প্রস্রাবে / ইউরিন ইনফেকশনের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার, ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধের নাম. প্রস্রাবে / ইউরিন ইনফেকশনের ব্যাপারটিকে মেডিকেলীয় ভাষায় ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা সংক্ষেপে ইউটিআই বলে। ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন হলো আপনার মূত্রতন্ত্রের যেকোন অংশে সংক্রমণ। আপনার কিডনী, ইউরেটার বা মূত্রনালী, ব্লাডার বা মূত্রাশয়, ইউরেথ্রা ইত্যাদি মূত্রতন্ত্রের অংশ। বেশিরভাগ সময় নিম্ন মূত্রনালী – মূত্রাশয় এবং ইউরেথ্রা প্রস্রাবে সংক্রমণের সাথে জড়িত থাকে।
মূত্রতন্ত্রের অন্যতম প্রধান কাজ হলো প্রস্রাব তৈরি করা এবং সংরক্ষণ করা। আমাদের শরীরের অন্যতম বর্জ্য পদার্থ হলো প্রস্রাব। প্রস্রাব কিডনিতে তৈরী হয় এবং মূত্রনালী থেকে মূত্রাশয়ের দিকে যায়। মূত্রাশয় ইউরেথ্রার মাধ্যমে প্রস্রাব করে খালি না হওয়া পর্যন্ত প্রস্রাব সঞ্চয় করে রাখে। আমাদের শরীরের একজোড়া কিডনির কাজ হলো রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ ফিল্টার করে প্রস্রাবের আকারে শরীর থেকে বের করে দেওয়া।
কিডনি আমাদের শরীরের অনেক রাসায়নিক পদার্থ যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদির মাত্রাগত ভারসাম্য বজায় রাখে। পাশাপাশি রক্তের অ্যাসিডিটি বা অম্লতা বজায় রাখতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আমাদের শরীরের বেশ কিছু হরমোন কিডনিতে তৈরী হয়। এই হরমোনগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়ায় এবং শক্তিশালী হাড় তৈরীতে সাহায্য করে। সাধারণ প্রস্রাবে কোন ব্যাকটেরিয়া থাকে না এবং প্রস্রাবের একমুখী প্রবাহ মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। তবুও ব্যাকটেরিয়া ইউরেথ্রা দিয়ে প্রস্রাবে প্রবেশ করে পারে এবং মূত্রাশয় পর্যন্ত ভ্রমণ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
ইউরিন ইনফেকশনের কারণ
প্রস্রাবে / ইউরিন ইনফেকশনের সমস্যাটি তখনই ঘটে থাকে, যখন ব্যাকটেরিয়া ইউরেথ্রার মধ্য দিয়ে ইউরিনারি ট্রাক্টে প্রবেশ করে এবং মূত্রাশয়ে সংখ্যাবৃদ্ধি করতে থাকে। যদিও মূত্রতন্ত্রের ডিজাইন এমন ভাবেই করা, যাতে এতে কোন ধরণের মাইক্রোস্কোপিক আক্রমণ না হয় তবে কখনো কখনো শরীরের এই সহজাত প্রতিরক্ষাগুলো ব্যর্থ হয়। কখনো কখনো যখন এরকম অবস্থা হয়, তখন ব্যাকটেরিয়াগুলো পূর্ন বিকশিত হয়ে তারপরেই সংক্রমণ চালানো শুরু করতে পারে।
প্রস্রাবে ইনফেকশনের কারণ
সাধারনত মহিলারাই প্রস্রাবের ইনফেকশনের সমস্যায় বেশি ভুগে থাকেন। এই সংক্রমণে মূত্রাশয় ও মূত্রনালীই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রন্থ হয়।
- মূত্রাশয়ের সংক্রমণ – সিস্টাইটিস: এই ধরণের ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন সাধারণত ই কোলাই নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়ে থাকে। ই কোলাই গ্যাস্ট্রো ইনটেস্টিনাল ট্রাক্টে পাওয়া যায়। তবে কখনো কখনো অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া দ্বারাও মূত্রাশয়ে সংক্রমণ হতে পারে।
- ইউরেথ্রাতে সংক্রমণ – ইউরেথ্রাইটিস: এই ধরণের ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন হতে পারে যখন মলদ্বার থেকে ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও যেহেতু নারীদের ইউরেথ্রা যোনীপথের কাছাকাছি অবস্থিত, তাই সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড রোগ যেমন হার্পিস, গনোরিয়া, ক্ল্যামাইডিয়া, মাইকোপ্লাজমা ইত্যাদিও ইউরেথ্রাইটিস ঘটাতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ
সাধারণ উপসর্গের মধ্যে থাকতে পারে:
- ঘন ঘন প্রস্রাব করার তাগিদ অনুভব
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া
- ঘন ঘন, অল্প পরিমাণে প্রস্রাব হওয়া
- প্রস্রাব মেঘলা দেখায়
- প্রস্রাব লাল, উজ্জ্বল গোলাপি বা কোলার মতো দেখায় – যা প্রস্রাবে রক্তের উপস্থিতি বোঝায়।
- প্রস্রাবে তীব্র গন্ধ
- মহিলাদের মধ্যে পেলভিক বা শ্রোণিতে ব্যথা, বিশেষ করে শ্রোণির মাঝে এবং পিউবিক হাড়ের চারপাশে
বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মাঝে মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ প্রায়ই উপেক্ষিত হয় নাহয় অন্য কোন রোগ বলে ভুল ধরা হয়।
মূত্রনালীর কোন অংশে সংক্রমণ হয়েছে, তার উপর নির্ভর করে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ ও উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়।
কিডনি (অ্যাকিউটপায়েলোনেফ্রাইটিস)
- কোমরে ব্যথা
- জ্বর
- ঠান্ডাভাব
- ঝাঁকুনি অনুভব
- বমি বমি ভাব
- বমি করা ইত্যাদি।
মূত্রাশয় (সিস্টাইটিস)
- পেলভিক প্রেশার বা শ্রোণিচাপ
- তলপেটে অস্বস্তি
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
- প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব
- প্রস্রাবে সাথে রক্ত যাওয়া ইত্যাদি
ইউরেথ্রা (ইউরেথ্রাইটিস)
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া
- স্রাব বের হওয়া ইত্যাদি।
প্রস্রাবে ইনফেকশনের ঝুঁকিতে কারা আছেন?
মহিলাদের মধ্যে মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণের হার বেশি। এর পেছনের সম্ভাব্য কারণগুলো হচ্ছে:
নারীর শারীরিক গঠন: পুরুষদের তুলনায় নারীদের ইউরেথ্রা আকারে ছোট। যার কারণে মূত্রাশয়ে সংক্রমণ হবার জন্য ব্যাকটেরিয়ার যে দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়, তা কম।
যৌন কার্যকলাপ: যৌনভাবে সক্রিয় নারীদের মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ হবার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে।
সুনির্দিষ্ট কিছু জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি: যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ এর জন্য ডায়াফ্রামের ব্যবহার করেন, তারা প্রস্রাবে ইনফেকশন হবার উচ্চ ঝুঁকিতে অবস্থান করেন। পাশাপাশি শুক্রাণু নাশক এজেন্ট ব্যবহারেও সংক্রমণ হতে পারে।
মেনোপজ: মেনোপজের পরে, ইস্ট্রোজেনের সঞ্চালন হ্রাস মূত্রনালীর পরিবর্তন ঘটায়, যা সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এছাড়াও অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে আছে:
- মূত্রনালীর অস্বাভাবিকতা- মূত্রনালীর অস্বাভাবিকতা নিয়ে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের প্রস্রাব স্বাভাবিকভাবে শরীর থেকে বের হয়না অথবা প্রস্রাব ইউরেথ্রাতে ফিরে আসার কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- মূত্রনালীতে ব্লকেজ- কিডনিতে পাথর বা বর্ধিত প্রোস্টেট প্রস্রাবকে মূত্রাশয়েই আটকে দিতে পারে, যা প্রস্রাবে ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
- ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য রোগের কারণে ইমিউন সিস্টেম দূর্বল হয়ে যায়। জীবানুর বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরক্ষা কম থাকায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- ক্যাথেটারের ব্যবহার – যারা নিজে নিজে প্রস্রাব করতে পারেন না এবং প্রস্রাবের জন্য টিউব বা ক্যাথেটারের ব্যবহার করতে হয়, তাদের প্রস্রাবে ইনফেকশনের ঝুঁকি বেশি থাকে। এর মধ্যে আছে যারা হাসপাতালে ভর্তি আছেন, যারা পক্ষাঘাতগ্রস্ত, যারা কোন নিউরোলজিক্যাল বা স্নায়বিক সমস্যায় ভুগছেন ইত্যাদি।
- মূত্রতন্ত্রের অস্ত্রোপচার বা মেডিকেল যন্ত্রাদির ব্যবহারে মুত্রতন্ত্রের পরীক্ষা প্রস্রাবে ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে কি খেতে হয়?
উদ্ভিদ ভিত্তিক ডায়েট
নানা সমীক্ষায় পাওয়া গেছে, নিরামিষভোজীদের প্রস্রাবে ইনফেকশনের মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ২০২০ সালের একটি গবেষণা হয়েছিলো যেখানে প্রায় ৯ বছর ধরে ৯৭২৪ জন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীকে অনুসরণ করা হয়েছিলো। সেখানে দেখা গেছে, নিরামিষ খাবারের প্যাটার্ন প্রস্রাবে ইনফেকশনের ঝুঁকি প্রায় ১৬ শতাংশ হ্রাসের সাথে যুক্ত ছিল। এই প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব প্রধানত মহিলাদের মাঝেই দেখা গেছে।
গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে পোল্ট্রি ও শুকরের মাংসসহ বেশ কিছু খাবার ই কোলাই ব্যাকটেরিয়ার একটি স্ট্রেইন “এক্সট্রা ইনটেস্টিনাল প্যাথোজেনিক ই কোলাই” এর জন্য খাদ্য আধার হিসেবে কাজ করে, যা মুত্রতন্ত্রের সংক্রমণ তথা প্রস্রাবে ইনফেকশনের ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশ দায়ী।
আরেকটি উপায়ে নিরামিষভোজীদের প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়া থেকে রক্ষা পান – তা হলো নিরামিষ জাতীয় খাবার প্রস্রাবকে কম অম্লীয় করে তোলে। গবেষণায় দেখা গেছে, যখন প্রস্রাব কম অম্লীয় এবং বেশি নিরপেক্ষ হয়, তখন এটি মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ এর সাথে সম্পর্কিত ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে।
লাল মাংস এবং অন্যান্য প্রানীজ প্রোটিণে উচ্চ সম্ভাবনাময় রেনাল অ্যাসিড লোড বা পিআরএএল’স থাকে। যার মানে হচ্ছে এরা প্রস্রাবকে অধিক অম্লীয় করে তোলে। বিপরীতভাবে, ফল এবং শাকসবজিতে হাই পটেনশিয়াল রেনাল অ্যাসিড লোড (পিআরএএল) কম থাকে, যার ফলে প্রস্রাব কম অম্লীয় হয়।
প্রস্রাবের ইনফেকশন এড়াতে আপনি খেতে পারেন-
- বেরি জাতীয় খাবার: ক্রেনবেরি, ব্লুবেরি, রাস্পবেরি।
- প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার: টকদই, কিমচি, আচার ইত্যাদি
- উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: কলা, বাদাম, ডাল, বীজ, গোটা শস্যাদি ইত্যাদি
- স্যালমন, মাছের তেলের সম্পূরক ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ সিজারের পর কোমর ব্যথার কারণ ও করণীয়
প্রস্রাবের ইনফেকশন এড়াতে যে যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন বা কম খাবেন:
- বেশি মশলাযুক্ত খাবার
- টক জাতীয় ফল
- কফি
- সোডা
- এলকোহল
- আর্টিফিশিয়াল সুইটনার ইত্যাদি।
প্রস্রাবে ইনফেকশন ঔষধের নাম
প্রস্রাবে ইনফেকশনের জন্য সুপারিশকৃত ওষুধের মধ্যে আছে:
- ট্রাইমেথোপ্রিম / সালফামেথোক্সাজোল
- ফসফোমাইসিন
- নাইট্রোফুরানটয়েন
- সেফালেক্সিন
- সেফট্রিয়াক্সোন
অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের একটি গ্রুপ হলো ফ্লুরোকুইনোলোনস যেমন – সিপ্রোফ্লক্সাসিন, লেভোফ্লক্সাসিন ইত্যাদি সাধারণ ইউটিআই এর জন্য দেওয়া হয়না। কিছু ক্ষেত্রে, কিডনিতে সংক্রমণ বা কমপ্লিকেটেড ইউটিআই চিকিৎসায় যদি অন্য কোন বিকল্প না থাকে, তখন ফ্লুরোকুইনোলোন ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
সাধারনত, প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো চিকিৎসা শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। তবে আপনাকে এক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ চালিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি আপনাকে ব্যথার ওষুধও দেওয়া হতে পারে, যা প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি দিবে। তবে সাধারনত অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করার পরেই ব্যথা উপশম হয়ে যায়।
প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা
প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া অনুভব হলে অবশ্যই সবার প্রথমে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। তবে কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা আছে, যা প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া খানিকটা উপশম করবে। তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, ঘরোয়া প্রতিকারগুলো ক্লিনিক্যাল পরামর্শের বিকল্প নয়।
১. হাইড্রেটেড থাকুন
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব করা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই হাইড্রেটেড থাকতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া ডিহাইড্রেশনের কারণে হতে পারে।
২. ক্র্যানবেরি জুস
প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কমাতে ক্র্যানবেরি জুস উপকারি। ক্র্যানবেরি জুস সংক্রমণরত ব্যাকটেরিয়াকে ধবংস করে।
৩. নারিকেল পানি
প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কমাতে যেসব ঘরোয়া চিকিৎসা আছে, তার মধ্যে নারিকেল পানি পান অন্যতম। নারিকেল পানিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইলেক্ট্রোলাইটস আছে, যা আপনার শরীরের তারল্যসূচক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য দুর্দান্ত।
৪. মধুমিশ্রিত লেবুপানি
কুসুম গরম পানিতে ১ টা লেবুর রস ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। মধুমিশ্রিত লেবুপানি প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কমাতে একটি জনপ্রিয় ঘরোয়া চিকিৎসা।
৫. আপেল সাইডার ভিনেগার
অনেক রোগের ঘরোয়া চিকিৎসায় আপেল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসায় আপেল সাইডার ভিনেগার কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য আছে, যা প্রস্রাবের ইনফেকশনের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিহত করে। এছাড়াও আপেল সাইডার ভিনেগার এনজাইম, পটাশিয়াম ও অন্যান্য সহায়ক খনিজে ভরপুর, যা শরীরের প্রাকৃতিক পি এইচ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে।
৬.আমলা জুস
আমলা রস মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণের চিকিৎসায় আরেকটি জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতি। প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কমাতে আমলা রস কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।
৭. ব্লুবেরি
ব্লুবেরিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে, যা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে উপকারী। প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কমাতে আপিনি ব্লুবেরি নিয়মিত খেতে পারেন।
৮. টকদই
টকদই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার। প্রতিদিন দুই থেকে তিন চামচ টকদই খাবারের তালিকায় রাখুন। প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া উপশম করতে টকদই উপকারি। পাশাপাশি টকদই এর পুষ্টি উপাদানগুলো সুস্থ ভ্যাজাইনাল পি এইচ বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৯. শসা
শসায় প্রায় ৯৫ শতাংশ পানি থাকে। শসা আপনাকে হাইড্রেটেড রাখবে এবং শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন থেকে মুক্তি দিবে। পাশাপাশি আপনার শরীরকে শীতল রাখবে। প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কমাতে প্রতিদিন ২-৩ টি শসা খেতে পারেন।
১০. ধনে বীজ
১১. মেথি
১২. গরম ছ্যাক নেওয়া
প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা প্রস্রাবের সময় ব্যথার সংবেদন কমাতে গরম ছ্যাক নেওয়া উপকারী। গরম তাপ মূত্রাশয়ের চাপ কমিয়ে ব্যথা উপশম করবে। তলপেটে ৫ মিনিট গরম ছ্যাক দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। তারপর পুনরায় গরম তাপ নিন। বাজারে নানা ধরণের হট ওয়াটার প্যাক পাওয়া যায়। গরম পানি সেখানে ভরে আপনি গরম ছ্যাক নিতে পারেন।
তথ্যসূত্রঃ
- Akgül, T. and Karakan, T., 2018. The role of probiotics in women with recurrent urinary tract infections. Turkish journal of urology, 44(5), p.377. https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6134985/
- Chen, Y.C., Chang, C.C., Chiu, T.H., Lin, M.N. and Lin, C.L., 2020. The risk of urinary tract infection in vegetarians and non-vegetarians: a prospective study. Scientific Reports, 10(1), pp.1-9. https://www.nature.com/articles/s41598-020-58006-6.
- Narayan, V.M., Bozorgmehri, S., Ellen, J.H., Canales, M.T., Canales, B.K. and Bird, V.G., 2017. Evaluating region of interest measurement strategies to characterize upper urinary tract stones on computerized tomography. The Journal of Urology, 197(3 Part 1), pp.715-722. https://www.auajournals.org/doi/abs/10.1016/j.juro.2016.10.066
- Raz, R., Chazan, B. and Dan, M., 2004. Cranberry juice and urinary tract infection. Clinical infectious diseases, 38(10), pp.1413-1419. https://academic.oup.com/cid/article-abstract/38/10/1413/345228
- Urology Care Foundation. “What is a Urinary Tract Infection (UTI) in Adults?”
- Virtanen, J.K., Mozaffarian, D., Chiuve, S.E. and Rimm, E.B., 2008. Fish consumption and risk of major chronic disease in men. The American journal of clinical nutrition, 88(6), pp.1618-1625. https://academic.oup.com/ajcn/article-abstract/88/6/1618/4617105
- সার্ভিকাল স্পন্ডাইলোসিস কি স্থায়ীভাবে নিরাময় করা যায় - August 1, 2024
- স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি কী এবং সহজ সমাধান - June 13, 2024
- Sports Physical Therapy - May 9, 2024