পিঠের বাম পাশে ব্যথা কেন হয়? শরীরের যে কোন ধরনের ব্যথা বেশ যন্ত্রণাদায়ক। সেটা যদি পিঠের বাম পাশে হয় তাহলে কষ্টের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। কেননা পিঠের উপরে দুইপাশ থেকে আমাদের দুই বাহু শুরু হয়েছে। পিঠের উপরের দিকে যে ব্যথা হয় সেটি পিঠ থেকে দুই হাতের দিকে আসতে পারে কিংবা হাতের দিকে না আসলেও হাত দিয়ে যেকোন কাজ করতে গেলে ব্যথাটি বেড়ে যেতে পারে।
পিঠের বাম পাশে ব্যথা কেন হয়?
অর্থাৎ পিঠে ব্যথা থাকলে ভাড়ী কাজ তো দূরের কথা সামাণ্য নড়াচড়া করাই কষ্ট হয়ে যায়। মেরুদন্ড, কাধ, পাজড়ের হাড় কিংবা হৃৎপিন্ডের সমস্যার কারণেও পিঠের বাম পাশে ব্যথা হতে পারে।
বাম পাশে যদি অল্প ব্যথা হয় তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই সেটি বিশ্রাম নিলে ভালো হয়ে যায়। তবে অনেক দিনের জমে থাকা ব্যথা, অন্য কোন রোগের কারণে ব্যথা, দুর্ঘটনাজনিত ব্যথা, আঘাত জনিত ব্যথা ইথ্যাদি সহজে সেরে যায় না এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন হয়। চলুন জেনে নেয়া যাক কি কি কারণে পিঠের বাম পাশে ব্যথা হয় এবং পিঠে ব্যথা হলে করণীয় কি। পিঠের ডান পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ
পিঠের গঠন
গঠনগত দিক থেকে আমাদের পিঠ একটু জটিল প্রকৃতির। এর মানে শরীরের অন্যান্য অংশের সমস্যার কারণেও পিঠে ব্যথা হতে পারে।
আমাদের মেরুদন্ডটি তিনটি অংশে বিভক্ত যেটি মাথার খুলি থেকে শুরু হয়ে একদম নিচে লেজ পর্যন্ত বিস্তৃত। মেরুদন্ডের উপরের অংশটিকে সার্ভাইক্যাল স্পাইন বলা হয় ও নিচের ভাগটিকে লাম্বার স্পাইন বলা হয়। মাঝখানের অংশটি নিয়ে পিঠ গঠিত যেটি ১২ টি কশেরুকা দ্বারা গঠিত। কশেরুকাসজ্জিত পিঠের মেরুদন্ডের এ অংশটিকে থোরাসিক স্পাইন বলা হয়। পিঠের বাম দিকে ব্যথা হবার পিছনে সার্ভাইক্যাল ও থোরাসিক স্পাইন উভয়ই অংশই জড়িত থাকতে পারে। পিঠের কশেরুকা গুলোর মাঝখানে নরম জেলির মত একটি অংশ থাকে যেটিকে ইন্টার ভার্টিব্রাল ডিস্ক বলা হয়। এটি আমাদের মেরুদন্ডের স্প্রিং হিসেবে কাজ করে। কশেরুকা ও ডিস্কগুলো স্পাইনাল কর্ডকে আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা করে। অ্যাকিউট লামবাগো
পিঠের বাম দিকে ব্যথা হবার কারণসমূহ
মাসেল স্ট্রেইন
মাংসপেশীতে টান লাগার কারণে যদি মাংসপেশী ছিড়ে যায় তাহলে সেটিকে স্ট্রেইন বলে। যদি পিঠের বাম দিকের পেশীতে টান লাগে তাহলে পিঠের বাম পাশে কিংবা উভয় পাশেও ব্যথা হতে পারে। পিঠের পেশীতে টান লাগার কারণঃ
- প্রতিনিয়ত ভাড়ী বস্তু ঊঠানোর কাজ করলে
- আপনি যেই কাজটি করেন সেটিতে যদি হাতের ব্যবহার বেশি থাকে
- আঘাত লাগলে
পিঠের মাসেল স্ট্রেইন হলে ব্যথা হওয়ার পাশাপাশিঃ
- পেশী টাইট হয়ে যেতে পারে
- পেশীতে খিল ধরতে পারে
- টান লাগার জায়গাটি ফুলে যেতে পারে
- হাত ও পিঠ নড়াচড়া করাতে কষ্ট হয়
- শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় পিঠে ব্যথা হতে পারে
হার্নিয়েটেড ডিস্ক
অতিরিক্ত চাপ পড়লে কিংবা আঘাত লাগলে পিঠের মেরুদন্ডের যে স্প্রিং থাকে অর্থাৎ ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক থেতলে যায়, ডিস্কে ক্ষত হতে পারে এবং ডিস্কের ভিতরের জেলী জাতীয় পদার্থটি বের হয়ে আসে। এর ফলেও পিঠের বাম দিকে ব্যথা হতে পারে। ডিস্ক হার্নিয়েশন হলে ব্যথার সাথে সাথে অন্যান্য লক্ষণ ও দেখা দেয়ঃ
- বুকে ব্যথা
- পেটের উপরের দিকে ব্যথা
- হাতের দিকে ঝিন-ঝিন, ভাড়-ভাড় ও অবশ-অবশ ভাব
- ডিস্ক প্রোল্যাপ্স এর পরিমাণ বেশি হয় এবং স্পাইনাল কর্ডে চাপ লাগে তাহলে প্রশ্রাব কিংবা পায়খানা ধরে রাখতে সমস্যা হয়।
স্কোলিওসিস
পিঠের বাম পাশে ব্যথা কেন হয়? পিঠের মেরুদন্ড যদি যেকোন একপাশে বেঁকে যায় তাহলে এটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় স্কোলিওসিস বলা হয়। এটি সাধারণত বয়সন্ধিকালে বেশি হয়। স্কোলিওসিস এর কারণে যদি পিঠ কেবলমাত্র বামদিকে বেঁকে যায় তাহলে এটিকে লিভোস্কোলিওসিস বলা হয় এবং ডানদিকে বেঁকে গেলে সেটিকে ডেক্সট্রোস্কোলিওসিস বলা হয়। পিঠের রগে টান লাগলে করণীয়| বাকার পরিমাণ যদি অল্প হয় তাহলে অনেক সময় ব্যথা নাও হতে পারে। স্কোলিওসিসজনিত পিঠ ব্যথাগুলো সচরাচর মধ্য বয়সীদের বেশি হয়ে থাকে। যে লক্ষণগুলো দ্বারা বুঝব যে স্কোলিওসিস হয়েছেঃ
- দুই কাধ সমান থাকেনা
- কোমরের দুই পাশ উচু-নিচু থাকে
- যেকোন এক পাশের পাখনা বা স্ক্যাপুলা ঝুলে যায়
- মাথাটি নিউট্রাল পজিশনে থাকে না
- গুরুতর ক্ষেত্রে মেরুদন্ড ঘুড়ে থাকে
- ফুসফুস ও হৃৎপিন্ডে সমস্যা হতে পারে
স্পাইনাল স্টেনোসিস
পিঠের বাম পাশে ব্যথা কেন হয়? যাদের বয়স ৪০ পার হয়েছে তাদের অনেকেরই দেখা যায় মেরুদন্ডের ক্যানেলে ক্যালসিয়াম জমে বা বোন স্পার হয় ফলে স্পাইনাল ক্যানেল সরু হয়ে যায়। স্পাইনাল ক্যানেলের মধ্যে যে স্পাইনাল কর্ড বা মেরু রজ্জু এবং নার্ভে চাপ পড়ে। এখন এই ক্যানেল স্টেনোসিস এর ফলে যদি পিঠের মেরুদন্ডের বাম দিকে নার্ভে চাপ পরে তাহলে পিঠের বাম দিকে ব্যথা হয়। নার্ভে চাপ লাগলে নিম্নোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দেয়ঃ
- ঘাড়ে ব্যথা হওয়া
- পিঠ বা ঘাড় থেকে ব্যথাটি হাতের দিকে নেমে যায়
- হাতে ও পিঠের দিকে ঝিন-ঝিন, ভাড়-ভাড়, অবশ-অবশ লাগে
কাইফোসিস
মেরুদন্ড সামনের দিকে বাঁকা হয়ে কুজো হয়ে যাওয়ার প্রবণতাকে কাইফোসিস বলা হয়। মেরুদন্ড যদি অতিরিক্ত বাঁকা হয় তাহলে পিঠে এবং কোমরে ব্যথা হতে পারে। কাইফোসিস রোগের লক্ষণগুলো হচ্ছেঃ
- দুই কাধের পাখনা বা স্ক্যাপুলার দিকে ব্যথা হয়
- হাতে বা পায়ের ঝিন-ঝিন, ভাড়-ভাড়, অবশ-অবশ লাগা
- শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হওয়া
- অতিরিক্ত দুর্বল লাগা
ভার্টিব্রাল ফ্র্যাকচার
পিঠের বাম পাশে ব্যথা কেন হয়? মেরুদন্ডের কশেরুকায় যদি ফ্র্যাকচার হয় তাহলে পিঠের ডান পাশে ব্যথা হতে পারে। অস্টিওপোরোসিস এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের কশেরুকা ফ্র্যাকচার বেশি হয়ে থাকে। অস্টিওপোরোসিস হলে হাড়গুলো দুর্বল ও ফোসা হয়ে যায়। যার ফলে খুবই সামাণ্য চাপেই ফ্র্যাকচার হয়ে যায়। অস্টিওপোরোসিস ছাড়াও অন্যান্য কারণে কশেরুকা ফ্র্যাকচার হতে পারে যেমনঃ
- গাড়ি দুর্ঘটনা হলে
- খেলতে গিয়ে পিঠের মেরুদন্ডে আঘাত লাগলে
- অধিক উচ্চতা থেকে পড়ে গেলে
ভার্টিব্রাল ফ্র্যাকচার হলেঃ
- নড়াচড়ায় ব্যথা বাড়ে
- শরীর দুর্বল হয়ে যায়
- হাতে বা পায়ে ঝিন-ঝিন, ভাড়-ভাড়, অবশ-অবশ লাগে
পোশ্চারগত কারণ
আপনি যদি এলোমেলো ভাবে বসে থাকেন বা দাঁড়িয়ে থাকেন অর্থাৎ সঠিক ভঙ্গিতে না বসে পেট ভাঁজ করে কুজো হয়ে বসেন তাহলে পীঠের মেরুদন্ড এবং মাংসপেশীতে চাপ পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চলাফেরা করলে একসময় দেখা যায় যে ঘাড়ে ব্যথা, কাঁধে ব্যথা, কোমড় ব্যথা এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও সমস্যা হতে পারে।
অস্টিওআথ্রাইটিস
হাড়ের প্রান্ত দেশে যে কার্টিলেজ থাকে সেটা যদি ভেঙে চৌচির হয়ে যায় তাহলে এটিকে অস্টিওআর্থ্রাইটিস বলা হয়। শরীরের যে কোন জয়েন্টেই অস্টিওআর্থ্রাইটিস হতে পারে তবে তুলনামূলকভাবে মেরুদন্ডে এটি বেশি হয়। পিঠে যদি অস্টিওআর্থারাইটিস হয় তাহলেঃ
- পিঠে ব্যথা হয়
- যতদিন যায় পিঠ জমে যাওয়া ভাব হয়
- জয়েন্ট এর মধ্যে শব্দ হয়
- বিভিন্ন অংশে হাড় বেড়ে যায়
মায়োফেসিয়াল পেইন
মায়ো ফেসিয়াল পেইন সিনড্রোম হচ্ছে এমন একটি রোগ যেক্ষেত্রে পেশীর বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট ট্রিগার পয়েন্ট তৈরি হয়। এই সকল ট্রিগার পয়েন্টগুলিতে চাপ পড়লে ব্যথা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ট্রাপিজিয়াস মাসেলে ট্রিগার পয়েন্ট বেশি থাকে। যেহেতু ট্রাপিজিয়াস মাসেল পিঠে অবস্থিত সেহেতু ট্রিগার পয়েন্টের ফলে পিঠে ব্যথা হয় এবং স্বাভাবিক নড়াচড়া বাধাগ্রস্ত হয়।
প্যানক্রিয়াটাইটিস
প্যানক্রিয়াটাইটিস হলে পেটের উপরের দিকে ব্যথা হয়, এ ব্যথা পিঠের দিকে যেতে পারে এবং খাওয়া-দাওয়া করলে ব্যথা বেড়ে যায়। প্যানক্রিয়াটাইটিস হলে ব্যথার পাশাপাশি জ্বর, মাথা ঘুড়ানো, বমি হওয়া, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, পেট ফুলে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। এ রোগ যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে তাহলে পাতলা পায়খানা, ডায়রিয়া ও ওজন কমে যেতে পারে।
কিডনীতে পাথর
কিডনীতে যদি পাথর হয় তাহলে পেটের উপর দিকে ব্যথা হয় এবং এ ব্যথা তলপেট, কুচকি এবং পিঠের দিকেও ছড়িয়ে যেতে পারে। এছাড়াও
- সার্বক্ষণিক ব্যথা থাকে না, কখনো বাড়ে আবার কমে যায়
- প্রস্রাব করতে গেলে ব্যথা হয়
- প্রস্রাব এ দুর্গন্ধ হয় ও ঘোলা হয়
- বাদামী, গোলাপী কিংবা লাল রঙের প্রস্রাব হতে পারে
- ঘন ঘন প্রস্রাব হয়
- অল্প অল্প প্রস্রাব হয়
- মাথা ঘুড়ায়
- বমিও হতে পারে
হার্ট এটাক
হার্ট এটাক হলে হৃৎপিন্ডে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। একেক জনের ক্ষেত্রে এ রোগের লক্ষণ একেক রকম হলেও কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো সবার ক্ষত্রেই পরিলক্ষিত হয়
- বুকে ব্যথা হয় এবং ব্যথাটি ঘাড়, চোয়াল ও পিঠের দিকে ছড়িয়ে যেতে পারে
- বুক শক্ত হয়ে যায়
- শরীর দুর্বল হয়ে যায়
- চোখে ঝাপসা দেখে
- মাথা ঘুরায়
- শরীর ঠান্ডা ঘাম দেয়
- বুকে জ্বালাপোড়া হয়
- পেটে ব্যথা হয়
কারণ সনাক্তকরণ
পিঠের বাম পাশে ব্যথা হবার কারণে নির্ণয় করার জন্য চিকিৎসক আপনাকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা নীরিক্ষা করে দেখবেন। প্রথমত উনি আপনার রোগের ইতিহাস শোনার পর আক্রান্ত স্থানটি চেক করবেন যে সেখানে প্রদাহের কোন চিহ্ন আছে কিনা অর্থাৎ জায়গাটি লাল হয়ে আছে কিনা, ফুলে আছে কিনা কিংবা অল্প চাপেই ব্যথা হয় কিনা। পিঠ এবং ঘাড় থেকে যদি ব্যথাটি হাতে আসে তাহলে চিকিৎসক হাতের নড়াচড়ার ধরণ, গতি ও শক্তি পরীক্ষা করবেন। এসব ছাড়াও চিকিৎসক আরো বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করতে পারেন যেমনঃ
- আপনার ব্যথাটি কখন শুরু হয় এবং কতক্ষণ স্থায়ী হয়
- ব্যথাটি কি ধরনের সে সম্পর্কে জানতে চাইবেন যেমন তীব্র ব্যথা, মৃদু ব্যথা, ঝিম ধরা ব্যথা ইত্যাদি
- আক্রান্ত স্থানে দুর্বল লাগে কিনা
- ব্যথার জন্য দৈনন্দিন কাজে অসুবিধা হয় কিনা
এগুলো ছাড়াও চিকিৎসক আপনাকে আরো অন্যান্য পরীক্ষা নীরিক্ষা করার পরামর্শ দিতে পারেন যেমনঃ
- ইলেক্ট্রোলাইট ও রক্ত কোষের মাত্রা নির্ণয় করার জন্য রক্ত পরীক্ষা
- এক্স-রে
- সিটি স্ক্যান
- এম আর আই
- অস্টিওপোরোসিস অথবা বোন টিউমার থাকলে বোন স্ক্যান করা
পিঠের বাম পাশে ব্যথা হলে করণীয়
ব্যথার চিকিৎসায় পৃথিবী এখন বেশ এগিয়ে গিয়েছে। যেকোন ব্যথায় বেশ কয়েক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি বিদ্যমান। ঘরোয়া পদ্ধতি, ওষুধের দ্বারা চিকিৎসা, অপারেশন, কারেকশন থেরপী ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে ব্যথা কমানো যায়। আপনার রোগের ধরণ ও মাত্রা অনুযায়ী চিকিৎসার ধরণ পরিবর্তনশীল।
ঘরোয়া পদ্ধতি
- ন্যাপ্রোক্সেন, আইবুপ্রোফেন ইত্যাদি ব্যথানাষক ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। এসকল ওষুধ সেবনে ডাক্তারের প্রেস্ক্রিপশন জরুরী নয়
- আক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা বা গরম সেক দিলে মাংসপেশীগুলো শিথিল হয় ও ব্যথা কমে যায়।
- পিঠ ব্যথার মাত্রা যদি কম হয় তাহলে অনেক ক্ষেত্রে স্বাভবিক হাটাচলা ও স্ট্রেচিং করলে ব্যথা কমে যায়
মেডিকেল চিকিৎসা
আপনার ব্যথা যদি বেশি মাত্রায় হয় এবং অল্পতেই না কমে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিৎ। যদি ওটিসি ওষুধে ব্যথা না কমে তাহলে চিকিৎসক আপনাকে পেশী শিথিলকারী ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন। এছাড়াও অন্যান্য ব্যথার ওষুধ, ঈঞ্জেকশন ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যথা কমিয়ে থাকেন।
অপারেশনঃ গুরুতর ক্ষেত্রে অপারেশন করা লাগতে পারে।
বিশেষ চিকিৎসাঃ কিডনীতে পাথর, প্যানক্রিয়াটাইটিস, হার্ট এটাক ইত্যাদি রোগের জন্য যদি পিঠের বাম পাশে ব্যথা হয় তাহলে তাহলে রোগীকে জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে নিতে হবে।
ফিজিওথেরাপী চিকিৎসা
আপনি যদি অনেকদিন ধরে পিঠে ব্যথায় ভুগেন বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা ও ওষুধ খাওয়ার পরেও ব্যথা না কমে তাহলে আপনি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। ফিজিওথেরাপী চিকিৎসক আপনাকে কোন প্রকার ওষুধবিহীন এক্সারসাইজ ও বিভিন্ন থেরাপিউটিক টেকনিক এর মাধ্যমে আপনার ব্যথা কমিয়ে থাকেন। ফিজিওথেরাপী চিকিৎসক আপনার রোগের বর্নণা অনুযায়ী আপনাকে এসেসমেন্ট এর মাধ্যমে রোগের কারণ খুজে বের করবেন এবং সেই অনুযায়ী একটি চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরী করেন। কয়েকদিন চিকিৎসা নেয়ার পর ব্যথা কমে গেলে রোগীকে বাসার জন্য কিছু এক্সারসাইজ শিখিয়ে দেয়া হয় যেগুলো নিয়মিত করলে পুনরায় ব্যথা হবার ঝুকি অনেকাংশেই কমে যায়।
প্রতিরোধের উপায়
সঠিক ভংগিতে বসার অভ্যাস করা উচিৎ। কুজো হয়ে পেট ভাঁজ করে বসার মত বদঅভ্যাস বাদ দিতে হবে। কারণ এতে করে মেরুদন্ডের উপর চাপ পড়ে। ভাড়ী বস্তু তোলার সময় সামনের দিকে না ঝুকে মেরুদন্ড সোজা রেখে তুলতে হবে।
নিয়মিত এক্সারসাইজ করতে হবে। কারণ এক্সারসাইজ করলে আপনার পিঠের মাংসপেশী শক্তিশালী হবে। এতে করে পুনরায় ইঞ্জরি হবার ঝুকি কমে যায়। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখুন। কারণ অতিরিক্ত ওজন শরীরের মেরুদন্ডের উপর চাপ প্রয়োগ করে। ফলে ইঞ্জরি হওয়া ছাড়াও মেরুদন্ড ও পিঠের বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা হতে পারে। ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ ধূমপান শরীরের হিলিং প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে দেয়। যার দরুণ ইঞ্জরি হলে সেটা ভাল হতে বেশ সময় নেয়।
তথ্যসূত্র
1. Konieczny, M.R., Senyurt, H. and Krauspe, R., 2013. Epidemiology of adolescent idiopathic scoliosis. Journal of children’s orthopaedics, 7(1), pp.3-9. https://journals.sagepub.com/doi/abs/10.1007/s11832-012-0457-4
2. Kado, D.M., Huang, M.H., Karlamangla, A.S., Barrett‐Connor, E. and Greendale, G.A., 2004. Hyperkyphotic posture predicts mortality in older community‐dwelling men and women: a prospective study. Journal of the American Geriatrics Society, 52(10), pp.1662-1667. https://agsjournals.onlinelibrary.wiley.com/doi/abs/10.1111/j.1532-5415.2004.52458.x
3. MELTON III, L.J., Kan, S.H., Frye, M.A., Wahner, H.W., O’fallon, W.M. and Riggs, B.L., 1989. Epidemiology of vertebral fractures in women. American journal of epidemiology, 129(5), pp.1000-1011. https://academic.oup.com/aje/article-abstract/129/5/1000/119035
4. Gerwin, R., 2010. Myofascial pain syndrome: here we are, where must we go?. Journal of Musculoskeletal Pain, 18(4), pp.329-347. https://www.tandfonline.com/doi/abs/10.3109/10582452.2010.502636
5. Pearle, M.S., Goldfarb, D.S., Assimos, D.G., Curhan, G., Denu-Ciocca, C.J., Matlaga, B.R., Monga, M., Penniston, K.L., Preminger, G.M., Turk, T.M. and White, J.R., 2014. Medical management of kidney stones: AUA guideline. The Journal of urology, 192(2), pp.316-324. https://www.auajournals.org/doi/abs/10.1016/j.juro.2014.05.006
6. Thygesen, K., Alpert, J.S., Jaffe, A.S., Chaitman, B.R., Bax, J.J., Morrow, D.A., White, H.D. and Executive Group on behalf of the Joint European Society of Cardiology (ESC)/American College of Cardiology (ACC)/American Heart Association (AHA)/World Heart Federation (WHF) Task Force for the Universal Definition of Myocardial Infarction, 2018. Fourth universal definition of myocardial infarction (2018). Circulation, 138(20), pp.e618-e651. https://www.ahajournals.org/doi/abs/10.1161/CIR.0000000000000617
7. Chou, R., Fu, R., Carrino, J.A. and Deyo, R.A., 2009. Imaging strategies for low-back pain: systematic review and meta-analysis. The Lancet, 373(9662), pp.463-472. https://www.thelancet.com/journals/lancet/article/PIIS0140-6736(09)60172-0/fulltext?rf=32471
8. French, S.D., Cameron, M., Walker, B.F., Reggars, J.W. and Esterman, A.J., 2006. Superficial heat or cold for low back pain. Cochrane Database of Systematic Reviews, (1). https://www.cochranelibrary.com/cdsr/doi/10.1002/14651858.CD004750.pub2/abstract
9. Fritz, J.M., Cleland, J.A. and Childs, J.D., 2007. Subgrouping patients with low back pain: evolution of a classification approach to physical therapy. journal of orthopaedic & sports physical therapy, 37(6), pp.290-302. https://www.jospt.org/doi/abs/10.2519/jospt.2007.2498
10. Shiri, R., Karppinen, J., Leino-Arjas, P., Solovieva, S. and Viikari-Juntura, E., 2010. The association between smoking and low back pain: a meta-analysis. The American journal of medicine, 123(1), pp.87-e7. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S000293430900713X
- হাঁটু ব্যথার চিকিৎসা | হাঁটুর ব্যথায় ঔষধবিহীন চিকিৎসা সবচেয়ে নিরাপদ - April 15, 2024
- মিনিস্কাস ইনজুরি - April 6, 2024
- গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা - April 2, 2024