স্ট্রোক হল একটি মারাত্মক রোগ, যা কিনা মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হবার ফলে হয়ে থাকে। মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ ব্যাহত হলে মস্তিষ্কের কোষগুলি পর্যাপ্ত অক্সিজেন এবং পুষ্টি পায় না। রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মস্তিষ্কের কোষগুলি মারা যেতে শুরু করে।

স্ট্রোক সাধারণত দুটি প্রধান প্রকারে বিভক্ত:

  1. ইস্কেমিক স্ট্রোক: মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সরবরাহকারী ধমনীতে বাধা সৃষ্টি হলে ইস্কেমিক স্ট্রোক ঘটে। এটি সবচেয়ে সাধারণ প্রকারের স্ট্রোক, যা প্রায় ৮৭% স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ঘটে।
  2. হেমোরেজিক স্ট্রোক: মস্তিষ্কে রক্তনালী ফেটে গেলে বা ছিঁড়ে গেলে হেমোরেজিক স্ট্রোক ঘটে। এটি মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের কারণে হয়।

এছাড়াও, ট্রানজিয়েন্ট ইস্কেমিক অ্যাটাক (TIA) বা মিনি-স্ট্রোক হল একটি স্বল্পকালীন স্ট্রোক, যা মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে স্বল্পকালীন ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। যদিও TIA বা মিনি-স্ট্রোক সাধারণত কয়েক মিনিট বা ঘন্টার মধ্যে চলে যায়, এটি পরবর্তীতে বড় ধরনের স্ট্রোকের পূর্বাভাস হতে পারে।

স্ট্রোক একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যা, যা বিভিন্ন দেশের জনস্বাস্থ্যে গুরুতর প্রভাব ফেলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, স্ট্রোক বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ এবং দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক অক্ষমতার প্রধান কারণ।

প্রাদুর্ভাব:

  • প্রতি বছর প্রায় ১৫ মিলিয়ন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়।
  • তাদের মধ্যে প্রায় ৫ মিলিয়ন মানুষ মারা যায় এবং ৫ মিলিয়ন মানুষ স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়ে।
  • উন্নত দেশগুলির পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলিতেও স্ট্রোকের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
Table of Contents hide

স্ট্রোকের ঝুঁকিতে কারা আছেন?

বিভিন্ন কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। কিছু ঝুঁকির কারণ পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, যেমনঃ বয়স বা জেনেটিক ফ্যাক্টর, তবে জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও চিকিৎসার মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এখানে যেসকল কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে সেগুলো উল্লেখ করা হলোঃ

অপরিবর্তনীয় ঝুঁকিসমূহঃ

  • বয়সঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
  • লিঙ্গঃ পুরুষদের স্ট্রোকের ঝুঁকি মহিলাদের তুলনায় বেশি, তবে মহিলাদের মধ্যে স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুহার বেশি।
  • পারিবারিক ইতিহাস ও জেনেটিক ফ্যাক্টরঃ যেসব পরিবারের সদস্যদের মধ্যে স্ট্রোকের ইতিহাস রয়েছে, তাদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। জেনেটিক ফ্যাক্টরও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • পূর্বের স্ট্রোকের ইতিহাস বা TIA:যারা পূর্বে স্ট্রোক বা ট্রানজিয়েন্ট ইস্কেমিক অ্যাটাক (TIA) অর্থাৎ মিনি-স্ট্রোকের সম্মুখীন হয়েছেন, তাদের পুনরায় স্ট্রোক হবার ঝুঁকি বেশি।

পরিবর্তনীয় ঝুঁকিসমূহঃ

  • উচ্চ রক্তচাপঃ যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা সবচেয়ে বেশি স্ট্রোকের ঝুঁকিতে আছেন। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করা উচিত।
  • ডায়াবেটিসঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং প্রয়োজন হলে ইনসুলিন বা ঔষধ গ্রহণ করা উচিত।
  • হৃদরোগঃ হৃদরোগ, বিশেষ করে অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন, স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।
  • উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরলঃ উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল ধমনীর দেয়ালে চর্বি জমাতে সাহায্য করে, যা রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা এবং প্রয়োজন হলে চিকিতসকের পরামর্শ অনুযায়ী কোলেস্টেরল কমানোর ঔষধ গ্রহণ করা উচিত।
  • ধূমপানঃ ধূমপান রক্তনালী সংকুচিত করে এবং রক্তচাপ বাড়ায়, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ায়। ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করা স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
  • অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনঃ অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন রক্তচাপ বাড়াতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। অ্যালকোহল সেবন সীমিত করা উচিত।
  • স্থূলতাঃ অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়, যা স্ট্রোকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।
  • শারীরিক নিষ্ক্রিয়তাঃ শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ব্যায়াম এবং শারীরিক কার্যকলাপ স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়ক।
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসঃ চর্বিযুক্ত ও উচ্চ কোলেস্টেরলযুক্ত খাদ্য গ্রহণ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, যেমনঃ ফল, শাকসবজি, সম্পূর্ণ শস্য, এবং কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।

আমার কি স্ট্রোকের ঝুঁকি আছে?

স্ট্রোকের ঝুঁকি নির্ধারণ করতে হলে আপনার স্বাস্থ্যগত অবস্থা, জীবনযাত্রার ধরণ, এবং পারিবারিক ইতিহাস বিবেচনা করতে হবে। বেশ কিছু কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে, সেগুলো সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো।

আপনার স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কে কিছু প্রশ্নঃ

  1. উচ্চ রক্তচাপঃ আপনার কি উচ্চ রক্তচাপ আছে?
  2. ডায়াবেটিসঃ আপনি কি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত?
  3. হৃদরোগঃ আপনার কি কোনো হৃদরোগ বা অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন আছে?
  4. উচ্চ কোলেস্টেরলঃ আপনার রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কি অত্যধিক?
  5. পারিবারিক ইতিহাসঃ আপনার পরিবারের কেউ কি স্ট্রোক করেছিল?
  6. পূর্বের স্ট্রোক বা TIA: আপনি কি পূর্বে মিনি স্ট্রোক বা ট্রানজিয়েন্ট ইস্কেমিক অ্যাটাক (TIA) এর সম্মুখীন হয়েছেন?

আপনার জীবনযাত্রার ধরণ সম্পর্কে কিছু প্রশ্নঃ

  1. ধূমপানঃ আপনি কি ধূমপান করেন?
  2. অ্যালকোহল সেবনঃ আপনি কি অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন করেন?
  3. শারীরিক কার্যকলাপঃ আপনার সারাদিনে কতটুকু কায়িক শ্রম হয়? আপনি কি নিয়মিত ব্যায়াম করেন?
  4. ওজনঃ আপনার শরীরের ওজন কি তূলনামূলকভাবে বেশি?
  5. খাদ্যাভ্যাসঃ আপনার খাদ্যাভ্যাস কেমন? আপনি কি স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করেন?
আরও পড়ুন  থ্যালাসেমিয়া কি ও কেন হয় এবং প্রতিরোধে করনীয়

উপরের প্রশ্নগুলির উত্তর চিন্তা করলেই আপনার স্ট্রোকের ঝুঁকি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। আপনার মধ্যে যদি উপরের যেকোনো একটি বা একাধিক বিষয়গুলো থাকে, তাহলে স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকতে পারে।

হতাশা কি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়?

হ্যাঁ, হতাশা (ডিপ্রেশন) স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে দীর্ঘমেয়াদী হতাশা এবং মানসিক চাপ শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। এখানে হতাশা এবং স্ট্রোকের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হলো:

শারীরিক স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার উপর প্রভাবঃ

হতাশা একজন ব্যক্তির শারীরিক স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার ধরণকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসঃ হতাশার কারণে অনেকেই অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করতে পারেন, যা ওজন বৃদ্ধি, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • শারীরিক নিষ্ক্রিয়তাঃ হতাশা ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় করে তুলতে পারে, যা স্থূলতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যের সমস্যা সৃষ্টি করে।
  • অতিরিক্ত ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবনঃ হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা অতিরিক্ত ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবনের মাধ্যমে নিজেদের মানসিক অবস্থা থেকে সাময়িক মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করে থাকেন, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।

হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব

হতাশা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপঃ হতাশা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়, যা স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ।

হৃদরোগঃ হতাশার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে, যা স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ায়।

রক্ত প্রবাহের পরিবর্তনঃ হতাশার ফলে শরীরে রক্ত প্রবাহের সমস্যা হতে পারে, যা মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহের বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

শারীরিক প্রদাহ

দীর্ঘমেয়াদী হতাশা শরীরে প্রদাহের মাত্রা বাড়াতে পারে, যা ধমনীর দেয়ালে ক্ষতি সৃষ্টি করে এবং রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

হরমোনের পরিবর্তন

হতাশার কারণে শরীরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, যা স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।

কোর্টিসলঃ হতাশার কারণে কোর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা রক্তচাপ বাড়ায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

আপনার যদি হতাশা থাকে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে চান, তাহলে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন:

মেডিটেশন এবং যোগব্যায়ামঃ মানসিক চাপ কমাতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে মেডিটেশন এবং যোগব্যায়াম করুন।

পর্যাপ্ত ঘুমঃ প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন, যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনঃ স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

সঠিক পরামর্শঃ পরিবার, বন্ধু এবং মানসিক স্বাস্থ্যবিদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করুন।

চিকিৎসাঃ হতাশার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং থেরাপি গ্রহণ করুন।

এই পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করে আপনি আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারেন।

স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ

স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণগুলি স্ট্রোক শুরু হওয়ার আগে দেখা দিতে পারে এবং এটি সাধারণত অস্থায়ী ও হালকা হতে পারে, তবে এই লক্ষণগুলি বড় ধরনের স্ট্রোকের সতর্ক সংকেত হতে পারে। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত, যাতে পরবর্তী বড় স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায়। এখানে স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণগুলি উল্লেখ করা হলোঃ

স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণঃ

হঠাৎ এবং স্বল্পমেয়াদী উপসর্গঃ

  • হঠাৎ দুর্বলতা বা অবশভাবঃ মুখ, বাহু বা পায়ের এক পাশে হঠাৎ দুর্বলতা বা অবশভাব অনুভব করা।
  • কথার সমস্যাঃ হঠাৎ করে কথা বলতে অসুবিধা বা কথা অস্পষ্ট হয়ে যাওয়া।
  • দৃষ্টিশক্তি সমস্যাঃ হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি হারানো বা ঝাপসা দেখা।
  • মাথা ঘোরাঃ হঠাৎ করে ভারসাম্য হারানো বা মাথা ঘোরা অনুভব করা।
  • মাথাব্যথাঃ হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা অনুভব করা, যা সাধারণ মাথাব্যথার থেকে আলাদা।

ব্রেইন স্ট্রোক ও মিনি স্ট্রোক এর লক্ষণ/ ব্রেইন স্ট্রোক হলে কি হয়

ব্রেইন স্ট্রোক, যা সাধারণত স্ট্রোক নামে পরিচিত, হলো মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হওয়া, যার ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলি পর্যাপ্ত অক্সিজেন এবং পুষ্টি পায় না। এটি একটি মারাত্মক রোগ এবং এর লক্ষণগুলি দ্রুত এবং তীব্র হতে পারে।

মিনি স্ট্রোক, যাকে ট্রানজিয়েন্ট ইস্কেমিক অ্যাটাক (TIA) বলা হয়, এটি হলো মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহে সাময়িক ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়া যা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চলে যায় এবং স্থায়ী ক্ষতি করে না। তবে, TIA বা মিনি স্ট্রোক হল  স্ট্রোকের একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্ক সংকেত এবং এটি পরবর্তী বড় স্ট্রোকের ঝুঁকি নির্দেশ করতে পারে। TIA এর লক্ষণগুলি সাধারণত ইস্কেমিক স্ট্রোকের লক্ষণগুলির মতোই হয়। স্ট্রোকের প্রধান লক্ষণগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো:

স্ট্রোকের লক্ষণঃ

 ১. মুখের এক পাশ ঝুলে যাওয়াঃ

  • মুখের পেশী দুর্বলতাঃ মুখের একটি পাশ ঝুলে পড়তে পারে, এবং হাসতে গেলে এটি স্পষ্ট বোঝা যায়।
  • মুখের সংবেদনশীলতাঃ মুখের একটি পাশে অনুভূতিহীনতা বা অবশভাব হতে পারে।

২. বাহু বা পায়ের দুর্বলতা বা অবশভাবঃ

  • বাহু বা পায়ের পেশী দুর্বলতাঃ এক বা উভয় বাহু এবং পা দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং তুলতে বা ধরে রাখতে অসুবিধা হতে পারে।
  • সংবেদনশীলতা হারানোঃ বাহু বা পায়ে অনুভূতিহীনতা বা অবশভাব হতে পারে।

৩. কথা বলতে বা বুঝতে অসুবিধাঃ

  • কথা বলার সমস্যাঃ রোগী হঠাৎ করে কথা বলতে অক্ষম হয়ে পড়তে পারেন বা কথা বললে তা অস্পষ্ট হতে পারে।
  • বুঝতে অসুবিধাঃ রোগী হয়তো অন্যের কথা বুঝতে অসুবিধা হতে পারে এবং কথা বলার সময় সঠিক শব্দ ব্যবহার করতে সমস্যা হতে পারে।

৪. দৃষ্টিশক্তি সমস্যাঃ

  • দৃষ্টিশক্তি হারানোঃ রোগী এক বা উভয় চোখে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন বা ঝাপসা দেখতে পারেন।
  • ডাবল ভিশনঃ রোগী দুটি জিনিস দেখতে পারেন বা দৃষ্টিশক্তি অস্পষ্ট হয়ে যেতে পারে।

৫. মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরাঃ

  • মাথাব্যথাঃ স্ট্রোকের সময় হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে, যা সাধারণ মাথাব্যথার থেকে আলাদা এবং গুরুতর হতে পারে।
  • মাথা ঘোরাঃ রোগী হঠাৎ করে ভারসাম্য হারাতে পারেন বা মাথা ঘোরা অনুভব করতে পারেন।
  • বমি বমি ভাবঃ মাথা ঘোরার সাথে সাথে বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
আরও পড়ুন  গর্ভবতী হওয়ার লক্ষন | প্রেগন্যান্সির লক্ষণ গুলো কি কি

৬. শারীরিক সমন্বয়হীনতাঃ

  • ভারসাম্য হারানোঃ রোগী হাঁটতে বা দাঁড়াতে গিয়ে ভারসাম্য হারাতে পারেন।
  • চলাফেরা করতে অসুবিধাঃ রোগী হয়তো চলাফেরা করতে বা সঠিকভাবে পা ফেলতে অসুবিধা হতে পারে।

“FAST” পদ্ধতি দিয়ে স্ট্রোকের লক্ষণ শনাক্ত করা

“FAST” পদ্ধতি স্ট্রোকের লক্ষণগুলি দ্রুত শনাক্ত করার সহজ উপায়ঃ

  • Face (মুখ): রোগীকে হাসতে বলুন। যদি মুখের একটি পাশ ঝুলে পড়ে, তাহলে এটি স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে।
  • Arms (বাহু): রোগীকে দুইটি বাহু তুলতে বলুন। যদি একটি বাহু নিচে পড়ে যায় বা দুর্বল হয়ে পড়ে, তাহলে এটি স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে।
  • Speech (কথা): রোগীকে একটি সাধারণ বাক্য বলতে বলুন। যদি কথা অস্পষ্ট হয় বা সঠিকভাবে বলতে না পারেন, তাহলে এটি স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে।
  • Time (সময়): যদি উপরোক্ত কোনো লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে সময় নষ্ট না করে দ্রুত হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসা নিন।

স্ট্রোকের পরের অবস্থা এবং পুনর্বাসন/ব্রেইন স্ট্রোক হলে কি করনীয়

ব্রেইন স্ট্রোক একটি জরুরি চিকিৎসা অবস্থা এবং এর ক্ষেত্রে সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্ট্রোক হলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করলে রোগীর জীবন বাঁচানো এবং স্থায়ী ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। এখানে ব্রেইন স্ট্রোক হলে করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ উল্লেখ করা হলো:

জরুরি চিকিৎসা গ্রহণ

স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। স্ট্রোকের চিকিৎসায় সময়মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করলে মস্তিষ্কের ক্ষতি কমানো এবং রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব।

  • জরুরি নম্বরে কল করুনঃ স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ৯৯৯ বা স্থানীয় জরুরি নম্বরে কল করুন এবং অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করুন।
  • হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াঃ রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে যেখানে স্ট্রোকের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।

চিকিৎসা ব্যবস্থা

হাসপাতালে পৌঁছানোর পর রোগীর জন্য সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • ইমারজেন্সি থেরাপিঃ ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে থ্রম্বলাইটিক থেরাপি, যেমন tPA, রক্ত জমাট গলানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি সাধারণত স্ট্রোকের লক্ষণ শুরু হওয়ার ৪.৫ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োগ করা হয়।
  • ইমেজিং টেস্টঃ সিটি স্ক্যান বা এমআরআই পরীক্ষা করে মস্তিষ্কের অবস্থা নির্ণয় করা হয়।
  • অ্যান্টিপ্লেটলেটস এবং অ্যান্টিকোয়াগুলেন্টসঃ রক্তপ্রবাহের বাধা দূর করতে এবং পুনরায় স্ট্রোক প্রতিরোধে ঔষধ ব্যবহৃত হয়।
  • সার্জারিঃ হেমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে রক্তনালী মেরামত বা বন্ধ করার জন্য সার্জারি করা যেতে পারে।

পুনর্বাসন এবং থেরাপি

স্ট্রোকের পর পুনর্বাসন এবং থেরাপি রোগীর পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

  • ফিজিক্যাল থেরাপিঃ পেশীর শক্তি এবং সমন্বয় উন্নয়নে সহায়ক।
  • অকুপেশনাল থেরাপিঃ দৈনন্দিন কার্যক্রমে সক্ষমতা পুনরুদ্ধারে সহায়ক।
  • স্পিচ থেরাপিঃ কথা বলা এবং বোঝার ক্ষমতা উন্নয়নে সহায়ক।
  • মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তাঃ ডিপ্রেশন, উদ্বেগ, এবং মানসিক অস্থিরতা মোকাবিলায় সহায়ক।

ব্রেইন স্ট্রোকের ঔষধ

ব্রেইন স্ট্রোকের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ধরণের ঔষধ ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে কিছু ঔষধ স্ট্রোকের পর রক্তপ্রবাহ পুনরুদ্ধার করতে এবং কিছু ঔষধ পুনরায় স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়ক। এখানে ব্রেইন স্ট্রোকের চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রধান ঔষধগুলির তালিকা এবং তাদের কার্যকারিতা উল্লেখ করা হলো:

ইস্কেমিক স্ট্রোকের ঔষধ

থ্রম্বলাইটিক ঔষধঃ থ্রম্বলাইটিক ঔষধ জমাট ধরা রক্ত গলানোর জন্য ব্যবহৃত হয়, যা রক্তপ্রবাহ পুনরুদ্ধার করতে সহায়ক।

  • অ্যাল্টেপ্লেস (tPA): এটি স্ট্রোকের পর ৪.৫ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োগ করা হলে রক্ত জমাট গলিয়ে রক্তপ্রবাহ পুনরুদ্ধার করে। এটি ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সবচেয়ে সাধারণ থ্রম্বলাইটিক ঔষধ।

পুনরায় স্ট্রোক প্রতিরোধের ঔষধ

অ্যান্টিপ্লেটলেট ঔষঅ্যান্টিপ্লেটলেট ঔষধ রক্তের প্লেটলেটগুলি একত্রিত হওয়া থেকে প্রতিরোধ করে, যা রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমায়।

  • অ্যাসপিরিনঃ এটি সবচেয়ে সাধারণ অ্যান্টিপ্লেটলেট ঔষধ এবং স্ট্রোক প্রতিরোধে কার্যকর।
  • ক্লোপিডোগ্রেলঃ এটি আরও কার্যকর অ্যান্টিপ্লেটলেট ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  • ডিপিরিডামোলঃ এটি অ্যাসপিরিনের সাথে ব্যবহার করা হয় এবং স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়ক।

অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট ঔষধঃ অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট ঔষধ রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়, যা রক্তপ্রবাহে বাধা প্রতিরোধ করে।

  • ওয়ারফারিনঃ এটি রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া ধীর করে দেয় এবং স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়ক।
  • নোভেল ওরাল অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট (NOACs): যেমন ডাবিগাট্রান, রিভারোক্সাবান, এবং অ্যাপিক্সাবান। এই ঔষধগুলি ওয়ারফারিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং স্ট্রোক প্রতিরোধে কার্যকর।

হেমোরেজিক স্ট্রোকের ঔষধ

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ঔষধঃ হেমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

  • বিটা-ব্লকারসঃ যেমনঃ ল্যাবেটালল এবং কার্ভেডিলল।
  • ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকারসঃ যেমনঃ নিমোডিপিন, যা মস্তিষ্কের রক্তনালীর উপর বিশেষ প্রভাব ফেলে।

রক্তক্ষরণ নিয়ন্ত্রণের ঔষধঃ হেমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু ঔষধ ব্যবহৃত হয়।

  • অ্যান্টিফাইব্রিনোলিটিক ঔষধঃ যেমনঃ অ্যামিনোক্যাপ্রোইক অ্যাসিড, যা রক্তক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

অন্যান্য ঔষধ এবং সাপোর্টিভ কেয়ার

স্ট্রোকের পর রোগীর অবস্থার উন্নতি এবং পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন সাপোর্টিভ কেয়ার এবং ঔষধ ব্যবহার করা হয়। স্পন্ডিলাইটিস হলে কি করতে হয়

  • স্ট্যাটিনসঃ যেমনঃ অ্যাটোরভাস্টাটিন এবং রোসুভাস্টাটিন, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং পুনরায় স্ট্রোক প্রতিরোধে কার্যকর।
  • এন্টিহাইপারটেনসিভসঃ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত ঔষধ, যেমন ACE ইনহিবিটার্স, ARBs, এবং ডায়ুরেটিকস।

ব্রেইন স্ট্রোকের রোগীর ব্যায়াম

ব্রেইন স্ট্রোকের রোগীদের পুনর্বাসনে ব্যায়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পেশীর শক্তি, সমন্বয়, এবং চলাচলের ক্ষমতা উন্নত করতে সহায়ক। তবে, স্ট্রোকের রোগীর ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং ফিজিক্যাল থেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে ব্যায়াম করা উচিত। এখানে স্ট্রোকের রোগীদের জন্য কিছু সাধারণ ব্যায়াম এবং তাদের উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:

শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম

শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাসের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক।

ডায়াফ্রামিক ব্রিদিং: নাক দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নিন এবং মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এটি শ্বাসপ্রশ্বাসের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং শ্বাসকষ্ট কমায়।

পার্সড লিপ ব্রিদিং: শ্বাস নিন এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ার সময় ঠোঁটকে কিঞ্চিৎ সংকুচিত বা গোল করুন।

পেশীর শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম

পেশীর শক্তি বাড়ানোর জন্য কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে, যা রোগীর দৈনন্দিন কার্যক্রমে সহায়ক।

আরও পড়ুন  গলফার এলবো কী ও এর প্রতিকার

বাহু উত্থাপন: সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বা বসে একটি বাহু সামনে তুলে রাখুন এবং ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এরপর ধীরে ধীরে নিচে নামান। উভয় বাহু দিয়ে পুনরাবৃত্তি করুন।

বাহু ও কাঁধের ব্যায়াম: একটি লাঠি বা তোয়ালে ধরে সামনের দিকে মাথার উপর পর্যন্ত তুলুন। এই ব্যায়ামটি কাঁধ এবং বাহুর পেশী শক্তিশালী করতে সহায়ক।

পা তুলে রাখা: সোজা হয়ে বসে একটি পা তুলে ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এরপর ধীরে ধীরে নামিয়ে অন্য পা এ পুনরাবৃত্তি করুন।

সমন্বয় ও ভারসাম্যের ব্যায়াম

সমন্বয় এবং ভারসাম্য উন্নত করার জন্য কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।

পায়ের আঙ্গুল স্পর্শ করা: সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বা বসে একটি পা সামনে তুলে রাখুন এবং হাত দিয়ে পায়ের আঙ্গুল স্পর্শ করার চেষ্টা করুন।

এক পায়ে দাঁড়ানো: একটি পায়ে দাঁড়িয়ে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং পুনরাবৃত্তি করুন। ফিজিক্যাল থেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে এই ব্যায়ামটি করুন, যাতে ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়ক হয়।

চলাচলের ব্যায়াম

চলাচলের ক্ষমতা উন্নত করার জন্য কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।

হাঁটাহাঁটি: প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করুন। প্রথমে স্বল্প দূরত্বে হাঁটুন এবং ধীরে ধীরে দূরত্ব বৃদ্ধি করুন।

সিঁড়ি ওঠা-নামা: সিঁড়ি ওঠা-নামার ব্যায়াম করতে পারেন, তবে এটি ফিজিক্যাল থেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে করা উচিত।

হাত ও আঙ্গুলের ব্যায়াম

হাত এবং আঙ্গুলের কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।

আঙ্গুলের মুষ্ঠি করা: আঙ্গুলগুলি লম্বা করুন এবং মুষ্ঠিবদ্ধ করুন। এই ব্যায়ামটি আঙ্গুলের পেশী শক্তিশালী করতে সহায়ক।

বল চাপানো: একটি ছোট বল হাতে নিয়ে বারবার চাপুন। এটি হাতের মুষ্ঠির শক্তি বাড়াতে সহায়ক।

উপসংহার

স্ট্রোকের প্রভাব এবং গুরুত্ব পুনর্বিবেচনা করে এটি প্রতিরোধ এবং দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীদের জীবন বাঁচানো এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব। ভবিষ্যতে স্ট্রোক গবেষণার মাধ্যমে আরও উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবন এবং রোগীদের পুনর্বাসনে সহায়ক হতে পারে। সঠিক সময়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ, এবং চিকিৎসার মাধ্যমে স্ট্রোকের প্রভাব কমানো এবং রোগীর জীবন উন্নত করা সম্ভব।

তথ্যসূত্র

  1. Feigin, V.L., Lawes, C.M., Bennett, D.A., Barker-Collo, S.L. and Parag, V., 2009. Worldwide stroke incidence and early case fatality reported in 56 population-based studies: a systematic review. The Lancet Neurology, 8(4), pp.355-369. https://www.thelancet.com/journals/laneur/article/PIIS1474-4422(09)70025-0/abstract
  2. O’donnell, M.J., Xavier, D., Liu, L., Zhang, H., Chin, S.L., Rao-Melacini, P., Rangarajan, S., Islam, S., Pais, P., McQueen, M.J. and Mondo, C., 2010. Risk factors for ischaemic and intracerebral haemorrhagic stroke in 22 countries (the INTERSTROKE study): a case-control study. The Lancet, 376(9735), pp.112-123. https://www.thelancet.com/article/S0140-6736(10)60834-3/abstract
  3. Goldstein, L.B., Adams, R., Becker, K., Furberg, C.D., Gorelick, P.B., Hademenos, G., Hill, M., Howard, G., Howard, V.J., Jacobs, B. and Levine, S.R., 2001. Primary prevention of ischemic stroke: a statement for healthcare professionals from the Stroke Council of the American Heart Association. Stroke, 32(1), pp.280-299. https://www.ahajournals.org/doi/abs/10.1161/01.STR.32.1.280
  4. Wardlaw, J.M., Murray, V., Berge, E. and Del Zoppo, G.J., 2014. Thrombolysis for acute ischaemic stroke. Cochrane database of systematic reviews, (7). https://www.cochranelibrary.com/cdsr/doi/10.1002/14651858.CD000213.pub3/abstract
  5. Pan, A., Sun, Q., Okereke, O.I., Rexrode, K.M. and Hu, F.B., 2011. Depression and risk of stroke morbidity and mortality: a meta-analysis and systematic review. Jama, 306(11), pp.1241-1249. https://jamanetwork.com/journals/jama/article-abstract/1104406
  6. Feigin, V.L., Roth, G.A., Naghavi, M., Parmar, P., Krishnamurthi, R., Chugh, S., Mensah, G.A., Norrving, B., Shiue, I., Ng, M. and Estep, K., 2016. Global burden of stroke and risk factors in 188 countries, during 1990–2013: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2013. The Lancet Neurology, 15(9), pp.913-924. https://www.thelancet.com/journals/laneur/article/PIIS1474-4422(16)30073-4/abstract
  7. Kleindorfer, D.O., Miller, R., Moomaw, C.J., Alwell, K., Broderick, J.P., Khoury, J., Woo, D., Flaherty, M.L., Zakaria, T. and Kissela, B.M., 2007. Designing a message for public education regarding stroke: does FAST capture enough stroke?. Stroke, 38(10), pp.2864-2868. https://www.ahajournals.org/doi/abs/10.1161/STROKEAHA.107.484329
  8. Teasell, R., Foley, N., Salter, K., Bhogal, S., Jutai, J. and Speechley, M., 2009. Evidence-based review of stroke rehabilitation: executive summary. Topics in stroke rehabilitation, 16(6), pp.463-488. https://www.tandfonline.com/doi/pdf/10.1310/tsr1606-463
  9. Sacco, R.L., Diener, H.C., Yusuf, S., Cotton, D., Ôunpuu, S., Lawton, W.A., Palesch, Y., Martin, R.H., Albers, G.W., Bath, P. and Bornstein, N., 2008. Aspirin and extended-release dipyridamole versus clopidogrel for recurrent stroke. New England Journal of Medicine, 359(12), pp.1238-1251. https://www.nejm.org/doi/abs/10.1056/NEJMoa0805002
  10. Billinger, S.A., Arena, R., Bernhardt, J., Eng, J.J., Franklin, B.A., Johnson, C.M., MacKay-Lyons, M., Macko, R.F., Mead, G.E., Roth, E.J. and Shaughnessy, M., 2014. Physical activity and exercise recommendations for stroke survivors: a statement for healthcare professionals from the American Heart Association/American Stroke Association. Stroke, 45(8), pp.2532-2553. https://www.ahajournals.org/doi/abs/10.1161/str.0000000000000022

 

পরামর্শ নিতে 01877733322