সায়াটিকা এমন একটি রোগ যা বিশ্বব্যাপী অসংখ্য মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সায়াটিক নার্ভে চাপ বা প্রদাহের কারণে কোমরে ব্যথা হওয়ার পাশাপাশি সেখান থেকে ব্যথা পায়ের দিকে নেমে যেতে পারে, যা রোগীর বসা, দাঁড়ানো বা হাঁটা-চলার ক্ষমতা এবং দৈনন্দিন কার্যক্রমকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে। তাই, “সায়াটিকা সারানোর উপায়” সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সায়াটিকার কারণ, লক্ষণ, এবং চিকিৎসার পদ্ধতি বিশ্লেষণ

সায়াটিকার অন্তর্নিহিত কারণগুলো চিহ্নিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “সাধারণত, লাম্বার ডিস্ক হার্নিয়েশন, নার্ভ রুট কম্প্রেশন, এবং পেশীর প্রদাহ সায়াটিকার ব্যথার মূল কারণ হিসেবে কাজ করে।” – Richard A. Deyo, MD, MPH; James Rainville, MD; Daniel L. Kent, MD

সায়াটিকা রোগ থেকে সুস্থ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান

সৌদি প্রবাসী  ভাই মনিরুজ্জামান, যিনি  দীর্ঘদিন সায়াটিকার ব্যথায় ভুগছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা। ASPC-তে  ম্যানুয়াল থেরাপি চিকিৎসা নিয়ে উল্লেখযোগ্য উন্নতি পেয়েছেন। তার অভিজ্ঞতা শুধু একটি রোগীর গল্প নয়; এটি সায়াটিকার কার্যকর চিকিৎসার একটি উদাহরণ যা ASPC-তে SDM (Structural Diagnosis and Management) কনসেপ্ট এর কার্যকারিতা প্রমাণ করে।

রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য

patient image
নাম: মনিরুজ্জামান মুন্সী।
পেশা: সৌদি প্রবাসী।

প্রধান সমস্যা: দীর্ঘদিন ধরে কোমর ব্যথা এবং কাজ করার সময় পায়ের দিকে ব্যথা হয়। রোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, যেদিন কাজকর্ম বেশি করেন সেদিন ব্যথা আরো বেড়ে যায়। তার ব্যথা “সায়াটিকা” বলে সন্দেহ করা হয়, যা সাধারণত লাম্বার ডিস্ক প্রল্যাপস বা নার্ভ কমপ্রেশনের কারণে হয়।

পারিবারিক এবং চিকিৎসার ইতিহাস

  • পারিবারিক ইতিহাস: রোগীর পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের কোমর ব্যথা বা পায়ের ব্যথার ইতিহাস রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়েছে। “পারিবারিক তথ্য প্রায়শই জেনেটিক বা প্রদাহজনিত কারণ নির্দেশ করে, যেমন অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা হেরিডিটারি ডিসর্ডার।” – CiNii Articles
  • মনিরুজ্জামান ভাই পূর্বে যে  চিকিৎসা নিয়েছেন : রোগী পূর্বে কিছু ওষুধ অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি (Ibuprofen, Naproxen, Diclofenac), পেশী শিথিলকারী (Baclofen, Tizanidine, Diazepam, Lorazepam) ওষুধ সেবন করেছেন, যা সাময়িক উপশম প্রদান করেছে। তবে, ওষুধ সেবন বন্ধ করার পর ব্যথা পুনরায় ফিরে এসেছে। এতে দেখা যায় যে ওষুধ শুধুমাত্র লক্ষণগুলিকে দমন করেছে, কিন্তু মূল কারণ সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে।
  • পুরনো আঘাত বা অস্ত্রোপচার: রোগীর পূর্বে কোনো লাম্বার ইনজুরি বা অস্ত্রোপচার ছিল না। তবে “অতিরিক্ত কাজ এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা ব্যথার কারণ হতে পারে।” – Richard A. Deyo, MD, MPH; James Rainville, MD; Daniel L. Kent, MD

ASPC-তে সায়াটিকার সফল চিকিৎসার অভিজ্ঞতা

ASPC-তে ব্যবহৃত SDM পদ্ধতি সায়াটিকার চিকিৎসায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। SDM পদ্ধতির মাধ্যমে অস্থি, পেশী, এবং নার্ভের অন্তর্নিহিত সমস্যা চিহ্নিত করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে “সঠিক ফিজিওথেরাপি এবং করেকশন থেরাপি সায়াটিক ব্যথার ৭০-৯০% ক্ষেত্রে কার্যকর।” – Anthony Delitto, PT, PhD

ASPC-তে ম্যানুয়াল থেরাপি চিকিৎসা এবং বিশেষায়িত এক্সারসাইজ প্রোগ্রাম সায়াটিকার চিকিৎসায় সফলতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সায়াটিকার যথাযথ চিকিৎসার অভাব অনেক ক্ষেত্রেই রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী অক্ষমতার দিকে নিয়ে যায়।

রোগীর অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপট

মনিরুজ্জামানের অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় যে সায়াটিকার চিকিৎসায় শুধুমাত্র ওষুধ নয়, বরং সঠিক ফিজিওথেরাপি কিংবা ম্যানুয়াল থেরাপি প্রয়োজন। SDM পদ্ধতির মাধ্যমে ASPC রোগীকে সমস্যার শিকড় চিহ্নিত করতে সহায়তা করে, যা একটি গবেষণাভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি।

সায়াটিক নার্ভ ও সায়াটিকা রোগের প্রক্রিয়া

সায়াটিক নার্ভ: সায়াটিক নার্ভ শরীরের সবচেয়ে বড় এবং লম্বা নার্ভ, যা লাম্বার (কোমরের) L4-S3 অংশ থেকে শুরু হয়ে পায়ের দিকে প্রসারিত হয়। এটি মূলত মটর এবং সেন্সরি ফাংশন নিয়ন্ত্রণ করে। সায়াটিক নার্ভ কোমর, নিতম্ব, উরু, এবং গোড়ালিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

নার্ভরুট কম্প্রেশন: ডিস্ক হার্নিয়েশন, অস্টিওফাইট, বা ফ্যাসেট জয়েন্টের পরিবর্তন সায়াটিক নার্ভে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এই চাপ নার্ভের রক্ত প্রবাহ এবং সিগনালিং ব্যাহত করে, যা ব্যথা এবং ঝিনঝিন অনুভূতির কারণ হয়। – NEJM

সায়াটিকা রোগের প্যাথো-ফিজিওলজি এবং লক্ষণ

সায়াটিক নার্ভ কমপ্রেশন বা প্রদাহে ইনফ্ল্যামেটরি মিডিয়েটর যেমন টিউমার নেক্রোসিস ফ্যাক্টর (TNF-α) এবং ইন্টারলিউকিন (IL-6) সক্রিয় হয়। এগুলো নার্ভ রুটে প্রদাহ বাড়িয়ে ব্যথার অনুভূতিকে বৃদ্ধি করে। এ কারণে রোগীরা কোমর ব্যথা, পায়ে দুর্বলতা, এবং ঝিনঝিন অনুভূতি অনুভব করে।

সায়াটিকা রোগের প্যাথো ফিজিওলজি এবং লক্ষণ

সাধারণ লক্ষণসমূহ:

  • কোমর এবং পায়ে ব্যথা: রোগীরা সাধারণত কোমর থেকে শুরু করে পায়ের নিচ পর্যন্ত ব্যথা অনুভব করেন, যা বসে থাকা বা হাঁটার সময় বৃদ্ধি পায়।
  • দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকার সময় ব্যথার বৃদ্ধি: সায়াটিক নার্ভে দীর্ঘক্ষণ চাপ লেগে থাকলে ব্যথা বৃদ্ধি পায়। এটি রোগীর হাঁটাচলায় ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে।
  • পায়ে দুর্বলতা বা ঝিনঝিন অনুভূতি: নার্ভে চাপ লাগার কারণে পায়ে দুর্বলতা বা পায়ের নিচে ঝিনঝিন অনুভূতি হয়। এর ফলে রোগীর হাটতে কষ্ট হয় এবং কাজকর্ম ব্যাহত হয়।

ASPC তে সায়াটিকার এসেসমেন্ট পদ্ধতি

Structural Diagnosis and Management (SDM) কনসেপ্টের মূল উদ্দেশ্য হলো রোগীর শারীরিক গঠনের বিশদ বিশ্লেষণ করা। রোগীর অস্থি, পেশী এবং নার্ভাস সিস্টেমের কাজের মূল্যায়ন, যা সায়াটিকার মতো সমস্যাগুলির শারীরিক কারণগুলো সনাক্ত করতে সহায়ক। কোমরের পেশী এবং সায়াটিক নার্ভের পার্শ্ববর্তী অংশগুলোর পেশী শক্তি এবং নমনীয়তা পরীক্ষা করা হয়। এই জন্য রোগীর সাথে কথা বলে রোগের বিস্তারিত তথ্য নেয়া হয়।

ASPC তে সায়াটিকার এসেসমেন্ট পদ্ধতি

কোমরের ও দুই পায়ের জয়েন্টের মুভমেন্ট পরীক্ষা: SDM পদ্ধতিতে রোগীর কোমরের এবং পায়ের নড়াচড়ার মাত্রা (Range of Motion – ROM) পরিমাপ করা হয়। এটি থেকে বোঝা যায় কোমরের নমনীয়তা কতটা হ্রাস পেয়েছে এবং নার্ভের সমস্যার কারণে পায়ে দুর্বলতা বা ব্যথা রয়েছে কি না।

স্ট্রেইট লেগ রেইজ (SLR) টেস্ট: SLR টেস্ট সায়াটিক নার্ভ কমপ্রেশন এসেসমেন্টের একটি অত্যন্ত কার্যকর টেস্ট। রোগীর শুয়ে থাকা অবস্থায় একটি পা সোজা করে তোলা হয়। যদি ৩০-৭০ ডিগ্রি তোলার সময় পায়ে  বা কোমরে ব্যথা হয়, তবে এটি সায়াটিক নার্ভ কমপ্রেশনের লক্ষণ হতে পারে। – Dr Patrick C A J Vroomen

কোমর ও পায়ের রেঞ্জ অব মোশন (ROM) পরীক্ষা: কোমরের নড়াচড়ার সীমাবদ্ধতা রোগীর কার্যক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলে। SDM কনসেপ্ট কোমরের ফ্লেক্সশন, এক্সটেনশন, ল্যাটারাল ফ্লেক্সশন এবং রোটেশনের মাধ্যমে ROM পরিমাপ করা হয়। এর মাধ্যমে পেশী এবং নার্ভের শক্তি এবং কার্যক্ষমতার বিশ্লেষণ করা হয়। – Julie M Fritz

গেইট অ্যানালাইসিস: গেইট অ্যানালাইসিস রোগীর হাঁটার প্যাটার্ন বিশ্লেষণে ব্যবহার করা হয়। রোগী কি স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারছেন নাকি পায়ের ব্যথার কারণে লিম্পিং করছেন বা টেনে টেনে  হাঁটছেন কিনা  তা যাচাই করা হয়। গেইট অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে রোগীর সায়াটিক নার্ভ বা কোমরের অন্য কোনো সমস্যার প্রভাব শনাক্ত করা যায়।

ASPC-তে যেভাবে সায়াটিকা নির্ণয় করা হয়

ASPC-তে Structural Diagnosis and Management (SDM) কনসেপ্টের মাধ্যমে রোগীর সায়াটিক নার্ভের কমপ্রেশনের কারণ খুঁজে বের করা হয়। কোমরের ডিস্কের অবস্থান এবং নার্ভ রুট কমপ্রেশন পরীক্ষা করা হয়। বেশিরভাগ সায়াটিকার ক্ষেত্রে ডিস্ক হার্নিয়েশন প্রধান কারণ হিসেবে দেখা যায়, যা সায়াটিক নার্ভ রুটে চাপ সৃষ্টি করে। আহত ডিস্ক নার্ভের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে, যার ফলে কোমর থেকে পায়ে ব্যথা এবং ঝিনঝিনে অনুভূতি হয়।

রোগীর কাজের ধরন এবং তার উপর চাপের প্রভাব: মনিরুজ্জামান এর পেশার ধরন অনুযায়ী তার কোমরের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে বা বসে কাজ করার ফলে কোমরের ভার বহনের ক্ষমতা কমে যায়, যা সায়াটিকার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এ ধরনের পরিস্থিতি রোগীর ব্যথা তীব্র করার পাশাপাশি পুনরায় ব্যথার উদ্ভব ঘটাতে পারে।

বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট বিশ্লেষণ

সিটি স্ক্যান বা এমআরআই রিপোর্টের ভিত্তিতে রোগ নির্ধারণ: MRI এবং CT স্ক্যান হলো সায়াটিকা নির্ণয়ের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি। MRI ডিস্ক হার্নিয়েশন এবং নার্ভ কমপ্রেশনের স্পষ্ট চিত্র প্রদান করে। ASPC-তে মনিরুজ্জামানের MRI রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে সায়াটিক নার্ভ রুট কমপ্রেশন নিশ্চিত করা হয়।

পেশী দুর্বলতা এবং নার্ভ কন্ডাকশন রিপোর্ট: নার্ভ কন্ডাকশন স্টাডি (NCS) সায়াটিক নার্ভের কার্যক্ষমতা নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পরীক্ষা করে নার্ভ সংকেতের গতি এবং কার্যক্ষমতা। সায়াটিকার রোগীদের প্রায়শই পেশী দুর্বলতা দেখা যায়, যার ফলে NCS-এ সংকেতের গতি কমে যায়। ASPC-তে পেশী দুর্বলতার লক্ষণ এবং নার্ভ কন্ডাকশন রিপোর্ট পর্যালোচনা করে রোগীর জন্য সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার পরিকল্পনা করা হয়।

ASPC-তে সায়াটিকার চিকিৎসা পদ্ধতি

মনিরুজ্জামান সাহেবকে ASPC-তে ৬ দিনের চিকিৎসার পরিকল্পনা করা হয়, যেখানে প্রতিদিন ৩ সেশন করে থেরাপি পরিচালনা করা হয়। এই পরিকল্পনা SDM (Structural Diagnosis and Management) কনসেপ্টের উপর ভিত্তি করে তৈরিকৃত, যা সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিশ্চিত করে এবং উন্নতিকে ত্বরান্বিত করে।

ASPC তে সায়াটিকার চিকিৎসা পদ্ধতি

SDM করেকশন থেরাপি:

  • নার্ভ ডিকমপ্রেশন: নার্ভ ডিকমপ্রেশন থেরাপি সায়াটিক নার্ভের কার্যকারিতা উন্নত করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে, যা ব্যথা হ্রাস করে এবং পেশীর কার্যক্ষমতা পুনরুদ্ধার করে। – NEJM
  • ডিস্কের কারেকশন : ডিস্ক কারেকশন করার মাধ্যমে কোমরের ডিস্ককে সঠিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনা হয়। এটি ডিস্কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের চাপ কমায় এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটায়। এতে ডিস্কের কার্যকারিতা স্বাভাবিক হয়। 
  • ম্যানুয়াল থেরাপি: কোমরের পেশী ও নার্ভের চাপ কমাতে ম্যানুয়াল থেরাপি ব্যবহৃত হয়। কোমরের জয়েন্ট মবিলাইজেশন এবং স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ পেশীগুলিকে নমনীয় করে তোলে এবং ব্যথা হ্রাস করে। পায়ের পেশীগুলিতে বিশেষ পদ্ধতিতে পেশী সংকোচন ও শক্তি উন্নত করা হয়। – Hahne, Andrew J. BPhysio*; Ford, Jon J. PhD*; McMeeken, Joan M. MSc

৬ দিনের চিকিৎসার পর ৮০% উন্নতি: ASPC-তে ৬ দিনের চিকিৎসার শেষে রোগী মনিরুজ্জামান উল্লেখ করেছেন যে তার ব্যথা ৮০% কমে গেছে এমনকি এর সাথে সাথে তার  মানসিক অবস্থারও উন্নতি ঘটেছে, তিনি আর ও বলেন একমাত্র কারেকশন থেরাপি বা ম্যানুয়াল থেরাপি চিকিৎসাই পারে সায়াটিকার মতো সমস্যার সমাধান করতে।

বাসায় করনীয়/নির্দেশনাবলী

  • কোমরের স্থিতিশীলতার জন্য ব্রিজিং এবং প্লাঙ্ক: ব্রিজিং এবং প্লাঙ্ক এক্সারসাইজ কোমরের স্থিতিশীলতা বাড়াতে কার্যকর। ব্রিজিং কোমরের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে এবং ফাংশনাল রিকভারি ত্বরান্বিত করে। একইভাবে, প্লাঙ্ক ব্যায়াম কোর মসলের শক্তি বাড়ায় এবং সঠিক অঙ্গবিন্যাস বজায় রাখতে সাহায্য করে। – Department of Physical Therapy, Sahmyook University, Seoul, Republic of Korea
  • পায়ের জন্য স্ট্রেচিং: হ্যামস্ট্রিং এবং গ্যাস্ট্রোকনিমিয়াস পেশীর স্ট্রেচিং সায়াটিকার ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিক স্ট্রেচিং সেশন নার্ভ গ্লাইডিং উন্নত করে এবং ব্যথা উপশম করে। – Cynthia Holzman Weppler
  • প্রতিদিন ৩ -৩.৫ লিটার পানি পান: ডিহাইড্রেশন নার্ভের কার্যকারিতাকে ব্যাহত করতে পারে এবং ব্যথা বাড়াতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান নার্ভ ফাংশন উন্নত করতে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সহায়ক। – Barry M Popkin, Kristen E D’Anci, Irwin H Rosenberg
  • ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম নার্ভ এবং পেশীর কার্যকারিতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত ডায়েট নার্ভ সংকেত উন্নত করতে এবং পেশী খিঁচুনি কমাতে সহায়ক।
  • লাম্বার কোর্সেট বেল্ট: লাম্বার কোর্সেট বেল্ট কোমর এবং পিঠের সঠিক অ্যালাইমেন্ট বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা সায়াটিকার ব্যথা কমাতে কার্যকর। কোর্সেট বেল্টের ব্যবহার দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার ক্ষেত্রে কার্যকর। বাজারে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানীর লাম্বার কোর্সেট পাওয়া যায়। তবে একজন সায়াটিকা রোগীর অবশ্যই দেখে নেয়া উচিৎ কোনটা তার কোমরের জন্য সবচাইতে বেশি উপযোগী। ‘ন্যাচারাল হেলথ’ কোম্পানীর লাম্বার কোর্সেটটি যথেষ্ট আরামদায়ক এবং এতে করে সায়াটিক নার্ভের উপর চাপ ও কমে যায়।

উপসংহার (Conclusion)

মনিরুজ্জামান মুন্সীর সাফল্যের গল্প সায়াটিকা চিকিৎসায় সঠিক নির্ণয় এবং সুনির্দিষ্ট থেরাপির কার্যকারিতার এক উদাহরণ। দীর্ঘদিন ধরে ব্যথায় ভোগার পর, ASPC-তে ৬ দিনের করেকশন থেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে মনিরুজ্জামান ৮০% উন্নতি লাভ করেছেন। এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে সঠিক এসেসমেন্ট এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি রোগীর জীবনমানকে কতটা উন্নত করতে পারে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে ম্যানুয়াল থেরাপি এবং সুনির্দিষ্ট ফিজিওথেরাপি পদ্ধতি নার্ভ কম্প্রেশনের সমস্যাগুলি সমাধানে অত্যন্ত কার্যকর।

ASPC-তে ব্যবহৃত SDM (Structural Diagnosis and Management) কনসেপ্ট সায়াটিকার চিকিৎসায় নতুন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছে। এর মাধ্যমে রোগীর অস্থি, পেশী, এবং নার্ভের সমস্যা বিশ্লেষণ করে সঠিক ও কার্যকরী চিকিৎসা প্রদান করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে SDM-ভিত্তিক কারেকশন থেরাপি পদ্ধতিগুলি রোগীর ব্যথা উপশম করতে এবং তাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ পুনরুদ্ধারে বিশেষভাবে কার্যকর।

Dr. M Shahadat Hossain
Follow me

Physiotherapist, Pain, Paralysis & Manipulative Therapy Specialist, Assistant Professor Dhaka College of Physiotherapy, Secretary-General(BPA), Secretary(CARD), Chief Consultant(ASPC), Conceptual Inventor(SDM), Faculty Member(CRP), Member-Bangladesh Rehabilitation Council

ফোকাল নিউরোপ্যাথি কি বা পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি মানে কি?

ফোকাল নিউরোপ্যাথি কি | এক ধরনের পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি। এই রোগটি পেরিফেরাল স্নায়ুগুলিকে…
পরামর্শ নিতে 01877733322