পিএলআইডি এর আধুনিক চিকিৎসা
পিএলআইডি এর আধুনিক চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে। পিএলআইডি কি? পিএলআইডি মেরুদন্ডের একটি গুরুতর সমস্যা, যা মেরুদণ্ডের ডিস্কের ভিতরে থাকা জেলী জাতীয় পদার্থ নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করে ব্যথা এবং অন্যান্য উপসর্গ সৃষ্টি করে। তবে, আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি তে যেমন ওষুধের চিকিৎসা, ফিজিওথেরাপি বা কারেকশন থেরাপি, এপিডিউরাল স্টেরয়েড ইনজেকশন, মাইক্রোডিসেকটমি, এন্ডোস্কোপিক ডিস্কেকটমি, এবং লেজার ডিস্ক ডিকমপ্রেশন বর্তমানে বাংলাদেশে সহজেই করা যায় এবং বেশ কার্যকর, যা রোগীদের জন্য উপশম এবং দ্রুত সুস্থতার উপায় হিসেবে কাজ করছে। পিএলআইডির চিকিৎসায় রোগীর অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসা নির্ধারণ করা গুরুত্ব পূর্ণ এবং সঠিক পদ্ধতিতে উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
পিএলআইডি (PLID) কি?
পিএলআইডি (PLID), বা “প্রোলাপসড লাম্বার ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক” (Prolapsed Lumbar Intervertebral Disc), হলো এমন একটি রোগ যেখানে মেরুদণ্ডের লাম্বার অংশের (কোমরের) ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক বা কশেরুকার মধ্যবর্তী জেলির মতো পদার্থ টি তার অবস্থান থেকে সরে গিয়ে নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে কোমরে তীব্র ব্যথা হয়, পায়ে ঝিঁঝি, দুর্বলতা এবং কখনও কখনও পায়েও ব্যথা অনুভূত হয়। ডিস্ক প্রোলাপস মূলত বয়স জনিত পরিবর্তন, ভারী কিছু উত্তোলন, অতিরিক্ত কায়িক শ্রম, অথবা মেরুদণ্ডে আঘাতের কারণে হতে পারে।
Plid রোগের লক্ষণ
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পিএলআইডি সাধারণত কোমরের দিকে ঘটে এবং এ রোগ হলে সায়াটিকা (Sciatica) নামক ব্যথা অনুভূত হয়। সায়াটিকা হলো এক ধরনের ব্যথা যা কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি পিএলআইডির একটি প্রধান উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।
পিএলআইডির লক্ষণ গুলো সাধারণত মেরুদণ্ডের কোন অংশে ডিস্কের প্রোলাপস ঘটেছে এবং কতটা গুরুতর তার ওপর নির্ভর করে। নিচে পিএলআইডি রোগের সাধারণ লক্ষণ গুলো এবং তাদের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
১. কোমরে তীব্র ব্যথা (Severe Lower Back Pain) পিএলআইডির সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো কোমরে তীব্র ব্যথা। এই ব্যথা সাধারণত হঠাৎ শুরু হয় এবং স্বাভাবিক চলাফেরার সময়, যেমন বসা, দাঁড়ানো, হাঁটা বা ভারী ওজন তোলার সময় বাড়তে পারে। ব্যথা অনেক সময় পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়ে, যা সায়াটিকার (Sciatica) লক্ষণ হতে পারে। কোমরের এই ব্যথা ডিস্কের ভিতরের জেলী বের হয়ে নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করার কারণে হয়।
২. পায়ে ব্যথা এবং ঝিঁঝি অনুভূতি (Leg Pain and Tingling Sensation) পিএলআইডি রোগে অনেক সময় কোমরের ব্যথার পাশাপাশি পায়ে ব্যথা এবং ঝিঁঝি অনুভূতি দেখা যায়। এই ধরনের ব্যথা সাধারণত এক পায়ে দেখা দেয় কোন কোন সময় উভয় পায়েও হতে পারে এবং এটি কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই অবস্থায় সায়াটিক নার্ভে চাপ পড়ার ফলে পায়ে ব্যথা, ঝিঁঝি, বা অসাড়তা অনুভূত হয়।
৩. পায়ের দুর্বলতা (Weakness in Legs) পিএলআইডি রোগে অনেক সময় পায়ে দুর্বলতা দেখা দেয়, যা ডিস্কের প্রোল্যাপসের কারণে নার্ভের উপর দীর্ঘস্থায়ী চাপের ফলে ঘটে। এই দুর্বলতা বিশেষ করে পায়ের পাতায় বা গোড়ালিতে হতে পারে এবং রোগী হাঁটার সময় বা ভারী কাজ করার সময় পায়ের দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ২০-৩০% রোগী যারা পিএলআইডি তে আক্রান্ত তাদের পায়ে দুর্বলতা দেখা দেয়।
৪. নড়াচড়ায় সীমাবদ্ধতা (Limited Mobility) পিএলআইডি রোগের আরেক টি সাধারণ লক্ষণ হলো নড়াচড়ায় সীমাবদ্ধতা। কোমরের ব্যথা এবং পায়ের ঝিঁঝির কারণে রোগী সাধারণত তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে পারেন না এবং তাদের নড়তে চড়তে বেশ অসুবিধা ও কষ্ট হয়। এই অবস্থায় কোমরের মুভমেন্ট যেমন সামনে ঝোকা, ডানে-বামে মোচড় দেয়া বা বাঁকানো অত্যন্ত কষ্টদায়ক হতে পারে।
৫. মূত্রাশয় এবং মলত্যাগের সমস্যা (Bladder and Bowel Dysfunction) যদি পিএলআইডির কারণে নার্ভের উপর অত্যধিক চাপ পড়ে, তাহলে মূত্রাশয় এবং মলত্যাগের নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হতে পারে। এই ধরনের লক্ষণ সাধারণত ডিস্ক প্রোল্যাপসের গুরুতর অবস্থার ইঙ্গিত দেয়, যা “কডা ইকুইনা সিন্ড্রোম” (Cauda Equina Syndrome) নামে পরিচিত। এই অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন, কারণ এটি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে এবং রোগীর দৈনন্দিন জীবনে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগীদের মধ্যে এ ধরনের লক্ষণ থাকলে অপারেশন করা জরুরী হয়ে পড়ে।
৬. কোমরের যে ব্যথা রাতে আরো বেড়ে যায় (Pain that Worsens at Night) পিএলআইডি রোগের কারণে কোমরের ব্যথা রাতে আরও তীব্র হতে পারে। মেরুদণ্ডের ডিস্কের অবস্থান গত পরিবর্তনের কারণে এবং শোয়ার সময় নার্ভের উপর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে রাতে ব্যথা বৃদ্ধি পায়। এই অবস্থায় রোগী অনেক সময় ঘুমাতে পারেন না এবং ব্যথার কারণে ঘুম ভেঙে যায়। আপনি ডিস্ক প্রল্যাপ্স জনিত কোমড় ব্যথার রোগী | কিভাবে বুঝবেন
পিএলআইডি কেন হয়
পিএলআইডি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোমরে ঘটে এবং এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। পিএলআইডির কারণ গুলো প্রধানত বয়স জনিত পরিবর্তন, কায়িক পরিশ্রম, আঘাত, এবং জীবন ধারা-সম্পর্কিত ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভর করে। নিচে পিএলআইডি কেন হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
১. বয়সজনিত পরিবর্তন (Age-related Changes) বয়সের সাথে সাথে মেরুদণ্ডের ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্কের পরিবর্তন ঘটে। ডিস্কের মধ্যবর্তী জেলির মতো পদার্থ (নিউক্লিয়াস পালপোসাস) ধীরে ধীরে আর্দ্রতা হারায় এবং শক্ত হয়ে যায়, যার ফলে ডিস্কের স্থিতিস্থাপকতা এবং শক শোষণ করার ক্ষমতা কমে যায়। এই পরিবর্তন গুলো ডিস্কের প্রোলাপসের ঝুঁকি বাড়ায়। ৩০ বছরের পর থেকে এই ধরনের পরিবর্তন গুলি শুরু হয় এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সের মানুষদের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
২. আঘাত বা শারীরিক চাপ (Trauma or Physical Strain) পিএলআইডির একটি সাধারণ কারণ হলো আঘাত বা অতিরিক্ত শারীরিক চাপ। ভারী ওজন তোলা, হঠাৎ মোচড় দেওয়া, অথবা মেরুদণ্ডের উপর চাপ পড়ে এমন কোনো কাজ করার ফলে ডিস্কের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হতে পারে এবং তা প্রোলাপসের কারণ হতে পারে। যেসব ব্যক্তিরা নিয়মিত ভারী কাজ করেন বা এমন কর্মক্ষেত্রে কাজ করেন যেখানে মেরুদণ্ডের উপর বেশি চাপ পড়ে, তাদের পিএলআইডির ঝুঁকি বেশি থাকে।
পিএলআইডি ব্যথা
৩. অস্বাস্থ্যকর জীবন ধারা (Unhealthy Lifestyle) অস্বাস্থ্যকর জীবন ধারা, যেমন অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা, ধূমপান, এবং দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা পিএলআইডির ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত ওজন মেরুদণ্ডের ডিস্কের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা ডিস্কের প্রোল্যাপ্সের ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপান ডিস্কের ভিতরের রক্ত সঞ্চালন কমায় এবং ডিস্কের স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস করে, যা ডিস্কের প্রোল্যাপ্সের কারণ হতে পারে। যারা ধূমপান করেন বা স্থূলতার সমস্যায় ভোগেন তাদের মধ্যে পিএলআইডির ঝুঁকি বেশি থাকে।
৪. জেনেটিক কারণ (Genetic Factors) জেনেটিক কারণ বা বংশগতির কারণেও পিএলআইডি হতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, মেরুদণ্ডের ডিস্কের প্রোল্যাপ্সের ঝুঁকি আংশিক ভাবে বংশগত হতে পারে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পিএলআইডির ইতিহাস থাকলে, পরবর্তী প্রজন্মেও এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে। যাদের পরিবারে ডিস্কের সমস্যা রয়েছে তাদের মধ্যে পিএলআইডির ঝুঁকি ৪-৫ গুণ বেশি থাকে।
৬. অতীতে মেরুদণ্ডের আঘাত বা অস্ত্রোপচার (Previous Spinal Injury or Surgery) যদি মেরুদণ্ডে পুরনো কোন আঘাতের ঘটনা থাকে বা অস্ত্রোপচার হয়, তাহলে পিএলআইডির ঝুঁকি বেড়ে যায়। পূর্বের আঘাত বা অস্ত্রোপচার মেরুদণ্ডের ডিস্কের স্থিতিস্থাপকতা এবং সহনশীলতা কমিয়ে দেয়, যা পরবর্তীতে প্রোল্যাপ্সের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা মেরুদণ্ডে পূর্বে আঘাত পেয়েছেন তাদের মধ্যে পিএলআইডির ঝুঁকি বেশি থাকে।
৭. মোচড় দেওয়া বা হঠাৎ নড়াচড়া (Sudden Movements or Twisting) কোমর বা মেরুদণ্ডে হঠাৎ মোচড় দেওয়া বা এক পাশে বাঁকানো ডিস্কের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে এবং এটি প্রোল্যাপ্সের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে, যখন কোনো ভারী বস্তু তোলা হয় বা মেরুদণ্ডকে হঠাৎ মোচড় দেওয়া হয়, তখন ডিস্কের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং তা প্রোল্যাপ্সের দিকে পরিচালিত হতে পারে।
পিএলআইডি রোগের চিকিৎসা
পিএলআইডির চিকিৎসা সাধারণত রোগীর উপসর্গের তীব্রতা এবং অবস্থা অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়। নিচে পিএলআইডি রোগের জন্য প্রচলিত বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতির বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
প্রাইমারি বা কনজারভেটিভ চিকিৎসা (Conservative Treatment)
পিএলআইডির প্রথম স্তরের চিকিৎসা হিসেবে প্রাথমিক বা কনজারভেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এতে অন্তর্ভুক্ত থাকে
- বিশ্রাম (Rest) কোমরের নিচের অংশে ব্যথা হলে কিছুদিন বিশ্রাম নেওয়া উচিত, তবে দিনের পর দিন বিছানায় শুয়ে থাকা উচিৎ নয়। ব্যথার তীব্রতা কমে গেলে হালকা এক্সারসাইজ করা ভাল, এতে করে পেশী শিথিল থাকে।
- ব্যথানাশক ওষুধ (Pain Relievers) নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (NSAIDs) যেমন আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেন, ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- ফিজিক্যাল থেরাপি (Physical Therapy) ফিজিক্যাল থেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে ব্যায়াম এবং স্ট্রেচিং রোগীর পেশী শক্তিশালী করতে এবং ব্যথা কমাতে সহায়ক। ফিজিক্যাল থেরাপি প্রায়ই প্রাইমারি চিকিৎসার একটি প্রধান অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং মেরুদণ্ডের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে (১)।
- গরম বা ঠান্ডা সেঁক (Heat or Cold Therapy) গরম বা ঠান্ডা সেঁক ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে। ঠান্ডা সেঁক প্রদাহ কমাতে এবং গরম সেঁক রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে।
ইপিডিউরাল স্টেরয়েড ইনজেকশন (Epidural Steroid Injection)
ইপিডিউরাল স্টেরয়েড ইনজেকশন হলো একটি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যা প্রায়ই পিএলআইডি রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে মেরুদণ্ডের আশেপাশে স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হয়, যা প্রদাহ কমাতে এবং নার্ভের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে। ডিস্ক প্রলাপ্স কী? । ডিস্ক প্রলাপ্সের লক্ষণ ও চিকিৎসা
মাল্টিডিসিপ্লিনারি রিহ্যাবিলিটেশন (Multidisciplinary Rehabilitation)
মাল্টি ডিসিপ্লিনারি রিহ্যাবিলিটেশন বা একাধিক চিকিৎসা পদ্ধতির সমন্বয়ে গঠিত চিকিৎসা পদ্ধতি পিএলআইডি রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। এই পদ্ধতি তে ফিজিক্যাল থেরাপি, পেইন ম্যানেজমেন্ট, মানসিক চাপ মুক্ত করা, এবং জীবন ধারা পরিবর্তনের বিভিন্ন কৌশল অন্তর্ভুক্ত থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই পদ্ধতি দীর্ঘ মেয়াদে রোগীর ব্যথা এবং কর্ম ক্ষমতা উন্নত করতে কার্যকর (২)। The best treatment of PLID/ Disc herniation / Disc prolapse in Bangladesh
পিএলআইডি অপারেশন
যখন প্রাইমারি বা কনজারভেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতিতে পিএলআইডির উপসর্গ গুলো উপশম হয় না, তখন অপারেশন বা সার্জারি করার প্রয়োজন হতে পারে। পিএলআইডি অপারেশন মূলত ডিস্কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি সরিয়ে নার্ভের উপর থেকে চাপ কমানোর লক্ষ্যে করা হয়।
পিএলআইডি অপারেশনের প্রকারভেদ
১. মাইক্রোডিসেকটমি (Microdiscectomy) মাইক্রোডিসেকটমি হলো পিএলআইডির জন্য সবচেয়ে প্রচলিত এবং কার্যকর অপারেশন পদ্ধতি। এই পদ্ধতি তে মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে মেরুদণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত ডিস্কের অংশটি সরিয়ে নেওয়া হয়, যাতে নার্ভের উপর থেকে চাপ কমে যায়। মাইক্রোডিসেকটমি পদ্ধতি তে একটি ছোট ছিদ্র করে অপারেশন করা হয়, যা রোগীর দ্রুত ব্যথা কমায় এবং জটিলতা কমানোর সম্ভাবনা নিশ্চিত করে। মাইক্রোডিসেকটমি পিএলআইডির রোগীদের মধ্যে প্রায় ৯০-৯৫% ক্ষেত্রে সফল ভাবে উপসর্গ উপশম করতে সহায়ক হয়।
২. এন্ডোস্কোপিক ডিস্কেকটমি (Endoscopic Discectomy) এন্ডোস্কোপিক ডিস্কেকটমি হলো একটি আধুনিক এবং minimally invasive পদ্ধতি, যা মেরুদণ্ডের ডিস্কের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতি তে একটি ছোট ছিদ্র দিয়ে এন্ডোস্কোপ ঢুকিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ডিস্কের অংশ টি সরিয়ে ফেলা হয়। এন্ডোস্কোপিক ডিস্কেকটমি পদ্ধতি তে অপারেশন করা হলে রোগীর দ্রুত উপশম হয় এবং হাসপাতালে কম সময় ভর্তি থাকতে হয়।
৩. ল্যামিনেকটমি (Laminectomy) লামিনেকটমি হলো এমন একটি সার্জিক্যাল পদ্ধতি যেখানে মেরুদণ্ডের লামিনা (হাড়ের একটি অংশ) সরিয়ে ফেলা হয়, যাতে নার্ভের উপর থেকে চাপ কমে যায়। এই পদ্ধতি সাধারণত তখন ব্যবহৃত হয় যখন ডিস্কের প্রোল্যাপ্স খুব গুরুতর হয় এবং নার্ভের উপর চাপের কারণে রোগীর অসহণীয় ব্যথা হয় এবং প্রস্রাব-পায়খানা ধরে রাখতে অসুবিধা হয়।
৪. ফিউশন সার্জারি (Spinal Fusion Surgery) ফিউশন সার্জারি হলো এমন একটি অপারেশন পদ্ধতি যেখানে মেরুদণ্ডের দুটি বা ততোধিক কশেরুকা (vertebrae) একত্রিত করা হয়, যাতে মেরুদণ্ডের স্থিতিশীলতা বাড়ে। গুরুতর পিএলআইডির ক্ষেত্রে, যেখানে মেরুদণ্ডের ডিস্কের অবস্থা খুব খারাপ হয় এবং অন্যান্য অপারেশন পদ্ধতি তে উপসর্গ গুলো উপশম হয় না, তখন ফিউশন সার্জারি করা হয়।
৫. লেজার ডিস্ক ডিকমপ্রেশন (Laser Disc Decompression) লেজার ডিস্ক ডিকমপ্রেশন হলো একটি minimally invasive পদ্ধতি, যেখানে লেজারের সাহায্যে ডিস্কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ টি অপসারণ করা হয়। এই পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর এবং রোগীর দ্রুত সুস্থতায় সহায়ক।
পিএলআইডি অপারেশনের পরবর্তী পুনর্বাসন (Post-Operative Rehabilitation)
পিএলআইডি অপারেশনের পর রোগীর দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং দৈনন্দিন কার্যক্রমে ফিরে আসার জন্য সঠিক পুনর্বাসন প্রয়োজন। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত থাকে
- ফিজিক্যাল থেরাপি (Physical Therapy) ফিজিক্যাল থেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন ব্যায়াম এবং স্ট্রেচিং পেশী শক্তিশালী করতে এবং মেরুদণ্ডের স্থিতিশীলতা বাড়াতে সহায়ক।
- নিয়মিত হাঁটা (Walking) অপারেশনের পর প্রাথমিক পর্যায়ে রোগী কে হাঁটা শুরু করতে উৎসাহিত করা হয়, যাতে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং পেশী শক্তিশালী হয়।
- সঠিক অঙ্গবিন্যাস বজায় রাখা (Maintaining Proper Posture) সঠিক অঙ্গ বিন্যাস বজায় রাখা অপারেশনের পর রোগীর পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পিএলআইডি ব্যায়াম
পিএলআইডির চিকিৎসায় প্রাথমিক স্তরে প্রায়ই ব্যায়াম এর পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ এটি ডিস্কের উপর চাপ কমাতে এবং পেশী শক্তিশালী করতে সহায়ক। সঠিক ব্যায়াম পিএলআইডির উপসর্গ গুলো উপশমে সাহায্য করে এবং মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করে। নিচে পিএলআইডি রোগে কার্যকর কিছু ব্যায়াম এবং তাদের বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে আলোচনা করা হলো
পিএলআইডি রোগে কার্যকর ব্যায়াম
১. পেলভিক টিল্ট (Pelvic Tilt) পেলভিক টিল্ট ব্যায়াম কোমরের পেশী শিথিল করতে এবং মেরুদণ্ডের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক। এই ব্যায়ামে, রোগী চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে রাখে এবং কোমর নিচের দিকে টেনে ধরেন। পেলভিক টিল্ট ব্যায়াম কোমরের পেশী শক্তিশালী করতে এবং পিএলআইডির উপসর্গ উপশম করতে কার্যকর হতে পারে।
২. ক্যাট-কাউ স্ট্রেচ (Cat-Cow Stretch) ক্যাট-কাউ স্ট্রেচ ব্যায়াম কোমরের পেশী এবং মেরুদণ্ডের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করতে সহায়ক। এই ব্যায়াম টি মেরুদণ্ডের নমনীয়তা বাড়ায় এবং পেশী শিথিল করে, যা কোমরের ব্যথা কমাতে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যাট-কাউ স্ট্রেচ পিএলআইডির রোগীদের মধ্যে পেশীর স্টিফনেস এবং ব্যথা কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
৩.কোমরের স্ট্রেচ (Lumbar Stretch) কোমর মুভমেন্ট স্ট্রেচ ব্যায়াম মেরুদণ্ডের মুভমেন্ট এবং স্থিতিশীলতা বাড়াতে সহায়ক। রোগী একটি মাদুরের উপর শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে এবং কোমর ধীরে ধীরে একপাশ থেকে অন্য পাশে মুভ করে। এই ব্যায়াম মেরুদণ্ডের চাপ কমায় এবং পেশী শিথিল করে, যা পিএলআইডির উপসর্গ উপশমে সহায়ক হতে পারে।
৪. কোর স্ট্রেন্থেনিং এক্সারসাইজ (Core Strengthening Exercises) কোর স্ট্রেন্থেনিং ব্যায়াম, যেমন প্ল্যাঙ্ক (Plank) বা ব্রিজ (Bridge), কোমরের পেশী এবং মেরুদণ্ডের আশেপাশের পেশী শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এই ব্যায়াম গুলো পিএলআইডির রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী, কারণ এগুলো মেরুদণ্ডের স্থিতিশীলতা এবং সহনশীলতা বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, কোর স্ট্রেন্থেনিং এক্সারসাইজ মেরুদণ্ডের কার্যকারিতা বাড়াতে এবং ব্যথা কমাতে কার্যকর হতে পারে (৩)
৫. হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচ (Hamstring Stretch) হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচ ব্যায়াম কোমরের পেশী এবং হ্যামস্ট্রিং পেশি গুলো কে শিথিল করতে সাহায্য করে। রোগী চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু বাঁকা করে অপর পা উপরের দিকে তুলে একটি তোয়ালে বা ব্যান্ড দিয়ে পায়ের পাতা ধরে টান দেয়। এই ব্যায়াম পিএলআইডির রোগীদের কোমরের পেশী নমনীয় রাখতে এবং ব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে (৪)
৬. যোগ ব্যায়াম (Yoga) যোগ ব্যায়াম, যেমন কোর স্ট্রেন্থেনিং, ফ্লেক্সিবিলিটি এবং রিলাক্সেশন কৌশল গুলির সমন্বয়, পিএলআইডির উপসর্গ উপশমে সহায়ক হতে পারে। যোগ ব্যায়াম মেরুদণ্ডের চাপ কমায় এবং পেশী শক্তিশালী করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত যোগ ব্যায়াম পিএলআইডির রোগীদের জন্য ব্যথা কমাতে এবং মানসিক স্বস্তি দিতে সহায়ক হতে পারে (৫)
পিএলআইডি রোগে ব্যায়াম করার সময় সতর্কতা
- চিকিৎসকের পরামর্শ পিএলআইডির রোগীদের ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই একজন ফিজিওথেরাপিস্ট বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- ধীরে ধীরে ব্যায়াম করা ব্যায়াম গুলি ধীরে ধীরে এবং নিয়মিত করতে হবে; হঠাৎ করে বা অতিরিক্ত ব্যায়াম করা ক্ষতিকর হতে পারে।
- ব্যথা হলে বন্ধ রাখা ব্যায়ামের সময় যদি ব্যথা বাড়ে বা নতুন কোন উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে ব্যায়াম বন্ধ রাখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পিএলআইডি রোগীর ঘুমানোর নিয়ম
পিএলআইডি রোগীদের ক্ষেত্রে সঠিক ভাবে ঘুমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভুল পদ্ধতিতে ঘুমানোর ফলে মেরুদণ্ডে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি পড়তে পারে এবং এর ফলে ব্যথা বাড়াতে পারে। সঠিক ঘুমানোর পদ্ধতি ও অঙ্গ বিন্যাস পিএলআইডির উপসর্গ উপশমে সহায়তা করে এবং মেরুদণ্ডের চাপ কমাতে সাহায্য করে। নিচে পিএলআইডি রোগীদের ঘুমানোর নিয়ম বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
১. এক কাত হয়ে শোয়া (Sleep on Your Side) পিএলআইডি রোগীদের জন্য একপাশে শোয়া (সাইড স্লিপিং) সাধারণত সবচেয়ে আরাম দায়ক এবং উপকারী। এই পদ্ধতিতে মেরুদণ্ডের প্রাকৃতিক আকৃতি বজায় থাকে এবং মেরুদণ্ডের উপর কম চাপ পড়ে। এক পাশে শোয়ার সময় হাঁটুর মাঝে একটি বালিশ রাখা যেতে পারে, যা মেরুদণ্ডের যন্ত্রণা কমায় এবং কোমরের ব্যথা উপশমে সহায়ক হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এক পাশে শোয়ার পদ্ধতি কোমরের ব্যথা কমাতে এবং মেরুদণ্ডের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কার্যকর (৬)
২. চিৎ হয়ে শোয়া (Sleep on Your Back) পিএলআইডি রোগীরা চিৎ হয়ে শোয়ার সময় হাঁটুর নিচে একটি বালিশ ব্যবহার করতে পারেন। এই পদ্ধতি তে মেরুদণ্ডের লাম্বার অংশে চাপ কম পড়ে এবং কোমরের পেশী শিথিল হয়। হাঁটুর নিচে বালিশ রাখলে মেরুদণ্ডের প্রাকৃতিক কার্ভ বজায় থাকে এবং এটি কোমরের ব্যথা উপশমে সহায়তা করে।
৩. পেটের উপর শোয়া বা উপুর হয়ে না শোয়া (Avoid Sleeping on Your Stomach) পিএলআইডি রোগীদের জন্য উপুর হয়ে শোয়া সাধারণত নিরুৎসাহিত করা হয়, কারণ এই পদ্ধতি তে মেরুদণ্ডের লাম্বার অংশে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। পেটের উপর শোয়া মেরুদণ্ডের প্রাকৃতিক কার্ভ পরিবর্তন করে এবং কোমরের ব্যথা বাড়াতে পারে।
৪. উপযুক্ত বালিশ ব্যবহার (Use an Appropriate Pillow) পিএলআইডি রোগীদের জন্য উপযুক্ত বালিশ ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ, যা মাথা, ঘাড়, এবং মেরুদণ্ড কে সঠিক অবস্থান প্রদান করে। একটি মাঝারি উচ্চতার বালিশ মাথা এবং ঘাড়ের জন্য সঠিক ভাবে রাখে।
৫. আরামদায়ক গদি নির্বাচন (Choose a Comfortable Mattress) পিএলআইডি রোগীদের জন্য একটি আরামদায়ক গদি নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। একটি মাঝারি-মজবুত গদি মেরুদণ্ডের সঠিক স্থিতিস্থাপকতা প্রদান করে এবং মেরুদণ্ডের প্রাকৃতিক কার্ভ বজায় রাখতে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, মাঝারি-মজবুত গদি পিএলআইডির রোগীদের মধ্যে ব্যথা উপশমে সহায়ক ভূমিকা পালন করে (৭)
৬. ঘুমানোর আগে শরীর ও মন শিথিলকরণ (Relaxation before Sleep) ঘুমানোর আগে শরীর এবং মনকে শিথিল করতে কিছু শিথিল করণ কৌশল, যেমন ডিপ ব্রিদিং, মেডিটেশন, বা হালকা স্ট্রেচিং করা যেতে পারে। এই ধরনের কৌশল পেশী শিথিল করতে এবং ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, শিথিলকরণ কৌশল পিএলআইডির রোগীদের মানসিক চাপ কমাতে এবং ঘুমের মান উন্নত করতে কার্যকর হতে পার (৮)।
পিএলআইডি এর আধুনিক চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে। পিএলআইডি কি? পিএলআইডি মেরুদন্ডের একটি গুরুতর সমস্যা, যা মেরুদণ্ডের ডিস্কের ভিতরে থাকা জেলী জাতীয় পদার্থ নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করে ব্যথা এবং অন্যান্য উপসর্গ সৃষ্টি করে। তবে, আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি তে যেমন ওষুধের চিকিৎসা, ফিজিওথেরাপি বা কারেকশন থেরাপি, এপিডিউরাল স্টেরয়েড ইনজেকশন, মাইক্রোডিসেকটমি, এন্ডোস্কোপিক ডিস্কেকটমি, এবং লেজার ডিস্ক ডিকমপ্রেশন বর্তমানে বাংলাদেশে সহজেই করা যায়।
পিএলআইডি এর আধুনিক চিকিৎসা এখন মোহাম্মদপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ
ASPC ম্যানিপুলেশন থেরাপি সেন্টার পিএলআইডি এর আধুনিক চিকিৎসা করে। ফিজিওথেরাপি বা ম্যানুয়াল থেরাপির চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। তবে, সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য অবশ্যই একজন গ্র্যাজুয়েট ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন ফিজিওথেরাপি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ASPC ম্যানিপুলেশন থেরাপি সেন্টার (House #U64, Noorjahan Road, Mohammadpur, Dhaka-1207) একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে শুধুমাত্র ম্যানুয়াল থেরাপির মাধ্যমে রোগীদের সেবা প্রদান করে। তারা Structural Diagnosis & Management (SDM) টেকনিকের ভিত্তিতে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী কারেকশন থেরাপি প্রদান করে, যার ফলে রোগীরা দ্রুত এবং সর্বোচ্চ সুস্থতা অর্জন করে থাকেন।
তথ্যসূত্র
- Hahne, A.J., Ford, J.J. and McMeeken, J.M., 2010. Conservative management of lumbar disc herniation with associated radiculopathy: a systematic review.Spine, 35(11), pp.E488-E504. https://journals.lww.com/spinejournal/fulltext/2010/05150/Acupuncture_for_Neck_Disorders.23.aspx
- Airaksinen, O., Brox, J.I., Cedraschi, C., Hildebrandt, J., Klaber-Moffett, J., Kovacs, F., Mannion, A.F., Reis, S.H.M.U.E.L., Staal, J.B., Ursin, H. and Zanoli, G., 2006. European guidelines for the management of chronic nonspecific low back pain.European spine journal, 15(Suppl 2), p.s192. https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3454542/
- Hodges, P.W. and Richardson, C.A., 1996. Inefficient muscular stabilization of the lumbar spine associated with low back pain: a motor control evaluation of transversus abdominis.Spine, 21(22), pp.2640-2650. https://journals.lww.com/spinejournal/fulltext/1996/11150/inefficient_muscular_stabilization_of_the_lumbar.14.aspx
- McGill, S., 2015.Low back disorders: evidence-based prevention and rehabilitation. Human Kinetics. https://books.google.com/books?hl=en&lr=&id=ePF6DwAAQBAJ&oi=fnd&pg=PR1&dq=McGill,+S.+M.+(2007).+Low+back+disorders:+Evidence-based+prevention+and+rehabilitation.+*Human+Kinetics+Publishers&ots=025SWUXyAJ&sig=dWg7F0O7D3nMWqfM1-xYnI-0W3k
- Sherman, K.J., Cherkin, D.C., Wellman, R.D., Cook, A.J., Hawkes, R.J., Delaney, K. and Deyo, R.A., 2011. A randomized trial comparing yoga, stretching, and a self-care book for chronic low back pain.Archives of internal medicine, 171(22), pp.2019-2026. https://jamanetwork.com/journals/jamainternalmedicine/article-abstract/1106098
- Gordon, R. and Bloxham, S., 2016, April. A systematic review of the effects of exercise and physical activity on non-specific chronic low back pain. InHealthcare (Vol. 4, No. 2, p. 22). MDPI. https://www.mdpi.com/2227-9032/4/2/22
- Jacobson, B.H., Boolani, A. and Smith, D.B., 2009. Changes in back pain, sleep quality, and perceived stress after introduction of new bedding systems.Journal of Chiropractic Medicine, 8(1), pp.1-8. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1556370708001296
- Morin, C.M., LeBlanc, M., Daley, M., Gregoire, J.P. and Merette, C., 2006. Epidemiology of insomnia: prevalence, self-help treatments, consultations, and determinants of help-seeking behaviors.Sleep medicine, 7(2), pp.123-130. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1389945705001954
- ডেঙ্গু জ্বরের ৭টি সতর্কীকরণ লক্ষণ ২০২৪ | ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার - November 28, 2024
- হাঁটু ব্যথার জন্য কার্যকারী ব্যায়াম গুলো জেনে নিন - November 28, 2024
- লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস কমানোর উপায়? ও স্পন্ডাইলোসিস কি? - November 5, 2024