জীবনের প্রতিটি সময়ই মানুষ চায় সুস্থ থাকতে । কিন্তু মেরুদন্ডের সমস্যা হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই দুরূহ। জীবনে কোনো না কোনো সময়ে অল্প বা বেশি সময়ের জন্য হলেও একজন মানুষ মেরুদন্ডের সমস্যা ভুগে থাকেন।
রাতে সুস্থ মানুষ শুয়ে আছেন, সকাল বেলায় আর ডান-বাম নাড়াতে পারছেন না। এর কারণ কি জানেন? ঘুমের ঘোরে আপনার ঘাড়ের অবস্থান কি ছিল অথবা রোগের বহিঃপ্রকাশ।
ঘাড় ব্যথার বিভিন্ন রোগের বহিঃপ্রকাশে হতে পারে। যেমন আর্থাইটিস, স্পনডাই, লোসিস বা বাত জনিত সমস্যা, ফাইব্রোসাইটিস, স্লিপ ডিস্ক অথবা যখন ব্যথা হাতে চলে যায় নিউরাইটিস এবং নিউর্যালজিয়া।
অনেকের ব্যাথা শুরু হয় ঘাড় অথবা কাঁধ কিংবা সোল্ডার থেকে, কিছু ব্যথা অনুভব হতে পারে আর্ম বা বাহু থেকে। ঘাড় থেকে ব্যথা ছাড়াতে পারে কনুই এর নিচে পর্যন্ত যা বিস্তার হতে পারে হাতের কব্জি ও আঙ্গুল পর্যন্ত। কেউ কেউ আবার হাতে ঝিনঝিনে, হাতে বোধশক্তি কম, কিছু দুর্বলতা অনুভব করে।
সাধারণত এ ধরনের ব্যথা সব সময় হয় না। সারা দিনে পাঁচবার হয় অথবা এর চেয়ে কম বেশি হতে পারে। ব্যথার শুরুটা রহস্যজনক ভাবে কোন কারন ছাড়াই হতে পারে। আবার কমে যাওয়া টাই রহস্যজনক ভাবে হতে পারে। যারা সবসময় ব্যথা অনুভব করেন তাদেরকে ব্যথার ওষুধ। তবে বেশিরভাগ রোগীর ব্যথা তার জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।
এই ধরনের ব্যথার রোগীর মাসের পর মাস এমন কি বছর পর্যন্ত হতে পারে। রোগীর চিকিৎসা নিয়ে হয়তো ভালো হল। এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করলে যারা স্বাস্থ্য পেশী জড়িত আছেন। তারপর ও ব্যথা আবার আসতে পারে। তবে যে জিনিসটা বেশি দরকার সেটি হল নিজের চিকিৎসা নিজের অনুশীলন করা। বলতে পারেন সেটা আবার কিভাবে? এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা এখানে করা হবে।
এই আলোচনার আসল কথা হচ্ছে আপনার ঘাড় ব্যথা। তাহলে এটি ম্যানেজ করা আপনার দায়িত্ব। যদি আপনার ঘাড় ব্যাথা হয় তাহলে শিখতে হবে কিভাবে তা ম্যানেজ করা যায়। আরো চিন্তা করতে হবে চিকিৎসার পাশাপাশি কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়। নিজের ঘাড় ব্যথা নিজে ম্যানেজ করায় উন্নত চিকিৎসা অপেক্ষা ভালো।
যদি আপনার ঘাড় ব্যথা প্রথম প্রথম শুরু হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং নির্দিষ্ট করতে হবে সমস্যাটা কি। তারপর ম্যানুপোলেটিব থেরাপিস্টের সাহায্যে ব্যথা নিরাময় করা যেতে পারে।
কেন ঘাড় ব্যথা হয় :
ঘাড়ের মধ্যে সাতটি হাড় আছে। প্রতিটি বিহারের সামনের অংশকে ভর্টিভ্রা বডি বলে এবং পেছনের অংশে থাকে এক ধরনের সমস্যা ( তৈরি হয় দুটি ভর্টিভ্রা থেকে) যাকে আমরা ক্যানেল বলি। যেখানে দিয়ে স্পাইনাল কর্ড বা মেরুরজ্জু অতিবাহিত হয়।
একটি হাড়কে আরেকটি হাড় থেকে বিভক্ত রাখে যে অংশটি, তার নাম ডিক্স। ডিক্সের ভেতরের অংশটি অর্ধ তরলাকার ( লিকুইড) থাকে। মাঝ বরাবর থেকে নিউক্লিয়াস পালপোসাস এবং বাইরে থাকে একটি শক্ত অংশ (অ্যানুলাস ফাইব্রোসাস) যা নরম অংশটিকে বাইরে আসতে প্রতিরোধ করে। ডিক্স সাধারণত রবারের ওয়াসার এবং স্প্রিংয়ের মতো কাজ করে।
মেরুদন্ড কে শক্ত ও মজবুত করার জন্য বিভিন্ন স্থানে লিগামেন্ট, টেনঢন ও মাংসপেশি থাকে যা জয়েন্ট কে আবদ্ধ করে থাকে। স্পাইনাল কর্ড থেকেই স্পাইনাল ক্যানেল দিয়ে স্পাইন নার্ভে বের হয়। উক্ত নার্ভ সাধারণত হাতে শক্তি ত্বকে সেনসেশন বহন করে। বেশিরভাগ ব্যথা অনুভূত হয নার্ভ ড্যামেজের কারণে।
মেকানিক্যাল পেইন হয় যখন কোন জয়েন্টের দুটি হাড় কাছাকাছি হয় এবং চারপাশে মাংসপেশির ওপর অতিরিক্ত চাপ দেয়। এই ধরনের মেকানিক্যাল ব্যথা সাধারণত শরীরের দুটি জয়েন্টে হয়। কিন্তু মেরুদন্ড হাড়ের মাঝে লিগামেন্ট ও মাংসপেশী বিদ্যামান থাকে যা ডিক্সকে সুসংগঠিত ও স্ট্যাবিলিটি দেয়।
দীঘদিন বারবার মাংসপেশী যখন অতিরিক্ত চাপে থাকে তখন এদের মধ্যে এক ধরনের ইনজুরি ও ড্যামেজ শুরু হয়। আর এসব ঘটনার মূল কারণ হচ্ছে রোগীর দৈনন্দিন কাজের মধ্যে অবস্থানগত ত্রুটির জন্য। সারাদিন যে সব কাজ আমরা করে থাকি তারে বেশির ভাগ কাজ করা হয় সামনে ঝুকে বা বেন্ট হয়।
- Treating Rotator Cuff Tears Without Surgery - September 27, 2023
- Shoulder Pain: Could It Be Avascular Necrosis? - September 24, 2023
- Understanding Brachial Plexus Neuropathy: An Overview of Parsonage-Turner Syndrome - September 20, 2023