেকাংশে উপশম হয় এবং চোখের আরাম বৃদ্ধি পায়​

মেডিকেশন: সাধারণত প্যারাসিটামল (Acetaminophen) মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের মাথা ব্যথা কমাতে ব্যবহৃত হয়, যা সহজলভ্য এবং নিরাপদ। তীব্র ব্যথার জন্য আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেন (Ibuprofen বা Naproxen) ব্যবহৃত হয়, যা প্রদাহ হ্রাস করে এবং দ্রুত আরাম দেয়। কিছু ওষুধে ক্যাফেইন মিশ্রিত থাকে, যা ব্যথানাশকের কার্যকারিতা বাড়ায়। তবে ওষুধ সঠিক ভাবে এবং নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় গ্রহণ করা উচিত, কারণ অতিরিক্ত ও দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যেমন গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বা ক্যাফেইন-জনিত মাথা ব্যথা। যদি সাধারণ ওষুধ কাজ না করে বা মাথা ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে প্রেসক্রিপশন ওষুধ, যেমন ট্রিপটান (Triptans), গ্রহণ করা উচিত​।

ক্যাফেইন: ক্যাফেইন ব্যথানাশক ওষুধের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয় এবং মাথা ব্যথা দ্রুত উপশম করতে সাহায্য করে। এটি রক্তনালী সংকুচিত করে, যা মাথা ব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে, বিশেষত মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে। তবে, ক্যাফেইনের মাত্রা সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি, কারণ অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে আবার বিপরীত প্রভাব দেখা দিতে পারে, যেমন মাথা ব্যথা বৃদ্ধি পাওয়া বা ঘন ঘন ফিরে আসা। কিছু ক্ষেত্রে ক্যাফেইনযুক্ত চা বা কফি মাথা ব্যথা উপশমে সাহায্য করে, তবে যদি ক্যাফেইন বেশি পরিমাণে নেওয়া হয়, তা ব্যথার চক্রকে আরও জটিল করে তুলতে পারে

স্ট্রেস কমানো: স্ট্রেস কমাতে নিয়মিত মেডিটেশন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, এবং যোগব্যায়াম করা উপকারী হতে পারে। এছাড়াও দৈনন্দিন কাজের মধ্যে বিরতি নেওয়া এবং আরামদায়ক পরিবেশে সময় কাটানো মাথা ব্যথা কমাতে সহায়ক। মানসিক চাপ কমলে শরীরের স্নায়ু শান্ত হয় এবং মাথার পেশি শিথিল হয়, ফলে মাথা ব্যথার তীব্রতা হ্রাস পায়।

তথ্যসূত্র

  1. Waldman, S.D., 2011.Atlas of Common Pain Syndromes E-Book. Elsevier Health Sciences. https://books.google.com/books?hl=en&lr=&id=y794gKjfZGUC&oi=fnd&pg=PP1&dq=Acute+pain+is+felt+on+inflammation+or+pressure+of+the+occipital+nerve,+which+radiates+to+the+back+of+the+head+and+neck.+It+usually+feels+like+a+shooting+or+sharp+pain+and+may+increase+with+neck+movement.&ots=TljmziMbG-&sig=hpKdnuHbtCKKcgVETyeqNJjP6QE
  2. Wald, E.R., 1993. Sinusitis.Pediatrics in Review14(9), pp.345-351. https://publications.aap.org/pediatricsinreview/article-abstract/14/9/345/35936
  3. Cohen, S.P. and Hooten, W.M., 2017. Advances in the diagnosis and management of neck pain.Bmj358. https://www.bmj.com/content/358/bmj.j3221.abstract
Dr. M Shahadat Hossain
Follow me

Physiotherapist, Pain, Paralysis & Manipulative Therapy Specialist, Assistant Professor Dhaka College of Physiotherapy, Secretary-General(BPA), Secretary(CARD), Chief Consultant(ASPC), Conceptual Inventor(SDM), Faculty Member(CRP), Member-Bangladesh Rehabilitation Council

কিভাবে সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস স্থায়ীভাবে নিরাময় করা যায়

কিভাবে সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস স্থায়ীভাবে নিরাময় করা যায়. সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস হলো ঘাড়ের মেরুদণ্ডের…
পরামর্শ নিতে 01877733322