Table of Contents hide

সায়াটিকা রোগ কি

সায়াটিকা (Sciatica) হলো এমন একটি রোগ যেখানে সায়াটিক নার্ভে চাপ পড়ে বা প্রদাহ ঘটে, যা সাধারণত মেরুদণ্ডের নিচের অংশ (কোমড়) থেকে পায়ের দিকে তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে। এই নার্ভটি শরীরের সবচেয়ে বড় নার্ভ গুলির একটি এবং এটি কোমরের নিচ থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি সাধারণত অতটা গুরুতর রোগ নয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং সঠিক চিকিৎসা নিলে সায়াটিকা সেড়ে যায়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে অপারেশন করা লাগতে পারে।

সায়াটিকা কেন হয়

সায়াটিকা সাধারণত সায়াটিক নার্ভ সম্পর্কিত যেকোন সমস্যার কারণে হতে পারে। আবার মেরুদন্ডের যে ৫টি স্পাইনাল নার্ভ দিয়ে সায়াটিক নার্ভ গঠিত সেগুলোর সমস্যার কারণেও সায়াটিকা হতে পারে। কারণসমূহ

  1. হার্নিয়েটেড ডিস্কঃ মেরুদণ্ডের ডিস্ক গুলি কুশন হিসাবে কাজ করে। তাদের জেলির মতো কেন্দ্রীয় অংশ কখনও কখনও স্খলিত হয়ে সায়াটিক নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। স্খলিত ডিস্ক থেকে নার্ভে চাপ পড়ার ফলে প্রদাহ এবং ব্যথা সৃষ্টি হয় যা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
  2. ডিজেনারেটিভ ডিস্ক ডিজিজঃ বয়সজনিত পরিবর্তনের কারণে ডিস্ক গুলি পাতলা ও দুর্বল হয়ে যায়। ডিস্কের উচ্চতা কমে গেলে এবং সংযুক্ত হাড় গুলির মধ্যে ঘর্ষণ ঘটলে নার্ভে চাপ পড়ে। ডিস্কের উচ্চতা কমে যাওয়া এবং ডিস্কের ক্ষয় প্রাপ্ত অংশ নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে সায়াটিক নার্ভে ব্যথা হয়।
  3. স্পাইনাল ক্যানেল স্টেনোসিসঃ মেরুদণ্ডের ক্যানেলের সংকোচন, যা নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করে। মেরুদণ্ডের সংকুচিত অংশ সায়াটিক নার্ভকে সংকুচিত করে ব্যথা সৃষ্টি করে।
  4. পিরিফরমিস সিন্ড্রোমঃ পিরিফরমিস মাংস পেশির স্পাজম বা প্রদাহ সায়াটিক নার্ভ সংকুচিত করতে পারে। মাংস পেশির সংকোচন সায়াটিক নার্ভকে চাপ দিয়ে ব্যথা সৃষ্টি করে।
  5. স্পন্ডাইলোলিসথেসিসঃ মেরুদণ্ডের একটি হাড় আরেক টি হাড়ের উপর স্থানচ্যুতি ঘটাতে পারে। স্থানচ্যুত হাড় সায়াটিক নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করে ব্যথা সৃষ্টি করে।
  6. আঘাত বা ট্রমাঃ পিঠের আঘাত বা পেশির আঘাত সায়াটিক নার্ভ কে সংবেদনশীল করে তুলতে পারে। আঘাতের ফলে নার্ভ সংকুচিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে সায়াটিক ব্যথা হয়।
  7. গর্ভকালীনঃ গর্ভবতী মায়েদের সায়াটিকা হবার সম্ভাবনা তুলণামূলক ভাবে বেশী। কারণ গর্ভাবস্তায় মায়েদের পেট বড় হয়ে যাওয়ার কারণ মেরুদন্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ পরে যার ফলে স্পাইনাল নার্ভে চাপ পড়তে পারে।
  8. কোনাস মেডুলারিস সিন্ড্রোমঃ কোনাস মেডুলারিস (T12-L3) অংশের নার্ভ গুচ্ছে যদি চাপ লেগে থাকে তাহলেও সায়াটিকার সমস্যা দেখা দেয়।
  9. কডা একুইনা সিন্ড্রোমঃ মেরুদণ্ডের স্পাইনাল কর্ডের নিচের অংশ যেখানে কোনাস মেডুলারিস শেষ হয়েছে তারপর থেকেই কডা একুইনা শুরু হয়। এটি নার্ভগুচ্ছে দিয়ে তৈরী এবং দেখতে অনেকটা ঘোড়ার লেজের মত। যখন কডা একুইনাতে চাপ পড়লে সায়াটিকা হয় যা গুরুতর উপসর্গ এবং তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে।
  10. টিউমার বা সিস্টজনিতঃ টিউমার বা সিস্ট যদি মেরুদণ্ড ও স্পাইনাক কর্ডের নিকটে গড়ে উঠে, তাহলে স্পাইনাল কর্ড, নার্ভরুট কিংবা সায়াটিক নার্ভে চাপ দিতে পারে। তখন সায়াটিকার লক্ষণ গুলো দেখা দেয়।

সায়াটিকা বাতের লক্ষণ কি?

সায়াটিকা হলো সায়াটিক নার্ভে চাপ পড়া বা প্রদাহের কারণে কোমর থেকে পায়ের দিকে ব্যথা সৃষ্টি হওয়া। সায়াটিকার প্রধান লক্ষণ গুলি বিস্তারিত ভাবে নিচে বর্ণনা করা হলো:

  • কোমর থেকে পায়ের ব্যথা (Low Back Pain Radiating to the Leg): কোমর থেকে শুরু করে পায়ের পিছনের দিক দিয়ে গোড়ালী এবং পায়ের পাতা পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে। ব্যথা সাধারণত তীক্ষ্ণ, তীব্র বা প্রখর হয়। কিছু ক্ষেত্রে এ ব্যথা দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হতে পারে। সাধারণত এক পায়ে ব্যথা হয় এবং এটি পায়ের পাতা পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। হাচি,কাশি দিলে, সামনে ঝুকলে কিংবা শুয়ে থাকা অবস্থায় পা তুলতে গেলে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
  • মাংসপেশির দুর্বলতা (Muscle Weakness): আক্রান্ত পায়ের মাংসপেশিতে দুর্বলতা অনুভব করা যেতে পারে। হাঁটতে বা দাঁড়াতে কষ্ট হতে পারে, এবং পায়ের শক্তি কমে যেতে পারে।
  • ঝিনঝিন, ভাড়-ভাড়, অবশ-অবশ (Tingling or Numbness): পায়ের বা পায়ের আঙুলে ঝিনঝিন, ভার-ভার, অবশ-অবশ বা ইলেকট্রিক শক অনুভূত হতে পারে। কোমর থেকে পায়ের পিছনের দিকে ছড়িয়ে যেতে পারে।
  • মাংসপেশির স্পাজম (Muscle Spasms): কোমর বা পায়ের মাংসপেশিতে শক্ত বা স্পাজম হতে পারে এবং টান লাগার ফলে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে এবং চলাচল করতে কষ্ট হতে পারে। যদি সায়াটিক দির্ঘদিন স্থায়ী হয়ে তাহলে মাংসপেশী দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
  • মুভমেন্ট বা চলাচলে সমস্যা (Difficulty in Movement): বসে থাকা বা দাঁড়ানো অবস্থায় ব্যথা বাড়তে পারে। হাঁটা বা কোন কার্যকলাপ করার সময় ব্যথা বেড়ে যায় এবং চলাচলে অসুবিধা হতে পারে।
  • প্রস্রাব-পায়খানা ধরে রাখতে না পারাঃ এটি একটি গুরুতর পর্যায়ের লক্ষণ। সায়াটিকার কারণে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগী প্রস্রাব পায়খানা ধরে রাখতে পারে না। এর মানে হচ্ছে যেই নার্ভগুলো ব্লাডার ও বাওয়েল নিয়ন্ত্রণ করে সেগুলোর কার্যকারিতা কমে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে অপারেশন করার প্রয়োজন হতে পারে।
  • হাঁটা বা ওঠার সময় ব্যথা (Pain When Standing Up or Walking): যখন হাঁটা বা ওঠা হয় তখন ব্যথা বৃদ্ধি পেতে পারে। মাংসপেশির টান ও নার্ভের উপর চাপ বৃদ্ধির কারণে ব্যথা অনুভূত হয়।
আরও পড়ুন  প্রক্সিমাল নিউরোপ্যাথি ও এটি দূর করার উপায়

সায়াটিকা কি ভালো হয়

সায়াটিকা, যা সায়াটিক নার্ভের প্রদাহ বা চাপের কারণে সৃষ্ট কোমর থেকে পায়ে ব্যথার সমস্যা, নিরাময় যোগ্য। সায়াটিকা অনেক ক্ষেত্রে নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়, বিশেষ করে যখন সঠিক চিকিৎসা ও সচেতনতা অনুসরণ করা হয়। তবে, সায়াটিকা এমন একটি রোগ যার পুনরাবৃত্তি হতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। তবে এসেসমেন্ট ভিত্তিক চিকিৎসা ও সঠিক যত্ন নেয়ার মাধ্যমে সায়াটিকার ব্যথা এবং উপসর্গ গুলো নিয়ন্ত্রণ এবং রোগীর স্বাভাবিক জীবন যাত্রা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। আপনার সায়াটিকা থাকলে যে ১০টি ব্যায়াম করবেন না

সায়াটিকা সারানোর উপায়

সায়াটিকা সারানোর উপায় গুলোর মধ্যে ঔষুধের চিকিৎসা, ফিজিওথেরাপি, জীবনযাত্রার পরিবর্তন, এবং গুরুতর ক্ষেত্রে সার্জারি অন্তর্ভুক্ত থাকে। নিচে এই উপায় গুলি বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো

1. ঔষধি চিকিৎসা (Medication)

  • পেইন রিলিভারস: আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রক্সেন বা এসিটামিনোফেনের মত ওষুধ ব্যবহার করে ব্যথা কমানো যায়।
  • মাসল রিলাক্স্যান্টস: মাংস পেশির স্পাজম কমাতে ও মাংস পেশীর টান হ্রাস করতে সাহায্য করে। যেমনঃ সাইক্লোবেঞ্জাপ্রিন (Cyclobenzaprine), মেথোকার্বামল (Methocarbamol)।
  • এনএসএআইডি’স (NSAIDs): প্রদাহ হ্রাস করতে ও ব্যথা কমাতে নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ডাইক্লোফেনাক (Diclofenac) এবং কেটোরোলাক (Ketorolac)।
  • কোর্টিকোস্টেরয়েড ইনজেকশন: নার্ভের প্রদাহ কমাতে ব্যবহৃত হয়। ব্যথা কমানোর জন্য সরাসরি সায়াটিক নার্ভের আশেপাশে ইনজেকশন দেওয়া হয়।

2. ফিজিওথেরাপি (Physical Therapy)

স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ: হ্যামস্ট্রিং, পিরিফরমিস এবং কোমরের স্ট্রেচিং ব্যায়াম সমূহ ব্যথা ও মাংস পেশির টান কমাতে বেশ কার্যকর।

শক্তিবৃদ্ধি ব্যায়াম: কোমর ও পায়ের মাংস পেশির শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম। উদাহরণ স্বরূপ, স্কোয়াট, লঞ্জেস ইত্যাদি।

এক্সারসাইজ গুলো করার আগে অবশ্যই একজন রেজিষ্টার্ড ফিজিওথেরাপিষ্টের পরামর্শ নিবেন। কারণ সব ধরনের এক্সারসাইজ সবার জন্য নয়। সে জন্য যে সকল এক্সারসাইজ আপনার সায়াটিকা ব্যথার জন্য কার্যকর কেবল মাত্র সেগুলোই তিনি নির্ধারণ করে দিবেন। অন্যথায় নিজে নিজে এক্সারসাইজ করতে গিয়ে ব্যথা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সায়াটিকা কি, কেন হয় এবং এর চিকিৎসা

3. হট অ্যান্ড কোল্ড থেরাপি (Hot and Cold Therapy)

হট প্যাকস: রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ব্যথা শুরু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরে কার্যকর। প্রতিবারে এক টানা ২০ মিনিট করে গরম সেক দিতে হবে।

কোল্ড প্যাকস: কোল্ড প্যাক কিংবা বরফ ব্যথা, প্রদাহ, ফোলা ও টান কমাতে সাহায্য করে। তবে আক্রান্ত স্থানে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই নরম তয়লা দিয়ে কোল্ড প্যাক বা বরফ টি কে পেচিয়ে নিতে হবে। ব্যথা শুরু হওয়ার প্রথম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক ঘন্টা পর পর ২০ মিনিট ধরে প্রয়োগ করতে হয়।

4. জীবন যাত্রার পরিবর্তন (Lifestyle Changes)

ওজন নিয়ন্ত্রণ: সুস্থ থাকার জন্য সুস্বাস্থ্যের কোন বিকল্প নেই। অর্থাৎ আমাদের অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিৎ। ওজন বেড়ে গেলে মেরুদন্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ পরে ফলে ডিস্কের উপর চাপ বেড়ে যায়। এছাড়াও আমাদের যাদের ভুড়ি বেড়ে যায় তাদের পেট মেরুদন্ড কে প্রতিনিয়ত সামনের দিকে টানতে থাকে। এর ফলে মেরুদন্ডের স্ট্যাবিলিটি কমে যায়। যার পরিণতিতে এক সময় সায়াটিকা দেখা দেয়।

নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করলে মাংস পেশির শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং মেরুদন্ডের নমনীয়তা রক্ষা পায়। সঠিক ভংগিতে বসা ও দাঁড়ানোর অভ্যাস করা উচিৎ। এতে করে সায়টিকা হবার ঝুকি কমে যায়।

7. সার্জারি (Surgery)

গুরুতর ক্ষেত্রে যদি উপরের সকল পদ্ধতিতে কাজ না হয় এবং ব্যথা মারাত্মক হয়, তবে সার্জারি প্রয়োজন হতে পারে।

ডিস্কেক্টমি (Discectomy): এই প্রক্রিয়ায় ডিস্কের বের হয়ে অংশকে সরিয়ে ফেলা হয়। যার ফলে নার্ভটি চাপ মুক্ত হয়।

লামিনেক্টমি (Laminectomy): মেরুদণ্ডের হাড়ের কিছু অংশ কেটে সরিয়ে ফেলা হয় যাতে নার্ভের চাপ কমে যায়।

ফিউশন সার্জারি (Fusion Surgery): মেরুদণ্ডের হাড় গুলিকে স্ক্রু ও মেটাল প্লেটের একসাথে জুরে দেয়া হয় যাতে ক্ষতিগ্রস্ত ডিস্কের উপর চাপ কমে যায়। ।

সঠিক চিকিৎসা, ব্যায়াম এবং জীবন যাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে সায়াটিকার উপসর্গ গুলি নিয়ন্ত্রণ করা এবং সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। দীর্ঘ মেয়াদী প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং সঠিক চিকিৎসা অনুসরণ করে সায়াটিকার ব্যথা পুনরায় উদ্ভূত হওয়া থেকে প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

সায়াটিকা রোগের ঔষধ কি

সায়াটিকার জন্য সবচেয়ে ভালো ব্যথার ঔষধ নির্ভর করে রোগীর ব্যথার তীব্রতা, সহ্য করার ক্ষমতা, এবং ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত বিষয়ে। এখানে কয়েকটি সাধারণ ভাবে ব্যবহৃত ব্যথা নাশক ওষুধের তালিকা দেওয়া হলো, যা সায়াটিকার চিকিৎসায় কার্যকর হতে পারে | সায়াটিকা রোগের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ব্যথা কমাতে এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিচে সায়াটিকা রোগের জন্য ব্যবহৃত প্রধান ওষুধগুলি বর্ণনা করা হলো

পেইন রিলিভারস (Pain Relievers)

এসিটামিনোফেন (Acetaminophen): সাধারণ প্রকৃতির ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। NSAIDs (Non-Steroidal Anti-Inflammatory Drugs): যেমন আইবুপ্রোফেন (Ibuprofen), ন্যাপ্রক্সেন (Naproxen)। এগুলি ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে ব্যবহৃত হয়।

আরও পড়ুন  লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস কি, কেন হয় এবং এর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা

মাসল রিলাক্স্যান্টস (Muscle Relaxants)

Cyclobenzaprine: মাংস পেশির স্পাজম কমাতে সাহায্য করে। Baclofen: পেশির টান ও স্পাজম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়।

কোর্টিকোস্টেরয়েডস (Corticosteroids)

Oral Corticosteroids: প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিৎ। Corticosteroid Injections: সরাসরি প্রদাহিত নার্ভের কাছে ইনজেকশন দেওয়া হয়, যা তীব্র ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

নার্ভ পেইন মেডিকেশন (Nerve Pain Medications)

Gabapentin (Neurontin) ও Pregabalin (Lyrica): নার্ভ জনিত ব্যথা কমাতে ব্যবহৃত হয়।

এন্টি-ডিপ্রেসেন্টস (Anti-Depressants)

Tricyclic Antidepressants: যেমন আমিট্রিপটাইলিন (Amitriptyline)। এটি ক্রনিক বা দীর্ঘদিনের পুরনো ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।  Serotonin and Norepinephrine Reuptake Inhibitors (SNRIs): যেমন ডুলোক্সেটিন (Duloxetine)। এটি ব্যথা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

অপয়েডস (Opioids)

Tramadol: এটি সাধারণত তীব্র ব্যথার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এটি আসক্তি সৃষ্টি করতে পারে। Oxycodone: তীব্র ব্যথার জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে এটি শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শে নেওয়া উচিত।

সায়াটিকার ওষুধ গ্রহণের পরামর্শ

চিকিৎসকের পরামর্শ: কোনো ওষুধ গ্রহণ করার আগে অবশ্যই একজন অর্থোপেডিক কিংবা নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক আপনার শারীরিক অবস্থা এবং ব্যথার তীব্রতা অনুযায়ী সঠিক ওষুধ নির্ধারণ করবেন।

ডোজ ও সময়সূচি: ওষুধের ডোজ এবং সময়সূচি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অনুসরণ করতে হবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: ওষুধের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথেই চিকিৎসক কে জানান। সায়াটিকার ব্যথা কমাতে এবং সুস্থ হয়ে উঠতে এই ওষুধ গুলি কার্যকর হতে পারে। তবে, সঠিক চিকিৎসা এবং নিয়মিত ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদী প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

সায়াটিকা রোগের ডাক্তার

সায়াটিকা রোগের চিকিৎসায় একাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ও চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। যে সকল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গণ সায়াটিকার পরামর্শ ও চিকিৎসা প্রদান করেন:

প্রাইমারি কেয়ার ফিজিশিয়ানঃ প্রাথমিক পর্যায়ে সায়াটিকার লক্ষণ এবং উপসর্গ নির্ণয় করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান করেন এবং প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করেন।

অর্থোপেডিক সার্জনঃ মেরুদণ্ড এবং হাড়ের সমস্যার বিশেষজ্ঞ। সায়াটিকা জনিত ডিস্কের সমস্যা বা হাড়ের বিকৃতি থাকলে সার্জারি করে থাকেন।

নিউরোলজিস্টঃ নার্ভ সংক্রান্ত সমস্যা বিশেষজ্ঞ। সায়াটিক নার্ভের ক্ষতি বা প্রদাহ থাকলে নিউরোলজিস্ট গণ রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করেন।

রিউম্যাটোলজিস্টঃ বাত ও প্রদাহ জনিত রোগ বিশেষজ্ঞ। সায়াটিকার সঙ্গে বাত বা অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগ সম্পর্কিত থাকলে রিউম্যাটোলজিস্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা প্রদান করেন।

ফিজিওথেরাপিস্টঃ সায়াটিকার কারণে সৃষ্ট ব্যথা ও শারীরিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। বিভিন্ন ব্যায়াম ও থেরাপি প্রদান করেন।

পেইন ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্টঃ দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞ। সায়াটিকার তীব্র ব্যথা কমাতে ইনজেকশন থেরাপি এবং অন্যান্য পদ্ধতি প্রয়োগ করেন।

সায়াটিকার চিকিৎসার জন্য সঠিক ডাক্তারের নির্বাচন

  1. প্রাথমিক মূল্যায়ন: প্রথমে প্রাথমিক পরিচর্যা ডাক্তার বা সাধারণ প্র্যাকটিশনারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। তারা প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করবেন এবং প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করবেন।
  2. বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: যদি প্রাথমিক চিকিৎসায় কাজ না হয়, তবে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
  3. ফিজিওথেরাপি: প্রায় সকল ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি কার্যকর। ফিজিওথেরাপিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যায়াম ও থেরাপি শুরু করতে পারেন।

সায়াটিকার জন্য সঠিক চিকিৎসা ও থেরাপি নিশ্চিত করতে অবশ্যই একজন যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসক রোগীর অবস্থা অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা পরিকল্পনা নির্ধারণ করবেন এবং প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞের পরামর্শ দেবেন।

সঠিক চিকিৎসা, ব্যায়াম এবং জীবন যাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে সায়াটিকার উপসর্গগুলি নিয়ন্ত্রণ করা এবং সুস্থ হয়ে উঠা সম্ভব। কোমর ব্যথা বিভিন্ন কারণ ও তার প্রতিকার

আমার কাছাকাছি সায়াটিকার জন্য সেরা শারীরিক থেরাপি

বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, প্রাইভেট চেম্বার এবং ক্লিনিক গুলোতে ফিজিওথেরাপি ও ম্যানুয়াল থেরাপির চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। একজন গ্রাজুয়েট ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের কাছে সঠিক রোগ নির্ণয় এবং পরামর্শ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র ASPC ম্যানুপুলেশন থেরাপি সেন্টার, সায়াটিকার জন্য সেরা শারীরিক থেরাপি। যা Mohammadpur, Dhaka-তে অবস্থিত, Address: U, 64 Noorjahan Rd, Dhaka 1207 | বিশেষভাবে ম্যানুয়াল থেরাপির মাধ্যমে রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকে। এখানে Structural Diagnosis & Management (SDM) টেকনিকের ভিত্তিতে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী কারেকশন থেরাপি প্রদান করা হয়, যা দ্রুত রোগ উপশমে সহায়ক।

সায়াটিকা বেল্ট

সায়াটিকা বেল্ট বা ব্যাক সাপোর্ট বেল্ট (লাম্বার কোর্সেট) একটি বিশেষ ধরনের বেল্ট যা কোমর কে সাপোর্ট প্রদান করে এবং সায়াটিকার ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এই বেল্ট গুলি মেরুদণ্ডের সঠিক অবস্থান ধরে রাখতে, পেশির টান কমাতে, এবং শরীরের ওজন সমানভাবে বিতরণ করতে সহায়তা করে। নিচে সায়াটিকা বেল্টের বিভিন্ন দিক এবং ব্যবহারের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো:

সায়াটিকা বেল্টের সুবিধা

  • ব্যথা হ্রাস: বেল্টটি কোমর কে সাপোর্ট প্রদান করে, যা সায়াটিকা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা: বেল্ট টি মেরুদণ্ডের সঠিক অবস্থান বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং কোমড়ের উপর অতিরিক্ত চাপ কমায়।
  • মাংস পেশির সাপোর্ট: কোমর ও পিঠের মাংস পেশির সাপোর্ট বাড়িয়ে পেশির টান কমাতে সাহায্য করে।
  • প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা: সায়াটিকার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করতে এবং দৈনন্দিন কার্যকলাপের সময় সাপোর্ট প্রদান করতে কার্যকর।
  • শারীরিক কার্যকলাপের সময় ব্যবহার: ভারী কাজ বা ব্যায়ামের সময় বেল্ট ব্যবহার করে কোমরের উপর চাপ কমানো যায়।

সায়াটিকা বেল্ট ব্যবহারের নির্দেশিকা

  1. সঠিক মাপের বেল্ট নির্বাচন: আপনার কোমরের মাপ অনুযায়ী সঠিক মাপের বেল্ট নির্বাচন করুন। বেল্ট টি অতিরিক্ত টাইট বা ঢিলা হওয়া উচিত নয়।
  2. ব্যবহার পদ্ধতি:
    1. বেল্ট টি কোমরের চারপাশে পরুন, যাতে এটি আপনার পিঠ ও কোমর কে সাপোর্ট দিতে পারে।
    2. বেল্টের বন্ধনী গুলো সঠিক ভাবে লাগিয়ে নিন যাতে এটি কোমড়ে ভাল ভাবে ফিট হয়।
  3. ব্যবহার সময় কাল: দীর্ঘ সময় ধরে বেল্ট ব্যবহার করবেন না। ব্যথা শুরু হবার পর থেকে দুই থেকে তিন সপ্তাহ ব্যবহার করা ভাল।
  4. সঠিক পোষ্টার বজায় রাখা: বেল্ট ব্যবহারের পাশাপাশি সঠিক ভঙ্গিতে বসতে হবে। পেট ভাঁজ করে কুজো হয়ে বসা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন  ডিস্ক প্রলাপ্স বা স্লিপ ডিস্ক হলে কি করবেন ও করণীয়

সায়াটিকা বেল্টের ধরণ

  • লাম্বার সাপোর্ট বেল্ট: কোমরের নীচের অংশে সাপোর্ট প্রদান করে এবং মেরুদণ্ডের সঠিক অবস্থান বজায় রাখে।
  • স্যাক্রোইলিয়াক বেল্ট: কোমড় এবং স্যাক্রোইলিয়াক জয়েন্ট কে সাপোর্ট প্রদান করে।
  • পেলভিক সাপোর্ট বেল্ট: পেলভিস এবং কোমরের অংশ কে সাপোর্ট দেয় এবং সায়াটিকা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

ব্যবহারের সতর্কতা

  • চিকিৎসকের পরামর্শ: বেল্ট ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • ব্যায়ামের সঙ্গে ব্যবহার: ফিজিওথেরাপির ব্যায়াম ও অন্যান্য থেরাপির পাশাপাশি বেল্ট ব্যবহার করুন। শুধুমাত্র বেল্টের উপর নির্ভর করবেন না।
  • আরাম দায়ক ব্যবহার: বেল্ট টি আরামদায়ক হওয়া উচিত এবং কোনো অস্বস্তি সৃষ্টি করলে বেল্টের ব্যবহার বন্ধ করুন।

সায়াটিকা বেল্ট সায়াটিকা ব্যথা কমাতে এবং মেরুদণ্ডের সাপোর্ট প্রদান করতে কার্যকর হতে পারে। তবে, সঠিক চিকিৎসা এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে সায়াটিকার সমাধান করা সবচেয়ে ভালো উপায়।

সায়াটিকা হলে কি সিঁড়ি বেয়ে ওঠা যায়?

সায়াটিকার কারণে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা কিছুটা কষ্টকর হতে পারে, তবে এটি নির্ভর করে ব্যথার মাত্রা এবং ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার উপর। সঠিক পদ্ধতিতে এবং সতর্কতার সাথে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা সম্ভব হতে পারে। নিচে কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হলো যা সায়াটিকা রোগীদের সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় মেনে চলা উচিত:

সিঁড়ি বেয়ে ওঠার জন্য নির্দেশিকা

  • আস্তে চলাঃ সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় ধীরে ধীরে এবং সতর্কতার সাথে চলুন। তাড়াহুড়ো করবেন না।
  • হাতল ব্যবহারঃ সিঁড়ির হাতল ধরুন যাতে ব্যালান্স বজায় রাখা যায় এবং পা ফসকে না যায়।
  • বেল্ট পরিধান করাঃ বসা থেকে দাঁড়ানো এবং হাঁটার আগে অবশ্যই বেল্ট পরে নিবেন।
  • এক পা এক সিঁড়িঃ প্রতিটি ধাপে এক পা রেখে ধীরে ধীরে উঠুন। একটি পা সিঁড়ির উপর রেখে স্থির করুন এবং তারপর অন্য পা তুলুন।
  • ব্যথার মাত্রা পর্যবেক্ষণঃ যদি ব্যথা বেড়ে যায়, তাহলে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা বন্ধ করুন এবং বিশ্রাম নিন। প্রচণ্ড ব্যথা হলে নিচে নেমে আসুন।
  • আরাম দায়ক জুতাঃ সঠিক আরাম দায়ক জুতা পরুন যাতে পা এবং কোমরের উপর চাপ কম হয়।
  • ব্যায়াম এবং ফিজিওথেরাপিঃ সঠিক ফিজিওথেরাপি এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে পেশির শক্তি ও নমনীয়তা বাড়িয়ে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা সহজ করতে পারেন।

সতর্কতা

বিশ্রাম: যদি ব্যথা বেড়ে যায় বা অবস্থা খারাপ হয়, তবে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম এবং ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে পেশি শক্তিশালী করুন এবং মেরুদণ্ডের নমনীয়তা বজায় রাখুন।

চিকিৎসকের পরামর্শ: কোনো ধরনের ব্যথা বা সমস্যা হলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সায়াটিকা রোগীদের জন্য সিঁড়ি বেয়ে ওঠা কিছু টা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তবে সঠিক পদ্ধতি মেনে চললে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করলে এটি সম্ভব হতে পারে।

 

তথ্যসূত্র

  1. Ropper, A.H. and Zafonte, R.D., 2015. Sciatica. New England Journal of Medicine, 372(13), pp.1240-1248. https://www.nejm.org/doi/full/10.1056/NEJMra1410151
  2. Pinto, R.Z., Maher, C.G., Ferreira, M.L., Ferreira, P.H., Hancock, M., Oliveira, V.C., McLachlan, A.J. and Koes, B., 2012. Drugs for relief of pain in patients with sciatica: systematic review and meta-analysis. Bmj, 344. https://www.bmj.com/content/344/bmj.E497.abstract
  3. Liddle, S.D., Baxter, G.D. and Gracey, J.H., 2004. Exercise and chronic low back pain: what works?. Pain, 107(1-2), pp.176-190. https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0304395903004342
  4. Jacobs, W.C., van Tulder, M., Arts, M., Rubinstein, S.M., van Middelkoop, M., Ostelo, R., Verhagen, A., Koes, B. and Peul, W.C., 2011. Surgery versus conservative management of sciatica due to a lumbar herniated disc: a systematic review. European Spine Journal, 20, pp.513-522. https://link.springer.com/article/10.1007/s00586-010-1603-7
  5. Cohen, S.P., Argoff, C.E. and Carragee, E.J., 2008. Management of low back pain. Bmj, 337. https://www.bmj.com/content/337/bmj.a2718.full.pdf+html
  6. Chou, R., Deyo, R., Friedly, J., Skelly, A., Hashimoto, R., Weimer, M., Fu, R., Dana, T., Kraegel, P., Griffin, J. and Grusing, S., 2017. Nonpharmacologic therapies for low back pain: a systematic review for an American College of Physicians clinical practice guideline. Annals of internal medicine, 166(7), pp.493-505. https://www.acpjournals.org/doi/abs/10.7326/m16-2459
Dr. M Shahadat Hossain
পরামর্শ নিতে 01877733322