কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায়. কোমর ব্যথা সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে পোশ্চারাল স্ট্রেস বা কোমরে অবস্থানগত চাপ। এই সমস্ত চাপ সাধারণত হয়ে থাকে-অস্বাভাবিক ভাবে বসা, সামনে ঝুঁকে অনেকক্ষণ কোনো কাজ করা, ভাবি জিনিস উত্তোলন করা এবং ভুল  অবস্থায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ও শুয়ে থাকা। এতে করে কোমরের মাঝখানে যে শূণ্য জায়গা থাকে তা কমে যায়।

এ সমস্ত কাজকর্ম যদি মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কেউ করতে থাকে তাহলে কোমরের মাঝখানে যে স্বাভাবিক বাঁকা থাকে সেটা আস্তে আস্তে পুরোপুরি সোজা হয়ে যায়। এতে কোমরের পিছনে অতিরিক্ত চাপ পড়ে  এবং রোগী কোমর ব্যথা অনুভব করেন। এই ধরনের কোমর ব্যথায় রোগী বছরের  পর বছর ভুগতে থাকেন। সিজারের পর কোমর ব্যথার কারণ ও করণীয়

কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায়

কোমর ব্যথার চিকিৎসার পূর্বে  চিন্তা করতে হবে যাতে ঐ  সমস্ত অবস্থানগত ভুল না হয়। কাজতো অবশ্যই করতে হবে, কারণ জীবন অতিবাহিত করতে হলে প্রায় প্রতিটি মানুষেরই নিজ নিজ কাজ বা নিত্যদিনের কাজ নিজেরই করতে হবে। তবে আমরা যদি খেয়াল রাখি উক্ত কাজগুলো যাতে দীর্ঘ সময় একই ভাবে করতে না হয় এবং কাজের পাশাপাশি যাতে একটু বিশ্রাম বা ব্যায়াম করা হয়। যা কোমরের অতিরিক্ত চাপকে কমাবে। তাহলে কোমর ব্যথা কম হবে বা অনেক দিন ধরে কাউকে কোমর ব্যথায় ভুগতে হবে না

কোমরের ব্যথা কমানোর উপায়

বেশির ভাগ লোকই বসে কোমরটাকে পিছনে চেপে কাজ করে একে পোর পোসচার বা অস্বাভাবিক অবস্থান বলি। এতে কোমরের পেছনে মাংসপেশী দুর্বল ও ঢিলা হয় এবং কোমড় সামনের দিকে বাঁকা অবস্থানে যেতে থাকে, একে আমরা স্লউসড বা পোর পোশ্চার বলি।

আমরা যদি এ ধরনের বসার অবস্থান দীর্ঘদিন করতে থাকি তাহলে পেছনের লিগামেন্ট (রশির মত অংশ) ওভার স্ট্রেস বা অতিরিক্ত চাপা পড়ে। এ অবস্থায় আমরা যদি অনেকক্ষণ বসে কাজ করি তাহলে ব্যথা অনুভব করব। এই প্রক্রিয়া যদি একটা অভ্যাসে পরিণত হয় তাহলে এক সময় কোমরের ডিক্স ও জয়েন্টকে আক্রমণ করে এবং ব্যথার পরিমাণ বেড়ে যায়। যারা ডেক্সে বসে কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে হয়ত দুই ঘন্টা বসে থাকলে যখন সে চেয়ার থেকে ‍উঠতে যায় ব্যথা করে এবং ব্যাথাটা অনুভব হয়। হঠাৎ কোমর ব্যথা শুরু হলে কি করবেন?

তবে কিছুক্ষণ হাঁটার পর সে ব্যথা বা রোগমুক্ত হয়ে যায়। এ অবস্থায় তাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় আপনার কোমর ব্যথা কখন বেড়ে যায়, তখন সে উত্তর দেবে বিকেল বেলায়। কারণ সকাল থেকে সে দীর্ঘ সময় বসে কাজ করছে। অবস্থা খারাপ হলে হয়ত আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা বসে কাজ করতে পারবে না। হয়ত একদিন সে তার পায়ে ব্যথা অনুভব করবে। তার মানে তার কোমরের পেছনে এতই চাপ বেড়ে গেছে যে ডিক্স বা জয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছে এবং নার্ভ বা স্নায়ুতে চাপ খেয়েছে। 

কোমরের ডান পাশে ব্যথা হলে করণীয়

অনেক হয়ত অবাক হবেন যে পরিবেশগত কারণে কিভাবে কোমর ব্যথা হয় । এখানে পরিবেশগত কারণে কোমর ব্যথা মানে হচ্ছে আমরা কোথায় বসে কিভাবে কাজ করি। আমাদের দেশে বাণিজ্যিক পরিবহন, বাড়ি ও বিভিন্ন অফিস-আদালতে যে ডিজাইনের চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করা হয় তা শরীরের সাংগাঠনিক গঠনের সাথে খাপ খাওয়ার মত না। সেই পরিবেশে দীর্ঘ  সময় কাজ করলে কোমর ব্যথা দেখা দেয়। প্রত্যেকটি চেয়ারের নিচে কোমর বরাবর লাম্বার সাপোর্ট থাকবে যাতে কোমরের অস্বাভাবিক বাঁকানো অংশ ঠিক থাকে। যা দাঁড়ানো অবস্থায় প্রাকৃতিকভাবে রক্ষা পায় এতে করে কোমরের পিছনে অতিরিক্ত চাপ পড়ে না।

আরও পড়ুন  শ্বাসকষ্ট হলে করনীয় ও প্রতিকার | দ্রুত শ্বাসকষ্ট কমানোর উপায়

চেয়ার টেবিলের উচ্চতার কারণে কোমর ব্যথা :

যদি আপনি চেয়ার-টেবিলে কাজ করেন তাহলে প্রথমত খেয়াল রাখবেন আপনি ভালমত চেয়ারে বসছেন কিনা। এতে আপনি চেয়ারের পেছনে একটি সার্পোট ব্যবহার করতে পারেন। চেয়ার এমন ভাবে বসবেন যাতে আপনার দুই পা মেঝেতে সমভাবে থাকে। খেয়াল রাখবেন পা যাতে উঁচু হয়ে না থাকে অথবা পা যাতে মেঝেতে বেশি ফ্লাট না হয়। টেবিলের উচ্চতা বুকের নিচে এবং পেটের উপরে মাঝখান বরাবর হওয়া ‍উচিত। টেবিলের উচ্চতা বেশি নিচু হয় তাহলে সামনে ঝুঁকে কাজ করতে হবে। কোমর ব্যথা প্রতিরোধে ব্যায়াম

এতে কোমর সামনে বেকে যাবে এবং কোমরের পেছনে চাপ পড়ে ব্যথার সৃষ্টি হবে। চেয়ারের হাতল এমন হওয়া উচিত যাতে আপনার কাঁধ শরীরের সাথে সমমানে থাকে। হাতল যদি বেশি উঁচু হয় তাহলে কাঁধ উঁচু থাকবে আর হাতল যদি বেশি নিচু হয় তাহলে কাঁধ নিচের দিকে চাপ পড়বে। পরিশেষে চেয়ার-টেবিলে কাজ করার সময় চেয়ারকে টেবিলের ভেতর দিয়ে ঢুকিয়ে দিন যাতে আপনার পেট টেবিলের সাথে লেগে থাকে। এতে আপনার সামনের সাপোর্ট হিসাবে পেট এবং পেছনের সাপোর্ট হিসাবে থাকবে লাম্বার রোল ব্যাক সাপোর্ট।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য অবশ্যই ফার্নিচার কোম্পানিকে মানব দেহ সম্পর্কে ধারণা নিয়ে তারপর ফার্নিচার তৈরি করতে হবে। চেয়ার টেবিলের মতো ঘটনা হতে পারে ঘরের শোভা গাড়ির সিট ইত্যাদিতে।

দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার সমাধান কিভাবে করবেন :

আমরা আলোচনা করছি দীর্ঘক্ষন কাজ করার পর কোমরে যে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং এই চাপের জন্য কোমর ব্যথা হয়। এখন জানা যাবে  কিভাবে এই কোমর ব্যথা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। এখানে নিজেই নিজেই আগে একটি ব্যায়াম করে কোমর ব্যথা থেকে মুক্ত হতে পারে অথবা কোমর ব্যথা যাতে না হয় তা প্রতিরোধ হতে হবে। এর জন্য যা দরকার :

  • সঠিক নিয়মে বসতে হবে
  • নিয়মিত ব্যায়াম দাঁড়া দীর্ঘ সময় বসার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

কোমরে ব্যথার ব্যায়াম

চেয়ারের সামনে দিকে বসুন। দুই হাতের তালু কোমরের বরাবর রাখুন তারপর কোমরটাকে সামনের দিকে চাপ দিয়ে ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এমনভাবে ছেড়ে দিন যাতে কোনো পিছনের দিকে না  বেঁকে যায়। সোজা হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় হাতের দুই তালু কোমর বরাবর রাখুন তারপর কোমরটাকে সামনের দিকে চাপ দিয়ে বুকটাকে  দিকে হেলিয়ে দিন। খেয়াল রাখবেন হাঁটু যাতে ভাঁজ না হয়। উপরোক্ত ব্যায় দুটি কাজের পাশাপাশি ২ ঘন্টা পরপর দশ থেকে পনের বার করুন। মনে রাখবেন, যখন অনেকক্ষণ বসে কাজ করেন তখন ঠিকমতো কোমরটাকে সোজা করে বসুন। পেছনে সাপোর্টের জন্য নাম্বার রোল ব্যবহার করুন

একই অবস্থায় নিশ্চল হয়ে কাজ করা :

সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ভ্রমরের ডিস্ক ও  লিগামেন্টে যে চাপ পড়ে এর বেশি চাপ পড়ে যখন সামনে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে কাজ করা হয়। অনেক কাজেই আমরা সামনে ঝুঁকিয়ে দাঁড়িয়ে করে থাকি, যেমন বাগান করা, বিছানার চাদর গোছানো, উঠান ও ঘর ঝাড়ু দেওয়া ইত্যাদি। পেশাগত কারণেও এরকম ঘটনা হতে পারে- যেমন রাস্তা নির্মাণ ও মেরামত, ইট ভাঙ্গার কাজ, ইলেক্ট্রিশিয়ান, কাঠমিস্ত্রি, সার্জন (ডাক্তার) নার্স, ডেইলি লেবার (মাটি খনন করে), কুলি ইত্যাদি।

এরা সবাই প্রতিদিন সামনে ঝুঁকে একটা নিশ্চল অবস্থায় কাজ করেন। প্রতিদিন যদি কেউ ৪-৫ ঘণ্টা একাধারে এই ধরনের কাজ করে অনেকে বলেন যখন একাধারে ১ বা ১/২ ঘন্টা বসে কাজ করেন তারপর উঠতে গেলে ব্যথা ও টান লাগে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারি না। কোমর আটকে ধরে  এবং ব্যথা করে, আস্তে আস্তে সোজা হয়ে হাঁটতে হাঁটতে ঠিক হয়।

তাহলে কি করবেন :

যারা এই ধরনের কাজে নিয়োজিত আছেন তাদের জন্য অবশ্যই সারাদিনের কাজের ফাঁকে ফাঁকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পেছনের দিকে কোমরটাকে বাঁকাতে হবে ( ব্যায়াম নং৪)। যাদের ব্যথা আছে তারা ব্যথা শুরু হওয়ার আগেই ব্যায়াম করতে হবে। সামনে ঝুঁকে কাজ করলে যেমন- কোমরের পেছনে চাপসহ ডিস্ক লিগামেন্ট ও মাংসপেশিতে চাপ পড়ে। অপরদিকে কোমরটাকে পেছনে বাঁকা করলে ঐ সমস্ত লিগামেন্ট ও মাংসপেশির চাপ কমে যায় এতে  কোমরের সকল উপাদান (হাড়, জোড়া, ডিস্ক লিগামেন্ট ও মাংসপেশি) নরমাল অবস্থায় ফিরে আসে।

আরও পড়ুন  হিপ বারসাইটিস

কোমরের  ব্যথা আরেক কারণ ভারী জিনিস উত্তোলন :

আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে অনেক শ্রমিক আছেন যারা প্রতিদিন অন্তত শতকরা সামর্থ্যের চেয়ে বেশি জিনিস উত্তোলন করেন। অথচ উন্নত দেশগুলোতে এই কাজগুলো বিভিন্ন মেশিনের সাহায্যে করে থাকেন। দীর্ঘ সময় বসে অথবা সামনে ঝুঁকে কাজ করলে কোমরে  যে চাপ পড়ে ভারী জিনিস উত্তোলনের সময় সেই চ্যাপটা সরাসরি ডিস্কে পড়ে।

সঠিক নিয়ম মেনে যদি জিনিস উত্তোলন না করা হয় তাহলে ডিস্কের উপর বেশি চাপ পড়ে। বেশি চাপ পড়লে যা হয় ডিস্কের মধ্যে এক ধরনের জেলির মত পদার্থ থাকে, যা অতিরিক্ত চাপে ডিস্কের বাইরে চলে আসে এবং নার্ভ বা স্নায়ুর উপর চাপ পড়ে। এতে রোগী প্রচন্ড কোমর ব্যথা অনুভব করে এবং পায়ে অসহ্য ব্যথা চলে যায়। এই সমস্যাটা বেশি হয় যদি ভার উত্তোলনের কাজটা সকালসহ দিনের প্রথম অংশে করা যায়। রাতে বিশ্রামের কারণে কোমরের ডিস্ক এমনিতে পানি শোষণ করে ফুলে থাকে।

তারপর যদি ভারী জিনিস উত্তোলন করা হয় এতে অতি সহজেই ডিস্ক স্লিপ হয়ে যায়। অনেকে আমাদের বলেন স্যার সকাল বেলা গোসল করতে গিয়ে পানি ভর্তি  বালতি তোলার সময় কোমরে টান লাগল একটা শব্দ হলো। তারপর থেকে আর কোমর নাড়াতে পারছি না । অনেক সময় দীর্ঘ রাস্তা ভ্রমণ করার পর নিজের স্যুটকেস বা ব্যাগ উত্তোলন করতে এরকম ঘটনা ঘটে।

কি করবেন :

ভারী জিনিস উত্তোলনের সময় প্রথমেই খেয়াল রাখুন আপনার কোমর ব্যথা আছে কিনা যদি থাকে তাহলে চেষ্টা করুন অন্যের সাহায্য নিতে অথবা নিজেই চেষ্টা করুন। উত্তোলনের পূর্বে ৫-৬ বার এবং উত্তোলনের পরে ৫-৬ বার পুরোপুরি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে কোমরটাকে বুকসহ  পেছন দিকে বাঁকা  চাপ ( ব্যায়াম নং-৪) দিয়ে নেই। এতে হয়তো ঐ রকম দুর্ঘটনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। যখনই ভারী জিনিস উত্তোলন করবেন তখনই এই নিয়ম মেনে চলুন।

ভারী জিনিস উত্তোলনের সঠিক প্রক্রিয়া :

নিয়ম সবাইকে অবশ্যই মেনে চলা উচিত। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যদি সম্ভব হয় কোমরের ব্যবহার না করে মেশিন (যেমন ক্রেন) ব্যবহার করে ভারী জিনিস উত্তোলন করা উচিত।

ভারী জিনিস উত্তোলনের প্রক্রিয়া :

যতটুকু সম্ভব ভারী জিনিসটির খুব কাছাকাছি দাঁড়ান। পা দুটো ছড়ানো অবস্থায় রাখুন। হাঁটু ভাঁজ করে ভারি জিনিসটির কাছে বসে পড়ুন এবং মেরুদন্ড সোজা রাখুন। সাধ্যমত শক্তভাবে জিনিসটিকে ধরে ফেলুন। ভারসাম্য রক্ষায় জন্য দৃঢ় হউন এবং হাঁটু সোজা করে উত্তোলন করুন। একই গতিতে উঠানোর চেষ্টা করুন। কোন জারকিং নিয়ে নাড়াচাড়া করবেন না। সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সাথে সাথে পা টাকে একদিকে সুবিধা মত ঘুরিয়ে নেই যাতে  কোমরে মোচড় না খায়। নামানোর সময় ভারী জিনিসটা একই ভাবে হাঁটু ভাঁজ করে আগের কোমর সোজা করে অবস্থায় রেখে দিন।

কঠিন কোন কাজের পরে বিশ্রাম বা রিলাক্সের কারণে কোমর ব্যথা :

অনেক রোগী আমাদের কাছে বলেন তারা কোমর ব্যথা অনুভব করেন যখন তারা কঠিন কোন কাজ করার পর বিশ্রামে যান বা রিলাক্স থাকেন-যেমন বাগান করা, দীর্ঘসময় ইট ভাঙ্গা ইত্যাদি কাজ করার পর চেয়ারে বসতে গেলে অনেকেই কোমর ব্যথা অনুভব করে। কঠিন কাজ সামনে ঝুঁকে পড়ে করার সময় কোমরের পেছনে যে চাপের সৃষ্টি হয় এতে ডিস্ক ও জয়ন্টেও চাপ পড়ে ফলে তার নিজস্ব কাজের এরিয়া পরিবর্তন করে। এই অবস্থায় যদি রিলাক্সের জন্য বসা হয়ে তাহলে সেই বসাটা ব্যথাকে আরো বাড়িয়ে দেয়।

কি করতে হবে :

কোন  কঠিন বা বিগোরিয়াস কাজ করার পরে আপনাকে অবশ্যই পুরোপুরি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পিছনের দিকে কোমরটাকে বাঁকা করতে হবে। এটি ৫-৬ বার করলেই যথেষ্ট। যখন বিশ্রামের জন্য বসবেন তখন কোমরের লরডোসিস রক্ষা করতে হবে সামনে ঝুঁকা থেকে বিরত থাকতে নাম্বার রোল ব্যবহার করবেন।

আরও পড়ুন  আপনি কী জানেন “পেরিফেরাল ডায়াবেটিক স্নায়ুরোগ” টি কতটা ভয়াবহ

দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করলে কোমর ব্যথা হয় :

কিছু কিছু লোক আছে যারা অনেকক্ষণ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলে কোমর ব্যথা অনুভব করে। দীর্ঘ সময় বসে কাজ করলে যেমন মাংস পেশি দুর্বল রিলাক্স হয় তেমনি দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করলো কোমরের মাংস পেশি দুর্বল ও রিলাক্স হয়। দীর্ঘ সময় বসে থাকা আর দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকে ঠিক বিপরীত ঘটনা ঘটে। দীর্ঘক্ষণ  বসে থাকলে

কোমরের ভিতরের ফাঁকা অংশে সোজা হয় এবং দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে কোমরের পাশে আরও ফাঁকা হয়। যাহা কোমরকে ইনজুরিতে ফেলতে পারে । দীর্ঘক্ষন  দাঁড়ানোর পর যদি কেউ ব্যথা অনুভব করে তাহলে উক্ত ব্যথা মুক্ত হতে তার কোমরে পজিশন সহ দাঁড়ানোর ভঙ্গিমা পরিবর্তন করাই যথেষ্ট।

তাহলে কি করবেন :

যখন দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন অবশ্যই সোজা হয়ে থাকবেন। বুক টান করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে।

শোয়া ও বিশ্রাম (কোমর ব্যথার কারণ) :

কিছু কিছু লোকের এরকম হয় যে নির্দিষ্ট সময় মিলন করার পর কোমর ব্যথা হয় | যাদের শোবার পর ব্যথা আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যায়। এভাবে যতই সময় যায় ব্যথা আরো বেড়ে যায়। কিছু রোগী আছে যাদের সারারাত কোন ব্যথা শুরু হয়। অল্প কিছু সংখ্যক যাদের শোয়ার সাথে সাথে কোমর ব্যথা করে। আবার অনেকে  আছেন থাকে না কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠার সময় কোমর ব্যাথা ও শক্ত শক্ত ভাব অনুভব করেন। এসব রোগীর সাধারণত বিছানায় সমস্যা থাকে। হয় বিছানা শক্ত থাকে অথবা নরম থাকে এতে মেরুদন্ডের  অবস্থানগত ত্রুটি হয়।

অনেকে মনে করেন কোমর ব্যথার রোগীদের কখনও উপুড় হয়ে শুইতে হয় না। আসলে এরকম কোন প্রমান নেই যে রোগীর উপর হয়ে শুতে পারবে না অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় উপর হয়ে শুলে কোমর ব্যথা কমে যায়। তবে যদি আপনি না জানেন যে উপুড় হয়ে শুলে ব্যথা হয়ক তাহলে আপনি উপুড় হয়ে শুয়ে দেখতে পারেন যে ব্যথা বাড়ে না কি কমে।

হয়ত পরবর্তীতে আপনি সে পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। নির্দিষ্ট কিছু কোমরের ব্যথা আছে যা উপুড় হয়ে শুয়ে বেড়ে যায়। যদি আপনার সায়াটিকা থাকে তাহলে আপনি মাথা  নিচে দিয়ে উপুর হয়ে হয়তো শুতেই পারবেন না। সিজারের পর কোমর ব্যথার কারণ ও করণীয়

তাহলে কি করবেন :

দুটি সাধারণ উপায় বিছানার কোমর ব্যথা থেকে বাঁচা যায়। এক, কোমরের মধ্যে সাপোর্ট রোল বেধে শুলে যা কোমরকে বিশ্রাম এবং চাপ জনিত আঘাত থেকে রক্ষা করে। যদি আপনি রোল সংগ্রহ করতে না পারেন তাহলে টাওয়েল দিয়ে বানাতে পারেন। সেই  রোলের পাশ হবে তিন ইঞ্চি এবং লম্বা হবে ৩ মিটার (৯০ সে. মি)। এতে পড়র রাতে ঘুমালে কোমর নিরাপত্তা থাকবে। প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ফিজিওথেরাপি

Dr. M Shahadat Hossain
পরামর্শ নিতে 01877733322