এইডস কি

এইডস কি ধরনের রোগ। এইডস (AIDS) হলো একটি মারাত্মক রোগ যা এইচআইভি (HIV) ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে ঘটে। “অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম” নামে পরিচিত এই রোগ টি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেয়। এইচআইভি ভাইরাস সিডি৪ (CD4) টি-সেল গুলি কে আক্রান্ত করে, যা শরীর কে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। যত দিন গড়ায়, সিডি৪ সেলের সংখ্যা মারাত্মক ভাবে কমতে থাকে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়ে, তখন এই রোগ কে এইডস বলা হয়।

এইডস কি কারনে হয়

এইডস (AIDS) হয় যখন একজন ব্যক্তি এইচআইভি (HIV) ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়। এইচআইভি (Human Immunodeficiency Virus) মূলত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, বিশেষ করে সিডি৪ (CD4) টি-সেল গুলি কে আক্রান্ত করে এবং ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে দুর্বল করে দেয়। এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেশ কয়েক টি কারণে ঘটতে পারে, যেমন

রক্তের মাধ্যমে সংক্রমণ যখন এইচআইভি (HIV) ভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তির রক্ত অন্য একজন ব্যক্তির রক্তে প্রবেশ করে। এটি মূলত ঘটে যখন কেউ এইচআইভি সংক্রমিত রক্ত গ্রহণ করে, যেমন রক্তদান বা গ্রহণের সময়, যদি রক্ত যথাযথ ভাবে পরীক্ষা করা না হয় বা সঠিক ভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হয়। এছাড়া, ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক সেবনের সময় যদি একাধিক ব্যক্তি একই সূচ বা সিরিঞ্জ ব্যবহার করে, তাহলে সংক্রমিত রক্তের সংস্পর্শে আসা সরঞ্জামের মাধ্যমে এইচআইভি ছড়াতে পারে।

তদুপরি, শল্য চিকিৎসা, ট্যাটু, বা পিয়ারসিংয়ের সময় অপরিষ্কার বা সংক্রমিত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণেও রক্তের মাধ্যমে এইডস সংক্রমিত হতে পারে। এমন কি, স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ক্ষেত্রে, সংক্রমিত রক্তের সূচ বা ধারালো বস্তু দ্বারা ভুলবশত ইনজেকশন দিলে বা কেটে যাওয়ার মাধ্যমে ভাইরাস টি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধে রক্তের নিরাপত্তা, নিরাপদ সূচ ব্যবহার এবং সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য সঠিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ (1)।

এইডস এর লক্ষণ ও কারণ

যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে সংক্রমণ ভাইরাস টি সাধারণত রক্ত, বীর্য, যোনি নিঃসরণ, বা মলদ্বারের তরল দ্বারা ছড়ায়, যা যৌন মিলনের সময় শরীরের মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারে। বিশেষ করে কনডম ছাড়াই যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। যেকোনো ধরনের যৌন সম্পর্কের (যেমন: যোনি, মলদ্বার বা মুখমেহন) মাধ্যমে ভাইরাস টি একজন থেকে আরেকজনের শরীরে স্থানান্তরিত হতে পারে।

যাদের একাধিক যৌন সঙ্গী থাকে বা যারা সঠিক ভাবে সুরক্ষা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে না, তাদের মধ্যে এইডস সংক্রমণের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে যায়। যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধে সুরক্ষিত যৌনাচার, যেমন কনডমের ব্যবহার এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ (2)।

মা থেকে সন্তানের মধ্যে সংক্রমণ কোন মায়ের যদি এইডস হয়ে থাকে তবে তার গর্ভাবস্থা, প্রসবকালীন সময়, বা স্তন্যদান করার সময় শিশুর মধ্যে ভাইরাস টি স্থানান্তরিত হয়। গর্ভাবস্থায় মায়ের রক্তের মাধ্যমে এইচআইভি ভ্রূণের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে। প্রসবের সময়, শিশুর সংস্পর্শে আসা মায়ের রক্ত বা শরীরের তরলের মাধ্যমে ভাইরাস টি ছড়াতে পারে। এছাড়াও, জন্মের পর শিশুকে স্তন্যদান করার সময়, মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে (3)।

আরও পড়ুন
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার | দ্রুত সমস্যার সমাধান

দুধ বা শারীরিক তরলের মাধ্যমে সংক্রমণ ভাইরাস টি রক্ত, বীর্য, যোনি নিঃসরণ, মলদ্বারের তরল, এবং মায়ের দুধের মাধ্যমে ছড়ায়। সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে যৌন মিলনের সময়, রক্ত মিশ্রিত দুধ পান করার সময়, বা স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সময় যেখানে সংক্রমিত রক্ত বা শরীরের তরলের সংস্পর্শে আসা হয়, তখন এইচআইভি ভাইরাস একজনের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। বিশেষ করে, মায়ের দুধের মাধ্যমে শিশুর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে যদি মা সংক্রমিত হন। এছাড়া, স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের ক্ষেত্রে, যদি তারা সংক্রমিত ব্যক্তির রক্ত বা অন্যান্য শারীরিক তরলের সংস্পর্শে আসে, তবে তাদেরও সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে (4)।

এইডস এর লক্ষণ

এইডস (AIDS) এর লক্ষণ গুলি সাধারণত এইচআইভি (HIV) সংক্রমণের বিভিন্ন পর্যায়ে ভিন্ন ভাবে প্রকাশ পায়। এই লক্ষণ গুলি সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায় থেকে উন্নত পর্যায় পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে থাকে। এখানে এইডসের লক্ষণ গুলি বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হলো

প্রাথমিক সংক্রমণের লক্ষণ (Acute HIV Infection)

এইচআইভি সংক্রমণের প্রথম কয়েক সপ্তাহে শরীরে ফ্লুর মতো কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা যেতে পারে। এটি সাধারণত “অ্যাকিউট রেট্রোভাইরাল সিনড্রোম” (ARS) নামে পরিচিত। লক্ষণ গুলি সংক্রমণের ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর দেখা দিতে পারে এবং কিছু সপ্তাহ ধরে স্থায়ী হতে পারে। এই পর্যায়ে লক্ষণ গুলি অন্তর্ভুক্ত:

জ্বর হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার জ্বর যা দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে পারে।

গলা ব্যথা গলায় ব্যথা বা খুশখুশে অনুভূতি।

মাথাব্যথা তীব্র মাথা ব্যথা।

লিম্ফ নোড ফোলাভাব গলায়, বগলে বা কুঁচকি তে লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া।

ত্বকের র‍্যাশ ত্বকে লাল বা গোলাপি দাগ বা ফুসকুড়ি, যা সাধারণত ত্বকের উপরের অংশে দেখা যায়।

পেশী ও গিঁটের ব্যথা শরীরের পেশী এবং গিঁটে ব্যথা ও অস্বস্তি।

ঘাম বিশেষ করে রাতে ঘেমে যাওয়া।

ডায়রিয়া ও বমি বমি ভাব দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া এবং মাঝে মাঝে বমি বমি ভাব।

সুপ্ত সংক্রমণের লক্ষণ (Chronic HIV Infection)

প্রাথমিক সংক্রমণের পর, এইচআইভি সংক্রমণ একটি সুপ্ত বা “অ্যাসিম্পটোমেটিক” পর্যায়ে প্রবেশ করে, যেখানে অনেকের তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। এই পর্যায়ে ভাইরাস টি শরীরের ভেতরে ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে দুর্বল করে দেয়। এই সময় কাল কয়েক বছর থেকে এক দশকের বেশি সময় পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, তবে কিছু ক্ষেত্রে লক্ষণ গুলি দেখা দিতে পারে

গ্ল্যান্ড বা লিম্ফ নোডের ফোলাভাব নিয়মিত বা দীর্ঘস্থায়ী গ্ল্যান্ড বা লিম্ফ নোডের ফোলা ভাব।

হালকা সংক্রমণ যেমন ফুসকুড়ি বা নিয়মিত ঠাণ্ডা বা অন্যান্য সংক্রমণ।

সংক্রমণের পরবর্তী লক্ষণ (Advanced HIV Infection/AIDS)

যখন এইচআইভি সংক্রমণ গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব দুর্বল হয়ে যায়, তখন এটি এইডস (AIDS) এ পরিণত হয়। এই পর্যায়ে সংক্রমণ আরও জটিল ও মারাত্মক হয়ে ওঠে এবং বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায়, যেমন

ওজন কমে যাওয়া অকারণ বা আকস্মিক ভাবে শরীরের ওজন কমে যাওয়া।

দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে স্থায়ী ডায়রিয়া।

দীর্ঘমেয়াদী কাশি দীর্ঘ সময় ধরে কাশি থাকা যা সাধারণ ওষুধে কমে না।

দৃষ্টি সমস্যা চোখে ঝাপসা দেখা বা দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া।

নিয়মিত বা দীর্ঘদিন ধরে জ্বর সাধারণত ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বা এর বেশি জ্বর।

আরও পড়ুন
হঠাৎ আঘাত পেলে কি করবেন?

মৌখিক, জেনিটাল, বা অ্যানাল সংক্রমণ যেমন মাউথ সোর, জেনিটাল বা অ্যানাল সোর, এবং ছত্রাক সংক্রমণ।

ত্বকে লাল বা বেগুনি দাগ কপোসি সারকোমা (Kaposi’s Sarcoma) নামক একটি ধরনের ক্যান্সার, যা ত্বক, মুখের ভেতরে, বা অন্যান্য অঙ্গের ওপর লাল বা বেগুনি দাগের আকারে দেখা দিতে পারে।

স্নায়বিক সমস্যা যেমন স্মৃতিভ্রংশ, মস্তিষ্কের অসুখ, খিঁচুনি, বা মনোযোগের সমস্যা।

অপর্চুনিস্টিক ইনফেকশন এবং ক্যান্সার

এইডস-এ আক্রান্ত রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়ার কারণে তাদের “অপর্চুনিস্টিক ইনফেকশন” (যে ধরনের সংক্রমণ সাধারণত সুস্থ মানুষের মধ্যে দেখা যায় না) এবং কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যেমন

নিউমোনিয়া যেমন পনিউমোসিস্টিস নিউমোনিয়া (PCP)।

টিউবারকিউলোসিস (যক্ষ্মা) যা উন্নয়নশীল দেশ গুলি তে একটি প্রধান কারণ।

ক্রিপ্টোসপোরিডিওসিস অন্ত্রের একটি প্যারাসাইটিক সংক্রমণ যা ডায়রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

সাইটোমেগালো ভাইরাস (CMV) এক ধরনের ভাইরাস যা চোখ, ফুসফুস, বা হজমনালী তে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

টক্সোপ্লাজমোসিস যা মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য অঙ্গ কে আক্রান্ত করে।

এইডস হলে করনীয়

এইডস (AIDS) একটি গুরুতর এবং দীর্ঘ মেয়াদী রোগ যা এইচআইভি (HIV) ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে হয়, তাই সঠিক ভাবে চিকিৎসা ও জীবনযাপন পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে এইডস হলে করণীয় কিছু গুরুত্ব পূর্ণ পদক্ষেপ উল্লেখ করা হলো:

চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা এইডস-এর লক্ষণ বা এইচআইভি সংক্রমণের কোনো সন্দেহ দেখা দিলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক রোগ নির্ণয় করবেন এবং একটি ব্যক্তিগত চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করবেন।

অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (ART) শুরু করা এইডস-এর চিকিৎসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (ART) শুরু করা। ART হলো এক ধরনের ওষুধের সংমিশ্রণ যা শরীরে এইচআইভি ভাইরাসের পরিমাণ কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে শক্তিশালী করতে সহায়ক হয়। এই চিকিৎসা রোগীর জীবনের মান উন্নত করে এবং ভাইরাসের বিস্তার কমায়।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়মিত ভাবে ডাক্তার দেখানো এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। এটি চিকিৎসার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে এবং যেকোনো ধরনের জটিলতা বা নতুন সংক্রমণ দ্রুত শনাক্ত করতে সহায়ক। পাশাপাশি, রক্ত পরীক্ষা, ভাইরাল লোড এবং সিডি৪ (CD4) নিয়মিত গণনা করা দরকার।

পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ সুষম এবং পুষ্টিকর খাদ্য শরীরের শক্তি বজায় রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কমা তে সহায়ক। এইডস রোগীদের জন্য খাদ্য তালিকায় প্রোটিন, শাক সবজি, ফল, পূর্ণ শস্য এবং প্রচুর পানি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। প্রোটিন যেমন মাছ, মুরগি, ডিম, দুধ, মটরশুটি এবং বাদাম শরীরের পেশি ও কোষ গঠনে সহায়তা করে।

শাক সবজি ও ফল থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। এছাড়া পর্যাপ্ত পানি পান করে শরীরের ডিহাইড্রেশন রোধ করা এবং হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখা যায়। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে রোগীর শরীর সুস্থ থাকে এবং দৈনন্দিন কাজ কর্ম করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি পায়, যা এইডস চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত হাত ধোয়া, ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, এবং সঠিক ভাবে রান্না করা খাবার খাওয়া অত্যাবশ্যক। সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ, বিশেষ করে যারা ফ্লু বা ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছেন, তাদের এড়িয়ে চলা উচিত।

যে কোনো কাটা বা ক্ষত দ্রুত পরিষ্কার করা এবং জীবাণু নাশক দিয়ে সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের জন্য গ্লাভস, মাস্ক এবং সুরক্ষা মূলক পোশাক পরা অপরিহার্য, এবং ব্যবহৃত সূচ বা ধারালো জিনিস গুলি সঠিক ভাবে নিষ্পত্তি করা উচিত।

আরও পড়ুন
হাঁটুতে লুজ বডি

মানসিক কাউন্সিলিং এইডস রোগীদের মানসিক চাপ এবং হতাশা মোকাবিলায় মানসিক কাউন্সিলিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাউন্সেলিং, গ্রুপ থেরাপি, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা, এবং প্রয়োজন হলে মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সহায়ক হতে পারে।

সুরক্ষিত যৌন চর্চা সুরক্ষিত যৌন আচরণ যেমন কনডম ব্যবহার করা, একাধিক যৌন সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক এড়িয়ে চলা, এবং যৌন সঙ্গীর সঙ্গে সংক্রমণের বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করা সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক। কনডম সঠিক ভাবে এবং প্রতিবার ব্যবহারের মাধ্যমে এইচআইভি ছড়ানোর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য ভাবে কমানো যায়।

এছাড়া, যৌন সংক্রমণ জনিত অন্যান্য রোগের চিকিৎসা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত, কারণ এই ধরনের সংক্রমণ এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সুরক্ষিত যৌন চর্চা শুধু নিজের জন্য নয়, বরং সঙ্গীর জন্যও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে, এবং এইডস-এর বিস্তার রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ যেসব ওষুধের মাধ্যমে এইচআইভি নিয়ন্ত্রণ করা হয়, সেগুলোর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। পিঠে ব্যথার কারণ ও করণীয়

নিয়মিত ব্যায়াম করা নিয়মিত হালকা ব্যায়াম যেমন হাঁটা, যোগ ব্যায়াম, বা হালকা শারীরিক কার্য কলাপ শরীর কে সক্রিয় রাখতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।

সতর্কতা অবলম্বন সতর্কতা অবলম্বনের জন্য প্রথমে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা উচিত এবং তাদের নির্দেশিকা মেনে চলা জরুরি। ঘন ঘন হাত ধোয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, এবং জনাকীর্ণ স্থান এড়িয়ে চলা সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক। তাছাড়া, ইনজেকশন বা সূচের মতো ধারালো বস্তু ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকা উচিত এবং অন্যের ব্যবহৃত সরঞ্জাম কখনও ব্যবহার করা উচিত নয়।

তথ্যসুত্র

  1. World Health Organization, 1997. HIV/AIDS: the global epidemic.Weekly Epidemiological Record= Relevé épidémiologique hebdomadaire72(04), pp.17-21. https://apps.who.int/iris/bitstream/handle/10665/230022/WER7204_17-21.PDF?sequence=1
  2. Shaw, G.M. and Hunter, E., 2012. HIV transmission.Cold Spring Harbor perspectives in medicine2(11), p.a006965. https://perspectivesinmedicine.cshlp.org/content/2/11/a006965.short
  3. Volmink, J.A. and Marais, J., 2008. HIV: mother-to-child transmission.BMJ clinical evidence2008. https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC2907958/
  4. Shaw, G.M. and Hunter, E., 2012. HIV transmission.Cold Spring Harbor perspectives in medicine2(11), p.a006965. https://perspectivesinmedicine.cshlp.org/content/2/11/a006965.short
Dr. M Shahadat Hossain
পরামর্শ নিতে 01877733322