
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা, এখানে আমরা ডায়াবেটিস এর লক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব । আমাদের শরীরের অগ্ন্যাশয় যখন আর ইনসুলিন হরমোন তৈরী করতে পারে না বা যখন শরীর অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত ইনসুলিনের সঠিক ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তখন ডায়াবেটিস রোগ হয়। এই রোগের ফলে আমাদের শরীর খাদ্যকে যেভাবে শক্তিতে পরিণত করে, তা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়।
আমরা যেসব খাবার খাই, তার অধিকাংশই চিনিতে ভেঙ্গে যায় (যাকে গ্লুকোজ বলে) এবং আমাদের রক্তপ্রবাহে মিশ্রিত হয়। যখন রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন আমাদের মস্তিষ্ক অগ্ন্যাশয়কে ইনসুলিন নিঃসরণের সংকেত দেয়। ইনসুলিন কোষে এই গ্লুকোন প্রবেশ করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ, আমাদের শরীরের কোষগুলোকে গ্লুকোজ গ্রহণ করে কোষের চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যবহার করার চাবি হিসেবে ইনসুলিন কাজ করে।
এখন যদি ডায়াবেটিস রোগ হয়, তখন শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন তৈরী হয়না বা যে ইনসুলিন তৈরী হচ্ছে, তার সঠিকভাবে ব্যবহার হয়না। যখন পর্যাপ্ত ইনসুলিন থাকে না বা কোষগুলো ইনসুলিনের প্রতি কোন প্রতিক্রিয়া দেখায় না, তখন রক্তে অত্যধিক মাত্রায় শর্করা থেকে যায়। মেডিকেলীয় ভাষায়, এটি হাইপারগ্লাইসেমিয়া নামে পরিচিত।
দীর্ঘসময় ধরে রক্তে উচ্চমাত্রায় শর্করা উপস্থিত থাকলে শরীরের নানাবিধ ক্ষতি হয়। হাইপারগ্লাইসেমিয়ার কারণে হৃদরোগ, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস এবং কিডনি রোগের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিস এর ধরণ ও প্রকরণ
** টাইপ ১ ডায়াবেটিস
যদি আপনার টাইপ ১ ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে আপনার অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন তৈরী করছে না বা খুব কম পরিমাণে ইনসুলিনের উৎপাদন হচ্ছে। ইনসুলিনের সাহায্য ছাড়া কোষে শর্করা প্রবেশ করতে পারে না। আরেকটি হরমোন, যার নাম গ্লুকাগন, ইনসুলিনের সাথে মিলিতভাবে কাজ করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
টাইপ ১ ডায়াবেটিসকে একসময় ইনসুলিন – নির্ভর বা জুভেনাইল ডায়াবেটিস বলা হতো। ডায়াবেটিসের এই প্রকরণটি শিশু, কিশোর এবং অল্প বয়স্কদের মধ্যে বেশি হয়, তবে যেকোন বয়সের মানুষেরাই এতে আক্রান্ত হতে পারে। বেশিরভাগ টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অগ্ন্যাশয়ের যে কোষগুলো ইনসুলিন তৈরী করে, তাদের ধ্বংস করতে থাকে।
যার কারণে, অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়না বা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় যোগান সীমিত থাকে। ইনসুলিন ছাড়া কোষে শর্করা প্রবেশ করতে পারে না। ফলস্বরুপ রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। টাইপ ১ ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত রোগীদের বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন ইনসুলিন নিতে হয়।

টাইপ ১ ডায়াবেটিস টাইপ ২ এর তুলনায় সাধারণত কম। প্রায় ৫-১০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর টাইপ ১ আছে। বর্তমানে কেউ জানে না কীভাবে টাইপ ১ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়। তবে এই ধরণের ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসা আছে।
১. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা।
২. রক্তে শর্করার মাত্রা ব্যবস্থাপনা।
৩. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো।
৪. ডায়াবেটিস স্ব-ব্যবস্থাপনা শিক্ষা গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা খুঁজে নেওয়া ইত্যাদি।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস এর লক্ষণ ও উপসর্গ:
টাইপ ১ ডায়াবেটিস এর লক্ষণগুলো গুরুতর এবং কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে উপসর্গের দ্রুত প্রকাশ ঘটে। এর মধ্যে আছে:
১. ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা
২. ক্ষুধা, তৃষ্ণা বৃদ্ধি
৩. ঝাপসা দৃষ্টি
৪. ক্লান্তিভাব
৫. কোন কারণ ছাড়াই ওজন কমতে থাকা ইত্যাদি
কখনো কখনো টাইপ ১ ডায়াবেটিস এর প্রাথমিক উপসর্গগুলো ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস (ডিকেএ) নামক জীবননাশক ব্যাধির লক্ষণ হিসেবে সামনে আসে। ডিকেএ এর লক্ষণগুলির মধ্যে আছে:
১. নিঃশ্বাসে ফলের মতো গন্ধ
২. চামড়া শুষ্ক হয়ে যাওয়া
৩. বমি বমি ভাব
৪. পেট ব্যথা
৫. শ্বাসকষ্ট
৬. মনোযোগ দিতে অসুবিধা
৭. বিভ্রান্তি বোধ করা ইত্যাদি
ডিকেএ খুবউ গুরুতর এবং বিপদজনক। যদি আপনার বা আপনার সন্তানের ডিকেএর লক্ষণ বা উপসর্গ আছে বলে মনে হয়, তাহলে অবিলম্বে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করুন।
আরও পড়ুনঃ প্রস্রাবে ইনফেকশনের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
টাইপ ১ ডায়াবেটিস এর পরবর্তী জটিলতা:
টাইপ ১ ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত রোগীরা সময়ের সাথে সাথে রক্তে উচ্চ শর্করার উপস্থিতির কারণে নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগে থাকেন। যেমন:
১. হৃদরোগ
২. স্ট্রোক
৩. কিডনি রোগ
৪. চোখের সমস্যা
৫. দাঁতের সমস্যা
৬. স্নায়ু ক্ষয়
৭. পায়ের সমস্যা
৮. বিষণ্ণতা
৯. নিদ্রাহীনতা ইত্যাদি।
আপনার যদি টাইপ ১ ডায়াবেটিস হয়ে থাকে, তবে আপনি আপনার রক্তের গ্লুকোজ, রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখুন। পাশাপাশি ডায়াবেটিস এর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ মতো নিজের যত্ন নিন। তাহলে ডায়াবেটিস এর জটিলতাগুলো বিলম্বিত হবে অথবা সহনীয় মাত্রায় থাকবে।
** টাইপ ২ ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস এর সবচেয়ে সাধারণ প্রকরণ হচ্ছে টাইপ ২ ডায়াবেটিস। এই ধরণের ডায়াবেটিস এ শরীরের কোষগুলো ইনসুলিনের প্রতি সাড়া দেয়না। এই অবস্থাকে বলা হয় ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। তখন অগ্ন্যাশয় কোষগুলোকে প্রতিক্রিয়াশীল করার অভিপ্রায়ে আরো ইনসুলিন তৈরী করতে থাকে।
অবশেষে, অগ্ন্যাশয় আর ঠিকমতো কাজ করতে পারে না এবং রক্তে শর্করার মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। তবে ভালো খবর হচ্ছে, টাইপ ২ ডায়াবেটিসের বিকাশ প্রতিরোধ বা বিলম্বিত করতে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করার সু্যোগ আছে।
যেকোন বয়সেই টাইপ ২ ডায়াবেটিস হতে পারে, এমনকি শৈশবকালেও। তবে, টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রায়শ মধ্যবয়সী এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঘটে। যদি আপনার বয়স ৪৫ বা তার বেশি হয়, যদি আপনার ডায়াবেটিস এর পারিবারিক ইতিহাস থাকে বা আপনি স্থূলকায়, তবে আপনার টাইপ ২ ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনা আছে।
আফ্রিকান আমেরিকান, হিস্পানিক বা ল্যাটিনো, আমেরিকান ইন্ডিয়ান, এশিয়ান আমেরিকান বা প্যাসিফিক দ্বীপবাসীদের মধ্যে ডায়াবেটিস বেশি দেখা যায়।
শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং সুনির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন উচ্চ রক্তচাপ টাইপ ২ ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর লক্ষণ ও উপসর্গ:
১. ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা
২. ক্ষুধা, তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া
৩. ক্লান্তি অনুভব করা
৪. চোখে ঝাপসা দেখা
৫. হাতে পায়ে অসাড়তা বা শিহরণ অনুভব করা
৬. ঘা সারতে দেরি হওয়া
৭. ওজন হ্রাস ইত্যাদি
টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর লক্ষণগুলো প্রায়শ ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে, বেশ কয়েক বছর ধরে। কখনো কখনো উপসর্গের প্রকাশ এত মৃদু হয়ে থাকে যে আপনি সেগুলো লক্ষ্যও করতে পারবেন না। অনেকের আবার কোন উপসর্গই প্রকাশ পায় না। কিছু রোগী ডায়াবেটিস সম্পর্কিত স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন ঝাপসা দৃষ্টি বা হৃদরোগ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হবার কথা জানতে পারেন না।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর জটিলতা
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী যদি ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট করা হয়, তাহলে ডায়াবেটিস এর সাথে জড়িত অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তবে সেটিতে অবহেলা করলে নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা ও রোগ দেখা দিতে পারে, যেমন:
১. হৃদরোগ ও স্ট্রোক
২. স্নায়ু ক্ষয়
৩. কিডনি রোগ
৪. পায়ের সমস্যা
৫. চোখের রোগ
৬. মাড়ির রোগ ও অন্যান্য দন্তজনিত সমস্যা
৭. যৌন সমস্যা
৮. মুত্রাশয়ের সমস্যা ইত্যাদি
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অনেকের নন অ্যালকোহলিল ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (এনএএফএলডি) থাকে। আপনার ওজন বেশি হলে বা আপনি স্থূলকায় হলে ওজন কমানোর মাধ্যমে এনএএফএলডির সমাধান সম্ভব। টাইপ ২ ডায়াবেটিস অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া, বিষণ্ণতা, কিছু ধরণের ক্যান্সার এবং ডিমেনশিয়ার সাথেও সম্পর্কিত।
আরও পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
** গর্ভকালীন ডায়াবেটিস

গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির কারণে যে ডায়াবেটিস হয়, সেটিই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। সাধারণত এই ধরণের ডায়াবেটিস গর্ভাবস্থার ২৪ থেকে ২৮ তম সপ্তাহে নির্নয় করা হয়।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকলে গর্ভাবস্থায় আপনার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়তে পারে। পাশাপাশি আপনার গর্ভের শিশুও নানা সমস্যায় পড়তে পারে, যেমন:
১. ওজন বৃদ্ধি – ৯ পাউন্ড বা তার বেশি, যা ডেলিভারিতে জটিলতার সৃষ্টি করে
২. সময়ের আগেই জন্ম নেওয়া, যা শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে
৩. ব্লাড সুগার কম থাকা
৪. পরবর্তীতে টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর বিকাশ লাভ ইত্যাদি
** প্রিডায়াবেটিস

প্রিডায়াবেটিস হলো একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, যেখানে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে তবে তা টাইপ ২ ডায়াবেটিস হিসেবে নির্নয় করার মতো যথেষ্ট নয়।
আপনার বহু বছর ধরে প্রিডায়াবেটিস থাকতে পারে কিন্তু কোন স্পষ্ট লক্ষণ ও উপসর্গের প্রকাশ নাও থাকতে পারে। তাই প্রায়শ টাইপ ২ ডায়াবেটিস দেখা না দেওয়া পর্যন্ত প্রিডায়াবেটিস শনাক্ত করা যায় না। যারা প্রিডায়াবেটিস হবার ঝুঁকিতে আছেন:
১. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলকায়
২. টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর পারিবারিক ইতিহাস
৩. বয়স ৪৫ বা তার বেশি
৪. শারীরিকভাবে সক্রিয় না থাকা, অলস জীবনযাপন করা
৫. গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এর ইতিহাস
৬. পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম রোগী
আরও পড়ুনঃ ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
** মনোজেনিক ডায়াবেটিস (নিওনেটাল ডায়াবেটিস মেলিটাস ও ম্যাচুরিটি অনসেট ডায়াবেটিস অব দ্যা ইয়াং – এমওডিওয়াই)

কিছু বিরল প্রকরণের ডায়াবেটিস মিউটেশন বা একক জিনের পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকে, যাদেরকে মনোজেনিক ডায়াবেটিস বলে। মনোজেনিক ডায়াবেটিসের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, জিনগত মিউটেশন পিতা, মাতা বা উভয়ের কাছ থেকেই উত্তরাধিকারসূত্র পাওয়া। তবে কখনো কখনো জিন মিউটেশন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিকশিত হয়, যার অর্থ এই মিউটেশনটি পিতামাতা কেউই বহন করেন না। মনোজেনিক ডায়াবেটিস সৃষ্টিকারী বেশিরভাগ মিউটেশন অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন তৈরীর ক্ষমতা হ্রাস করে।
নিউনেটাল ডায়াবেটিস মেলিটাস – এনডিএম এবং ম্যাচুরিটি অনসেট ডায়াবেটিস অব দ্যা ইয়াং – এমওডিওয়াই হলো মনোজেনিক ডায়াবেটিসের দুট প্রধান রূপ।
এনডিএম: নবজাতক ও অল্পবয়স্ক শিশুদের মধ্যে ঘটে। এর লক্ষণ ও উপসর্গের মধ্যে আছে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা, দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া, পানিস্বল্পতায় ভোগা ইত্যাদি।
এমওডিওয়াই: এনডিএমের তুলনায় বেশি হয় এবং সাধারণত প্রথম বয়ঃসন্ধিকাল বা যৌবনের প্রথম দিকে ঘটে। এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলো জিনগত মিউটেশন এর উপর নির্ভর করে। নির্দিষ্ট ধরণের মিউটেশনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তে শর্করার মাত্রা সামান্য বেশি থাকতে পারে বা সারা জীবন স্থিতিশীল থাকে। তাদের ডায়াবেটিসের তেমন কোন লক্ষণ থাকে না এবং দীর্ঘমেয়াদী কোন জটিলতাও তৈরী হয়না।
** সিস্টিক ফাইব্রোসিস সম্পর্কিত ডায়াবেটিস

সিস্টিক ফাইব্রোসিস সম্পর্কিত ডায়াবেটিস (সিএফআরডি) হলো একটি অনন্য প্রকরণের ডায়াবেটিস, যা সিস্টিক ফাইব্রোসিস রোগীদের মধ্যে দেখা যায়।
এই রোগে আক্রান্তদের ঘন, আঠালো মিউকাস অগ্ন্যাশয়ে ক্ষত সৃষ্টি করে। এই ক্ষত অগ্ন্যাশয়কে স্বাভাবিক মাত্রায় ইনসুলিন তৈরী করতে বাধা দেয়। ফলে, টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগীদের মতো, তাদের শরীরে ইনসুলিন ঘাটতি দেখা দেয়। যদিও এই রোগীদের শরীরে কিছু পরিমানে ইনসুলিন তৈরী হয় তবে তা সুস্থতা বজায় রাখতে যথেষ্ট নয়। ২০১৯ সালের সি এফ ফাউন্ডেশন এর রোগীদের রেজিস্ট্রি অনুযায়ী, সিস্টিক ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত প্রায় ২০ শতাংশ লোকের সিএফআরডি রয়েছে। সিএফআরডি টাইপ ১ ও টাইপ ২ – উভয় ধরণের ডায়াবেটিসের বেশ কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ শেয়ার করে।
উপরন্তু, টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মতো, বিশেষ করে অসুস্থ, স্টেরয়েড ওষুধ খাচ্ছেন এমন বা গর্ভবতী সিএফআরডি রোগীরা ইনসুলিনের প্রতি সাড়া নাও দিতে পারেন। এটিকে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বলা হয়।
সিএফআরডিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোন লক্ষণ বা উপসর্গ নাও থাকতে পারে। ডায়াবেটিসের কিছু লক্ষণ সিস্টিক ফাইব্রোসিস এর লক্ষণের সাথে মিলে যায়। অনেকে ডায়াবেটিস এর জন্য পরীক্ষা করানোর আগ পর্যন্ত জানতেও পারেন না যে তাদের সিএফএরডি আছে।
কিছু সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গ হলো ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ ও তৃষ্ণা বৃদ্ধি, যা রক্তে শর্করা বৃদ্ধির কারণে হয়ে থাকে (হাইপারগ্লাইসেমিয়া)। সিস্টিক ফাইব্রোসিস সম্পর্কিত ডায়াবেটিস এর অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে আছে অত্যধিক ক্লান্তিভাব, ওজন হ্রাস, ফুসফুসের কার্যকারিতায় অব্যক্ত হ্রাস ইত্যাদি।
তথ্যসূত্রঃ
- https://www.cdc.gov/diabetes/basics/diabetes.html
- https://www.niddk.nih.gov/health-information/diabetes/overview/what-is-diabetes
- https://www.diabetes.org/
- https://www.cdc.gov/diabetes/basics/what-is-type-1-diabetes.html
- https://www.niddk.nih.gov/health-information/diabetes/overview/what-is-diabetes/type-1-diabetes
- https://www.cdc.gov/diabetes/basics/type2.html
- https://www.niddk.nih.gov/health-information/diabetes/overview/what-is-diabetes/type-2-diabetes
- https://www.cdc.gov/diabetes/basics/gestational.html
- https://www.niddk.nih.gov/health-information/diabetes/overview/what-is-diabetes/gestational
- https://www.cdc.gov/diabetes/basics/prediabetes.html
- https://www.niddk.nih.gov/health-information/diabetes/overview/what-is-diabetes/monogenic-neonatal-mellitus-mody
- https://www.cff.org/managing-cf/cystic-fibrosis-related-diabetes
- ACL আঘাতের অপারেশনবিহীন চিকিৎসা - February 2, 2023
- ACL injury: Operative Treatment plan and Post-Operative Care - February 1, 2023
- ACL – Structure and Biomechanical Properties - February 1, 2023