
বাত কি?
বাত হচ্ছে একটি সিস্টেমিক ডিজিজ বা শরীরবৃত্তীয় রোগ যা পুরো শরীরে উপসর্গ তৈরি করতে পারে। বিভিন্ন কারনে বাত হয়, এর মধ্যে ডিজেনারেটিভ বা ক্ষয় জনিত কারন ও প্যাথলজিক্যাল কারন অন্যতম। বয়স্ক মানুষ কিংবা অল্প বয়সে আঘাত পাবার পর অস্থিসন্ধি যখন ক্ষয় হয়ে তার স্বাভাবিক কার্যকলাপ করতে পারে না তখন তাকে বাত বলে। মোটকথা, আমাদের শরীরের হাড়, মাংস, অস্থিসন্ধিতে দীর্ঘমেয়াদি যে ব্যথা হয়ে থাকে সেটাকে বাতব্যথা বলে থাকে।
বয়সের সাথে হওয়া বাতকে অস্টিওয়ার্থ্রাইটিস বলে। এছাড়া অন্যান্য বাতের মধ্যে গিটেবাত বা গাউট অন্যতম। জয়েন্টে ইউরিক এসিড জমা হয়ে এ রোগের উৎপত্তি হয়। আমাদের দেশে অনেকের মধ্যেই একটি ভুল ধারনা আছে যে বাতজ্বর ও বাতের ব্যথা একই রকম। বাতজ্বর হলে গিঁটে গিঁটে ব্যথা হয়।
বাতের ব্যথায়ও একই সমস্যা দেখা যায়। কিন্তু দুটোর মধ্যে পার্থক্য হলো বাতজ্বরের ক্ষেত্রে জয়েন্টগুলো ফুলে যায়। শরীরের বড় জয়েন্টগুলো আক্রান্ত হয় এবং এই ব্যথাগুলো নড়াচড়া করতে থাকে। অর্থাৎ একটি জয়েন্টে ব্যথা হলো সঙ্গে সঙ্গে দেখা যাবে যে আরেকটি জয়েন্টেও ব্যথা হচ্ছে একে পলিআরথ্রাইটিস বলা হয়। আর এটি হলো বাতজ্বরের নির্দিষ্ট পয়েন্ট।
এছাড়া বাতজ্বরে হৃদপিন্ড, চোখ, লিভার, এমনকি কিডনীও দীর্ঘমেয়াদে আক্রান্ত হতে পারে। বাতজ্বর সাধারণত ছোটদের, অর্থাৎ পাঁচ থেকে পনেরো বছরের বাচ্চাদের হয়ে থাকে। অন্যদিকে, বাতব্যথা হচ্ছে সাময়িক একটি রোগ। এই রোগে গিরা বা জয়েন্টে ব্যথা হলেও তা চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে বাতব্যথা ভালো হয় বা প্রশমিত হয় এবং আবার ফিরে আসতে পারে।
বাত ব্যথা শরীরের কোথায় কোথায় হয়?

বাতব্যথা শরীরের যেকোন অঙ্গে হতে পারে, তবে হাড়-জোড় ও মাংসপেশিতে বেশি হয়। কিছু কিছু বাতব্যথা অনেক বেশি দেখা যায়, যেমনঃ
- সোল্ডার পেইন বা কাঁধে ব্যথাঃ কাঁধ ব্যাথা বাত ব্যথার একটি সাধারণ উপসর্গ। কাঁধের মাংশপেসির তীব্র ব্যথা অনুভুতি হয় এবং এই ব্যথা আপনার ঘাড় পর্যন্ত প্রসারিত হয়ে কাজে কর্মের পরিসর সীমিত করে দেয়।
- হাঁটুতে ব্যথা বা দুর্বলতাঃ বাত ব্যথা আপনার হাঁটুতে সবচেয়ে বেশি হতে পারে, এছাড়া জয়েন্ট এ নড়াচড়া সমস্যা, হাটুর মাংসপেশি শক্ত এবং ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে। হাঁটু ব্যথা সাধারণত সকালে বা দাঁড়ানোর পরে আরও খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
- রিস্ট নুম্বানেস বা কব্জি অসাড়তাঃ বাত ব্যথার প্রদাহ আপনার কব্জির জয়েন্টে প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে আপনার হাড়ের ব্যথা, অসাড়তা দেখা দেয় এবং আপনার কব্জিগুলিকে নাড়াচাড়া করার সময় কিছুটা যন্ত্রণা অনুভব হয়।
- আঙুলের ব্যথা এবং লালভাবঃ বাতে ব্যথার কারনে আঙ্গুলে লালচে ব্যথা এবং উষ্ণ সংবেদন হতে পারে।
- পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা ও অসম অবস্থানঃ যখন বাতের ব্যথা আপনার গোড়ালিকে প্রভাবিত করে তখন আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন যে সমানভাবে হাঁটা ঠিক করা আরও কঠিন কাজ এবং দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকাও বেদনাদায়ক হয়ে যায়।
- পায়ের আঙ্গুলের সমস্যাঃ বাতের কারনে পায়ের আঙ্গুল এবং পায়ের সামনের অংশে অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে পারে, যেমন পায়ের নখের আঙ্গুল এবং মাথায়। যে জুতা গুলো পা কে বন্ধ অবস্থায় বা আটাআটি অবস্থায় রাখে সেই জুতা পরার কারনে ব্যথা আরও খারাপ হতে পারে।
- চেস্ট পেইন বা বুক ব্যথাঃ দীর্ঘমেয়াদী ব্যথার প্রদাহ থেকে আপনার ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বুকে ব্যথা উৎপন্ন করে।
এছাড়া বাত হলে কিছু অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যেমনঃ
- ড্রাই আই বা শুষ্ক চোখঃ বাত ব্যথার কারনে চোখকে অত্যন্ত শুষ্ক করতে পারে বিশেষ করে আপনার যদি সেকেন্ডারি স্জোগ্রেন সিন্ড্রোম হয়ে থাকে। আপনার চোখ নিয়মিত বালুকাময় এবং তীক্ষ্ণ মনে হতে পারে. তবুও শুষ্কতা চোখ আপনার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- ড্রাই মাউথ বা শুষ্ক মুখঃ দীর্ঘস্থায়ী শুষ্ক মুখ থাকার কারনে এটি মাড়ির রোগ, গহ্বর এবং মুখের সংক্রমণও ঘটাতে পারে।
- শ্বাস নিতে অসুবিধাঃ বাত ব্যথা হয়ে আপনার ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যার ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় যে কারনে আপনি শ্বাসকষ্ট এবং কাঁশি অনুভব করেন।
- বাম্পি স্কিন বা খসখসে ত্বকঃ আপনার বাহুতে বিশেষত কনুইয়ের চারপাশে শক্ত গোটা গোটা চামড়ার নিচে হতে পারে যাকে নডিউলস বলে।
আরও পড়ুনঃ ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
বাতের উপসর্গ কি?

বিভিন্ন ধরনের বাতের বিভিন্ন উপসর্গ থাকে। তবে এগুলি কিছু লোকের মধ্যে হালকা এবং অন্যদের মধ্যে গুরুতরও হতে পারে। জয়েন্টে ব্যথা বা অস্বস্তি আসতে পারে এবংআপনার কাজে কর্মে বা দৈনন্দিন জীবন যাপনে ব্যথা, ফোলা ও চলাফেরাজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনি যে ধরনের উপসর্গগুলি অনুভব করেন তার উপর নির্ভর করে তা পরিবর্তিত হয়।
কিছু সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছেঃ
- ব্যথাঃ বাতের প্রাথমিক লক্ষন হলো ব্যথা।
- লালভাবঃ শরীরের বিভিন্ন জায়গাতে লালচে ভাব দেখা দেওয়া।
- ফোলাঃ শরীরের বিভিন্ন জায়গাতে ফুলে যাওয়া।
- মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়া
- জয়েন্টের চারপাশে অস্বাভাবিক অবস্থা হয়ে যাওয়া
- উষ্ণতাঃ জয়েন্ট উষ্ণ উনুভাব হওয়া।
- গতির পরিসীমা হ্রাস পাওয়াঃ শরীরের চলাফেরায় বা কাজেকর্মে যে নির্দিষ্ট গতি থাকে তা হ্রাস পাওয়া।
বাতের ব্যথা কেন হয়?
কিছু কিছু কারণ যা আপনাকে বাত ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়, যার মধ্যে রয়েছেঃ
ক) পারিবারিক ইতিহাসঃ কিছু ধরণের বাত পারিবারিকভাবে চলে আছে, তাই আপনার বাবা-মা বা ভাইবোনের এ ব্যাধি হয়ে থাকলে আপনার বাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হতে পারে।
খ) বয়সঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে আর্থ্রাইটিসের বা বাতের ঝুঁকি বাড়ে।
গ) লাইফস্টাইলঃ ধূমপান বা ব্যায়ামের অভাবে আপনার বাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ঘ) লিঙ্গঃ বেশিরভাগ আর্থ্রাইটিস মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়।
ঙ) ওজনঃ স্থূলতা আপনার জয়েন্টগুলিতে অতিরিক্ত চাপ দেয়, যা আর্থ্রাইটিস হতে পারে।
কিভাবে আর্থ্রাইটিস বা বাত নির্ণয় করবেন?

আপনার জয়েন্টগুলি ফুলে যাওয়া, লালভাব এবং উষ্ণতার জন্য ডাক্তাররা পরীক্ষা করাবেন এবং দেখবেন আপনি আপনার জয়েন্টগুলি কতটা ভালভাবে সরাতে পারেন। রোগটি নির্ণয় করতে উল্লেখযোগ্য পরীক্ষা নিম্নরুপঃ
- ল্যাবরেটরি পরীক্ষাঃ শরীরের বিভিন্ন ধরনের তরল বিশ্লেষণ আপনার বাতের ধরন চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। সাধারণত বিশ্লেষণ করা তরলগুলির মধ্যে রয়েছে রক্ত, প্রস্রাব এবং জয়েন্টের তরল। জয়েন্ট ফ্লুইডের নমুনা পেতে, চিকিৎসকরা কিছু তরল প্রত্যাহার করার জন্য জয়েন্ট স্পেসে ইনজেকশনের মাধ্যমে সুই ঢোকানোর আগে সেই স্থানটি পরিষ্কার এবং অসাড় করে দেয়।
- এক্স-রেঃ হাড়ে বাতের ব্যথা নির্ণয় করার জন্য নিম্ন স্তরের বিকিরণ ব্যবহার করা হয়, এক্স-রে তরুণাস্থি ক্ষয়, হাড়ের ক্ষতি এবং হাড়ের স্পার দেখাতে পারে।
- কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফি (সিটি)ঃ সিটি স্ক্যানারগুলি বিভিন্ন কোণ থেকে এক্স-রে নেয় এবং অভ্যন্তরীণ কাঠামোর ক্রস-বিভাগীয় দৃশ্যের তথ্য একত্রিত করে। সিটি স্ক্যানার গুলিতে হাড় এবং আশেপাশের নরম টিস্যু উভয়ই ইমাজিং করতে পারে।
- ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিংঃ এটি একটি শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রের সাথে রেডিও তরঙ্গের সংমিশ্রণে এমআরআইগুলি তরুণাস্থি, টেন্ডন এবং লিগামেন্টের মতো নরম টিস্যুগুলির চিত্র তৈরি করতে পারে।
- আল্ট্রাসাউন্ডঃ এই প্রযুক্তি উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে কোমল টিস্যু, তরুণাস্থি এবং জয়েন্টগুলির কাছে তরলযুক্ত কাঠামো চিত্রিত করতে এবং আল্ট্রাসাউন্ড জয়েন্টের তরল অপসারণ করতে বা জয়েন্টে ওষুধ ইনজেকশন দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিতেও ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
বাতের চিকিৎসাঃ
বাত ব্যথার কোনো নিরাময় নেই, তবে এমন চিকিৎসা আছে যা আপনাকে কঠিন অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে। বাতের তীব্রতা, এর লক্ষণ এবং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর এর চিকিৎসা নির্ভর করে।
রক্ষণশীল (ননসার্জিক্যাল) চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে:
ওষুধ
বাতের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধগুলির উপর নির্ভর করে তা পরিবর্তিত হয়। সাধারণত বাতে ব্যবহৃত ওষুধের মধ্যে রয়েছে:
- ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (নসাইডস) ব্যথা উপশম করতে পারে এবং প্রদাহ কমাতে পারে। উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে ইবুপ্রোফেন এবং নাপ্রক্সেন সোডিয়াম। শক্তিশালী নসাইডস পেটে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে এবং আপনার হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস ক্রিম বা জেল হিসাবেও পাওয়া যায়, যা জয়েন্টগুলিতে ঘষে দেওয়া যেতে পারে।
- প্রতিরোধক হিসেবে কিছু ধরণের ক্রিম এবং মলম মেন্থল বা ক্যাপসাইসিন একত্রিত করে উপাদানটি গরম করে তোলে। আপনার ব্যথাযুক্ত জয়েন্টের উপর ত্বকে এই প্রস্তুতিগুলি ঘষলে জয়েন্ট থেকে ব্যথার সংকেত প্রেরণে হস্তক্ষেপ করে।
- স্টেরয়েড যা কর্টিকোস্টেরয়েড ওষুধ, যেমন প্রিডনিসোন প্রদাহ এবং ব্যথা কমায় এবং জয়েন্টের ধীরগতির চলাচলকে রক্ষা করে। কর্টিকোস্টেরয়েডগুলি একটি বড়ি হিসাবে বা বেদনাদায়ক জয়েন্টে ইনজেকশন হিসাবে ব্যবহৃত করা যেতে পারে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে হাড় পাতলা হওয়া, ওজন বৃদ্ধি এবং ডায়াবেটিস অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
- রোগ-সংশোধনকারী অ্যান্টি-রিউমেটিক(ডিএমএআরডিএস) এই ওষুধগুলি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের অগ্রগতি মন্থর করতে পারে এবং জয়েন্টগুলি অন্যান্য টিস্যুগুলিকে স্থায়ী ক্ষতি থেকে বাঁচাতে পারে। প্রচলিত ডিএমএআরডি ছাড়াও জৈবিক এজেন্ট এবং লক্ষ্যযুক্ত সিন্থেটিক ডিএমএআরডি আছে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরিবর্তিত হয় তবে বেশিরভাগ ডিএমএআরডি আপনার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
আরও পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
ফিজিওথেরাপি
ফিজিওথেরাপি বাতের ব্যথার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী পাশ্বপ্রতিক্রিয়া বিহীন চিকিৎসা। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক গণ বিভিন্ন এক্সারসাইজ, মডালিটিজ, ম্যানুয়াল থেরাপি, টেপিং, ইনিজেকশন বা ইনফিল্ট্রেশনের মাধ্যমে আপনার ব্যথা কমান, জয়েন্টে ক্ষয় প্রতিহত করেন, প্রদাহের উপসর্গ কমান, গতির পরিসর উন্নত করেন এবং জয়েন্টগুলির পার্শ্ববর্তী পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে তুলে। এক্ষেত্রে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রীধারী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সার্জারি বা অস্ত্রোপচার
যদি ননসার্জিক্যাল ব্যবস্থাগুলি সাহায্য না করে তখন ডাক্তাররা আপনাকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন যেমন:
- জয়েন্টের দুইপাশের হাড়ের যৌথ মেরামতঃ কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা কমাতে এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে জয়েন্টের পৃষ্ঠগুলিকে মসৃণ বা পুনরায় সাজানো যেতে পারে। এই ধরনের পদ্ধতিগুলি প্রায়শই জয়েন্টের উপর ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে আর্থ্রোস্কোপিকভাবে সঞ্চালিত করা যেতে পারে।
- জয়েন্টের দুইপাশের হাড়ের যৌথ প্রতিস্থাপনঃ এই পদ্ধতি ক্ষতিগ্রস্ত জয়েন্ট অপসারণ এবং কৃত্রিম প্রতিস্থাপন একত্রিত করে করা হয়। জয়েন্টগুলি সাধারণত প্রতিস্থাপিত হয় নিতম্ব এবং হাঁটু বরাবর।
- জয়েন্টের দুইপাশের হাড়ের ফিউশনঃ এই পদ্ধতিটি প্রায়শই ছোট জয়েন্টগুলির জন্য ব্যবহৃত হয় যেমন কব্জি, গোড়ালি এবং আঙ্গুলের মধ্যে। এটি জয়েন্টের দুটি হাড়ের প্রান্তগুলি সরিয়ে দেয় এবং তারপরে সেই প্রান্তগুলিকে একত্রে লক বা বন্ধ করে যতক্ষণ না তারা একটি শক্ত ইউনিটে পরিণত হয় ততক্ষণ পর্যন্ত ধরে রাখা হয়।
বাত ব্যথা নিরাময়ে কি খাবার খাবেন?

বাত ব্যথা নিরাময়ে নিয়মিত ব্যায়াম ও ওষুধের পাশাপাশি সুষম খাবার গ্রহণ করাও জরুরি। কিছু সুষম খাবার নিম্নরুপঃ
- ব্রকলি ও বাঁধাকপিঃ ব্রোকলি এবং বাঁধাকপি ক্রুসিফেরাস পরিবারের সদস্য। এগুলিতে সালফোরাফেন রয়েছে, এমন একটি যৌগ যা কারটিলেজের ক্ষতি ধীর করতে সহায়তা করে।
- ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমনঃ সামুদ্রিক মাছ, মিঠা পানির মাছ, বাদাম, তিল, সবুজ শাক, টমেটো ইত্যাদি।
- রসুনঃ ব্যথা কমাতে রসুনের ব্যবহার সেই প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। গাঁটের ব্যথা কমাতে এটি ভীষণ কাজ দেয়। এক কোয়া রসুন কুচিয়ে অল্প গরম তেলে মিশিয়ে নিন এবং এই মিশ্রণ জয়েন্টে ম্যাসেজ করুন আরাম লাগবে।
- বেরিঃ সব রকমের বেরি খেলে আপনার ইউরিক অ্যাসিড কমে যায় অনেকটাই এবং জয়েন্টে ব্যথাও কমে যায়।
- হলুদঃ অনেক দিন ধরেই হলুদ প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে আছে কুরকুমিন নামক উপাদান। এই উপাদানটি অস্থিসন্ধির ব্যথা বা পেশির ব্যথা উপশম করতে সহযোগিতা করে।
- ভিটামিন সি যুক্ত খাবারঃ যে সব্জি বা ফল গুলিতে ভিটামিন সি রয়েছে সেগুলো আপনার ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সহযোগিতা করে।
- দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারঃ এই খাবার গুলোতে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি থাকে যা হাড়কে শক্তিশালী করে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়।
- আস্ত শস্যদানাঃ ফাইবার জাতীয় খাবার যত পারবেন বেশি খাবেন। আপনি ওটস খান বা হোল গ্রেন ফুড খান।
- মটরশুটিঃ মটরশুটি এমন একটি খাবার যা তাদের উচ্চ ফাইবার সামগ্রীর কারণে সিআরপি কম করে থাকে।তবে ইউরিক এসিড বেশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খেতে পারবেন না।
- ব্রোকলি এবং বাঁধাকপিঃ এগুলিতে সালফোরাফেন রয়েছে, এমন একটি যৌগ যা কারটিলেজের ক্ষতি ধীর করতে সহায়তা করে।
তথ্যসূত্রঃ
- https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/arthritis/diagnosis-treatment/drc-20350777
- https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/arthritis/in-depth/arthritis/art-20046440
- https://www.webmd.com/arthritis/understanding-arthritis-treatment
- https://www.healthline.com/health/osteoarthritis/arthritis-natural-relief
- https://www.versusarthritis.org/about-arthritis/conditions/arthritis/
- https://www.nhs.uk/conditions/arthritis/
- https://my.clevelandclinic.org/health/diseases/12061-arthritis
- https://www.cdc.gov/arthritis/basics/management.htm
- https://www.arthritis-health.com/blog/proven-strategies-relieving-arthritis-pain
- পিঠে জ্বালাপোড়া করার কারণ - November 25, 2023
- পিঠে ব্যথা হওয়ার কারণ - November 23, 2023
- পিঠে ব্যথার অন্যতম কারণ অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসঃ রোগের ধরণ এবং প্রতিকার - November 18, 2023