ডিস্ক হচ্ছে মেরুদন্ডের দুটি কশেরুকার মধ্যবর্তী একটি বিশেষ পদার্থ একটি মেরুদন্ডের হাড় কে উপর একটি মেরুদন্ডের হাড় থেকে বিভক্ত রাখে যাতে একটি আরেকটির সাথে  ঘর্ষণ না লাগে। এটি এক ধরনের চাকতির মত পদার্থ যার দুটি অংশ থাকে।

একটি হচ্ছে ‘অ্যানিউলাস’ যা হিসেবে কাজ করে। অপরটি হচ্ছে ‘ নিউক্লিয়াস পালপোসাস’ ভেতরের অংশ এবং ইহা জেলির মত পদার্থ যা ভোরের ভারসাম্য হিসেবে কাজ করে। 

এই জেলির মত পদার্থ যাতে বাইরে আসতে না পারে এর জন্য রয়েছে ‘আনিউলাস ফাইব্রোসাস’ যেটি বিশেষ ধরনের ফাইব্রাস টিস্যু ( যাকে বলে  কোলাজেন ফাইবার) দ্বারা তৈরি কয়টি স্তর থাকে। ভেতরের জেলির মত অংশটি যখন বাইরের অংশকে চাপ দেয় এবং এই চাপ যখন নার্ভ বা স্নায়ুর উপর করে তখন তাকে ডিস্ক প্রলাপ বলে।

 স্লিপ ডিস্ক বা ডিস্ক প্রলাপস কেন হয় :

ডিস্কের দুটি অংশ বাইরের দিকে আনিউলাস ফাইব্রোসাস এবং ভোরের দিকে নিউক্লিয়াস পাল পোসাসযদি সঠিক স্থানে থাকে তাহলে তার চলাফেরা সহ্য মত হয় ওজন তোলা বা বহন করা, সামনে ঝোঁকা বা বসা ইত্যাদি কোন অসুবিধা বা সমস্যা দেখা দেয় না।

মেরুদন্ডে যদি চাপ পড়ে ডিস্কের ভেতরের অংশ শক্ত অথচ ইলাস্টিকের মত। এটি উহাকে বাধা দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা রাখার চেষ্টা করে। কেউ যদি দীর্ঘসময় সামনে ঝুঁকে কাজ করে যেভাবে বসা দরকার সেভাবে না  বসে অথবা দীর্ঘদিন ডিস্কের ভেতরের অংশের দেয়াল পাতলা হয়ে যায় এবং একসময় যদি সে হঠাৎ সামনে ঝুঁকে বেশি ভারী জিনিস  তোলে বা হাচি বা কাশি দেয় তাহলে ডিস্কের মধ্যে অতিরিক্ত চাপ পড়ে।

বাইরের অংশটি আর ভেতরের অংশকে মধ্যবর্তী জায়গায় ধরে রাখতে পারে না। যেকোনো একদিকে চাপ পড়ে এবং এটি যদি কোমর থেকে বের হয়ে নার্ভ স্নায়ুর উপর চাপ দেয়তাহলে ব্যথা পায়ের নিচ পর্যন্ত চলে যায়, একেই ডিস্ক প্রলাপস বলে।

 কিভাবে বুঝবেন আপনার ডিস্ক প্রলাপস  বা স্লিপ ডিস্ক হয়েছে :

  • রোগের সমস্যার বর্ণনা শুনতে গেলে প্রথমেই বলে ভারী জিনিস উঠাবার সময় বা হাঁচি অথবা কাশি দিতে গিয়ে কোমরে একটা শব্দ হয়েছে বা টান লাগছে।
  • কোমর অসহ্য ব্যথা হয়, এই ব্যথা পা পর্যন্ত ছড়িয়ে যায় এবং বিদ্যুৎ তরঙ্গের মতো প্রচন্ড আকারে কাল কাল করে নেয়। অনেক সময় শুধু ব্যথা অনুভূত বেশি হয়, কোমরে ব্যথা নাও হতে পারে। 
  • ব্যথা এতই প্রচন্ড হতে পারে যে, রোগীর বিছানা পূর্ণ বিশ্রামে যেতে হতে পারে।
  • পাশ ফিরতে বা সোজা হয়ে দাঁড়াতে বেশ কষ্ট হয়।
  • হাঁটলে বা কাজ করলে ব্যথা বেশ বেড়ে যায়। রাতে ঘুমেরও ব্যথা হতে পারে।
  • অনেক সময় রোগী পায়ে ঝিনঝিন, অবশ ভাব ও দুর্বলতা অনুভব করেন।
  • কিছু কিছু রোগী কোমর এক দিকে বেঁকে যায় ফলে সে বাঁকা হয়ে হাটে।
  • চিৎ হয়ে এক পা এক পা উঁচু করতে গেলে কোমর ও পায়ের ব্যথা ও টান অনুভব হবে।
  • সাধারনত : এক্সরে করে ডিস্ক প্রলাপস ধরা পরে না। এর জন্য এম.আর.আই করতে হয় ।
  • এম.আর.আই করলে সুন্দর ভাবে বুঝা যায় যে কোন এলাকার কোন নার্ভ বা স্নায়ুতে কতটুকু চাপ পড়েছে।
  • ডিস্ক প্রলাপস স্লিপড বেশি হলে প্রসাব পায়খানা স্বাভাবিকভাবে ধরে রাখতে কষ্ট হবে। এক্ষেত্রে অপারেশন করা অত্যন্ত বাঞ্ছনীয়।
Follow me

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This field is required.

This field is required.

পরামর্শ নিতে 01975451525